আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এসো নিজে করি: ল্যাসিক সার্জারি !

ব্লগিং হোক আগামীর... আমি একটু খুতখুতে স্বভাবের মানুষ। চোখের চশমাটা নিয়ে সবসময়ই একটু ঝামেলার মধ্যে থাকতাম। তবে একেবারে ঝেড়ে ফেলে দেয়ার ইচ্ছা তেমন একটা ছিলো না। বছরদু’য়েক আগে এক সকালে ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ মনে হলো, চশমার সাথে আড়ি নেয়ার সময় হয়েছে। কিভাবে আড়ি নেয়া যায়? সমাধান আধুনিক বিজ্ঞান।

জনপ্রিয় ল্যাসিক সার্জারী। ঠিক আধুনিক বলা যাবে না। সত্তরের দশক থেকেই এটা চালু আছে। অনেকে অনেক কারনে চশমার উপর বিরক্ত। ল্যাসিকে যাওয়ার আগে নিজের অবস্থান পরিস্কার করে নেয়া ভালো! আমি ছোট বেলা থেকেই চশমার প্রেমে আসক্ত।

ডাক্তারী ভাষায় একে বলে মায়োপিয়া (নিকটদৃষ্টি)। মানে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সুন্দরী রমনীদের আমি চশমা ছাড়া দেখতে পাই না! আমার গ্লাসের পাওয়ার দুই চোখে (-)৫.০০ এর মতো। সিলিন্ড্রিকাল পাওয়ার আছে। খুব বেশি না। কিন্তু সোজা বাংলায় চশমা ছাড়া আমি অন্ধ।

কেন আমি চশমা পড়তে চাচ্ছিলাম না... ১. বাংলাদেশের দোকানদারদের মধ্যে সবচেয়ে বদমাইশ হচ্ছে চশমার দোকানদার। নো অফেন্স। আজ পর্যন্ত এমন কোনো চশমার দোকান দেখলাম না যেখানে আমার ২য় বার যাওয়ার ইচ্ছা হইছে। ২. চশমার পাওয়ার সেট করা একটা বিশাল সমস্যা। ডাক্তারের ভাষ্যমতে, আমাদের দেশে এমন কোনো দোকান নাই (ব্যতিক্রম দুই-একটা) যেখানে শতভাগ সঠিকভাবে পাওয়ার সেট করতে পারবে।

যেহেতু দোকানদার পছন্দ হয় না তাই ডাক্তার যেই দোকানে বসে সেখান থেকে আমি চশমা বানাই না। আবার অন্য দোকানে বানানোর পর যদি ভুল পাওয়ার হয় তাহলে কোনো রিটার্ন নাই। যেই দোকানে বানাবেন সেই দোকানদার অনেকক্ষন মেশিনে ঘুরায়ে ফিরায়ে দেখে মুখের উপর বলে দেবে পাওয়ার ঠিকই আছে। অন্য দোকানে গেলে বলবে এটা ভুল! নতুন একটা বানিয়ে দিচ্ছি। সেটা আবার আরেক দোকানে নিলে বলবে এটা ভুল।

যার কারনে বাধ্য হয়ে ডাক্তারের দোকান থেকেই পাওয়ার সেট করে নিতে হয়। ডাক্তার যদি দেখেন মোটামুটি ৯০ শতাংশ ঠিক আছে তাইলেই ওক্কে। দোকানদারের ভাষ্যমতে আমার পাওয়ার সেট করা নাকি একটু ঝামেলা। কেন সেটা তারাই ভালো বলতে পারবে। এই সুযোগে তারা একটু বেশি মূল্য হাতিয়ে নেয়।

(এইখানে মুখ খারাপ করার ইমো হবে) ৩. চশমা ভাঙার একটা ভয় থাকে সবসময়। একবার বন্ধুরা মিলে মেলায় বেড়াতে গেলাম। আমি ছিলাম দলছুট। আমার চশমা গেল ভেঙে। তখনকার দিনে মোবাইল ছিলো না।

বাধ্য হয়ে হাতড়াতে লাগলাম। কপাল ভালো কোনো ভদ্রমহিলার সামনে পরি নাই! চশমা ভাঙার ভয় থেকে বাঁচার একটাই উপায়। প্লাস্টিক লেন্স। কিন্তু সেটা খুব অল্পসময়েই স্ক্র্যচ পড়ে যায়। স্ক্র্যচ প্রুফ লেন্স আছে, সেটা দামী।

