আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Titanic-এর চাঞ্চল্যকর সত্যি ঘটনা! টাইটানিক দূর্ঘটনায় নয়, এটিকে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিলো! কিন্তু কেন? কারা? এবং কিভাবে? (পর্বঃ ১/২)

মানুষ নিদ্রিত এবং মৃত্যুর পরপরই সে জেগে উঠবে। গত ২০০ বছরের ইতিহাসে পৃথিবীর বৃহত্তম ট্রাজেডিগুলোর একটি হচ্ছে - রোমান ক্যাথলিক জেসুইট্স্ কর্তৃক “টাইটানিক” ডুবিয়ে-দেয়া। জেসুইট্স্ এর সিদ্ধান্তে/পরিকল্পনায় এবং বাস্তবায়নে আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে টাইটানিকের সলিল সমাধি ঘটে। কিন্তু কারা এই রোমান ক্যাথলিক জেসুইট্স্? কী তাদের পরিচয়? টুকরো টুকরো তথ্যের সমাহারে নীচে Jesuits সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা পাওয়ার প্রয়াস নেয়া হলো। হিটলার নিজেই স্বীকার করেছে, “Jesuits Order খেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি”।

এবং জনৈক Senior নাৎসী Walter Schellenberg জানায়, “ হিমলারের নেতৃত্বে হিটলারের S.S সংগঠনটি Jesuits Order এর আদলে গড়া। এবং তারা Jesuits Order এর মূলনীতিগুলো অনুসরণ করে থাকে। একবার হিটলার হিমলার সম্পর্কে মন্তব্য করে, “ হিমলার হচ্ছে আমাদের Ignatius of Loyola.” (জেসুইট্স্ এর প্রতিষ্ঠাতা, প্রথম জেসুইট্স্ জেনারেল)। একটি বিখ্যাত প্রাচীন ফরাসি প্রবাদ রয়েছে এরকম যে, যখন দু’জন Jesuits পরষ্পর মিলিত হয়, তখন সেখানে তৃতীয় জন যে উপস্থিত হয়, সে হচ্ছে “শয়তান”। রোমান ক্যাথলিক জেসুইট অর্ডার (Roman Catholic Jesuit Order)।

দম্ভভরে তারা নিজেদেরকে Society of Jesus বলে থাকে। এদের সম্পর্কে খুব বেশী কিছু জানা যায় না। তাদের বোঝাও বেশ মুশকিল। এবং এটি খুব বেশী আগের কথা নয় যখন “Jesuitical” শব্দটি ঘৃণাসূচক হিসেবে ব্যবহৃত হত। এবং ইউরোপ-আমেরিকায় যতগুলি রোমান ক্যাথলিক অধ্যুষিত দেশ ছিল, সবগুলিতেই Jesuits-রা নিষিদ্ধ ছিল।

সভ্য ও শিক্ষিত প্রতিটি সমাজে Jesuit-রা আতংক ও ঘৃণা সৃষ্টিকারী এক নাম। কিন্তু কেন? তাদের বিশ্বাস, মতবাদ এবং কর্মকান্ডে কী এমন ছিল যে তাদের প্রতি এমন বিশ্বজনীন বিরুপ মনোভাব? Jesuit-রা কিন্তু এখনও রয়েছে। আগের চাইতে অনেক, অনেক ভয়ংকর ও শক্তিশালী। ক্রমবর্ধমান তাদের অগ্রযাত্রা ও শক্তিমত্তা। তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের কোন পরিবর্তন হয় নি।

এবং পূর্বের কৃতকর্মের জন্য তাদের কোন অনুতাপ অনুশোচনাও নেই। বরঞ্চ ঐ হীন কাজ তারা এখনও করে যাচ্ছে। তাদের গোপন ঘাতক বাহিনী (Secret Army of Papacy) কাজ করে যাচ্ছে নিরন্তর নিঃশব্দে। চরম নিষ্ঠুরতা ও অব্যর্থতায়। অনেক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে তারের একটি লক্ষ্য হচ্ছে – Protestant মতবাদকে চিরতরে ধ্বংস করা এবং রোমান ক্যাথলিক মতবাদকে বিশ্বের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা।

