আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যেই দশটি কথা ভুলেও আপনার অফিস বসকে বলা যাবে না।

পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/ একটি পর্বে চাকরীর ইন্টারভিউ নিয়ে কিছু কথা লিখেছিলাম। অনেকই বেশ পছন্দ করেছিলেন। সেহেতু এবার লিখব তার পরবর্তী স্টেপ। ভাল চাকরী রক্ষা করা এবং প্রমোশন পেতে বসের সামনে যেই সমস্ত কথাবার্তা থেকে বিরত থাকতে হবে তা নিয়ে।

আশাকরি এবারও আপনাদের ভাল লাগবে। ১) “That's impossible.”/ এটা কখনোই সম্ভব নয়। - আপনার বস যখন আপনাকে বা আপনার টিমকে কোন এসাইনমেন্ট বা কোন টার্গেট দেয় তবে আপনি কখনো বলতে পারবেন না যে That's impossible। বা এটা আমার বা আমাদের দ্বারা সম্ভব হবে না। মনে রাখতে হবে যে, আপনার দক্ষতা এবং পজিশন সমন্ধে বসের সম্যক ধারনা আছে।

কাজেই আপনার আওতার বাহিরের বড় কোন কাজ দেয়া হলে সেটা আপনার জন্য সুভাগ্যের মনে করে খুবই মনযোগের সাথে সচ্ছ ভাবে কাজ করার চেষ্টা করুন। কাজটি যদি আপনার দ্বারা অসম্ভবই হয় তবে আপনি কৌশলে বন্ধুবান্ধবের থেকে পরামর্শ্ব নিতে পারেন। সবচেয়ে ভাল হয়, অফিস শেষে বসের থেকে অনুরোধ করে কিছুটা সময় চেয়ে নিয়ে কাজটি কিভাবে সুন্দর করা যায় তার একটি গাইড লাইন চাওয়া। এতে বস আরো বেশি খুশি হবেন। ২) ''আমরাতো সব সময়ই এ ভাবেই/এর সাথেই করে থাকি'' না বলা।

আপনি একটি কাজ একভাবে করে অভ্যস্ত তার মানে এই নয় যে কাজটি অন্যভাবে করা সম্ভব নয়। বা অন্য কোন পার্টনারের সাথে করা সম্ভব নয়। নতুন পন্থায় কাজ করার মানসিকতা থাকাটা খুবই পজেটিভ দিক। দেখবেন আপনার নতুন ওয়েটাতেও আপনি একদিন অভ্যস্ত হয়ে পরেছেন। ৩) That's not my job/এটাতো স্যার আমার কাজের মধ্যে পরে না।

- আপনাকে যদি আপনার কলিগের কাজ করতে দেয়া হয় ভাবতে হবে নিশ্চয়ই এখানে কোন কারন আছে। হয়ত আপনার কলিগ ঠিক মত কাজটি করতে পারছিল না। সেক্ষেত্রে আপনি লাকি। আপনি স্মার্টলি কাজটি শেষ করে আপনার উপর তার আস্থার প্রতিদান দিন। এতে করে আপনার কাজ করার মানসিকতা ও স্কিল বৃদ্ধি পাবে যা প্রমোশনের ক্ষেত্রে খুবই কর্যকর হয়।

৪) অমুকের সাথে কাজ করতে পারব না। - এটি একটি নেগেটিভ এটিটিউড। টিমে কাজ করতে হলে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। সে ক্ষেত্রে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ করা ঠিক হবে না। আপনি টিমের সাথে কাজ করতে থাকুন, কোথাও আটকিয়ে গেলে বস নিজেই বুঝবেন কার কারনে কাজ আটকিয়ে আছে।

ও হ্যা, নিজেকে কখনোই অন্যের জন্য বিরক্তিকর বানাবেন না। আপনি যদি নারী হয়ে থাকেন এবং সেক্সুয়াল হেরেজমেন্টের শিকার হোন তাহলে তাৎক্ষনিক বসকে নোটিস করুন, এক্ষেত্রে বিলম্ব বা লজ্জা করলে নিজের দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। আর পুরুষদের জন্য এই সমস্ত অভিযোগ চাকরী জীবনের ইতি টেনে আনতে পারে। ৫) ওপস, আপনার নিকট বিষয়টি আসক করা উচিত ছিল কিন্তু আমি আপনাকে ডিস্টার্ব করতে চাইনি। - এগুলো ১০০% নেকামি কথাবার্তা।

এই থেকে প্রমানিত হয় যে আপনি প্র্যাকটিকাল নন। আপনার ভিতর দুর্বলতা আছে যার জন্য আপনি বসের করুনা পেতে চান। আসলে কাজের ক্ষেত্রে কোন কম্প্রমাইজ চলে না। কাজের বিনিময় কখনো শপথ বা ভক্তি দিয়ে হয় না। ৬) আমি ভবেছিলান আপনি জানেন।

