আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশ সংকট : উত্তোরণ ভাবনা

কসমিক ট্রাভেলার (১) যেমন ছিল উপকূল : 'গোয়াল ভরা গরু, গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ' এই ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকুলীয় অঞ্চলের পরিচয়, আর সামগ্রিক ভাবে এ দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে বলা হত 'মাছে ভাতে বাঙালী'। পুকুর, খাল-বিল ও সামুদ্রিক কয়েক শ' প্রজাতির মাছ, গরম্ন-ছাগলের দুধ, দধি, ঘি, মাখন, ঘোল, গৃহ পালিত হাঁস-মুরগীর ডিম ও গোশ, শাক-শব্জি, সাথে সুগন্ধি বালাম চালের ভাত; এখন সব স্বপ্নের মত মনে হয়। কিন্তু বেশী দিন আগের কথা নয়, সত্তরের দশকের শেষ পর্যন্ত্ম এমনকি কোন কোন এলাকায় আশির দশক জুড়ে এমনই ছিল আর্থ-সামাজিক অবস্থা। বিশ্বের যে কোন অঞ্চলের চেয়ে সুস্বাধু এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত এসব খাদ্যদ্রব্যের ভোক্তারা তথা এ অঞ্চলের মানুষেরা ছিলেন সুস্বাস্থ্য ও সুঠাম দেহের অধিকারী। সমাজে ছিল অসাধারণ সামাজিক সম্প্রীতি, আতিথেয়তা, সরলতা, উদারতা, মানসিক প্রশান্ত্মি ও চমৎকার সামাজিক শৃঙ্খলা।

(২) সংকটের সূচনা : ষাটের দশকে ভারত সরকার কলকাতা বন্দরকে অধিক পরিমান পলির হাত থেকে রক্ষা এবং শুস্ক অঞ্চলে মিষ্টি পানির প্রবাহ সৃষ্টির মাধ্যমে চাষাবাদের ব্যাপক সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে আন্ত্মর্জাতিক পানি আইনের সুস্পষ্ট লংঘন করে বাংলাদেশ সীমান্ত্মের ১৮ মাইল উজানে গঙ্গা নদীতে ফারাক্কা বাঁধ নির্মান করে। এর অবশ্যম্ভাবী পরিনতি হিসেবে বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের নদীগুলো শুকিয়ে এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির স্ত্মর নীচে নেমে যেয়ে মরম্নকরণ প্রক্রিয়া শুরম্ন হয় এবং দক্ষিণ অঞ্চলে বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উজানের মিঠা পানির প্রবাহ কমে ভাটার লোনা পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ফসল উৎপাদন ও পরিবেশের মারত্মক অবনতি হতে শুরম্ন করে। ফারাক্কা বাঁধের ফলে কলকাতা বন্দরকেন্দ্রিক পলির প্রবাহ কমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে জোয়ারের পানিতে পলিমাটির পরিমান বেড়ে গেছে। লবনাক্ততা নিয়ন্ত্রনের জন্যে এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড এ অঞ্চলে প্রায় অর্ধশত পোল্ডার বা অষ্টমাসী গ্রাম রক্ষা বাঁধ তৈরী করে। এ ব্যবস্থায় বর্ষার চার মাস অবাধ জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হত এবং অন্য ৮ মাস খাল-বিল বাঁধ দেয়া হত।

এতে হিতে বিপরীত হয়। ৮ মাস বিলে বাঁধ থাকার সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা চিংড়ি চাষ শুরম্ন করে। ক্ষমতার মহড়া অথবা জমির মালিককে নাম-মাত্র হারির টাকা দিয়ে চিংড়ি চাষীরা সমস্ত্ম বিলের মালিক বনে যায়। পানি নিয়ন্ত্রনে তাদের স্বেচ্ছাচারিতার ফলে কৃষকের শেষ ভরসা- আমন ধান উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে, অপর দিকে চিংড়ি হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানী পন্য। এভাবে এ অঞ্চলের গুটিকতক লোক রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে।

