আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভূত চেপে বসেছে যেন তেন ভূত না এক্কেবারে কচ্ছপ ভূত

inside you're ugly ugly like me আজকে পকেট ভর্তি টাকা। কিন্তু এমন একটা অবস্থায় আছি যে চাইলেও এখন টাকাটা দিয়ে যা খুশি তা করা যায় না। মেসের ভাড়া দেয়া হয় নাই। গতমাসে ভাড়া দিতে দিতে ২৪তারিখ পার হয়ে গিয়েছিল। মেস ম্যানেজারের মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছিল হারামজাদারে জুতা দিয়া পিটাই।

এখন আমি মোটামুটি সেইফ জোনে। গলিটার শেষ মাথায় কয়েকটা দোকান। একটা বাজারের মত পরিবেশ চলে এসেছে এখন। দুই তিন বছর আগেও এমন ছিলনা। শহরতলীতে যে রকম টাইপ হোটেল থাকে এইরকম দুইটা হোটেল।

হিন্দু বাবুর্চি বলে একটা হোটেল প্রায় চলে না বললেই হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু লোক এসে হিন্দু হোটেল খুজে। একদিন এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম। রাত ৯টার মত বাজে। তখন হিন্দু হোটেল বন্ধ।

একজন লোক আমাকে জিজ্ঞেস করল ভাই এদিকে কোথাও হিন্দু হোটেল আছে? -হোটেলের আবার হিন্দু খ্রিস্টান কি? লোকটা প্রচন্ড লজ্জা পেয়েছে এমন ভঙ্গি করে বলল, আমার মা হসপিটালে। উনি নিরামিষ খায় তো তাই। আমি আর কিছু না বলে হাঁটা দিলাম। কত বিচিত্র লোক এই যুগেও আছে। আমার এক বন্ধু, তার সবই ঠিক আছে কিন্তু পূজা মন্ডপে যাবে না।

নামাজ রোজা নিয়া কোন টেনশন নাই কিন্তু পূজা দেখতে যাওয়া বিরাট পাপ। অদ্ভূত। গলিটার শেষে ডানদিকে একটা সেলুন। একেবারে কানা একটা গলির শেষ মাথায়। ঐদিকে হাঁটা দিলাম।

দেখি নাপিত অলরেডী দোকানের ঝাপ নামিয়ে দিয়েছে। নাপিত আমার পরিচিত। কিন্তু নাম জানি না। আমাকে দেখেই বলল, খোকন ভাই আজকে মনে মনে কৈতাছিলাম আপনে আইবেন। -মনে মনে কৈয়াও দোকান বন্ধ কৈরা দিলা? -একটু মেলায় যামু ভাবছিলাম।

থাক আইজ আর যামু না। -গেলে যাও। আমার আর্জেন্ট কিছু নাই। তাও দোকান খুলে দিল সে। আমিও গিয়ে বসে পড়লাম।

মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা। কতদিন আয়না দেখি না মনে নাই। মেসে অবশ্য আয়না আছে। কিন্তু কি এক অদ্ভূত কারনে এটাতে কোন রিফ্লেকশন হয় না। শিপলু অবশ্য একটা কায়দা বের করছে।

তবে তার জন্য ৫ফুট ১০ হাইট থাকা বান্ছনীয়। তাই আমার আর চেহারা দেখা হয় না। সেলুনই ভরসা। নাপিত সাহেব এর মধ্যে গান ছেড়ে দিল। পুরান আমলের হিন্দী গান।

এই গান এখন হিন্দুস্তানের লোকেরাও শুনে কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। -বুঝলেন ভাইজান গান ছাড়া কামে হাত দিতে পারি না। কেমন জানি হাত কাপে? -সর্বনাশ। তুমি তাইলে গানের ভলিউম বাড়াইয়া দাও। কখন কি হয় আল্লা মালুম।

মুখে অপারেশন শুরু হল। ক্রীম ভর্তি মুখ নাড়াতেই কেমন যেন লাগে কথা বলা তো দূরের কথা। কিন্তু নাপিত সমানে বকবক করেই যাচ্ছে। আমি কেবল হু হা করছি। দাড়ি কাটার পর চেহারা কেমন জানি হয়ে যায়।

নিজের কাছেই কেমন অচেনা লাগে। সাধারনত কৈশোরে প্রথম শেইভ করার পরে এমন অনুভুতি হয়। পরে আস্তে আস্তে একসময় ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু আমার বোধহয় ঠিক হতে একটু সময় লাগবে। একমাস পূর্ণ না হলে কখনোই আমি সেলুনমুখী হই না।

ঝামেলাও বাচল, টাকাও বাচল। সোজা হিসাব। একশ টাকার একটা নোট বের করে দিলাম। -কত রাখমু ভাইজান? -রাখো ইচ্ছামত। টাকা ফেরত দেয়ার পর গুনেও দেখলাম না।

এমনিই পকেটে রেখে দিলাম। ওখান থেকে বের হয়ে দেখলাম আর তেমন কোন কাজ নাই। অথচ বাজে মাত্র সাড়ে আটটা। টং দোকানে বসার আদর্শ সময়। চা আর বিড়ি এই সময় স্বর্গীয় মনে হয়।

সমস্যা একটাই এখানে কোন হুরপরী থাকেনা। তার বদলে থাকে ডাইনী টাইপ মশা। দুনিয়ার স্বর্গে একটু আধটু সমস্যা থাকবেই। এ নিয়ে আমি মোটেই চিন্তিত না। __________ [খোকন বা খোকার কাহিনি আপাতত স্টপ।

তার এখন একটা বাড়ী দরকার। যেখানে মা থাকবে, বাবা থাকবে। একটা পরীর মত সুন্দর বোন থাকবে। ভাই থাকতেও পারে নাও থাকতে পারে। তবে আমার মনে হয় থাকাটাই বেটার।

] চলবে........ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।