আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি এবং ডেসটিনি-২

আমি যা বিশ্বাস করি না... তা বলতেও পারি না! "আমি এবং ডেসটিনি" শিরোনামে আমার লেখা আগের পোস্টটিতে অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য করেছেন। কারও কারও মন্তব্য নিতান্তই- "শুনেছি ডেসটিনি খারাপ- তাই দিলাম একচোট ঝেড়ে!" টাইপ মনে হয়েছে। তবে কারও সমালোচনা সত্যি গঠনমূলক। আমি তাদেরকে বিনীত ধন্যবাদ জানিয়ে এই ব্লগটি লিখছি। প্রথমেই আমি বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো- এই ব্লগটি পড়ার আগে আপনি ডেসটিনি সম্পর্কে ইতিপূর্বে মিডিয়ায় যা শুনেছেন তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন! কারণ, আমি বিশ্বাস করি- ব্লগ একটি আধুনিক মিডিয়া।

এখানে যারা লিখেন বা পড়েন তারা শিক্ষিত ও রুচিশীল ব্যক্তি। মিডিয়াতে অনেক কিছুকেই ভিন্ন এঙ্গেল-এ প্রকাশ করে! কারণ, এটা এখন বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত একটি "ওপেন সিক্রেট" যে- মিডিয়া যার, তার স্বার্থেই কথা বলবে! কাজেই আসুন- সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ একটি অবস্থান থেকে বিচার করি এ বিষয়টিকে। আমি ডেসটিনি করি বলেই "আমি তো এর পক্ষে বলবই" -এ ধরনের চিন্তা থেকে বের হয়ে আসুন। বের হয়ে আসুন এই চিন্তা থেকেও যে- "ডেসটিনি আমার ব্রেন ওয়াস করে দিয়েছে!" কারণ, আমি না হই, আপনি তো একজন সচেতন ব্যক্তি? আপনাকে নিশ্চয়ই আমি ব্রেন ওয়াস করতে পারবো না! কাজেই আসুন যুক্তি দিয়ে আলোচনা করি... # আগের পোস্ট-এ কেউ একজন বলেছেন- ডেসটিনির লোকেদের পকেটে থাকে না ৪ টাকা অথচ- ভাব নেয় ৪ হাজার টাকার! কথাটি আংশিক সত্য। কারণ, যে লোকটি এখনও ডেসটিনিতে নতুন, খুব একটা প্রতিষ্ঠিত হয়নি, হয়তো সে একজন ছাত্র বা সল্প আয়ের একজন মানুষ।

তার পকেটে মাঝে মাঝে "৪" টাকা নাও থাকতে পারে। তাই বলে তার ভাব নেয়াটা কি দোষের? আসুন আমরা এইভাবে একটু চিন্তা করি- ধরা যাক সফিক ক্লাস এইটে পড়ে। তার রোল ৫৭। সে খুব একটা ভাল ছাত্র নয়। লেখাপড়ায় মনযোগ কম।

খেলা বা ঘুমের প্রতিই তার বেশি আগ্রহ! অপর দিকে হাসান খুবই মনোযোগি ছাত্র। ক্লাসে যেমন এক্টিভ বাসায়ও রাত জেগে স্টাডি করে। টিফিন টাইমে যখন সফিকরা খেলধূলা করে, সে তখন লাইব্রেরিতে বসে নোট নেয়... আর স্বভাবতই তার রোল ১! এখন, হঠাৎ একদিন সফিক সিদ্ধান্ত নিল- সেও ভাল রেজাল্ট করবে। ক্লাসের ভাল ছাত্রদের কাতারে সেও থাকতে চায়! এখন সে কি করবে? নিশ্চয়ই সে এখন থেকে ক্লাসে মনোযোগি থাকার চেষ্টা করবে। টিফিন টাইমে সেও এখন লাইব্রেরিতে নোট নিবে।