আর প্লাস্টিক ফটোসান লেন্সও অনেক দামী। তাছাড়া গ্লাস না ভাঙলেও ফ্রেমও যখন তখন ভাঙতে পারে। অনেকে বলতে পারেন দুই সেট চশমার কথা। কিন্তু দুই সেট বানালে বুঝতে পারবেন দুইটার পাওয়ার দুইরকম! যেহেতু তারা কখনই আপনাকে শতভাগ সমান পাওয়ারের চশমা দিতে পারবে না। তবে যাদের পাওয়ারে জটিলতা নাই তারা খুব সম্ভবত বিষয়টা ধরতে পারবেন না।

৪. চশমা পরলে মানুষজন শিক্ষিত মনে করে। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। ৫. চশমা পরা একজন মানুষ মারামারি-হাতাহাতি করতেছে, জিনিসটা দৃষ্টিকটু। ৬. রাতে ঘুমের সময় চশমা পরার কোনো সিস্টেম নাই। স্বপ্ন দেখতে অসুবিধা হয়! তারচেয়ে বড় কথা অন্ধকারে একটা চেয়ার দেখলেও মনে হয় ভূত! ৭. সাঁতার কাটতে চশমা পরা যায় না।

এরকম আরো কিছু ছোটখাটো সমস্যা আছে। তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি চোখের সমস্যায় চশমা একটা সহজ সমাধান। আর সৌন্দর্য্য নিয়ে আমার অত মাথাব্যথা নাই। আমাকে সুন্দর লাগা সম্ভব না। সারা শরীরে ল্যাসিক করালেও না ! ল্যাসিক কি? এটা জানার আগে আমাদের বুঝতে হবে চোখের মায়োপিয়া বা নিকটদৃষ্ট (অথবা দূরদৃষ্টি বা হাইপারোপিয়া-পজিটিভ পাওয়ার) কেন হয়? আমি ডাক্তার না।

যতদূর বুঝি, আইবলের আকার-আকৃতি বা গঠনগত ত্রুটির কারনেই এটা হয়। আইবল-কর্নিয়া-লেন্স এগুলোর মিলিত প্রচেষ্টায় আলো রেটিনায় গিয়ে ফোকাস করে। আইবলের দৈর্ঘ্য (চোখের সামনের অংশ থেকে রেটিনার দূরত্ব) স্বাভাবিকের চেয়ে ছোটো বড় হওয়া, কর্নিয়া বা লেন্সের কার্ভ সঠিক না হওয়া (উচু বা নিচু হওয়া) এই ধরনের জটিল কিছু কারনেই মায়োপিয়া/হাইপারোপিয়া হয়। এটাকে ঠিক অসুখ বলা উচিৎ হবে না। বরং জন্মগত বা বৃদ্ধিগত ত্রুটি বলা যেতে পারে।

আর চশমা হলো সাধারন পদার্থবিজ্ঞান। আলোর প্রতিসরনের খেলা। চশমার সাহায্যে অবতল/উত্তল কাচ ব্যবহার করে আলোর ফোকাসকে সামনে/পেছনে নিয়ে একেবারে রেটিনার উপর ফেলা হয়। ছবি দেখে বোঝাটা সহজ হবে! আসেন কিছু ছবি দেখি... ল্যাসিক হলো এমন একটি সার্জারী যেখানে শক্তিশালী লেজার রশ্মির মাধ্যমে কর্নিয়াকে পুড়িয়ে (!) সাইজ করা হয় (পড়ুন পাতলা/কার্ভিং ঠিক করা হয়)! উচু কর্নিয়াকে পুড়িয়ে পাতলা করে সমতল করা হয়, কর্নিয়ার স্বাভাবিক ফোকাসিং ক্ষমতাকে কমিয়ে আনা হয়। যার ফলে আইবলের দৈর্ঘ্য সঠিক না থাকলেও রেটিনায় ফোকাসে সমস্যা হয় না।

জিনিসটা খুবই সূক্ষ্ন তবে যতটা ভয়ংকর শোনাচ্ছে ততটা না। কিছুদিন পরে হয়তো দেখা যাবে অলিতে গলিতে দোকান হবে, ‘এখানে কর্নিয়া পুড়িয়ে সাইজ করা হয়’ ! তবে বিষয়টা যত সহজ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে ততটা সহজও নয়! ল্যাসিক কখন করতে পারবেন? (অনেকে বলেন কন্টাক লেন্সের কথা। না জেনেই হয়তো বলেন। যারা নিয়মিত কন্টাক লেন্স ব্যবহার করেন তাদের বলবো আজই ফেলে দিন। জিনিসটা অত্যন্ত বিপদজনক।

