আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী

জীবন কখনোই সংগ্রাম বিহীন হতে পারে না খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে কাওছার হাদিয়া করেছি। ” এই ‘কাওছার’-এর লক্ষ-কোটি তাফসীর রয়েছে। এর একখানা তাফসীর হচ্ছে ‘হাউজে কাওছার’। আর এর অন্য একখানা তাফসীর হচ্ছে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা কিছু হাদিয়া করা হয়েছে সবই ‘কাওছার’ বা ‘খায়রে কাছির’। আর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ‘কাওছার’-এর তাফসীর করেছেন- “কুল-কায়িনাতের যে কোনো ব্যক্তি বা বস্তু আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সংস্পর্শে এসেছে তাই ‘কাওছার’ বা ‘খাইরে কাছির’ হয়ে গিয়েছে, তা-ই মর্যাদা-মর্তবাপূর্ণ হয়ে গিয়েছে।

” সুবহানাল্লাহ! আলিমা, ফক্বীহা, তাওশিয়াহ, হুমায়রা, উম্মুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত, ফযীলতপূর্ণ, মর্যাদামণ্ডিত অর্থাৎ সর্বপ্রকার বুযূর্গী দিয়েই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টি করেছেন। এরপর তিনি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সংস্পর্শে আসার কারণে আরো বহুগুণে মর্যাদাবান, মর্তবাবান, ফযীলতপূর্ণ হয়েছেন, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠা হয়েছেন। আর খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ! আপনারা পৃথিবীর অন্য কোনো নারীদের মতো নন। ” অর্থাৎ আপনাদের শান, মান, ফাযায়িল-ফযীলত মর্যাদা-মর্তবা হচ্ছে সর্বোচ্চ শিখরে। সুবহানাল্লাহ! উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার হাক্বীক্বী মিছদাক্ব হচ্ছেন- আলিমা, ফক্বীহা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম।

সুবহানাল্লাহ! আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে একমাত্র কুমারী ছিলেন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম। মাত্র ৬ বছর বয়স মুবারক-এ উনার আক্বদ মুবারক সম্পাদিত হয়। আর ৯ বছর বয়স মুবারক-এ উনাকে ঘরে তুলে নেন। অতি অল্প বয়স মুবারক-এই তিনি ইলিমের বিভিন্ন শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। অর্থাৎ আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ছোহবতের কারণে তিনি অল্প বয়স মুবারক-এ ইলিমের বিভিন্ন শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করতে পেরেছেন।

কিতাবে উল্লেখ করা হয় তিনি অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য দ্বারা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েছিলেন। যেমন- ১. স্মরণশক্তির আধিক্যতা। ২. পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনার সূক্ষ্মতর জ্ঞান। ৩. পরিশুদ্ধ বাগ্মিতার অধিকারিণী। ৪. মুকছিরীন হাদীছ বর্ণনাকারীদের অন্যতমা।

৫. সাহসী ৬. ব্যক্তিত্ববান। ৭. দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারিণী। ৮. বড় ফক্বীহা ৯. বড় মুহাদ্দিছা ১০. আরবদের সংবাদ ও বংশধারা সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী ১১. চিকিৎসা শাস্ত্রে অধিক দক্ষ ১২. মুয়াল্লিমাতুত তাবিয়ী ওয়াত তাবিয়ীন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার সম্পর্কে বলেন, “তোমরা দ্বীনের ইলিম হুমায়রা তথা হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে শিক্ষা কর। ” সুবহানাল্লাহ! হযরত আবূ মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম যখনই কোনো মাসয়ালায় সন্দেহ বা সমস্যায় পড়তাম, তখন আলিমা, ফক্বীহা, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলে সঠিক সমাধান বা উত্তর পেয়ে যেতাম।

” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র তিরমিযী শরীফ, পবিত্র মিশকাত শরীফ) তাবিয়ী হযরত মুসা ইবনে ত্বলহা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “ফক্বীহা, ফাছীহা, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার অপেক্ষা সুন্দর ও নির্ভুল ভাষ্যের অধিকারিণী আমি কাউকে দেখিনি। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র তিরমিযী শরীফ, পবিত্র মিশকাত শরীফ) ‘তাফসীরে বাগবী’ কিতাবে হযরত ইমাম বাগবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার কতিপয় বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার এমন কতিপয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেগুলো অন্য কোনো মহিলার মধ্যে দৃশ্যমান হয়নি। তিনি নিজেও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত প্রকাশার্থে এসব বিষয় শোকরানাস্বরূপ বর্ণনা করতেন। প্রথমত: আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আক্বদ মুবারক সম্পন্ন হওয়ার পূর্বে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম একটি রেশমী কাপড়ে আমার প্রতিচ্ছবি নিয়ে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আগমন করেন এবং বলেন, তিনি হলেন আপনার আহলিয়া হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম। দ্বিতীয়ত: খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি দুনিয়াতে যাঁদেরকে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকার ওয়াদা দিয়েছেন তার মধ্যে তিনি অন্যতমা।

সুবহানাল্লাহ! মূলত, ফক্বীহা, আলিমা, ফাছীহা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযাযিল-ফযীলতের অতি সামান্য এখানে উল্লেখ করা হলো। আর লক্ষ-কোটি গুণ অবর্ণিত রইলো। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত জেনে উনার মা’রিফত মুহব্বত হাছিল করার তাওফীক দান করুন। (আমীন) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.