আজ ও আছো / আমার দীর্ঘশ্বাসের বিশুদ্ধ তরজমায়। তিন
চার
-নিলয়। এই নিলয়।
-বল্। নিলয় এমনভাবে জবাব দেয় যেন মনে হচ্ছে রুবির কাছে থেকে অনেক দূরে।
অথচ তারই পাশে একই রিকশায় বসে আছে। সে তাকিয়ে আছে আরেকদিকে।
-বল্ মানে? আজ আবার তোর কি হয়েছে? তোর বার্থডে তে রিকশা করে ঘোরা হয় নাই তো কি হয়েছে? আজতো ঘুরছি। আরে বাবা এদিকে তাকা না। দেখ না।
আজ তোর সাথে রিকশা করে ঘুরবো বলে কেমন সেজে এসেছি।
নিলয় কিছু বলে না। সে এবার আকাশের দিকে তাকায়।
-কিরে আকাশে কি দেখছিস্।
-কিছু না।
আকাশ আমার ভাল লাগে।
-আমাকে ভাল লাগে না।
-না ।
-মানে?
-তোকে তোর মত লাগে। বলেই নিলয় আবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়।
-আচ্ছা। সেইজন্যই ঘাড় ঘুরিয়ে সুন্দরী মেয়ে দেখা হচ্ছে না। ঠিক আছে তুই একা একা রিকশা করে ঘুর। আর শহরের সব সুন্দরী মেয়েদের দেখে দেখে তোর চোখের ক্ষুধা মিটা। আমি এখনই নেমে যাচ্ছি।
এই রিকশাওয়ালা ভাই রিকশা থামান।
-এই কি করো। কি করো। রাস্তার মাঝে সিন ক্রিয়েট করছো কেন?
-আমি সিন ক্রিয়েট করি না। আপনি নিজে যে ড্রামা করে চলেছেন সেই তখন থেকে।
সেটা কিছু না না।
-সরি।
-আচ্ছা সরি হতে হবে না আর।
-আসলে রুবি আমি কি ভাবছি জানো? আমাদের জীবনের এতটা সময় আমরা হেলায় নষ্ট করলাম কেন?
-মানে?
-না ভাবছি আমরা এমন কত রিকশা করে ঘোরার অলস দুপুর নিজেদের অজান্তেই অপচয় করেছি।
-তাই না?
-সত্যি।
আজ আমার কাছে পুরো শহরটাকেই অন্যরকম লাগছে। আকাশটাকেও আগের থেকে অনেক ভাল লাগছে। ভাবছি এই আকাশ এতদিন কোথায় ছিল।
-আহা কি আমার ভাবুক। কই যাওয়া যায় বলতো।
-কোথাও না। এই রিকশা অনন্তের পথ ধরে অনন্তকাল চলবে। আর আমরা অসীম আকাশের নিচে নিতান্তই চক্কর খাবো ভাবনার জগতে।
-কিরে কবিতা লেখা শুরু করছিস্ নাকি?
-প্রেমে পড়লে তো কবিতা আসতেই পারে।
-তুই প্রেমে পড়েছিস্! কার?
-আকাশের ।
-তাই। তাহলে আকাশের কাছে চলে যা।
-আকাশ কি আমাকে বুকে টেনে নেবে?
-আকাশকে জিজ্ঞেস কর।
-আকাশ তো নিরুত্তর।
-কবিও নীরব।
-হয়তো বসন্ত আসেনি।
-কবি কি অন্ধ?
-আলোতে জ্বলসে গেছে চোখ।
-মন ও কি মরে গেছে?
-সে তো মনের খোঁজে ব্যস্ত।
-মন কি আকাশে ওড়ে?
-মন তো মনের কাছে।
-তবুও কবি বিভ্রান্ত!
কথার পিঠে কথার খেলা ভালই জমে।
হঠাৎই হেসে উঠে দু'জনে। রিকশাওয়ালা পেছনে ফিরে তাকায়। প্যাডেলে জোরে পা চালায়। অনন্তের পথে রিকশা ছোটে অনন্ত স্বপ্নযাত্রী দু'জনকে নিয়ে। রুবির খোলা চুল এলো বাতাসে নিলয়ের চোখ মুখ মন ছুঁয়ে যায়।
সে স্বপ্নরাজ্যে ভাসে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।