আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেখ হাসিনার ‘দেশপ্রেমিক’ আবুলকে বাঁচাতে গোলামের শেষ চেষ্টা

পদ্মাসেতু দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তাঁকে ‘দেশপ্রেমিক’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। লন্ডনে একটি হোটেলে স্থানীয় বাংলা গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আবুল হোসেন দেশপ্রেমিক। তাই তিনি দেশের সম্মান রাখতে পদত্যাগ করেছেন। কোন মন্ত্রীর গাটস থাকে যে পদত্যাগ করে! এটা একমাত্র আওয়ামী লীগ আমলেই সম্ভব। আমাদের সেই সাহস আছে।

’ একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা পিছু হটে না। আমি বলেছি, দেশের টাকায় পদ্মা সেতু হবে, সেটা হবেই। ’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুদকও আবুল হোসেন ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে সত্ চরিত্রের সার্টিফিকেট দেয়! সারা বিশ্বে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিতি লাভকারী দুই মন্ত্রীকে দুদক সচ্চরিত্রের যে সার্টিফিকেট দেয়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে সারাদেশে গণস্বীকৃত এই দু’জনকে দুদকের সচ্চরিত্রের সার্টিফিকেট প্রদান নতুন শতকের সবচেয়ে বড় তামাশা হিসেবে গণ্য করেন অনেকে। অনেকেই মন্তব্য করেন- প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘দুর্নীতি দমন কমিশন’ (দুদক) না হয়ে ‘দুর্নীতি প্রশ্রয় কমিশন’ (দুপ্রক) হলেই যথার্থ হতো।

যাহোক, যে দুদক আবুল হোসেনকে ‘ক্লিন সার্টিফিকেট’ দিয়েছিল সেই দুদকই আবুল হোসেনসহ কমপক্ষে নয় আসামির বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উত্থাপন করে মামলা করার সুপারিশ করেছে। অনুসন্ধান টিম সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, টেন্ডার কমিটির সদস্য সচিব ও সওজের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী ফেরদৌস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, এসএনসি-লাভালিনের স্থানীয় এজেন্ট জিয়াউল হক, এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, এসএসনি-লাভালিনের আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক রমেশ সাহা ও একই বিভাগের সাবেক পরিচালক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ ইসমাইলসহ নয়জনের নামে মামলার সুপারিশ করে। তবে, সরকারের নানামুখী চাপে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীসহ তিনজনের বাদ দিয়ে ওই প্রতিবেদনটি কাটছাঁট করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে দুদকের পক্ষ থেকেঅ বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান টিম ও কমিশনের সঙ্গেও দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, দুদক যদি সরকারের প্রভাব মুক্তভাবে কাজ করতে না-ই পারে তাহলে পদত্যাগ করছে না কেন? গোলাম রহমান আর কতকাল শেখ হাসিনার ‘দেশপ্রেমিকদের’ বাঁচাতে গোলামের ভূমিকা পালন করে যাবেন? শেখ হাসিনাইবা আর কতকাল দুর্নীতিবাজদের দেশপ্রেমিক উপাধি দেবেন? বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়াই পদ্মাসেতু করার ঘোষণা দিয়ে তিনি আর কতবার জাতির সাথে প্রতারণা করবেন? এর আগে আমরা শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খালেদের প্রতিবেদন দেখেছি। কিন্তু ওই প্রতিবেদনে সরকারি দলের রাঘব বোয়ালদের নাম থাকায় তা প্রকাশ করা হয়নি।

অর্থমন্ত্রী তাদের নাম ডিলিট করার কথা বলে জাতির সাথে মশকরা করেছিলেন। এখন দুদকের প্রতিবেদন থেকে আবুল গংদের নাম বাদ দিয়ে কার সাথে মশকরা করা হচ্ছে?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।