আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরাই অসামাজিক একটি সত্য ছিন্ন ঘটনা..... About Me

এ সবই থাক তোমাদের, আমি বড় চাই না হতে, ধুলো মাখা পথই আমার, তুমি চোড়ো জয়োরথে। শত লাঞ্ছণা দিও, কোরো আমায় অসম্মান। তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান। আমার বাবা-মা সিলেটে জব করার কারণে অনেক গুলো বছর কাটিয়েছি সেখানে। আমি SSC পাস করার পর HSC-এর জন্য ঢাকায় আসি।

কোন রিলেটিভের বাসায় থাকবো না বলে বাবার পরিচিত একজন আংকেলের বাসায় সাবলেট থাকতাম। আংকেলের মেয়ে নবম শ্রেণীতে পড়ে। কিন্তু মাসাল্লাহ সে মঙ্গল গ্রহের খবর রাখতে পারে, ভীষণ চালু। আমার সাথে অনেক ভালো ফ্রেন্ডশিপ। তার একটাই কমপ্লেন,''আপু, আপনি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়েন তাও প্রেম করেন না কেন? এটা মানা যায় না।

'' আমাকে জোর করেই মনে হয় কোন ছেলের গলায় ঝুলিয়ে দেবে এমন অবস্থা। আমাকে বলতো, আশেপাশে কোন ছেলেকে যদি পছন্দ হয় তাহলে আমাকে অবশ্যই বলবেন, আমি রিলেশন করিয়েই দিব। আমি বললাম, আচ্ছা দেখা যাক। এভাবে অনেক মাস কেটে গেল। অই মেয়ে তো প্রতিদিন আমাকে জ্বালিয়ে খাচ্ছে, ''আপনি কী আপু? আজ পর্যন্ত কাউকে ভালবাসতে পারলেন না? আসলে কিছুই হবে না আপনাকে দিয়ে।

আমাকে দেখেন, আমি রিলেশন করি না তার পরও কতগুলো ছেলেকে ঘুরাই। '' আমি শুধু কথা শুনতাম আর মনে মনে বলতাম, ''আমি এখানে পড়তে আসছি রে, তোর মত এসবের ধান্দায় আমি নাই। '' আসলে আমার মধ্যে তখন তেমন কোন ইচ্ছা ছিল না। হঠাৎ অনেক দিন পরে ওকে বললাম, ''একটা ছেলেকে ভাল লেগেছে। এই কলোনিতেই দেখেছি ৭-৮ দিন।

মনে হয় আমাদের বিল্ডিং-এই থাকে। আমার সাথে বেশ কয়েকবার সিঁড়িতেও দেখা হইছে। আমি তাকাতে পারি নি। হাল্কা দেখেছি। ভাল লেগেছে।

ছেলেটাও আমাকে অনেক বার দেখেছে। '' মেয়েটার হাত ধরে বললাম, আমি কিন্তু তোকে বলছি না ওই ছেলেকে অফার দিতে,আমার ভাল লেগেছে তাই তোকে বললাম। তুইই তো বলিস আমি নাকি লাইকও করতে পারি না। মেয়েটা তো মহা খুশি। সে ছেলেকে বলবেই।

কিন্তু ওর খটকা লাগলো কারণ এই বিল্ডিং-এ থাকলে ও জানবে না তাই কি হয় নাকি। যে সব ছেলে এই বিল্ডিং-এ প্রাইভেট পড়াতে আসে তাদের লিস্ট পর্যন্ত ওর কাছে আছে। বেশ কিছুদিন আমি আর ও রাস্তায় খুঁজেছি বিকেলে ছেলেটাকে। কিন্তু কিছুতেই পাই নি। আমি ৪র্থ তলায় থাকতাম।

৩য় তলায় কার যেন বিয়ে। তাই বাসার সবাই দাওয়াত খেতে গেছে। আমি আর মেয়েটা আছি। রাত ৮ টার দিকে ও দৌড়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলল, আপু বউ দেখবেন? আমিও আসলাম। ভিড়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না।

একসময় ওর হাত টেনে বললাম,''আরে ওই যে ছেলেটা না...ওই ছেলেটাই তো। '' মেয়েটা কয়েকবার আমাকে জিগ্যেস করল, আপু আপনি কি সিওর যে ওই ছেলেটাই? আমি হেসে বললাম, হুম । মেয়েটি আমাকে ভিতরে টেনে নিল আর নিচের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকল, ''আপু... এই ভাইয়া দেশে থাকে না এখন। ১৫-২০ দিন হল দেশে এসেছে। আজ উনারই বিয়ে।

উনি MS করার জন্য বাইরে গেছেন। ২-৩ বছর পর একেবারে চলে আসবে। বিয়ে করতে আসছেন এখন। কিছুদিন পরেই চলে যাবে। তারপর একটা সুন্দর বিয়ের কার্ড আমার হাতে দিল।

'' আমি শুনে কী বলব জানি না। কার্ডে সব দেখলাম। কেমন যেন একটা বোকার হাসি হেসে বললাম, ''লাইক আর লাভের ভিতর অনেক দূরত্ব। আমি তো ভালবাসি নি, পছন্দ করেছি মাত্র। '' মেয়েটি বলল,'' I m so so sorry আপু।

আমি কিছুই করতে পারলাম না। সত্যি আপনাকে দিয়ে কিছু হবে না। আপনি পড়াশোনা নিয়েই থাকেন। '' আমি দেখতে পাচ্ছিলাম মেয়েটি অনেক লজ্জা পাচ্ছে। আমি ওকে বললাম, ''ধুর বোকা, তুই মন খারাপ করছিস কেন? আমার তো কিছুই মনে হচ্ছে না।

আসলে আমার কপালে যে আছে তাকে তো কেউ আটকাতে পারবে না। এ জন্যই হয়তো এটা হল না। '' তারপর ছেলেটির সাথে আমার অনেক বার সিঁড়িতে দেখা হয়েছে, কখনও একা, কখনও বউ-এর সাথে। আমার প্রথমে একটু মন খারাপ হয়েছিল, তার পর শুধু হেসেই গেছি। অ্যান্টির মেয়ে আমাকে আজও ফোন দিয়ে বলে, ''আপু যদি রিলেশন হয়ে যাইত তাহলে পুরা একটা অসামাজিক ঘটনার আবির্ভাব হত।

'' শুনে হাসিই লাগে। আজও আমি একা একাই হাসি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।