আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"ছবি দেখে চমকে যাবেন / শব্দ শুনে থমকে যাবেন" - ফিল্ম রিভিউঃ "ভালবাসার রঙ"

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! একদিন হেঁটে হেঁটে নীলক্ষেতের দিকে যাচ্ছি, সাথে জনৈক পড়ুয়া আঁতেল বন্ধু। আমাদের উদ্দেশ্য অভিন্ন, বই কিনব। যাবার পথে হঠাৎ রাস্তার পাশের দেয়ালে চোখ আটকে গেল আমার। দেয়ালে একটা পোস্টার সাঁটা, সেটায় লাল রঙের বড় ফন্টে লেখা – “ভালবাসার রঙ”। লেখার পাশেই ছবি...এ মা এ কি?? জনৈক তরুণের লালচে ঠোঁট জনৈকা লালচে তরুণীর লালচে গালে! দেখেই দেহমনে কেমন উত্তেজনা আসে।

আমার আঁতেল বন্ধু তখন সম্ভবত পড়া মনে করায় ব্যস্ত। জগতসংসারের কোন কিছুই তখন তাকে স্পর্শ করতে পারবে না, ভাবটা এমন। আমি ওকে বললাম, “দেখ দেখ *নডমের অ্যাড”। ভাবের সমুদ্র থেকে উঠে এসে বন্ধুটি আমার দিকে ভ্রূ প্রচণ্ডভাবে কুঁচকে এমন একটা লুক দিল যে আর কি বলব! আমি ওর ভ্রূ কুঁচকানিকে বিন্দুমাত্র পাত্তা না দিয়ে বললাম, “ঐ দেখ *নডমের অ্যাড। মনে হয় স্ট্রবেরি ফ্লেভার।

মডেল ছেলেমেয়ে দুইটাই কেমন লাল লাল”। আমার কথা শুনে বন্ধুর চোখে চকিতে খেলে গেল লুলিয় বিদ্যুৎ। দৃষ্টি তার নিবদ্ধ হল পোস্টারের উপর। কিছুক্ষণ গভীর মনোযোগে পোস্টার পর্যবেক্ষণ করার পর ঈষৎ রাগত ভঙ্গিতে সে বলল, “হাঁদারাম, এইটা *নডমের অ্যাড না। এইটা হইল সিনেমার অ্যাড।

সিনেমার নাম ভালবাসার রঙ। আর ঐ দুইটা নায়ক নায়িকা। বুঝছস?” আমি কিছুক্ষণ হা করে পোস্টারের দিকে তাকিয়ে রইলাম। আঁতেল বন্ধু আবার গভীর চিন্তায় অথবা ভাবের সমুদ্রে অবগাহনে নিমগ্ন হল। আমি কাছে গিয়ে দেখলাম, আরে সত্যিই তো! বিখ্যাত RED ক্যামেরায় নির্মিত, শাহীন সুমন পরিচালিত, জাজ এর – ভালবাসার রঙ! এ জিনিস সিনেমা ছাড়া আর কি হবে? যাহোক, ঘটনার পর তিনদিন কেটে গেছে।

আইটেম ক্লিয়ার, ঈদের ছুটিতে বাসায় যাব দুদিন পরই। অঢেল অবসর, ফিফা ১৩ খেলেই কেটে যাচ্ছে সময়। এমন সময় আরেকটা পোস্টার দেখলাম একই সিনেমার – নায়ক উল্টো হয়ে নায়িকাকে ফুল দিচ্ছে, নায়িকার মুখে সলজ্জ হাসি। দেখেই কেমন স্পাইডারম্যানের কথা মনে পড়ে। নাহ, এ সিনেমা মিস করলেই নয়।