ভয়ংকর নিষ্ঠুর এক দল ও মতবাদী এ সংগঠন যা’ আগে কখনও বিশ্বমঞ্চে আবির্ভূত হয় নি। Jesuits-দের উদ্দেশ্য কী? তারা কী চায়? তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য পৃথিবীর শাসন কর্তৃত্ব। এবং তা’ তারা করতে চায় জেরুজালেম থেকে। প্রথমে তারা জেরুজালেমে নবী সোলেমানা (আ.)-এর প্রাচীন Temple (?!) পূণর্নিমাণ করতে চায় এবং তাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীকে শাসন করতে চায়। এবং এর নেতৃত্বে থাকবে Pope.।

এটাই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। কিন্তু সোলেমানের (আ.) Temple পূণনির্মাণ এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? কারণ Jesuits-রা শুরু খেকেই তা’ চেয়েছিল। যখন Ignatius Loyola প্রথম Jesuits Order-এর শুরু করে, তখন থেকেই সে চেয়েছিল জেরুজালেম যাবে এবং সেখানে Jesuits Headquarter স্থাপন করবে। এবং সে চেষ্টা সে করেছিলোও বটে কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। ফিরে এসে সে Latin ভাষা চর্চা শুরু করে।

জেসুইট্‌স্ অর্ডার এর প্রতিষ্ঠাতা Ignatius Loyola.। প্রথম জেসুইট্‌স্ জেনারেল। জীবনের শুরুতে সে ছিলো একজন সৈনিক, Spanish Soldier. ফ্রান্স এবং স্পেনের মধ্যে এক যুদ্ধে সে এক পা-তে আঘাত পায়। ফরাসী জেনারেল যুদ্ধে সাহসিহতা প্রদর্শনের জন্য Loyola-কে জেনারেলের নিজের চিকিৎসককে দিয়ে চিকিৎসা করায় এবং বিশ্রামের জন্য বাড়ী পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু তার ভাগ্য সহায় ছিল না।

সুচিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খেকেও তার বা’ পা পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তীব্র ব্যাথা ও যন্ত্রণা নিয়ে থাকতে হয়েছে। এরপর আরো কয়েকবার সে পা ভেঙেছে এবং শেষ পর্যন্ত সে স্থায়ীভাবে খোঁড়া হয়ে যায়। এবং নারীদের কাছে তার যৌন আবেদন শূন্য হয়ে যায়। এতে সে ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে এবং মানসিক ডিপ্রেসনে চলে যায়।

নির্জনতা ও একাকীত্ব বরণ করতে হয়। এই নির্জনতায় সে এক দিব্যদর্শন (Vision) লাভ করে। বলা যেতে পারে - এক ধরণের আধ্যাত্মিক জ্ঞান লাভ করে। এবং তার উপর ভিত্তি করে সে একটি বই লেখে। এবং এই বই-ই এখনো পর্যন্ত Jesuits-দের বেসিক ট্রেনিং-এর সিলেবাস।

Jesuits মাত্রই ঐ বই পড়তে হয়। আমরা ছোট বেলায় আলেক্সান্ডার ডুমা’র (Alexander Dumas) বিখ্যাত চিলড্রেনস্ ক্ল্যাসিক The Count of Monte Cristo’র কথা পড়েছি/শুনেছি। ঐ বই আসলে Jesuits-দের নিয়েই লেখা একটি ব্যঙ্গরচনা (Satire)। এখানে Count মানে হচ্ছে Jesuts General, আর Monte মানে হচ্ছে Mount অর্থাৎ পাহাড়, আর Christo মানে হচ্ছে Christ অর্থাৎ যীশু খ্রীষ্ট। সব মিলে মানে হলো “খ্রীষ্ট পাহাড়ের Jesuits General।