ব্যবহার করাও ঝামেলার। কসমেটিক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন অল্প সময়ের জন্য। কিন্তু বেশি সময় ব্যবহার করলে অনেক ঝুকি আছে। বিশদ বিবরনে না যাই। ) আমাদের জন্মের সময় চোখের বিভিন্ন অংশের যে আকৃতি থাকে সেটা একটা বয়স পর্যন্ত পাল্টায়।

একটা সময় এই আকৃতি পরিবর্তন থেমে যাবে। চশমার পাওয়ারও সেটল বা স্ট্যবল হয়ে যাবে। সাধারন ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে না। তার আগে করার কোনো যুক্তি নেই। কিভাবে বুঝবেন আপনার পাওয়ার সেটল হয়েছে? খুব সোজা।

যারা নিয়মিত চশমা ব্যবহার করেন তারা বুঝতে পারবেন কখন পাওয়ার আর পরিবর্তন হচ্ছে না। সাধারনত বছর দু'য়েক স্ট্যবল থাকলেই ঠিক আছে। আরো সহজ বুদ্ধি (ছেলেদের ক্ষেত্রে) যখন দেখবেন নারীমহলের দিকে তাকানোর ব্যপারে তেমন আকর্ষন বোধ করছেন না, তখনই বুঝবেন যথেষ্ঠ বয়স হয়েছে এবং পাওয়ার সেটল হয়েছে! মোটা দাগে, বিশের পর এবং পঁচিশের আগেই এটা হওয়ার কথা। তবে ১৮ এর আগে আইনগত কারনে করতে পারছেন না ! বার্ধ্যকের সাথে সাথে আবার পরিবর্তন হতে পারে। সাধারনত ৪০ এর পর পরিবর্তন হতে পারে।

কারা করতে পারবেন? যে কেউ। তবে একটা কাহিনী আছে। আপনার চোখের কর্নিয়ার পুরুত্ব যদি প্রয়োজনের তুলনায় কম হয় তাহলে একটু কথা আছে। এছাড়া আর তেমন বড় কোনো সমস্যা নাই। চশমার পাওয়ার মোটামুটি ২০ এর নিচে থাকলেই হইলো।

তবে কিছু কিছু জটিল সমস্যা আছে, সেটা ডাক্তার পরীক্ষা না করে বলতে পারবে না। ল্যাসিক ছাড়াও আরও কিছু লেজার সার্জারী আছে। আপনার চোখের উপর নির্ভর করে ঠিক করা হবে কোন সার্জারী আপনার জন্য প্রযোজ্য। কোথায় করবো? খরচ কত? ঢাকার বাইরে আছে কিনা জানি না। ঢাকার মধ্যে দুই তিন জায়গায় আছে।

আমি করেছি ওএসবি ল্যাজার ভিশন সেন্টারে। মিরপুর – ২, হার্ট ফাউন্ডেশনের পাশেই আছে এটা। খরচ প্রতি চোখ ১৭৫০০/=, সেই হিসাবে দুই চোখ ৩৫০০০/=। আর সার্জারী করতে পারবেন কিনা তার জন্য কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে, যাকে বলে প্রি ল্যাসিক, খরচ পরবে ২৫০০/=। এছাড়া ঔষধ, অপারেশনের পর দুইএকবার চোখ পরীক্ষার জন্য ডাক্তারের ফি।

ল্যাসিকের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে চোখ পরীক্ষা করুন, ২৫০০ টাকা খরচ করে। সেটাই প্রথম ধাপ! ল্যাসিকের পর আর চশমা পরতে হবে না? নারে ভাই! এমন কোনো গ্যারান্টি নাই। তবে সেটার পাওয়ার ০.৫ এর বেশি হওয়ার কথা না। আমার কাছে ৫.০০ থেকে ০.৫ অনেক ভালো। ০.৫ এ চশমা না পরলেও সমস্যা হবে না।

হালকা মাথা ব্যথা থাকতে পারে। অপারেশনে কোনো জটিলতা? কোনো ব্যাথা? সার্জারীর সময় সার্ফেস এনাস্থেসিয়া করা হয়। কোনো ব্যথা লাগার সম্ভাবনা নেই। সার্জারীর পর কিছু কাহিনী আছে। বেশ ঝামেলার।

পরে বলছি। আমার অভিজ্ঞতা... এক শনিবার সকালে উঠে ঠিক করলাম আজকে ল্যাসিক করে ফেলব! পকেটে নাই টাকা, গেলাম আমি ঢাকা! আরে ধুর, আমার বাসা মিরপুরেই! ওএসবিতে গিয়ে বললাম, "বদখত আপা, আমি ল্যাসিক করবো!" আপা বললো, "চেয়ারে টাইট হইয়া বসেন। দুষ্টামি করবেন না। আর ২৫০০ টাকা বাইর করেন। " কি আছে জীবনে? দিলাম ২৫০০।

