আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তবে কি এটাকেই সহি সমাজতন্ত্র বলা হয়? ভিক্ষুরা এখন নীরব কেন?

শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড কিন্তু শিক্ষিত লোকই জাতির মেরুদণ্ড নহে চীনা শাসনের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে আগুনে আত্মাহুতি দিয়েছে ৭ তিব্বতি। গতবছর থেকে চীন-বিরোধী বিক্ষোভে দেহে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানানো তিব্বতির সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘ফ্রি টাইবেট’। বিবৃতিতে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার তিব্বতের রাজধানী লাসার উত্তরে দিরুই এলাকার একটি সরকারি ভবনের বাইরে দেহে আগুন ধরিয়ে একজন আত্মহুতি দেয় এবং অপর একজনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১১ সালে তিব্বতে চীনবিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন তিব্বতি এভাবে নিজের দেহে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

তাদের মধ্যে অর্ধেকই মারা যায়। দেহে আগুন ধরানো বিক্ষোভকারীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ ও অপরাধী হিসেবে অভিহিত করেছে চীন সরকার। তাদের উত্সাহিত করার জন্য তিব্বতের নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী দালাই লামাকে অভিযুক্ত করা হয়। বেইজিং প্রশাসনের কাছে দালাই লামা ‘ভয়ঙ্কর বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে পরিচিত। তবে সহিংসতায় মদদ দেয়ার কথা সবসময়ই অস্বীকার করে আসছেন তিনি।

কিন্তু সমাজতান্ত্রিক চীনের অধীন তিব্বতের আধ্যাত্মিক সংস্কৃতির ওপর চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রণের বিরোধিতা দালাইলামা বরাবরই করে আসছেন। ১৯৫০ সাল থেকেই তিব্বতের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে আসছে চীন। বর্বরতা সেটা যেকোনো দেশে যেকোনো জাতি, ধর্মীয় সম্প্রদায় অথবা বর্ণের সাথেই হোক না কেন তা সব সময়ই চরম নিন্দনীয়। কোন সুস্থ বিবেকবান মানুষ একে সমর্থন করতে পারেন না। অন্য দেশের কোন জাতির উপর হামলার প্রতিশোধ নিতে নিজ দেশের কোন সম্প্রদায়ের উপর হামলা কখনোই মেনে নেয়া যায় না।

কিন্তু বর্তমান পৃথিবীতে সব জায়গায়ই একধরণের দ্বিমুখী নীতি লক্ষ্য করা যায়। রামুর সহিংসতা ছিল দেশের জন্য চরম লজ্জাজনক একটি ঘটনা। বহিঃ বিশ্বে এই কারণে দেশের ভাবমূর্তি যথেষ্ঠ ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এখন কোন দেশে কোন ঘটনা ঘটলে সেটা নিমেষেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যায়, সেই দেশে যতই মিডিয়া সেন্সরশীপ থাকুক না কেন। কিন্তু চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাপান, কোরিয়া এবং দু-একটা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ছাড়া কোথাও কোন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ নেই।

যেই বৌদ্ধ ভিক্ষুরা থাইল্যান্ড সহ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে, শ্রীলংকায় বাংলাদেশ দূতাবাসে হামলা পর্যন্ত চালিয়েছে আজ তারাই তিব্বতে ধর্মীয় লামাদের উপর দমন-নিপীড়নের ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চুপ। পৃথিবীর প্রতিটা পরাশক্তিই মূলত সাম্রাজ্যবাদী। নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি দেশই বৈশ্বিক নিরাপত্তার বড় হুমকি। আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আগে থেকেই কুখ্যাত। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমাজতান্ত্রিক চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন সকল সীমা অতিক্রম করেছে।

শুধু তিব্বতীদের উপরেই নয়, জিংজিয়ানে উইঘুর মুসলিমদের উপরেও ২০০৯ সালে চীনা কম্যুনিস্ট সরকার ব্যাপক নির্যাতন করেছিল। দুঃখজনক হলেও সত্যি, তখন তুরস্ক ছাড়া আর কোন মুসলিম দেশ এর প্রতিবাদ করেনি আর তিব্বতের ভিক্ষুদের উপর নির্যাতনের পরেও কোন বৌদ্ধ সংগঠন এসবের প্রতিবাদ করছে না। বাংলাদেশে যে বামরা বাক-স্বাধীনতা, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা নিয়ে শাহবাগের মোড় আর পল্টন ময়দান গরম রাখেন তাদের চোখে কি সমাজতান্ত্রিক চীনের এসব কর্মকান্ড চোখে পড়ে না? সস্তা ইলেট্রনিক্স পণ্য বিক্রির টাকায় ফুলে উঠা চীনের অর্থনীতির সাথে অনেক গণতান্ত্রিক দেশের অর্থনীতিও জড়িত। হয়তো একারনেই চীনের এই সাম্যবাদী আচরণ আমাদের আরও কয়েক দশক দেখে যেতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।