আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যার চিৎকার যতদূর

শুদ্ধতার আগুনে যেন সতত পুড়ি আমি ছিন্নমূল বলে বড্ড ঈর্ষা-কাতর হয়ে তাকাই, উঁচু-উঁচু রঙচঙে বাড়িগুলোর দিকে। আর তাদের মালিকদের এমনকি যারা যেখানে বসবাসের অধিকারটুকু কিনে নিতে পেরেছেন তাদের উদ্দেশ্যে মুখ-ভর্তি দুর্গন্ধময় থুতু মাটিতে নিক্ষেপ করে বলি, 'চোরের দল!' নেংটিপরা বৃদ্ধ তার আরো দুর্গন্ধময় উঁকুন বিজবিজ করা চুল-দাড়ির জটা নাড়িয়ে হাসেন। বলতে ইচ্ছে হয়, 'ওরে হালের দুর্বাসা, তুই সর!' অথচ আমার কণ্ঠ মিইয়ে আসে। মুহূর্তকাল আগেই আমি বর্জ্য ফেলেছি মাটিতে। খানিকটা হলেও নোংরা করেছি পৃথিবীকে।

আমার অন্তর্গত নোংরামি সমান তেজে দুর্গন্ধের জালে পেঁচিয়ে ধরেছে আমার কণ্ঠ। "অক্ষমের তর্জন-গর্জন সার" কথাটিকে প্রতিষ্ঠা দিতেই হয়তো চিৎকার করে বলে ফেলি, 'সর ব্যাটা দুর্বাসার বংশ!' খানিকটা আত্মপ্রসাদ আমাকে তাজা করে ফের। হালের দুর্বাসা বলেন, 'আমার সামর্থ্য আছে নেংটি পরার। আমি যদি ভদ্রলোকদের প্যান্ট ধরে টানি, তা কি আমাকে মানাবে? প্রজনন ক্ষমতা যার নেই, পরের সন্তানদের যদি সে পঙ্গপাল বলে ঝাল মেটায়, এতে কি তার প্রজনন ক্ষমতা ফিরে আসবে? তোমরাই তো বলো, উত্থানশক্তি রহিত পুরুষ আবার পুরুষ নাকি? 'ব্যাটা জ্ঞান দিস?' এবার নেংটিপরা লোকটি নয়, আমি হাসি। খুশি মনে ভাবি, ঝেড়ে দিলাম ব্যাটাকে আবার! কিন্তু নেংটিপরা এবার হাসেন তার চোখ দিয়ে।

নিচু স্বরে বলেন, অক্ষমের চিৎকার সম্বল। মরুভূমিতে বালির উল্লাস। অনুর্বর জমি অগাছাদের সাম্রাজ্য। তুমি চিৎকার করে যদি বলো, ওখানে কেন ফসল ফলে না? আমি তোমাকে বলবো, 'যোগ্যতা আর সামর্থ্য দিয়ে ফসল ফলাও না কেন? হাল-গরুহীন লোকের কাছে খড়ের স্তূপ হয়তো দৃষ্টিকটু। কিন্তু সেই খড়ই গৃহস্থের চোখে সম্পদ।

অহংকার। তোমার অক্ষমতা দিয়ে অন্যের যোগ্যতা আর সামর্থ্যকে ছোট করতে চেয়ে তুমি কিন্তু বড় হলে না বরং জোব্বা গায়েও তুমি নেংটি পরার যোগ্যতা হারালে। তুমি কি বুঝবে সে কথা? আড়ালে হাসি আমি। মূর্খ ব্যাটা বুঝিস কি তুই? তোর যুগ গেছে। এখন যার চিৎকার যতদূর যাবে, লোকে চিনবে তাকেই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।