কিছুক্ষন পর শুরু হইলো পরীক্ষা নিরীক্ষা। আমি যত ডাক্তারের কাছেই যাই কোনো এক অদ্ভুত কারনে ডাক্তার খুব ভালো ব্যবহার করে। এখানে দেখলাম ব্যতিক্রম। তাও আবার মহিলা ডাক্তার। এমন একটা ভাব নিলো মনে হয় যেন তার মেয়েরে ভাগায়ে নিয়ে গেছি।

ভাবখানা এমন, করলে করো না করলে ফুটো। আমার টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ। তবে আমি শিওর এইচআইভি নেগেটিভ!! টেস্টের সময় চোখে সার্ফেস এনেস্থেসিয়া করে। এরপর একটা সুই দিয়া (আসলে লিড !) চোখের মধ্যে দেয় একটা খোঁচা। এমনে নাকি কর্নিয়ার পুরুত্ব মাপে (Pachymeter) ! আমি তো ভয়ে লাফ দিয়া উঠলাম! নার্স আপায় দেখি মুখ টিপ দিয়া হাসে।

হাসছ কেন? তোরে দেই একটা খোঁচা? তখন তো কইবি “ছেড়ে দে শয়তান”! আমার পুরুত্ব আসছে ৫৬৫ মাইক্রন (?)। ৫০০-৬০০ এর মধ্যে থাকাই বোধহয় ভালো। আর কর্নিয়াল টপোগ্রাফি যা দিলো না, আমার কর্নিয়া যে এত সুন্দর! পুরা চাঁদ মামার মতো, এবড়ো খেবড়ো! ভয়ে ছিলাম চোখে যা যা দেখি, যেদিকে তাকাই সব ওখানে চলে আসবে! কপাল ভালো আসে নাই। এই যে আমার কর্নিয়ার টপোগ্রাফি... কর্নিয়াল টপোগ্রাফি - উইকি যাই হোক টেস্ট পজিটিভ হইলেও ঠিক সাহস পাইলাম না। ডাক্তার আন্টি (!) বলে, পুরা অপারেশনের সময় শুধু আমার দিকে তাকায়ে থাকতে হবে, অন্য কোনদিকে তাকানো যাবে না।

আমি মিনিট খানেকের বেশি একদিকে তাকায় থাকতে পারি না। এর চেয়ে পুরা বডি এনেস্থেসিয়া করলে ভালো হইতো না?! ভাবলাম ঘটনা খুলে বললে হয়তো কিছুটা আস্থস্ত করবেন। কিসের কি ! উল্টা মুখের উপর বলে দিলো, তোমার চোখ তোমাকেই স্থির রাখতে হবে! আবার বলে দিলো শতভাগ গ্যারান্টি নাই। চশমা লাগতেও পারে। আমাকে একটা সাইক্রিয়াটিক ঔষধ লিখে দিলো যেটা খাইলে সব কিছু শান্ত হয়ে যাবে! ল্যাসিক ফাইল হাতে নিয়া ব্যর্থ মনোরথে বাসায় ফিরে আসলাম।

দুইদিন পর আমার চোখের ডাক্তারের কাছে গেলাম। ছোটোবেলা থেকেই ওনাকে দেখাই। উনি হাসি দিয়ে বুঝায়ে বললো, চোখে সার্ফেস এনেস্থেসিয়া করবে। চাইলেও খুব বেশি নাড়ানো যাবে না। তবে মাথা উঠানো যাবে না।

একটা আলোর দিকে তাকায়ে থাকতে হবে মিনিট খানেক। কোনো ব্যথা লাগবে না। আমাকে যেহেতু উনি চিনে এইজন্য বললো, ‘অসুবিধা নাই, ঐ ডাক্তারনী ভদ্রমহিলাকে আমি চিনি। উনি আমার মতোই ভদ্রলোক। নির্ভয়ে চলে যাও।

‘ মোটামুটি আস্থস্ত্ব হলাম। উইকিতে একটা আর্টিকেল আছে সাথে ভিডিও, ল্যাসিকের উপর। দেখে নিতে পারেন। একটা বিশেষ ধরনের ছুড়ি (microkeratome) দিয়ে কর্নিয়ার উপরের স্তরটা (flap) কেটে একপাশে রাখে তারপর লেজার শট! এই এত্ত বড় বড় চোখ ! সোজা বাংলায় ল্যাসিক সার্জারী নিচের ছবির মতো... আর এই যে ফ্ল্যপ কাটার ইসটাইল... এই যে ভিডিও.. ল্যাসিক - উইকি নেটে আরো অনেক কিছু পাবেন। আপাতত এইটা পড়ে দেখতে পারেন।