সিদ্ধান্ত নিলাম, বাসায় যাবার আগেই এই সিনেমা দেখে জীবন সার্থক হব। যা ভাবা তাই কাজ। প্রস্তাব দেবার সাথে সাথে তিনজন রাজি। মানে তারাও আমার মত “খায়া কাম নাই” ধরণের পাবলিক। পরেরদিন সন্ধ্যায় আমরা যাত্রা করলাম বলাকার উদ্দেশ্যে।

প্রচণ্ড জ্যাম ঠেলে পিঁপড়ার মত এগুতে এগুতে বলাকায় যখন পৌঁছুলাম, সিনেমার প্রায় পনের মিনিট ততক্ষণে দেখানো হয়ে গেছে। হলে ঢুকেই স্ক্রিনের দিকে চোখ যেতেই থমকে গেলাম, ইয়ে কেয়া! এত্ত সুন্দর ব্লু-রে প্রিন্ট বাংলা সিনেমায় কবে আসল? তবে কি এইটা সেই RED ক্যামেরার কারসাজি? যাহোক, স্ক্রিনে দেখা গেল, গভীর জঙ্গলে টাইট ড্রেস পরা জনৈকা হট (গরম) নায়িকা এক দঙ্গল পিচ্চিপাচ্চি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর নায়ক তাদের সামনে রাস্তার উপর উপর বীর বিক্রমে একের পর এক বুকডন দিচ্ছে। এই রেটে বুকডন দিলে এতদিনে নায়ক জন সিনা না হোক, অন্তত এম এ জলিল অনন্তের মত মাসল বানাইতে পারত অথচ মাসলের ছিটেফোঁটাও তার হাতে নেই। বুঝলাম, সিনেমার প্রয়োজনেই বেচারা নায়ককে এই গহীন জঙ্গলে জীবনে প্রথমবারের মত বুকডন দিতে হয়েছে।

ওদিকে বুকডনরত নায়ককে দেখে নায়িকার গ্যাং এর এক মোটকু পিচ্চির মনে পড়ে গেছে সালমান খানের কথা। এই নিয়ে তার মারামারি বেঁধে গেছে কুংফু ড্রেস পরিহিত আরেক মুটকি পিচ্চির সাথে। ফলাফল, কুংফুর সকল জ্ঞান ও কুংফু শেখা জনিত সকল অহংকার নিয়ে কুংফু-পিচ্চি ভূমিস্যাত। তবে এই গহীন জঙ্গলে কেন তার পরনে কুংফু ড্রেস তা এই লেখকের পক্ষে অনেক গবেষণার পরেও বের করা সম্ভব হয় নি। একটু পরেই দেখা গেল পাহাড়ের কিনারে নায়িকার পা হড়কেছে, নায়িকা একটা গাছের শিকড় ধরে কোনমতে ঝুলে আছে, কতটা ভয়ঙ্কর উচ্চতায় সে দোদুল্যমান সেটা বোঝানোর জন্যই হয়তো নায়িকার ক্যাপ উড়তে উড়তে ঘুরতে ঘুরতে নিচে পড়ছে তো পড়ছেই।

নায়িকার সখাসখিরা নায়িকাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টার অবিচ্ছেদ্য অপরিহার্য অংশ হিসেবে ঠিক এক হাত দূরে লাইন বেঁধে দাঁড়িয়ে সমস্বরে “বাঁচাও বাঁচাও” করছে। নায়িকা ও তাদের মাঝখানে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভয়ঙ্কর “স্ক্রিপ্ট”। তো তারপর যা হয়, নায়িকার কর্ণভেদী মর্মভেদী আর্তচিৎকার শুনে নায়ক বুকডন বাদ দিয়ে দৌড় দিল। চিতাবাঘের মত দ্রুতগতিতে অনেকটা পথ দৌড়ে এসে নায়ক “বাঁচাও বাঁচাও”রত সখাসখির দলটার মাথার উপর দিয়ে এমন একটা লাফ দিল যে সেই লাফ অলিম্পিকে দিলে হাই এবং লং, উভয় জাম্পেই তাকে স্বর্ণ বা রৌপ্য নয়, সোজা ইউরেনিয়াম পদক দিয়ে দেয়া যেতেই পারে। অন্তত আমি অলিম্পিক কমিটির সভাপতি হলে তা-ই করতাম, ইউরেনিয়াম পদক দিলেই যে তার মধ্যে ইউরেনিয়াম থাকবে এমন তো কোন কথা নেই তাই না! এত দ্রুতগতিতে ছুটে এসে নায়কের এমন একটা হাই + লং জাম্প দেবার পর ফিজিক্সে “প্রাসের গতিপথ একটি পরাবৃত্ত” টাইপ কোশ্চেন কোপানো এই লেখকের মনে হয়েছিল, নায়ক হয়তো তার গতিজড়তার কারণে পাহাড় নদী মাঠ ঘাট পার হয়ে আরও অনেক দূর গিয়ে পড়বে।