গড়ে উঠেছে নতুন সামন্ত্ম্য শ্রেণি, শক্তিশালী সিন্ডিকেট, আর ক্ষতিগ্রস্ত্ম হয়েছে বাকি সব মানুষ, প্রাণী, পরিবেশ ও প্রকৃতি। ইদানিং কোন কোন বিলে জমির মালিকেরা মিলে সমবায়ের ভিত্তিতে চিংড়ি চাষ করছে। আবার ক্ষুদ্র আকারের জমির মালিকেরা নিরম্নপায় হয়ে ধানী জমিতে গর্ত করে মাটি কেটে ভেড়ি বাঁধ দিয়ে ধান চাষ বন্ধ করে চিংড়ি চাষ শুরম্ন করছে। বাড়ির আঙিনা, বাগান, রবি শস্যের ক্ষেত, যেখানেই পানি জমানো সম্ভব হয়েছে সেখানেই চিংড়ি চাষ শুরম্ন করেছে মানুষ। এতে সামন্ত্ম্য প্রথার কিছুটা সমাধান হলেও বেড়েছে অন্যান্য সমস্যা।

একটা সময় তারা অতি মুনাফার লোভে সারা বছর বিলে চিংড়ি চাষের জন্যে লোনা পানি আটকে রাখা শুরম্ন করেছে, যদিও মৃত্তিকা বিজ্ঞানী, কৃষি বিজ্ঞানী, পরিবেশবাদী এমনকি খোদ চিংড়ি চাষ গবেষকরাও সারা বছর বিলে পানি আবদ্ধ রাখার অনুমোদন দেননি। (৩) এখন যেমন আছেন উপকুল বাসী : সারা বছর বিলে লবন পানি আটকে রাখার কারণে বিলে বসবাসকারী কয়েকশ' প্রজাতির দেশীয় মাছের আবাস ও প্রজনন বন্ধ হয়ে সে প্রজাতিগুলো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলে এখন চিংড়ি রেনুও আসতে পারে না। তাই ঘের মালিকের প্ররোচনায় ফসলহানীর শিকার নিঃস্ব চাষী অতি ক্ষুদ্রাকৃতির চিংড়ি রেনু ধরতে তার চেয়েও সূক্ষ কারেন্ট জাল ফেলেছে নদী-নালায়। একটি বাগদা রেনু ধরতে শত শত দেশী মাছের পোনা ধ্বংস করা হচ্ছে।

নিষিদ্ধ ঘোষনা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না কারেন্ট জাল। এভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আরো শত শত প্রজাতির মাছ ও বিরল জলজ প্রানী। ধ্বংস হচ্ছে জীব বৈচিত্র। ব্যাপকভাবে কমে গেছে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন। সৃষ্টি হয়েছে আমিষের মারাত্মক ঘাটতি, বেকার হয়ে পড়েছে কৃষক ও জেলে পরিবারগুলো।

বিলে লবনাক্ত পানি আবদ্ধ হয়ে এবং জোয়ারের পানি ও পলিমাটি উঠতে না পেরে একমাত্র ফসল আমন ধান উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। উৎপাদন ব্যয় তুলতে না পেরে অধিকাংশ বিলে ধান লাগানো বন্ধ করে দিয়েছে কৃষক। হারিয়ে গেছে মাঠ ফসল। নেই সব্জির ক্ষেত, গবাদী পশু, হাঁস-মুরগী, ফলের বাগান। সামাজিক বন উজাড় হয়ে অনাবৃষ্টি, তাবদাহ, ঘূর্ণীঝড়, জলোচ্ছাস, শৈতঃপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