ল্যাসিক বিশদভাবে ল্যাসিকের সাইড এফেক্ট, পড়া জরুরী। ওএসবিতে প্রতি সোমবার এই সার্জারী হয়। আগের দিন ফোন করে বলে দিলেই হয়। অথবা সোমবার দিন গেলেও হয়। কিছু ড্রপস দিতে হয়।

ড্রপস আগের দিন থেকে দিতে পারলে ভালো। ঐ দিন দিলেও অসুবিধা নাই। নির্দিশ্ট দিনে রওনা হইলাম। খুব একটা ভয় লাগে নাই। আগের রাতে একটা রিলাক্সেন্ট খাইছি।

সকালেও আরেকটা খাইলাম। মেজাজ পাঙ্খা ! আমি নিভৃতচারী টাইপের মানুষ। অসামাজিকও। একটা অপারেশন হবে সেই জন্য লোক দাওয়াত করে আনতে হবে এর কোনো মানে হয় না। ভাবছিলাম একাই যাবো।

শেষে মা-বাবাকে নিতে রাজি হইলাম। কাউকে জানানোর ব্যপারে কড়া নিষেধাজ্ঞা ছিলো। সেলিব্রেটি হইলে টিভিতে ব্রেকিং নিউজ চলে যেত, ‘মাজু ভাইয়ের চোখে অপারেশন শুরু। প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী শুভকামনা জানিয়েছেন! মাজু ভাইয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে!’ সেলিব্রেটিদের লাইফ আসলেই অস্থস্ত্বিকর। যাই হোক গেলাম ওএসবিতে।

শরীরের দুইটা অংশের ব্যপারে আমি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। একটা চোখ, আরেকটা...! মজার ব্যপার হইলো এই ল্যাসিকসহ জীবনে দুইবার অপারেশন করলাম। তাও এই দুই অংশেই!! অপারেশনের আগেই টাকা জমা দিতে হয়। ফেল কড়ি মাখ তেল! একটা বন্ডে সাইন করতে হয় যে ডাক্তার কোনো দায়িত্ব নিবে না। এটা কোনো কথা হইলো? ডাক্তার দায়িত্ব নিবে না তাইলে কি আমার চোখ আমি অপারেশন করবো? আমার সাইন করার ইচ্ছা ছিলো না।

আমার বাপজান ঘ্যচাং কইরা সাইন দিয়া আমার চোখ দুইটা ডাক্তারের হাতে তুইলা দিলো। সকাল ১১ টার দিকে ডাক আসলো সবার। আমি সহ আরো প্রায় জনা পচিশেক ছিলো। বেশিরভাগই নারী! বললো কাপড়-চোপড় ছাড়া আর সব কিছু বাইরে রেখে পোস্ট-অপারেটিভ রুমে ঢুকতে। ঢোকার পরে দেখি ছেলে-মেয়ে আলাদা দুইটা রুমে রাখলো! এই জায়গাটা একটু কনফিউজিং।

সার্জারীতো চোখে হবে রে ভাই। ভাবলাম একটু পরেই শুরু হবে। পরে দেখি সার্জারীর জটিলতা অনুযায়ী সিরিয়াল ঠিক করা। খুব সম্ভবত কম্পিউটারে সিরিয়াল করা হয়, মানুষের হাত নাই। আমার সিরিয়াল একেবারে শেষে! এতক্ষন বসে থাকতে থাকতে আমার কোমর ব্যথা হয়ে গেল।

তার উপর শীতকাল, কিছুক্ষন পর পর প্রকৃতি ডাক দেয়। তাও আবার টয়লেট খানা মেয়েদের রুমের সাথে! আমি কিছুক্ষন পর পর যাই আর টের পাই হি হি হি চলতেছে! আমার পাশে ছিলো এক ছিটগ্রস্থ ছেলে। বকর বকর করেই যাচ্ছে। একজন একজন করে যাচ্ছে। মিনিট পাঁচেক পর ফিরে আসতেছে চন্দ্রাহত হয়ে‍! মুখে কথা নাই।

মেয়েরা ল্যাসিক করাচ্ছে তাদের বিয়ে আটকে আছে সেই জন্য! আর ছেলেরা মূলত আর্মি-মেরিনে পরীক্ষা দিবে। একজন দেখলাম কাতার থেকে আসছে। সে বললো দেশে নাকি এটাই ভালো। খরচও অনেক কম। এমনকি ভারতের ডাক্তাররা তাকে এখানেই সাজেস্ট করছে।