কিন্তু না! এখানেই আমরা দেখলাম আইনস্টাইনের স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটির খেল। স্পেশাল থিওরিতে দৈর্ঘ্য সংকোচন নামে একটা ব্যাপার ছিল। এখানেও বোধহয় তাই হল। নায়কের নিজের মনে হচ্ছে সে অনেক দূর গেছে, কিন্তু তার গতিবেগ আলোর কাছাকাছি হবার দরুণ স্থির পর্যবেক্ষক বা নায়িকার সাপেক্ষে সে আসলে মাত্র তিন চার ফুট দূরত্ব অতিক্রম করেছে। তা না হলে কি এত বড় হাইজাম্প কাম লংজাম্প দেবার পরও নায়ক ঠিক নায়িকা ও তার সখাসখিদের মাঝখানের এক হাত জায়গার মধ্যে পড়ে? যাহোক, নায়ক অনেক কষ্টে নায়িকাকে টেনে তুলল।

নিয়ম মেনে নায়িকা নায়কের বুকের উপর ধপাস করে পড়ে গেল। নায়ক তার চোখে গভীর রোমান্টিক ভাব আনার গভীরতর চেষ্টা করতে লাগল। অতঃপর সংলাপ। নায়কের মুখনিঃসৃত প্রথম সংলাপেই বুঝে গেলাম, ধনদা (ব্লগার দুর্যোধন) যে বলেছেন, “শাকিব সুলভ পৌরুষ আর কথায় অনন্ত সুলভ সাবলীলতা” – তা খুব একটা মিথ্যা বলেন নি। নায়কের চেহারাটা ক্লোজ আপে দেখেই বিভ্রান্ত হলাম, এ আমাদের শাকিব নন তো? সেই লালচে চেহারা, দুষ্টু দুষ্টু ফেসকাটিং, লাল ঠোঁট, আপেল আপেল গাল।

পরে বুঝলাম, শাকিব আমাদের একজনই। একে বরং শাকিবের ছোট ভাই “জুনিয়র শাকিব” বা “জুকিব” ডাকা যেতে পারে। তো জুকিব দেখলাম বলছে, “আমি তোমাকে বালুবাসি”। নায়িকা বলছে, “আগে আমার দাদু (রাজ্জাক) এর হাতের লাঠি চুরি করে দেখাও, দেন আই অ্যাম ইউরস”। বুঝলাম না, ভালবাসা কি আজকাল চৌর্যবৃত্তির সাথে সমানুপাতিক হারে বাড়ে? আর নায়িকাই বা লাঠি দিয়ে কি করবে? দুনিয়ায় এত এত জিনিস থাকতে লাঠির প্রতি তার এ অকারণ আকর্ষণের হেতু কি? চিন্তার বিষয়।

