আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এরই নাম মানবতা!

মানবতার দেয়াল যে এখনো উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তা সাভার ট্র্যাজেডির দিকে তাকালে পরিষ্কার হয়ে যাবে। যারা সাভারের ধ্বংসস্তূপ দেখতে এসেছিলেন তারা অবশ্যই এই জিনিসটি উপলদ্ধি করেছেন। খেটে খাওয়া মানুষ কাজে না গিয়েও উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন। বাঁচিয়ে আনতে চেষ্টা করেছেন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকা মানুষগুলোকে। ‘মানুষ মানুষের জন্য’এই কথাটি যথার্থ মূল্যায়ন করতে সক্ষম হয়েছেন সাভারবাসী।

ধ্বংস স্তূপ থেকে শুরু থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো জীবিত মানুষ উদ্ধার হয়েছে এর বেশিরভাগ কৃতিত্বের দাবিদার সাভারবাসী। আহত অবস্থায় যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তারা সবাই সাভারবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। উদ্ধার তৎপরতায় এখনো তারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সামান্য উর্পাজন করা মানুষেরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা স্বজনদের প্রতি। এমনি একজন মো. সাজিম খুদে ব্যবসায়ী, দিন আনে দিন খায়।

তিনিও তার দিনের উপার্জন নিয়ে চলে এসেছেন এনাম মেডিকেলের সামনে। একটি প্ল্যাকার্ড টানিয়ে জোরে জোরে চিৎকার করে বলছেন, ভাই! আসুন এখান থেকে ফ্রি মোবাইল করুন, যতক্ষণ খুশি ততক্ষণ, কোনো টাকা লাগবে না। কথা হয় সাজিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, “ভাই সবাই খাবার নিয়ে এসেছে, এখানে খাবারের কোনো অভাব নেই। তাই আমি একটু ব্যতিক্রমভাবে সহযোগিতা করতে চাই আটকে পড়া স্বজনদের।

” তিনি বলেন, “ভাই এখানে বেশির ভাগ মানুষ গ্রাম থেকে এসেছেন। অনেকে কোথায় গিয়ে ফোন করতে হবে তাও জানেন না। তাই তাদের একটু সহযোগিতা করতে পারলে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। ” রিকশা চালক শরিফুলের গ্রামের বাড়ি রংপুর। তিনি সাভারে রিকশা চালান।

সাভার ব্যাংক টাউন থেকে অধরচন্দ্র কত দিতে হবে জানতে চাইলে রিকশা চালক বলেন, “যা হয় দিয়েন, না দিলেও সমস্যা নেই। উঠেন অধরচন্দ্র নামিয়ে দেব। ” যেতে যেতে কথা হয় রিকশা চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, “ভাই রিকশা জমা ও সামান্য কিছু টাকা হলেই আমার দিন চলে যাবে। কত মানুষ কত টাকা দিচ্ছে আমি না হয় একটু শ্রমই দেব।

” তবে রিকশা চালক জানান, প্রথম দিন উদ্ধার কাজে গিয়েছিলাম এর পরে আর যেতে পারিনি ভাই কাজ না করলে সংসার চলে না এ জন্য আর যাওয়া হয়নি। তবে আটক অনেক স্বজনকে আমার গাড়ি দিয়ে নামিয়ে দিয়েছি ভাড়া নিইনি বলে তিনি জানান। শুধু সাজিম আর শরিফুল নয় এ রকম হাজার হাজার খেটে খাওয়া মানুষ তাদের সবকিছু দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সাভার ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া শ্রমিক ও তাদের স্বজনদের দিকে। তবে ক্ষমতাসীনদের ছায়াতলে থাকা রানার বিচার ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন নিয়ে আগামীতে এ রকম দৃশ্য আর দেখতে না হয়, এমনটিই সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে প্রত্যাশা সাভারবাসীর। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।