সে পাইলট হতে চায়। আমি তখন চিন্তা করতে শুরু করলাম আমি যে করাচ্ছি, সত্যিকার কারনটা আসলে কি? হুমমম...চিন্তার বিষয়! অনেকে বলতেছে আমি আসলে বিয়ে করতে চাচ্ছি, এই জন্য !! মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত, বাঙালীর কল্পনা বিয়ে পর্যন্তই ! আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন ল্যাসিক করানো উচিৎ কিনা। আমি বলবো অবশ্যই না। তবে ঝুকির বিষয়টা জেনে এবং সার্জারী পরবর্তী সম্ভাব্য সমস্যা মেনে নিয়েও যদি মনে হয় করাটা জরুরী, তাহলে অবশ্যই করাতে পারেন। বাধা নেই।

যাদের কর্নিয়ার পুরুত্ব কম তাদের ল্যাসিক না, পিআরকে করাচ্ছে। ফ্ল্যাপ না কেটে চোখে একটা লেন্স বসায়ে অপারেশন। মানুষ চাইলে কত কিছুই না করতে পারে! আরো আছে ল্যাসেক (lasek)! বসে বসে বিরক্ত হচ্ছি। সাথে কিছুই আনতে দেয় নাই। সময় কাটে না।

একটু পর সবার চোখে আয়োডিন-বেনজিন কিছু একটা দিয়ে পরিস্কার করে দিলো। দুপুর দুইটার দিকে আমার ডাক পরলো ওটিতে। দুইচোখে ‘অক্সি’ না কি যেন একটা ড্রপ দিলো এনাস্থেসিয়ার জন্য। ওটিতে ঢুকে আমার তো হাত পা ঠান্ডা। যখন সার্জারীর টেবিলে শুয়ে পড়লাম ইচ্ছা করলো উঠে দৌড় দেই।

কিন্তু এতগুলা টাকা! ধুপ ধাপ চোখের মধ্যে ড্রপস পরতে লাগলো। ডাক্তারনী দেখি এখন ভালো ব্যবহার শুরু করছে। লক্ষীসোনা-চাঁদের কনা বলা শুরু করে আরেকটু হইলে! একটা সবুজ আলোর দিকে তাকায়ে থাকতে বলে। বিশেষ একটা ক্ল্যাম্প দিয়ে চোখটা বড় করে আইবলের পুরোটা বের করে। এরপর সেই বিশেষ ব্লেডটা বসায় যেটা দিয়ে এক ঝলকে কর্নিয়ার উপরের স্তর কেটে ফেলে।

১২০ মাইক্রন পুরুত্বে কাটে বোধহয়। এইজায়গাটা বুঝি নাই। পর্দাটা সাথে সাথেই জোড়া লাগে কিভাবে? ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলাম, বলে ঐটা তুমি বুঝবানা। মাইক্রোস্কোপিক ব্যপার। ছোটদের এতকিছু বুঝতে হয় না! ডাক্তার হইছে বইলা এত্তো ভাব?! যাই হোক, যতদূর বুঝলাম ফ্ল্যপটা আবার আগের জায়গায় রাখার পর নতুন কোষ জন্মায়।

যার ফলে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে সেটা জোড়া লেগে যায়। আমাদের শরীরে কোথাও কাটলে যেমন জোড়া লাগে বিষয়টা খানিকটা সেরকম। ফ্ল্যপ জোড়া না লাগা পর্যন্ত চোখ কচলানো বা চোখে জোরে পানির প্রবাহ দেয়া, যেমন - সাঁতার বা জোরে চোখে শাওয়ার ছেড়ে দেয়া, সম্পূর্ন নিষেধ! ফ্ল্যপ কাটার পর শুরু হয় লেজারের খেলা। আমি শক্ত হয়ে সবুজ আলোর দিকে তাকায়ে আছি। এর মধ্যে টের পাচ্ছি লেজারের লাল আলোর নাচানাচি।

নাড়াচাড়া করি নাই একটুও। মশা মারার একধরনের ইলেকট্রিক ব্যট পাওয়া যায়। ঐটা দিয়ে মশা মারলে বিশ্রী একটা পোড়া গন্ধ বের হয়। এতদিন মশা পুড়িয়ে উল্লাস করছি। এই প্রথম দেখলাম কেউ একজন আমাকে পুড়িয়ে উল্লাস করছে।