রাতজেগে পড়বে; যেসব বন্ধুরা তার সাথে আগে খেলতো, তাদের সাথে সময় কাটানো কমিয়ে দেবে- তাইতো? তার এই চেষ্টাকে কি আপনি স্বাগতম জানাবেন না? এখন তার ঐসব বন্ধুরা যদি বলে- "এহ! রোল হইল ৫৭, ভাব নেয় ফার্স্টবয়-এর মত! ব্যাটা আগে ভাল রেজাল্ট কর, পরে দিন-রাত পড়িস..." বলুন তো- কথাটা কি ঠিক না ভুল? আরে ভাই, এটাই তো স্বাভাবিক! সে ঐ ফার্স্টবয়-এর মত ভাব নেয়, আচরণ করে, চেষ্টা করে বলেই তো তার সম্ভাবনা তৈরী হচ্ছে! বলা যায় না- ক্লাস নাইনে হয়তো হাসান-এর রোল হবে ২। ১ হবে সফিকের! বিজ্ঞ পাঠক, আমার মেসেজটা আশা করি বুঝতে পেরেছেন। হ্যাঁ, এখানে একটা কথা আছে- শুধু ভাব নিলেই কি চলবে? অবশ্যই না! তার সাথে চেষ্টা (কাজ) তো করতেই হবে। আর এজন্যই তো ডেসটিনির ডিস্ট্রিবিউটর প্রায় ৪৫ লাখ কিন্তু চুড়ান্তভাবে সফল হয়তো কয়েক শত (ডায়মন্ড)। কিন্তু সফলতার পথে বা আংশিক সফল (পি,এস,ডি ও এক্সিকিউটিভ) আছেন কয়েক হাজার... নিয়মিত আয় করেন প্রায় লক্ষাধিক লোক! (অনেকে কাজই করেন না, তাদের কোন রেজাল্ট আসার প্রশ্নই আসে না!) এখন প্রশ্ন থাকতে পারে- কাজটা কি? সেই প্রশ্নের জবাব আমাদের মার্কেটিং প্ল্যানে আছে; অন্য আরেক পোস্টে না হয় তাও লিখবো! তবে প্লীজ, লোকমুখে শুনেছেন- তাই শুনে শুনে আপনিও আবার বলে বসবেন না যেন- এম,এল,এম তো একটা বাটপারি! # আরেকজনের প্রশ্ন ছিল অনেকটা এই রকম- ভাল রেজাল্ট করা ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র হয়ে আপনি কেন ডেসটিনি করেন? ডেসটিনিতে তো আপনার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জ্ঞান কোন কাজেই আসছে না! খুবই চমৎকার প্রশ্ন! সত্যি বলতে ডেসটিনিতে জয়েন করার আগে এই প্রশ্নটা আমার নিজেরই ছিল! আপনারও হয়েছে কারণ, আপনি আমার বর্তমান "লাইফ প্ল্যানিং" সম্পর্কে কোন ধারনাই রাখেন না! (সেটাই স্বাভাবিক!) এক্ষেত্রে আগেই বলে রাখা ভাল যে- ডেসটিনির মার্কেটিং প্ল্যান বা কোন ব্যক্তি কখনই কিন্তু আমাকে বলেনি যে ডেসটিনি করলে আর কিছু করা যাবে না! এমনকি- ডেসটিনির এম,ডি রফিকুল আমিন বরাবরই বলেন- এটা করতে হবে সব কাজের পাশাপাশি।

পার্ট টাইম হিসেবে! ডেসটিনিতে ফুল টাইম কাজ করা্র সিদ্ধান্তটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত ছিল। মূলত: ডেসটিনিকে আমি নিয়েছি আমার ক্যারিয়ারের বেসমেন্ট হিসেবে... আমি গড়-পরতা চাকরির চিন্তা করলে এখনও ১৫/২০ হাজার টাকা স্টার্টিং সেলারির চাকরি করতে পারি! কিন্তু সেখান থেকে সততার সাথে কাজ করে জীবনে আর যাই হোক প্রতিষ্ঠিত হওয়া যাবে না! দেশকে বা আমার ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরকে কিছু দেয়া তো অনেক পরের ব্যাপার... আমি আমার দেশের মাটিতে অটোমোবাইল সেক্টরটাকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই- যেখানে সারা বিশ্ব আমার দেশের দিকে ঈর্ষা নিয়ে তাকাবে...! জানি- আমার এই লেখা পড়ে আপনার ঠোটের কোনে তাচ্ছিল্যের হাসি ঝুলছে...! এজন্যই আমাদের গুরু রফিকুল আমিন বলেন- স্বপ্ন দেখতে হলে এতো বড় স্বপ্ন দেখুন- যেন বাকিরা তা স্বপ্নেও ভাবতে না পারে! আর আমি মনে করি- "গাছের সবচেয়ে উচু ডালের ফলটাকে তাক করে ঢিল মারলে- একটা না একটাতে লাগবেই!" শুধু আমি না, ডেসটিনিতে যারা সত্যিই এর আদর্শ মেনে কাজ করে তারা সবাই এরকম ইতিবাচক স্বপ্ন দেখে। আপনারা যারা নিজে চোখে ডেসটিনির ভেতরটা দেখেননি- শুধু মিডিয়াতে বা লোকমুখে শুনেছেন- এখানে "ব্রেন ওয়াস" করে লোকজনের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল শেখানো হয়; তারা প্লীজ, একবার "ডেসটিনি সেলস ট্রেনিং সেন্টার" আয়োজিত কোন ট্রেনিং সেশনে এসে দেখুন- এখানে আমাদের কি শেখানো হয়? আপনি অবাক হয়ে যাবেন দেখে- এখানে সততা আর নৈতিকতা শেখানো হয়, শেখানো হয় দেশকে আর দেশের মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে! যে শিক্ষা স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে দেয়া হয় না বলে আজ আমাদের দেশের ছাত্র ও যুবসমাজ মাদক-সন্ত্রাস আর অসুস্থ রাজনিতির বলি হচ্ছে- আমাদেরকে সেই শিক্ষাই দেয়া হয় প্রতিনিয়ত... (দোয়া করবেন ভাই, এই "ডেসটিনির পাগল"গুলোর স্বপ্ন যদি কাকতালিয় ভাবেও সত্যি হয়ে যায়- আপনার আমার প্রিয় দেশটারই কিছু উপকার হবে...) সবার গঠনমূলক ও তথ্যনির্ভর মন্তব্যের বিনীত প্রতিক্ষায় - সফিক এহসান (১৩-১২-১২ইং) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।