লবনাক্ততার প্রভাব পড়ছে ভূগর্ভস্থ পনিতেও। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর বেড়েছে কয়েক গুণ কিন্তু তাতে মাছ নেই; উপরস্তু যে চিংড়ি নামক সোনার হরীণের পিছনে ছুটে মানুষ এই সব কিছু ধ্বংস করেছে, সেই চিংড়ি ঘেরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উপর্যুপরি ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক ইত্যাদির আক্রমনে কৃষক আজ দিশেহারা, অসহায় ও সর্বশান্ত্ম। কৃষকের ঘরে খোরাকী ধান-চাল নেই, ঘেরেও চিংড়ি নেই। আছে শুধু জলাবদ্ধতা, বেকারত্ব, অভাব, ক্ষুধা, রোগ-বালাই, অশান্ত্মি, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তা। অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন।

অভাবের তাড়নায় দলে দলে নীরবে এলাকা ছাড়তে শুরম্ন করেছে অনেক মানুষ। লবনাক্ততার অযুহাতে জোয়ারের পানি বিলে উঠতে না দেয়ায় বিলে পলি মাটি উঠতে পারছে না। যার ফলে এ বিলগুলো প্রতিনিয়ত নীচু হয়ে যাচ্ছে এবং জোয়ারের পানির সাথে আসা প্রচুর পরিমান পলি নদীতে জমে গিয়ে নদী ভরাট হচ্ছে। এভাবে অনেক নদী মরে ফসলের মাঠ বা জনবসতি হয়ে গেছে। সেখানে একদিন নদী ছিল তা বললে এখন অনেকে বিশ্বাস করতে চাইবে না।

সেসব স্থানে সরকারী ব্যবস্থাপনায় জনবসতি নির্মিত হচ্ছে, কখনো গুচ্ছ গ্রাম, কখনো আদর্শ গ্রাম আবার কখনো আশ্রয়ন প্রকল্প নামে। নদীর চর গ্রামের সমভূমির চেয়ে উচু হয়ে গেছে। অতীতে দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে নৌ যোগাযোগের যে ব্যবস্থা ছিল তার প্রায় নব্বই শতাংশই বন্ধ হয়ে গেছে। সড়ক পথ নির্ভরতার কারণে বেড়ে গেছে পরিবহন ব্যয় ও পরিবেশ দূষণ। আজও আন্ত্মর্জাতিক বানিজ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ চলে জল পথে, অথচ বিগত তিন দশকে আমাদের দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ জলপথই বন্ধ হয়ে গেছে।

বন্দর চ্যানেলে পলি পড়ে বন্ধ হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মংলা পোর্ট। ক্ষতিগ্রস্ত্ম হচ্ছে বন্দর শ্রমিক, ব্যবসায়ী, স্থানীয় অধিবাসীসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। জোয়ার-ভাটার অভাবে লবনাক্ততার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে এবং আভ্যন্ত্মরীণ খাল ও নালাগুলো পলিতে ভরাট হওয়ায় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন বিলীন হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। (৪) যেদিকে যাচ্ছি আমরা : পলি গঠিত এ অঞ্চলের স্বাভাবিক ভূমিক্ষয়ের কারণে প্রতি বছর নীচু হয়ে যাচ্ছে ভূমি। কিন্তু তা রোধের জন্যে সমতল ভূমিতে যে পলিমাটি ওঠা দরকার, তা উঠতে পারছে না।

অপর দিকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মেরম্ন অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে এসব এলাকা স্বাভাবিক পানি স্ত্মরের চেয়ে নীচু হয়ে গেছে, সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় জলাবদ্ধতা। মানুষ ভেড়িবাঁধের মধ্যে স্বাভাবিক পানি স্ত্মরের নীচে বসবাস করছে এটা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছে না এবং দিন দিন এসব এলাকা আরো নীচু হয়ে কত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা ভাবতেও কষ্ট হয়। অবাধ জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে যে পলি মাটি বিলে ওঠার কথা ছিল, সে পলি জমে বঙ্গোপসাগরে বক্ষে উপকুল ঘেষে বিশাল দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশের জন্যে আশির্বাদ ভেবেছিলেন।