অর্থাৎ ডুমা ঐ কাহিনীতে এক Jesuits General এর কাহনিী ও তাদের যুদ্ধবিগ্রহের কথা তুলে ধরেছে, যে যুদ্ধে Jesuits-রা অতীতে তাদের প্রতি কৃত নানান অন্যায় অত্যাচার ও অপমানের প্রতিশোধ নিচেছ এবং শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ফিরে পেলেও Jesuits General-এর আরাধ্য, কাঙ্খিত “নারীর ভালোবাসা” (Love of Woman) আর ফিরে পায়নি। এবং এটাই হচ্ছে Jesuits Order। এবং আজ পর্যন্ত এটাই Jesuts-দের জন্য নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। অর্থাৎ এখনো পর্যন্ত Jesuits-রা কোন নারীর সাথে সংসর্গ রাখতে পারেনা। এবং বলা হয়ে থাকে এটাই তাদের সাফল্যের মূল কারণ।

অর্থাৎ নারী, পরিবার, সন্তান সন্ততি ইত্যাদির সংসর্গমূক্ত থাকাই তাদের সাফল্যের মূল কারণ। তাদের আধ্যাত্মিতার অন্যতম এক স্বতঃসিদ্ধ উক্তি (maxim) হলো “ যদি Senior যখন বলে, কালোই সাদা এবং সাদাই কালো, তবে তা-ই সত্য” (Black is white, white is black)। এ উক্তি থেকেই Jesuits মতবাদের মূল দর্শন ও চিন্তাধারা পরিষ্কার হয়ে যায়। অর্থাৎ Jesuits মতবাদ হচ্ছে শয়তান এর মতবাদ। Satanist Ideology.।

এবং বাস্তবেও তাই। দেখা গেছে Jesuits General-সহ সমস্ত সিনিয়র Jesuits-রা Ocultists অর্থাৎ শয়তানের উপাসক। তারা শয়তানের উপাসনা করে। উপরের চিত্রে ক্যাথলিক সদর দপ্তর Vatican-এর সামনে লম্বা খাড়া বিশাল যে স্তম্ভটি দেখা যাচ্ছে, তা’ হচ্ছে প্রাচীন মিশরের সূর্য দেবতার প্রতীক। ইউরোপ আমেরিকার প্রায় সব বড় বড় শহরে এই বিশাল স্তম্ভটি (Obelisk) দেখা যায়।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে – শহরের প্রাণকেন্দ্র Vatican-এর প্রধান ধর্মীয় পীঠস্থান Catholic Headquater সামনে এই সূর্য দেবতার মনুমেন্টটি কেন? এ যেন পেট্রোলের কাছে আগুন! প্রধান ধর্মগুরু পোপের হাতে ধরা লক্ষ্যণীয় বাঁকানো ক্রস। কিন্ত তা’ বাঁকানো কেন? তা’ তো আগে ছিলো না। আর ঐ অশুভ প্রতীক বাঁকানো-ক্রুশটি (Twisted Cross) ষষ্ঠ শতাব্দীতে Satanists/Occulists-রা ঐটি ব্যবহার করতো এতিহ্যবাহী Christ-এর ক্রুশবিদ্ধ Cross-কে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করার জন্য। এবং এটি দ্বিতীয় ভ্যাটিক্যান প্রতিষ্ঠার পর থেকে অতি বেমানান রূপে ব্যবহার শুরু হয়। শুধু তাই নয়।

ক্রসে ঝুলানো যিশুর শরীরটি বিকৃত বিধ্বস্ত রূপে তাদের ক্রুশে দেখানো হয়েছে। এবং এই বিকৃত Cross-টি ব্যবহার করতো মধ্যযুগের Black Magician ও যাদুবিদ্যা চর্চাকারীরা। তা সত্ত্বেও আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে কেবল প্রধান ধর্মগুরু Pope Paul VI-ই শুধু নয়, পরবর্তী দুই প্রধান ধর্মগুরু Pope John এবং Pope Paul-ও ঐ বিকৃত ও অশুভ Cross হাতে নিয়ে যিশুভক্তদের দর্শন দিতো, অথচ ঐ ভক্ত জনতার সামান্যতম ধারণা নেই যে তারা যিশুর চরম শত্রু (Anti-Christ)-এর সামনে দাড়িযে আছে। এটি হচ্ছে Vatican Crest.। এবং সাধারণতঃ ক্রেষ্ট কী এবং কী কাজে ব্যবহৃত হয় তা’ কারো অজানা নয়।