পোড়া গন্ধটা হুবহু একইরকম। বিশ-ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যেই শুরু হলো কাউন্ডডাউন। শূণ্য বলার সাথে সাথে এক চোখ শেষ। এভাবে ২য় চোখ। শেষ হওয়ার সাথে সাথে উঠে বসতে বললো।

চোখ খুললাম। মা! আমি সব দেখতে পাচ্ছি!! পোস্ট অপারেটিভ রুমে নিয়ে যাচ্ছিলো এক উচ্ছল তরুনী নার্স। নাম জিজ্ঞেস করলাম। দেখলাম হেভী শরম পাইলো! আরে মোর জ্বালা, আমি কি তোর ফোন নাম্বার চাইছি না ফেইসবুকে এড করতে চাইছি। দেখি সবাইরে সে হাত ধরে নিয়ে গেলো শুধু আমারে ছাড়া।

পুরুষ হয়ে জন্মানো মহাপাপ! যাই হোক তারপরে আবার চোখ পরীক্ষা হলো। চমৎকার সার্জারী হয়েছে। শতভাগ সফল! বাংলাসিনেমার ডাক্তারের ভাষায়, অপারেশন সাকসেসফুল। সার্জারীর পর... কোনো ব্যন্ডেজ নাই। একখান কালা চশমা লাগাইয়া বাসায় ফিরলাম।

এনাস্থেসিয়া কাটার পর শুরু হইলো আসল কাহিনী! মনে হচ্ছিলো কেউ চোখে মরিচ ডইলা দিছে। চোখ জ্বলা কাকে বলে। সমানে পানি পরতে লাগলো। চার-পাঁচ ঘন্টা পর সব স্বাভাবিক। চোখের যে কোনো রিফ্রাকটিভ সার্জারীতেই চোখ ড্রাই হতে পারে।

কিছুক্ষন পর পর আর্টিফিশিয়াল টিয়ারস (ক্রন্দন !) দিতে হয়। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময়ও এইটা হয়। কারন কম্পিউটার বা টিভি ব্যবহারের সময় আমাদের চোখের পাতা পরে কম। ডাক্তার বলেছিলো সার্জারীর পর পরই কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবো। ডাহা মিথ্যা কথা! পিসি ছাড়লাম, সব দেখি ঘোলা লাগে।

দূরের আলো ঘোলা লাগে। কাছের লেখাও দেখতে পাই না। এ কি অবস্থা! Scent of a Woman ছবিতে একটা কালজয়ী ডায়ালগ ছিলো, The day we stop looking, the day we die! পরে ইনস্ট্রাকশন বের করে দেখি এই সবই স্বাভাবিক। অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে রাখছিলাম। ভাবলাম জমে থাকা মুভিগুলা দেখবো।

কিছুই হইলো না। কিছুই করার নাই! সবচেয়ে খারাপ ব্যপার হইলো একেবারে পুরোপুরি স্বাভাবিক হইতে ছয়মাস থেকে ২ বছরও লাগতে পারে। ফ্ল্যপ কাটার কারনে কিছু ব্লাডভেসেল কাটা যায়। খুব সম্ভবত সেটা সারলেই চোখ ঘোলার ব্যপারটা চলে যায়। চোখের কর্নিয়ার উপরের স্তর কাটা হবে, কর্নিয়াকে লেজার দিয়া পুড়ানো হবে, পাতলা করা হবে আর সাথে সাথে সব ঠিক ঠাক হয়ে যাবে, এইটা বিজ্ঞাপন হিসাবে ভালো কিন্তু অবাস্তব।

ল্যাসিককে "এসো নিজে করি"র মতো প্রচার করা হইলেও, ঘটনা এতো সোজা না। কিছু দূর্ঘটনা, যা হতে পারতো। ১. ফ্ল্যপ কাটার সময় ডাক্তারের ভুলে যদি পুরোটা কাটা যেত তাহলে একটা সমস্যা। তখন আর সার্জারী সম্ভব না। সেটা পুনরায় জোড়া লাগতে তিন মাস লাগবে।

তার পরে অবশ্য আবার করা যাবে। ২. কর্নিয়া বেশি পাতলা করে ফেললে? নাহ, এটা কেমনে হবে?! যন্ত্রের সাহায্যে করা হয়। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত শক্তিশালী লেজার রশ্মি, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কি? ৩. অন্ধ হয়ে গেলে? ধুর এটা হবে কেমনে?! বেশি হইলে চোখের ত্রুটি ঠিক হবে না পুরো পুরি। অনেকে বলে বর্নান্ধ হয়ে গেলে? বর্নান্ধ হয় চোখের কোনে (Cone) কোনো সমস্যা হইলে। সেটা কর্নিয়া থেকে দূরে! ৪. ইনফেকশন।