বাংলাদেশের আয়তন দশ থেকে বিশ শতাংশ বৃদ্ধির স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু এখন তাদের অনেকেই বলছেন যে, এই অস্বাভাবিক পলি-দ্বীপ সাগর বক্ষে ধ্বসে পড়ে ভয়াবহ সুনামী হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গেছে। ভেড়ি বাঁধের কারণে অন্য যে আশঙ্কাটি সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিজনিত কারণে উপকুল তলিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া তরান্বিত হওয়া। জাতিসংঘের আন্ত্মসরকার জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত্ম প্যানেল (আইপিসিসি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, 'সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা মাত্র ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেই বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটা বড় অংশ সমদ্র গর্ভে ডুবে যাবে। ' নদীমাতৃক দেশ আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ।

নদীই তার পলি দিয়ে হাজার বছর ধরে এই অঞ্চলের স্থলভূমি গড়ে তুলেছে। দেশের সেই নদী-মাকে আমরা ভেড়ি বাঁধের ফাঁদ দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নিজেরা সুখে থাকব, বাঁধ আমাদের জন্যে আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে আসবে, এমনটি ভাবার কি কোন কারণ আছে ? অবশ্যই নেই। বরং এ অবস্থা চলতে থাকলে আইপিসিসি'র বর্নিত পরিনতিই আমাদেরকে বরণ করতে হবে, সে দিন আর বেশি দূরে নয়। (৫) এখনো বাঁচার উপায় আছে : এমতাবস্থায় আমরা যদি একটু সচেতন হয়ে নিজেদের হাতে গড়া সমস্যার সমাধানে নিজেরা এগিয়ে আসি, আর এজন্যে সৃষ্ট ভয়ঙ্কর পরিনতি থেকে বাঁচতে নিজেরা সচেতন হয়ে এখনই সামান্য কষ্ট স্বীকার করি তাহলেই পরিস্থিতি স্বভাবিক হবে এবং এটাই বাঁচার একমাত্র পথ। প্রশ্ন আসবে, তাহলে এখন আমাদের করনীয় কি ? হ্যাঁ, সেটিই প্রবন্ধের মূখ্য আলোচ্য বিষয়।

আর তা হলো 'স্বেচ্ছায় বন্যা বরণ'। অর্থাৎ সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়ম, তথা প্রাকৃতিক পানি প্রবাহের উপরে আমরা অবাঞ্চিতভাবে যেসব প্রতিবন্ধকতা আরোপ করেছি তা তুলে নেয়া। সমস্ত্ম খাল-বিল, নদী-নালার উপরে নির্মিত স্থায়ী-অস্থায়ী ভেড়ি বাঁধ ও স্স্নুইচ গেট তুলে নিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা। এমনকি বিলের ভিতরে অবস্থিত রেকর্ডভূক্ত প্রকৃতিসৃষ্ট খালের ছোট ছোট শাখা-উপশাখা গুলোও উন্মুক্ত করে জোয়ারের পানি প্রত্যেকটা বাড়ির পুকুর ও আশপাশের ছোট নালা পর্যন্ত্ম পৌঁছে দিতে হবে, যার ফলে বাঁধ ও জলাবদ্ধতার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি মিলবে। এজন্যে প্রয়োজনে সরকারীভাবে 'বন্যা বরণ দিবস' নির্ধারণ করে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে একে উৎসবে পরিনত করতে হবে।