কিন্তু Vatican নির্মিত ক্রেষ্টে এটি কিসের ছবি?! এটি তো ড্রাগন-সাপ (Serpant Dragon), যা’ খোদ শয়তানের প্রতীক!!! কিন্তু এ প্রতীক Vatican ক্রেষ্টে কেন??? উপরের ছবিতে (বামে) প্রধান যাজক পোপ মাথায় যে টুপিটি পড়েছে তার নাম Mitre Hat. প্রাচীন ব্যাবিলনীয় দেবতা Dagon এর সাথে সম্পর্কিত। Mitre Hat পরিহিত Pope ও Dagon দেবতার ছবি পাশাপাশি রাখা হয়েছে সাদৃশ্য পরিষ্কার হওয়ার জন্য। প্রশ্ন হচ্ছে – পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরুর মাথায় প্রাচীন ব্যাবিলনীয় Dagon দেবতা কেন??? প্রাচীন পৃথিবীর রহস্যময় ঐ দেবতা ও তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস খৃষ্টধর্মের ছদ্ম আবরনে / আড়ালে কেন??? তার মানে কি রহস্যময় ঐব্যাবিলনীয় ধর্ম ও তাদের বিশ্বাস সমষ্টি এখনো জীবিত ও চর্চিত হচ্ছে??? তা-ও খৃষ্ট ধর্মের আড়ালে?! উপরে পাশাপাশি ৩টি ছবি জুড়ে দিয়ে একটি ছবি। ৩টি ছবিতেই প্রধান ধর্মগুরু Pope বর্তমান। কিন্তু চমকে উঠার মতো ব্যাপার হচ্ছে ৩টি ছবিতেই পোপের পিছনে দৃশ্যমান Crossটি উল্টো (Inverted)।

এটি হচ্ছে Satanists / Occulists-দের কাজ। ধর্ম, বিশেষ করে আব্রাহামিক ধর্ম, যা’ করবে তারা তার উল্টোটি করবে। এবং উল্টো করে দেয়ার প্রথা চালু হয়েছে, যেদিন থেকে Jesuits-রা Vatican সম্পূর্ণ দখল করে নিয়েছে। মনে রাখতে হবে Jesuits-রা তাদের সংগঠন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথেই পোপের অনুমোদন পায় নি। Jesuits-দের হাজারো চেষ্টা সত্ত্বেও স্বীকৃতি মিলেনি।

তাদের সন্ত্রাস, হত্যা, লুন্ঠন, ষড়যন্ত্রসহ নানান অপকর্মের জন্য দীর্ঘকাল যাবৎ রোমান ক্যাথলিক অধ্যুষিত অঞ্চলে তারা নিষিদ্ধই ছিল। কিন্তু ১৮১৪ সালে তাদের সুদিন আসে। এসময় ক্ষমতায় ছিলো সম্রাট নেপোলিয়ন। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এই যে সম্রাট নেপোলিয়নের Abbie Sieyes নামে এক উপদেষ্টা ছিলো যে কি-না Jesuit. তাকে ব্যবহার করে Jesuit-রা Vatican নিয়ন্ত্রণে নেয়। এবং নেপোলিয়নের মাধ্যমে পোপকে ৫ বছরের জন্য জেলে পাঠায়।

পরবর্তীতে হত্যা করে। এবং তারপর পোপের মৃতদেহ আল্‌স্ পর্বতের চূড়া থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। এ-ই হচ্ছে জেসুইট্‌স্। প্রকৃত সত্য হচ্ছে যে - Jesuits-রা পোপ এবং পোপের প্রতিষ্ঠানকে সবসময় হেয় করেছে। অবমাননা করে এসেছে।

তার ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। মোট কথা Jesuits-রা ছলেবলে কৌশলে Pope থেকে অন্যতম রোমান ক্যাথলিক দল হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে। এবং Vatican দখল করে তারা একে Satanist/Occulists-দের আখড়ায় পরিণত করেছে। যার কিছু উদাহরণ আমরা উপরে দেখেছি। শুধু তাই নয়।