হ্যাঁ, এজন্য ধুলাবালি থেকে দূরে থাকতে হবে। পানি লাগানো যাবে না। নোংরা হাতে চোখ স্পর্শ করা যাবে না। ড্রপ দিতে হবে। আরো ছোটখাটো কিছু সমস্যা আছে যেগুলো হতে পারে।

সেটা যে কেনো সাধারন মানুষেরই হতে পারে। এগুলোর সাথে ল্যাসিকের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। পরের দিন আবার চোখ পরীক্ষা। ডাক্তার বললো পুরোপুরি ঠিক হয়েছে! তবে ঘোলাভাবটা কমতে কিছুটা সময় লাগবে। এইসময় চোখের পাওয়ারও কিছুদিন ওঠানামা করবে।

নিয়মিত আর্টিফিশিয়াল টিয়ারস ব্যবহার করতে হবে। পানি লাগানো বন্ধ - এক মাস। সাঁতার অবশ্যই নিষেধ। খুব সম্ভবত পানিতে ক্লোরিন মেশানো থাকে সেই জন্য। আর ইনফেকশন বা আঘাত লাগার ভয় তো আছেই।

আমি গোসল না করে থাকতে পারি না, তাই সাঁতারের গগলসটা পরে এখন গোসল চলছে। চোখ ডলা নিষেধ, ফ্ল্যপ জোড়া লাগা পর্যন্ত। বাইরে গেলে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে। কিছু ড্রপস, ইনফেকশন না হওয়ার জন্য, ইনফ্লেমেশন কমার জন্য। চোখ পরিস্কার করার জন্য বিশেষ সলিউশন।

আসলে কিছুই না। সোডিয়াম ক্লোরাইড। লবন পানিরে একটু ভাব মাইরা সলিউশন ডাকে আর কি! আগেরদিনের ঐ নার্স আপা আমার আম্মাজানের সাথে দেখি খাতির জমায়ে ফেললো! সপ্তাহ দুয়েক পর এখন অবস্থা মোটামুটি স্বাভাবিক। তবে আমার ধারনা আমার বাম চোখে ০.৫ এর মতো পাওয়ার লাগবে। অর্থাৎ চশমা লাগবে।

বাসায় বসেই পরীক্ষা করে বুঝতে পারলাম। সমস্যা নাই। ০.৫ আমি মানায়ে নিতে পারবো। এখন চশমা ছাড়াই পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি। এই যে অনায়াসে টাইপ করলাম! এখন তো আর পুরো পুরি অন্ধ বলা যাবে না।

তবে মনের ভুলে প্রায়ই চশমাটা খুজি। ঘটনার পর আমার একটা ফেবু স্ট্যটাস আপনাদের সাথে শেয়ার করছি... “চশমাটা খসে গেলে আগে মুশকিলে পরতাম, এখন আর পরব না। এখন আর ইশকুলে কেনো, ভার্সিটিতেও পড়ি না! মেটাবলিক কারনে কবজির জোরও কিছুটা বেড়েছে, হয়তো জোর খাটিয়ে কিছু একটা করতে পারবো। তবে তারপরেও, রন্জনা, আমি আর আসবো না !!” আর সবাইকে বলবো স্কুলে যাওয়ার আগে সবার চোখ পরীক্ষা জরুরী। এটা বাসাতেই করা সম্ভব।

একটু দূর থেকে হাত দিয়ে এক চোখ ঢেকে রেখে ক্যলেন্ডারের বিভিন্ন ফন্টের লেখা পড়ার চেষ্টা করুন। যদি ঠিক থাকে তাহলে দুই চোখে সমান দেখবেন। যদি ঠিক না থাকে তাহলে নিজেই বুঝতে পারবেন। যাদের অন্য সমস্যা আছে যেমন ডায়েবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ, তাদেরও নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করা উচিৎ। চোখ অমূল্য সম্পদ।

ইসলামে আছে পুরুষদের চোখের পর্দার কথা! আবার ডারউনের ন্যচারাল সিলেকশনের একটা টুলও চোখ!! বুঝছেন তো কোন লাইনে বললাম? যাদের পর্যাপ্ত সাহস আছে তারা মরনোত্তর কর্নিয়া দানের কথা ভাবতে পারেন। সম্ভব হলে পুরো শরীর। ভেবে দেখুন, এর চেয়ে বড় ইবাদত আর কি হতে পারে? এই বিশাল ইতিহাস পড়ে শেষ করার জন্য অভিনন্দন। এবং ধন্যবাদ। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৭ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।