অবাধ জোয়ারে আসা পলি মাটি দিয়ে কৃষক বসত বাড়ি, বাগান, মাঠ, বিল তথা গোটা উপকুলের ভূমি উঁচু করবে, আবারো ফসল ফলাবে, ঘাস জন্মাবে, গৃহ পালিত পশু-পাখি পালন করবে, সর্বোৎকৃষ্ট জৈব সার গোবরের সাথে সর্বোৎকৃষ্ট মাটি- পলিমাটির সমন্বয়ে ফুল, ফল, ফসলের বাগান সাজাবে, পানি প্রবাহের ফলে নদী-খাল আবারো গভীর হবে, ফিরে আসবে হারিয়ে যাওয়া মৎস্যসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ, আর্থ-সামাজিক পরিবেশ আর কৃষক ফিরে পাবে তার আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা। ব্যাপক বনায়নের মাধ্যমে ঝড়, বন্যা, অনাবৃষ্টি প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রন করা যাবে। আর পূর্বপ্রস্তুতি সহকারে স্বেচ্ছায় ও উৎসব মুখরভাবে বন্যা বরণ করলে বন্যা ও জলোচ্ছাসজনিত ক্ষয়-ক্ষতি সহজেই রোধ করা যাবে। আর এটা না করলে কী ক্ষতি হবে ? হ্যাঁ, ভয়ঙ্কর পরিনতি হবে। এই কয়েক দশক ধরে প্রকৃতির বিরম্নদ্ধাচরণ করে আমরা নিজেদের হাতে যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছি তা দিনে দিনে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।

এমনিতেই অনেক বিলম্ব হয়ে গেছে। পদক্ষেপ নিতে যত বিলম্ব হবে সমস্যর জটিলতা তত বৃদ্ধি পাবে, সমাধান তত কষ্টসাধ্য হবে এবং একটা সময় তা অসম্ভব হয়ে পড়বে। আমরা স্বেচ্ছায় বন্যা বরণ না করলে বন্যা, জলাচ্ছাস বছর বছর বাঁধ ভেঙ্গে আমাদেরকে ডুবাবে, বন্যার পানি আবদ্ধ হয়ে থাকবে, যেমনটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে। তার সাথে বাড়তে থাকবে খরা, ঘূর্ণিঝড়, সুনামীসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রকৃতি ভয়ঙ্করভাবে ফুঁসে উঠে মানুষের সাথে যুদ্ধ করে উপকুলকে মানুষ বসবাসের অনুপযোগী করে তুলবে, যার পূর্বাভাষ আমরা সাম্প্রতিক বছর গুলোতে বিভিন্ন ভাবে টের পাচ্ছি।

নদ-নদীর অবাধ প্রবাহের গুরম্নত্ব উপলব্ধি করে একটি সময় আমাদের পূর্ব পুরম্নষেরা খাল খনন করতেন, আমাদের দেশপ্রেমী জাতীয় নেতারা নিজের হাতে খাল খননের উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। আমরা তার সুফল পেয়েছি। অথচ সামান্য কয়েক বছরের ব্যবধানে আমরা এটা ভূলে গেছি। এখন আমরা খাল খননের পরিবর্তে নতুন নতুন বাঁধ, স্স্নুইচ গেট, অপরিকল্পিত ব্রিজ, কালভার্ট নির্মানের মাধ্যমেই উন্নয়নের কথা ভাবছি। এগুলোতে নিঃসন্দেহে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি অর্জিত সম্ভব হয়েছে।

যারা এগুলো করেছেন, মানুষ তাদের কথা চিরদিন মনে রাখবে। কিন্তু বন্দর ও নদীপথগুলোকি হারিয়ে যায়নি এই বাঁধগুলোর কারণে ? আবার অবাধ জোয়ার-ভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমান অস্ত্মিত্বের সংকট সৃষ্টি হওয়ার পিছনে এগুলোর ভূমিকা কি বড় নয় ? কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এ অঞ্চলের অনেক পিলার ব্রিজ নির্মানের ২/৪ বছর পর নদী পার হতে ব্রিজে ওঠা লাগে না, নদীর ভিতর দিয়ে হেটেই পার হওয়া যায়। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ওগুলো দেখে আমাদেরকে কী ভাববে ? (৬) চিংড়ি চাষের সুযোগ : যেহেতু এই মুহুর্তে সারা বছর খাল-বিল উন্মুক্ত করে দেয়া হলে উপকুলের ব্যাপক এলাকা জুড়ে চিংড়ি চাষ বন্ধ হয়ে যাবে, অথচ চিংড়ি এখন এ এলাকার কৃষকের 'অন্ধের যষ্টি' এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত, তাই চিংড়ি চাষ নিয়েও আমাদেরকে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা চাইলে প্রকৃতির সাথে একটি আপোশ করতে পারি। সে সুযোগটি এখনো রয়েছে।