তারা J.k. Rawlings-এর Harry Potter এর Magic চর্চাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের মতে যাদু, Magic, ডাকিনীবিদ্যা (Witchcraft) ইত্যাদি চর্চা খারাপ কিছু নয়। অথচ এগুলোর ব্যাপারে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে তীব্র কড়াকড়ি ছিলো একসময়। এসবের চর্চাকারীদের পাওয়া মাত্র হত্যা করা হোত আগে। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হোত।

আর এখন Vatican বলছে এগুলো বৈধ। কোন সমস্যা নেই। কেনেডি হত্যাকান্ড আমেরিকার ইতিহাসে যে ক’জন মেরুদন্ড সম্পন্ন প্রেসিডেন্ট ছিলো তাদের মধ্যে John F. Kennedy হচ্ছেন অন্যতম। উল্লেখযোগ্য আরও দু’জন হচ্ছেন Abraham Lincon ও Andrew Jackson। ব্যক্তিত্ব, মেরুদন্ড এবং আত্মমর্ঝাদার প্রতিভূ আরও দু’একজন রয়েছেন, তবে এখানকার আলোচনায় তা’ মূখ্য নয় বিধায় বিষয়টি এখানে এড়িয়ে যাওয়া হলো।

তবে সমস্যা হচ্ছে ব্যক্তিত্ব ও নীতিজ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি মাত্রেই আক্রমনের লক্ষ্যস্থল হয়ে যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে যুগে যুগে তা-ই দেখা গেছে। জাজ্বল্যমান উদাহরণ ইসলামের ইতিহাস। চার খলিফার তিনজনই Assacination-এর শিকার। খোদ ইসলাম ধর্মের পয়গম্বর হজরত মোহাম্মদ (স.)-ও তাই।

এ ধরণের মানুষেরা অশুভ চক্র ও আন্ডার ওয়ার্ল্ডের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। কেনেডিও তার ব্যতিক্রম নয়। যেমন ব্যতিক্রম নয় Lincoln ও Jackson. এদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছিলো। কেন, তার সব আলোচনা এখানে সম্ভব নয়। এখানে মোটাদাগে কেনেডি’র হ্ত্যার ব্যাপারে অতি সংক্ষিপ্তভাবে দু’একটি পয়েন্ট বলা হবে।

হ্যাঁ, কেনেডিকে হত্যা করা হয়েছিলো মূলত দু’টি কারণে। তার একটি হচ্ছে, কেনেডি CIA’র শাসনের অবসান চেয়েছিলো। আর অন্যটি হচ্ছে, সে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধ করতে চেয়েছিলো। তাহলে কী CIA, FBI আমেরিকার প্রেসিডেন্টের অধীনে নয়?! হ্যাঁ, অধীনে, তবে তা’ কাগজে কলমে। বাস্তবে নয়।

তবে কা’র অধীনে? এটাই খুব জটিল প্রশ্ন। গভীর প্রশ্ন। বস্তুতঃ CIA, FBI এসব চলে অদৃশ্য শক্তির ইশারায়। সেই অদৃশ্য শক্তি, যাদের দেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না। দেখা বা ছোঁয়া গেলেও তাদের বিরুদ্ধে অঙ্গুলি তুলতে কেউ সাহস করে না।

করলে তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। যেমন নিতে হয়েছিলো কেনেডি, লিংকন এবং জ্যাকসনকে। এবং এ ব্যাপারে কেনেডি’র সেই বিখ্যাত ভাষণ প্রনিধানযোগ্য। নীচে তার ভাষনের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো। এ বিখ্যাত ভাষনে কেনেডি CIA সহ সকল সিক্রেট সোসাইটির সমালোচনা ও তাদের অবসান চেয়েছিলো।

ঐ ভাষণে বোঝা যায় কেনেডি তাল মিলিয়ে চলার মানুষ নয়। খাপ খাইয়ে চলার মানুষ নয়। দৃশ্যমান ক্ষমতার আড়লে আসল ক্ষমতাবান অদৃশ্য শক্তির, Secret Society’র, সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি। আপোষ করতে পারেনি। সে ছিলো জাগ্রত বিবেকের মানুষ।