যাহোক, জুকিব রাজি হল। এলাকার কাবিলা মামার সহায়তায় নায়িকার বাসায় ঢুকতে সক্ষম হল জুকিব। লাঠি চুরি করে বের হবার আগে ঘুমন্ত নায়িকার নাকের নিচে আইলাইনার দিয়ে মোচ এঁকে দিল সে। তারপর বেরিয়ে আসতেই ব্যস, মিশন সাকসেসফুল। পরে জঙ্গলে জুকিবের সাথে দেখা হল নায়িকা ও তার দলের।

জুকিব বলল, “লাঠি তো দিলাম, এবার প্রেম দাও মোরে প্রেম দাও”। নায়িকা মুখ ঝামটা মেরে বলল, “নির্বাক জড়বস্তু চুরি করার মধ্যে কি এমন বাহাদুরি? পারলে আমার আন্টির টেপরেকর্ডার চুরি করে দেখাও। ওটা সারারাত বাজতে থাকে”। জুকিব আবারও রাজি। নায়িকাকে পাবার জন্য সে সবই করতে পারে।

যাহোক, রাত হল। আবারও কাবিলা মামার সহায়তায় দুর্ভেদ্য সিকিউরিটি সিস্টেম ভেদ করে অনায়াসে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়ল জুকিব। টেপরেকর্ডার নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় হাত থেকে একটা পার্টস পরে গিয়ে শব্দ হল, ব্যস আন্টি জেগে উঠেই তার অনেক সাধের টেপরেকর্ডারের অনুপস্থিতি আবিষ্কার করে তারস্বরে চিৎকার করতে লাগলেন। সেই মর্মান্তিক চিৎকারে জেগে উঠল বাসার সবাই। জুকিব পালাল বাড়ির আঙ্গিনায়।

চোরকে ধরতে বল্লম হাতে বাড়ির আঙ্গিনায় নেমে এলেন জনৈক আঙ্কেল। ওদিকে নায়িকা ও তার সখাসখিদের মনের অবস্থা তখন উথালপাথাল। কেননা তারাই জুকিবের এই সর্বনাশের মূল। তারাও এক পর্যায়ে বেরিয়ে এল বাড়ির আঙ্গিনায়। একপর্যায়ে উপায়ান্তর না দেখে জুকিব একটা খড়ের গাদার মধ্যে টেপরেকর্ডার সহ হেঁচড়ে পাঁচরে ঢুকে পড়ল।

উল্টো হয়ে শুয়ে রইল সে চুপচাপ। এখানে সে শ্বাসপ্রশ্বাস কিভাবে নিল এটা অবশ্য বুদ্ধিমান দর্শকের চিন্তার বিষয়। খড়ের গাদার পাশে পৌঁছে গেল নায়িকা ও তার দলবল। জুকিবের বেরিয়ে থাকা পা খড় দিয়ে ঢেকে দিল জনৈক পিচ্চি। সিনেমা হলে তখন তুমুল করতালি।

তারপরই সেই বল্লমধারী আঙ্কেল চোরের খোঁজে খড়ের গাদার চারপাশে বল্লম দিয়ে খোঁচা মারতে লাগলেন। আর এখানেই আমরা দেখলাম পরিচালকের জ্ঞানের দৌড়। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে নায়ক শুয়ে আছে উল্টো হয়ে, বল্লমের খোঁচা লাগলে লাগবে তার পায়ের পিছনে, নিতম্বে, উরুর পিছনে, পিঠে, গলার পিছনে, মাথার পিছনে। অথচ একটু পরে নায়ক যখন টেপরেকর্ডার হাতে পালাচ্ছে, তখন দেখা গেল তার নিতম্ব নয়, পিঠ নয়, রক্তে রঞ্জিত তার পেট, হাতের সামনের অংশ ইত্যাদি। হাউ পছিবল? তবে কি পরিচালক মহোদয় রিলেটিভিটির নতুন সূত্র আবিষ্কার করেছেন? যেখানে স্পেস বেঁকে যাবে, পাছায় মারলে পেট ফুটো হবে? নাকি সিনেমা বানানোর প্রাক্কালে ঈষৎ গঞ্জিকা...থাক, সেটা একান্তই তার ব্যাপার।