তা হলো, একটি সুচিন্ত্মিত পরিকল্পনার আওতায় ৬ থেকে ৭ মাস কৃষক জমিতে ভেড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করবে আর বাকিটা সময় নদী, খাল, বিল উন্মুক্ত থাকবে। অবাধ জোয়র-ভাটা প্রবাহিত হবে। অর্থাৎ ভাদ্র মাসে (ইংরেজী আগস্ট) আমনের চারা লাগানোর পর খাল-বিলের সকল বাঁধ কেটে দিতে হবে। এ সময় জোয়ারের পানির সাথে পলি মাটি আসায় আমন ধানের ভাল ফলন নিশ্চিত হবে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি কম লবনাক্ত থাকে বলে এ সময় জোয়ারের পানি বসত বাড়ি বা বাগানে তুললেও ক্ষতি হবে না।

অতপর মাঘ মাসের মাঝামাঝি (ফেব্রম্নয়ারী) অর্থাৎ আমন ধান পাকার পর খাল বেঁধে দিতে হবে। এরপর এক মাস পর্যন্ত্ম ধান কাটা ও বিল শুকানোর কাজ সেরে অতপর বিলে চাষ দিয়ে পনি তুলে চিংড়ি রেনু ছাড়া যাবে। অবশ্য কৃষক চাইলে খাল বেঁধে দেয়ার পরপরই মাঘী পূর্ণিমায় খালের পানিতে সঠিক প্রক্রিয়ায় চিংড়ি রেণু পালন শুরম্ন করতে পারবে। এটাই চিংড়ি ঘেরে রেণু ছাড়ার সর্বোত্তম সময়। অতঃপর ফাল্গুন (ফেব্রম্নয়ারী) থেকে ভাদ্রের শেষ (আগস্ট) পর্যন্ত্ম এভাবে চিংড়ি চাষ চলবে।

ইতোমধ্যে আষাঢ়ের শেষে (জুলাই) আমনের বীজতলা তৈরী করে আমনের চারা উৎপাদন শুরম্ন করলে ভাদ্রের শুরম্নতে (অগাস্ট) আমনের চারা রোপন করে অতঃপর পুনরায় খালের বাঁধ কেটে 'বন্যা বরণ' করতে হবে। এভাবে উভয় ফসলের নিশ্চয়তার সাথে সাথে এ অঞ্চলের প্রকৃতি এবং পরিবেশের ভারসাম্যও ফিরে আসবে। চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে অবশ্যই কৃষককে অগ্রাধিকার দিতে হবে। 'জমি যার, ঘের তার'- এ নীতিতে সমবায়ের ভিত্তিতে চিংড়ি চাষ করা হলে কৃষক বাঁচবে, সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সামগ্রিক উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। অবাধ জোয়ার-ভাটার প্রবাহ এবং রৌদ্রে বিল শুকানোর মাধ্যমে মাটিতে জমা ক্ষতিকর পদার্থগুলো দূর হবে এবং মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে।

ফলে চিংড়িতে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাকসহ অন্যান্য বালাইয়ের আক্রমন স্বাভাবিক ভাবেই কমে যাবে। চিংচি খাতের আশংকা কেটে যাবে, চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং অপরিকল্পিত চাষাবাদের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও পরিবেশ দূষণ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। (৭) হারিয়ে যাবে না উপকুল : প্রতি বছর কয়েক মাস স্বেচ্ছায় ও পূর্ব প্রস্তুতি সহকারে বন্যা বরণের ফলে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা পলিতে বাড়ি-ঘর, বাগন, রাস্ত্মা-ঘাট, মাঠ ও বিল যথেষ্ট পরিমান উঁচু করা সম্ভব হবে। যত পানি আসবে তত আসবে পলি মাটি। জোয়ার-ভাটার অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করলে প্রতি বছর সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমান এবং নিজেদের অবস্থান ও প্রস্তুতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে স্বেচ্ছায় ভূমি উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