স্বাধীনচেতা মানুষ। মেরুদন্ডসম্পন্ন মানুষ। রিগান, বুশ আর ক্লিনটনের মতো মেরুদ্ন্ডহীন ছাগল নয়। অনেকেরই অজানা যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অপর নাম স্পেলিস্ যুদ্ধ (Spelly’s War)। পুরোটা বললে বলতে হয় – Cardinal Spellman’s War।

আর এই Cardinal Spellman হচ্ছে American Roman Catholic Pope। প্রায়ই সে ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালীন War Front-এ গিয়ে আমেরিকান সৈন্যদের উৎসাহ দিতো এবং বলতো “তোমরা হচ্ছো “Soldiers of Christ”। তাছাড়া যুদ্ধে আমেরিকান ফোর্সের কমান্ডারও ছিলো রোমান ক্যাথলিক। তদুপরি সে একজন CFR (Council on Foreign Relation) মেম্বারও বটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে CFR খুবই শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠান।

আমেরিকার অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখানেই নেয়া হয়। তারাই আগে থেকে ঠিক করে “কে” প্রেসিডেন্ট হবে-না-হবে। রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণ এখানেই হয়। যাই হোক, ঐ Spellman নিয়ন্ত্রিত হতো Vatican Jesuits-এর দ্বারা। অর্থাৎ Jesuits General-এর দ্বারা।

প্রশ্ন হচ্ছে Jesuits Genetral তথা Jesuits-রা কেন ভিয়েতনাম যুদ্ধ চেয়েছিলো? তার প্রধান দু’টি কারণ এখানে উল্লেখ করবো। একটি কারণ হচ্ছে – ভিয়েতনামের জনগণ ছিলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। কিন্ত তারা সহজে ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে চাইতো না। শতশত বছর ধরে Jesuits-রা ভিয়েতনামে অবস্থান করলেও ভিয়েতনামী জনগণ ও সরকারের উপর তেমন নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে পারেনি। তাছাড়া ক্যাথলিক রোমের উপস্থিতিও তাদের পছন্দ ছিলো না।

ফলে যা’ হবার তাই-ই হলো। অর্থাৎ সোজা আঙ্গুলে ঘি না-উঠলে আঙ্গুল বাঁকা করতেই হয়। তাই যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ভিয়েতনামীদের “শুদ্ধিকরণের” (Purge) ব্যবস্থা করা হলো। যেভাবে তারা পলপটকে (Pol Pot) দিয়ে Cambodia-কে “শুদ্ধি” করেছিলো লক্ষলক্ষ মানুষ হত্যা করে। চীনে করেছিলো মাও সেতুং-কে দিয়ে।

উল্লেখ্য মাও সেতুং পুরোপুরি Jesuits দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলো। মোটামুটি লাওস (Laos), কম্বোডিয়া (Cambodia), থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম – এদেরকে কব্জা করার দরকার ছিলো Jesuits-দের। কিন্তু ভিয়েতনামীরা বাগে আসছিলোনা দেখে তাদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো। তবে উল্লিখিত কারণটির চাইতে আরো বড় কারণ ছিলো “মাদক ব্যবসা” (Drug Trade)। উল্লেখ্য তখন (এবং এখনও) পুরো পৃথিবীর ড্রাগ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো Vatican।

সমস্ত হেরোইন, আফিম এবং কোকেইন Cambodia হয়ে আমেরিকায় পৌছেঁ যেতো। এর সমস্ত নিয়ন্ত্রণ ছিলো Vatican এর। এজন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে Vaticanএর এক ধরণের চুক্তিও হতো। এ চুক্তির নাম Concordate। উল্লেখ্য হিটলার, মুসোলিনি এবং ফ্রাংকোর (Spanish Dictator) সাথে Corcordate খাকলেও ভিয়েতনামের সাথে ছিলো না।