আর নায়কের শরীরে যদি রক্ত বের হবার মত আঘাত লেগেই থাকে, তবে বল্লমের ডগায় রক্ত লাগল না কেন? আর খড়ের মধ্যে বল্লম চালনা করে মাংসে লাগলে বল্লমধারীর কি সেটা বোঝার কথা নয়? প্রশ্ন থেকেই যায়। যাহোক, নায়ক টেপরেকর্ডার হাতে গভীর জঙ্গলে একা একা গেল, নায়িকা স্যাভলন আর তুলা নিয়ে কান্নাভেজা চোখে তার সেবা শুশ্রূষা করতে গেল। গভীর রাতে একটা মেয়ে বাসায় নেই, এটা কেমন যেন হয়ে গেল না? আর বাসায় ফিরেই বা সে কি জবাব দিত? দেখার ইচ্ছা ছিল, দেখানো হল না, আফসোস। নায়িকার সাথে জুকিবের দেখা হল, জুকিব তাকে দুইটা সাউন্ডবক্স ধরিয়ে দিয়ে বলল, “এই নাও তোমার টেপরেকর্ডার”। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, আসল জিনিস, মানে ক্যাসেট প্লে করার মূল যন্ত্রটাই সেখানে অনুপস্থিত।

কাহিনী এবার অন্য খাতে প্রবাহিত হতে লাগল। দেখা গেল মেইন ভিলেন মিজু আহমেদ তার সাইড ভিলেন জনৈক উকিলের সাথে যোগসাজশে দুজন ক্লায়েন্টকে বিষ দিয়ে মেরে তাদের জমি হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের গ্রুপের আরেক সদস্য ডাক্তার নাসরিন, যে কিনা ইলেকট্রিক শক দিয়ে মেয়েদের ব্রেইন ফরম্যাট করে হার্ডডিস্ক খালি করতে সিদ্ধহস্ত। তো নায়িকাকে নাকি কোন শপিং মলে দেখা গেছে, এই খবর ঐ ভিলেন গ্রুপের কাছে যায়। আঁতকে ওঠে তারা তিনজন।

কারণ অতীতে নায়িকার বাবা মাকে তারাই খুন করেছিল। তাতে করে ফারিয়া গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির মালিক হয়েছিল ফারিয়া (নায়িকার আসল নাম)। তারপর তারাই ফারিয়াকে শক ট্রিটমেন্ট দেবার জন্য নাসরিনের ক্লিনিকে নিয়ে যায়। নাসরিন শক দেয়, নায়িকা উহ আহ করতে থাকে এবং মেশিনে দেখানো হয় ECG নরমাল। অর্থাৎ, “ইলেকট্রিক শক দিলে ECG নরমাল থাকে”।

পরে সেই ক্লিনিকের এক নার্স দয়াপরবশ হয়ে নায়িকাকে পালাতে সাহায্য করে। নায়িকার তৎকালীন চেহারা দেখে আমার পাশে বসা বন্ধুর মন্তব্য, “শক খেলে চোখের নিচের মেক আপ কালো হয়”। নায়িকা বাইরে বের হয়ে এক চলন্ত মাইক্রোবাসে আশ্রয় নেয়। উত্তেজিত লুইচ্চা মাইক্রোমালিক তার সাথে উলালা করতে যায়। নায়িকা দরজা খুলে লাফ দেয়।

রাস্তায় পড়ে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। সে পথে আবার তখন যাচ্ছিলেন রাজ্জাক। তার বড় ছেলে ও নাতনী মাহি তার আগের দিন মারা গেছে। তাদের কবর দিয়ে দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে ফিরে আসার সময় তিনি মাটিতে শুয়ে থাকা অজ্ঞান ফারিয়াকে দেখতে পান। পরে রাজ্জাক বোঝেন, মেয়েটির স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে।