- সবাই সব কিছু জানবে সেটা হয় না। অনেক সময় আপনি একটি বিষয় বসের চেয়ে ভাল বুঝেছেন তাই বলে আপনি বসকে লজ্জা দেবার কখনো চেষ্টা করবেন না। বরং বিষয়টা যেন বস বুঝার জন্য কিছুটা সময় পান বা বস কোন কৌশল অবলম্বন করতে চাইলে আপনি সেই সুযোগ করে দিন। ৭) আমি অবকাশ যাপনের জন্য অমুক দিন গুলোতে ছুটি নিতে চাই। - হয়ত ঐ দিন গুলি আপনার জন্য বেশ অনুকুলের কিন্তু অফিসের জন্য নয়।

এবং আপনি বসও নন। কাজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারেন না। তাই বসের ''ওকে'' না পাওয়া পর্যন্ত নিজের ভ্যাকেশন ডেট ঠিক করা যাবে না। উত্তম পন্থা হলো আগামী এক মাসের কোন এক সপ্তাহে আপনি ভেকেশনে যেতে চাচ্ছেন সেটা বসকে বুঝিয়ে দেয়া। তখন বসও অফিসের পরিস্থিতি অনুযায়ি সঠিক সময় আপনাকে ছুটি দিয়ে দিবেন।

৮) আপনি আমার ফেসবুক রিকোয়েষ্ট গ্রহন করেন নি কেন? - বলা হয়ে থাকে বসের সাথে ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক থাকা কাজের জন্য খুবই ভাল। সেক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইয়াহু ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনারা সংযুক্ত থাকতে পারেন। সে জন্য আপনি বসকে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠাতেও পারেন। আবার এটাও মনে রাখতে হবে যে, বস কিন্তু আপনার বন্ধু না, পরিবারের কেহ না। কাজেই সে তার এফবিতে তার বন্ধু বান্ধব এবং পরিবারের সাথে যা শেয়ার করবেন তা হয়তো আপনাকে জানাতে চাইবেন না।

কাজেই কখনো যদি আপনার রিকুয়েষ্ট রিফিউজ হয় তাহলে ২য় বার চেষ্টা করবেন না এমনকি রিফিউজ করার কারন ও কখনো জিজ্ঞে করবেন না। সবচেয়ে ভাল পন্থা হলো, বসের পুর্ব ঈশারা ব্যাতিত এই ধরনের রিকুয়েষ্ট না পাঠানোই ভাল। ৯) আমার বেতন আমার কাজ অনুযায়ি যথেষ্ট নয়। - এই ধরনের স্টেটমেন্ট ভবিষ্যত প্রমোশনের অন্যতম অন্তরায়। যেই সমস্ত অফিসে উপরে যাবার সুযোগ আছে সেই সমস্ত অফিসে কখনোই বেতন ভাতা নিয়ে কমেন্ট করবেন না।

এমনটা করলে বস আপনার উপর বিরক্ত হবেন। আপনি যদি মনে করেন সত্য- সত্যই আপনি আন্ডারপেইড তখন আপনি সরাসরি বসের সাথে কথা না বলে আপনার সুপারভাইজারের সাথে হালকা আলাপ করে বুঝে নিন যে আসলে আপনার পজিশনের জন্য বাজেট কত। যদি এখানে কিছুটা বারানো সম্ভব মনে হয় তবেই কেবল বসের দৃষ্টিতে আনার চেষ্টা করুন অন্যথায় ধৈর্যই উত্তম পন্থা। ১০) এমনটা না হলে আমি চাকরি ছেড়ে দিব। - যদি আমাকে প্রমোশন না দেয়া হয়, বা অমুক কাজটি আমাকে না দেয়া হয় বা আমার বুনাস কিংবা কোয়াটার না দেয়া হয় তবে আমি চাকরী ছেড়ে দিব।

এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই কৌশলে সামাল দিতে হয়। ডিরেক্টলি বলে ফেললে বস একরকম চ্যালেন্জে পরে যায়, বা আপনার সাথে জয় পরাজয়ের একটি বিষয় চলে আসে। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বস হারমানতে চান না। এবং ভবিষ্যতে আপনি ফিরে আসার সুযোগ ও পাবেন না। বরং আপনি যখন কম্পানির নিকট জোড়ালো ভাবে কোন কিছু ডিমান্ড করবেন তখন তারাই বুঝে ফেলবে যে আপনার ডিমান্ড মানা না গেলে আপনি চাকরী ছেরে দিতে পারেন।

সেক্ষেত্রে আপনি অফিসকে সময় দিন। যাতেকরে তারা আপনার ডিমান্ড রাখতে পারে। তখন কম্পানি যদি আপনার মুখাপেক্ষি হয় তবে তারা আপনার দাবি মেনে নিয়ে হয়ত কিছুদিন সময় চাইবে। আর যদি আপনার ডিমান্ড মানা সম্ভব না হয় তবুও তারা আপনকে স্পষ্ট করে তাদের অবস্থান জানিয়ে দিবে। তখন আপনিও আপনার জন্য মংগলজনক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।