আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অতি সংক্ষেপে সংবিধানের ১৫ টি সংশোধনী

ধর্মই মননশীলতা ও সৃষ্টিশীলতার সবচেয়ে বড় অন্তরায় বাংলাদেশের সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। এই সংবিধান প্রণীত হয় ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর এবং ১৬ ই ডিসেম্বর এটি কার্যকর হয়। এই সংবিধানে মোট ১৫ বার সংশোধনী আনা হয়েছে। সর্বশেষ ১৫ম সংশোধনী আনা হয় ২০১১ সালে। সংবিধান সংসদের জন্য সংসদ সদস্যদের দুই তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়।

নিম্নে ১৫ টি সংশোধনী অতি সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলঃ প্রথম সংশোধনীঃ ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই সংবিধানের প্রথম সংশোধনী আনা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত বন্দী পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বিচারের জন্য এই সংশোধনী করা হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীঃ জরুরী অবস্থা ঘোষণার বিধান, নিবর্তনমূলক আটক সংক্রান্ত আইন এবং মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন প্রণয়নের জন্য ১৯৭৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী করা হয়। তৃতীয় সংশোধনীঃ ২৮ নভেম্বর ১৯৭৪ তৃতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ২ (ক) উপ-অনুচ্ছেদকে সংশোধন করে ভারত-বাংলাদেশ সীমানা চুক্তি কার্যকর করা হয়। চতুর্থ সংশোধনীঃ ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী করা হয়।

এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা, আজ্ঞাবাহী মন্ত্রীপরিষদ, ক্ষমতাহীন জাতীয় সংসদ, এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। পঞ্চম সংশোধনীঃ ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে স্ব-পরিবারে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ১৫-০৮-১৯৭৫ থেকে ০৯-০৪-১৯৭৯ পর্যন্ত সামরিক আমলের সকল কর্মকাণ্ড বৈধকরণ, রাষ্ট্রীয় মূলনীতির পরিবর্তন করা হয়। সুপ্রীম কোর্টে আপীল আপীল বিভাগ ২ ফেব্রুয়ারী ২০১০ তারিখে পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করেন। আপীল বিভাগ কতৃক পঞ্চম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণার পর সংবিধানের ১৫ তম সংশোধনী করা হয়।

ষষ্ঠ সংশোধনীঃ ১০ জুলাই ১৯৮১ সালে সংবিধানের ষষ্ঠ সংশোধনী করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর নিয়োগকৃত উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তার কতৃক রাষ্ট্রপতির নির্বাচনের পদপ্রার্থীর বিষয় বৈধকরণ করা হয়। সপ্তম সংশোধনীঃ ১০ নভেম্বর ১৯৮৬ সালে সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী করা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে হুসেইন মুহাম্মাদ এরশাদের শাসন আমলের সকল কর্মকাণ্ড বৈধকরণ করা হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখ হাইকোর্ট বিভাগ সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।

অষ্টম সংশোধনীঃ ৯ জুলাই ১৯৮৮ সালে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট বিভাগের ৬ টি স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন এবং ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়। নবম সংশোধনীঃ ১১ জুলাই ১৯৮৯ সার্বজনীন ভোটে একই সাথে রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যবস্থার জন্য সংবিধানের নবম সংশোধনী করা হয়। দশম সংশোধনীঃ পরোক্ষ ভোটে মহিলাদের ৩০ টি সংরক্ষিত আসনের ১৫ বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় রিনিউ (Renew)-এর ব্যবস্থার জন্য ২৩ জুন ১৯৯০ সংবিধানের দশম সংশোধনী করা হয়। একাদশ সংশোধনীঃ ১০ আগস্ট ১৯৯১ সংবিধানের এগারতম সংশোধনী করা হয়।

এই সংশোধনীর মাধ্যমে উপ-রাষ্ট্রপতি পদে প্রধান বিচারপতির নিয়োগ এবং অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন সত্ত্বেও পুনরায় প্রধান বিচারপতি প্রত্যাবর্তন বৈধকরণ করা হয়। দ্বাদশ সংশধনিঃ ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ সংবিধানের বারতম সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হয়। ত্রয়োদশ সংশোধনীঃ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৬ সালের ২৮ মার্চ সংবিধানের তেরতম সংশোধনী করা হয়। চতুর্দশ সংশোধনীঃ মহিলা সংসদ সদস্যদের সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪৫ এ উন্নীতকরণ, বিচারপতিদের অবসরগ্রহণের বয়সসীমা বৃদ্ধিকরণ ইত্যাদি কারণে ২০০৪ সালের ১৬ মে সংবিধানের চৌদ্দতম সংশোধনী আনা হয়।

পঞ্চদশ সংশোধনীঃ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংবিধান থেকে বিলুপ্তকরণ, মহিলা সংসদ সদস্যদের সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৪৫-৫০ এ উন্নীতকরণ ইত্যাদি কারণে ৩০ জুন ২০১১ সংবিধানের পনেরতম সংশোধনী প্রণয়ন করা হয়।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।