ফলে এখানে ঐ গোপন Concordate চুক্তি করা জরুরী হয়ে পড়েছিলো। তাই যুদ্ধের মাধ্যমে শায়েস্তা করা ছাড়া আর উপায় ছিলো না। মোদ্দা কথা হচ্ছে “ভিয়েতনামকে বাগে আনা” এবং “ড্রাগ ব্যবসা” এ দু’টিই ভিয়েতনাম যুদ্ধের মূল কারণ। আর অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে হ্ত্যা করা হয়েছিলো – সে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধ করতে চেয়েছিলো আর CIA –এর সাথে তার বনিবনা হচ্ছিলো না ও CIA নামক Intellegence Community সে বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলো। আর বিদ্যমান নানান সিক্রেট সোসাইটির প্রকাশ্য সমালোচনা শুরু করেছিলো, যা’ তার ভাষণে ফুটেঁ উঠেছে।

সাবেক জেসুইট্‌স্ জেনারেল, যা'র নির্দেশে কেনেডিকে হত্যা করা হয়েছিলো। কয়েক শ’ বছরের Jesuits এর কালো ইতিহাস ব্লগের এক দুই পর্বে লিখে ফুরোনো যাবে না। সংক্ষেপে বললে বলতে হয় – ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ থেকে এই Jesuits সংগঠনটিকে অতীতে প্রায় ৩৯ বার নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। এতেই বোঝা যায় – এই সংগঠনটিতে গুরুতর কোন গন্ডগোল ছিলো। এমন কিছু ছিলো যা’ হজম হবার নয়।

সহ্য করবার নয়। তাই ঐ সব দেশ বাধ্য হয়েই এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলো। এমনকি জাপান থেকেও ঐ সংগঠনটি ১৬৩৯ সালে নিষিদ্ধ ও বিতাড়িত হয়েছিলো তৎকালীন জাপানী ডাইনেষ্টির দ্বারা। কিন্তু তারা ঐ অপমানের কথা ভোলেনি। প্রায় ২০০ বছরের অধিক সময় পরে হলেও ঐ অপমানের প্রতিশোধ তারা নিয়েছিলো।

জাপানের ঐ রাজবংশকে তারা সমূল বিনাশ করেছিলো। Jesuits এর অর্থায়নে আমেরিকান বাহিনী B-29 বোমারু বিমান থেকে শত শত আগুনে বোমা নিক্ষেপ করে জাপানকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিলো। উল্লেখ্য Jesuits-রা Lockheed, Boeing, McDonald-Douglas, and Grumman প্রভৃতির মালিক। এই তথ্য পাওয়া যাবে বিখ্যাত দার্শনিক লেখক Avro Manhattan এর The Vatican Billions-এ। Jesuits সম্পর্কে President Abraham Lincoln এর একটি উক্তি দিয়ে Jesuits পরিচিতি শেষ করতে চাই।

President Lincoln এর বিখ্যাত সেই উক্তিটি ছিলো – The Jesuits never forget nor forsake। অর্থাৎ Jesuits-রা কখনও ভোলে না, কখনও ছাড়ে না। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস। President Lincoln-কে-ও এই Jesuits-রাই হত্যা করেছিলো। সে আর এক লম্বা ইতিহাস।

আর এক দিন আলোচনা হবে। তবে শেষ করার আগে আর একটি কথা না-বললেই নয়। কারো কারো মনে প্রশ্ন উঠতে পারে – বিদ্যমান নানান সিক্রেট সোসাইটি সমূহের মধ্যে Jesuits-দের অবস্থান কোথায়? হ্যাঁ, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বটে! প্রকৃতই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। হ্যাঁ, ঐ প্রশ্নটির জবাব পাওয়া যাবে বেশ পুরনো একটি পত্রিকায়। পত্রিকাটির নাম The Saturday Evening Post (January 17, 1969)।

তথ্যটি উঠে আসে সে সময়কার Jesuits General এর সাক্ষাৎকার থেকে। এই জেনারেল ১৯৬৩ সালে পদত্যাগ করে। এরই নির্দেশে প্রেসিডেন্ট কেনেডিকে হত্যা করা হয়। এবং ঐ সাক্ষাৎকার থেকে উঠে আসে বিভিন্ন সিক্রেট সোসাইটি সমূহের চিত্র। ঐ চিত্র থেকে বোঝাই যায় Jesuits এর ক্ষমতা ও প্রভাব পতিপত্তি।

আগামী পর্বে সমাপ্ত .................  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।