এভাবে প্রতি বছর ভূমি উঁচু করা হলে উপকুল ডুবে যাওয়ার ঝুকি সহজে প্রতিহত করা যাবে। অবাধ জেয়ার-ভাটার ফলে বিপুল পরিমান পানির স্রোতে নদী-খালে জমা পলি কেটে গিয়ে নদী ভরাট বন্ধ হয়ে নাব্যতা ফিরে আসবে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট পলির পাহাড় দূর হয়ে সুনামীর আশংকা কেটে যাবে। হাজার হাজার বছর ধরে এভাবেই নদী-খাল সচল রয়েছে, কখনো বন্ধ হয়নি। তাই আজও নদ-নদীর বন্ধাত্ব দূর করা ও উপকুল রক্ষার এটাই একমাত্র উপায়।

(৮) অন্যান্য সমস্যারও সমাধান হবে : এ প্রক্রিয়ায় সুনামী ও উপকুল বিলীন হওয়ার আশংকা প্রতিরোধের সাথে সাথে ভেড়ি বাঁধ ও জলাবদ্ধতা সৃষ্ট ফসলহানী এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের মোকাবেলা করা যাবে। চিংড়ি ও আমন ধান চাষের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় সাধন করা যাবে। স্বাভাবিক জোয়ার-ভাটার পানিতে আমন ধান এবং উঁচু জমিতে মাঠ ফসল, রবি শস্য প্রভৃতি চাষ করা হলে ক্ষতিকর রাসায়নিক সার ও কীট নাশকের প্রয়োজনিয়তা হ্রাস পাবে। এতে এ অঞ্চল থেকে পুরাপুরি স্বাস্থ্য সম্মত, উন্নত খাদ্যমান সম্পন্ন, বিষক্রিয়া ও রাসায়নিক সারের ক্ষতিকর প্রভাব-মুক্ত ধান, মাঠ ফসল, শাক সব্জি ও রবি শস্য প্রচুর পরিমানে উৎপাদিত হবে। একই সাথে প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া স্বল্পতম খরচের পরিবহন ব্যবস্থা- নৌপথ গুলি পুনরায় সচল হবে, নদী বন্দর সচল হবে, বন্দরের চ্যানেলে ড্রেজিং খাতে ব্যয়িত বিপুল পরিমান অর্থ সাশ্রয় হবে।

নদী ভরাট, লোনা ও মিঠা পানির ভারসাম্যহীনতার নির্মম শিকার বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন- সুন্দরবন ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পাবে, একই সাথে রেহাই পাবে এই নদী ও বনের উপর নির্ভরশীল আমাদের দেশের শিল্প কল-কারখানা, জেলে, বাওয়াল, মৌয়াল, কাঠুরিয়াসহ বিপুল সংখ্যক শ্রমিক ও দুর্লভ সব মূল্যবান বিপন্নপ্রায় প্রাণী। উপকুলীয় অঞ্চলের ধান ও মাঠ ফসল না হওয়ার জন্যে এককভাবে লবন পানিকে দায়ী করা হয়। অথচ সম্প্রতি কঙ্বাজারে খোদ লবন চাষের জমিতে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় এ ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এ থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, মূল সমস্যা লবনাক্ততা নয় বরং পলিমাটির অভাব ও ফসলী জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতাই উপকুলীয় অঞ্চলে ফসলহানীর মূল কারণ। এ কর্মসূচী বাস্ত্মবায়নের জন্যে মোটা অংকের ডলার বা পাউন্ডের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন নেই কোন বৈদেশিক সাহায্য বা ঋণের।

আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্যে প্রয়োজন আমাদের দেশীয় উৎপাদন ও পরিবেশ বান্ধব টেকসই নীতি, প্রযুক্তি ও কর্ম-পরিকল্পনা, আর প্রয়োজন এসব বাস্ত্মবায়নে সরকারী-বেসরকারী ব্যাপক উদ্যোগ। প্রয়োজন ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে এ বিষয়ে গণ-সচেতনতা সৃষ্টি। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম, সামাজিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং সরকারী-বেসরকারী সংস্থাগুলোর ভূমিকা অনেক বেশী গুরম্নত্বপূর্ণ। উপকুলের কৃষক, চিংড়ি চাষী, শ্রমিক তথা সকল মানুষকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা ও কর্মসূচীর যৌক্তিকতা বুঝিয়ে 'বাঁধ কাটা' ও 'বন্যা বরণ'কে উৎসবে পরিনত করার মাধ্যমে কর্মসূচীটিকে গণ-আন্দোলনে রূপ দিতে পারলে, তাদের সাময়িক কষ্টের বিনিময়ে নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুফল প্রাপ্তির দিকটি ভালভাবে বুঝাতে পারলে তবেই এর বাস্ত্মবায়ন সম্ভব হবে, সম্ভব হবে কর্মসূচীতে গণ-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিজনিত কারণে মেরম্ন অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশের উপকূল বিশ্বের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সে ইস্যুতে সম্প্রতি জাতীয় ও আন্ত্মর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা পর্যালোচনা, তহবিল গঠন ও সাহায্য সহযোগিতা চাওয়া শুরম্ন হয়ে গেছে।

বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন, কেউ অতি উৎসাহ দেখাচ্ছেন, আর কেউবা উপকুলবাসী বাংলাদেশীদের দুঃখে মায়াকান্নায় ব্যস্ত্ম। কিবেক-বুদ্ধি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন কিছু জ্ঞানপাপী এসব ইস্যু পেলেই ছোটা-ছুটি শুরম্ন করেন। সভা-সেমিনারের পারডিএম, কনভেন্স আর তথাকথিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে প্রজেক্ট পাইয়ে দেয়ার কমিশন, এগুলোই তাদের রম্নটি-রম্নজি। এসবের বিনিময়ে মাতৃভূমি, স্বদেশের সহজ-সরল, পরিশ্রমী, আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন মানুষের নামে ভিক্ষাবৃত্তি ও ঋণের নামে খাল কেটে সম্রাজ্যবাদের কুমিক ডেকে আনাই এদের কাজ। সুযোগ বুঝে সাম্রাজ্যবাদীদের দোসর বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশকে বিশাল অংকের নতুন আরেকটি ঋণের জালে আটকাতে কৌশুলী পদক্ষেপে এগোচ্ছে।

সমস্যার মূলে প্রবেশ না করে ঢাকা, লন্ডন আর নিউইয়র্কের বিলাসবহুল এপার্টমেন্টের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষগুলোর এসব ফর্মূলা আমাদের সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে তা আরো জটিল করে তোলেন। কারণ তারা পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত্ম প্রদানের ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থের চেয়ে নিজের এবং সম্রাজ্যবাদী গোষ্টির স্বার্থকে বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। এর উদাহরণ আমাদের নিকট ভুরি ভুরি রয়েছে। তাই আমরা আর এসব নাটক দেখতে চাই না। চাই সমস্যার উৎস্য খুজে বের করে সত্যিকার দেশপ্রেমী মানুষের সাহসী পদক্ষেপ।

খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ প্রস্ত্মাবনা কোন নতুন আবিষ্কার বা উদ্ভাবনের ফসল নয়। দুই যুগ পূর্বের সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা দক্ষিণ বাংলার উপকুলীয় এলাকার বাস্ত্মবতার সাথে আজকের সংকটময় পরিস্থিতি এবং আগামী দিনে সুনামী ও সমূদ্র গর্ভে বিলীন হওয়ার মত ভয়াহ আশঙ্কার পিছনে যে আমাদের নিজেদের ভুল তথা নদ-নদী-খালে ভেড়ি বাঁধ ও সুইচ গেট নির্মানই দায়ী, এই সত্যটাই তথ্য, যুক্তি ও প্রমানের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।