তিনি তাকে নিজের বাসায় নাতনী মাহি পরিচয়ে পালতে থাকেন। তো নায়িকাকে নিয়ে আসার জন্য তিন ভিলেন মিজু, উকিল আর নাসরিন রাজ্জাকের বাসায় যায়। উল্টা পাল্টা বলে ফারিয়ার অধিকার পেতে চায় তারা। কিন্তু রাজ্জাক তাদের দুরভিসন্ধির আগুনে জল ঢেলে দিয়ে তাদের দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। ওদিকে নায়িকা সব শুনে ফেলে।

পরে সেদিন রাতে রাজ্জাক তাকে কুড়িয়ে পাবার কথা বলেন। রাতে বৃষ্টি দেখতে দেখতে অজ্ঞাত কোন উপায়ে নায়িকার সব কথা মনে পড়ে যায়। ওদিকে ফারিয়াকে তুলে আনার জন্য মিজু ফোন দেন তার বিশ্বস্ত শটগান স্পেশালিস্ট...আরে, ইয়ে কেয়া! এ তো দেখি বাংলা সিনেমার অশ্লীল যুগের অন্যতম কর্ণধার অমিত হাসান! উনার মুখে আবার ট্রেডমার্ক সংলাপ, “অ্যা-অ্যা-অ্যা-ই-ই-ই!!! কারো হাত থাকবে না, কারো পা থাকবে না!!!” অমিত ভাইয়ার লিভারে সমস্যা, মাঝে মাঝেই তার লিভারে অকল্পনীয় ব্যথা ওঠে, তখন তাকে কি একটা সাদা ট্যাবলেট খেয়ে ব্যথা কমাতে হয়। ডাক্তার তাকে বলেছে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট না করালে সে বাঁচবে না। ট্রান্সপ্লান্টের টাকা সে আবার একটা ব্যাঙ্ক ডাকাতি করে জোগাড় করেছিল, অথচ তার ছোটভাই হেলাল খান পুরো টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে।

তাই হেলালকে খুঁজে বের করাই এখন তার একমাত্র লক্ষ্য। মিজুর কথায় অমিত হাসান রাজ্জাকের বাসায় গিয়ে তাকে খুন করে। নায়িকা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে জুকিবের বাসার সামনে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে তাকে ডাকতে থাকে। জুকিবের বাবা মা তাকে আশ্রয় দেয়। জুকিবের বাবা (সম্ভবত আলিরাজ) খবর দেবার জন্য থানায় গিয়ে দেখেন, থানার ভিতর অমিত বসে একের পর এক টাকার বাণ্ডিল বের করে ওসিকে পটাচ্ছে।

ওসিও লোলুপ দৃষ্টি হেনে গুণে গুণে ছয় বাণ্ডিল টাকা নিয়ে খুনের খবর গাপ করে মেয়েটাকে খুঁজে বের করার নিশ্চয়তা দিয়ে দিয়েছে। এসব দেখে আলিরাজ থানা থেকে চম্পট দিলেন। বাসায় এসে ছেলেকে বললেন, “পুলিশ ঘুষ খাইয়া খুনিগো দলে ঢুইকা গেসে। মাইয়াটারে খুঁজতে আইব তারা। বাপধন জুকিব আমার, তুই শিগগিরি ওরে নিয়া পালায়া যা”।

কিন্তু সদ্য গোঁফ গজানো কিশোর জুকিব কিছুতেই বুঝতে পারল না পালাতে কিভাবে হয়। সে বাপকে জিজ্ঞেস করল, “বাপজান, কেমনে পালামু? কই পালামু?” অগত্যা আলিরাজ তাকে বাসা থেকে বের হওয়া থেকে শুরু করে নীলগিরি পাহাড়ের উপর পরিত্যাক্ত খামারবাড়িতে পালানোর পুরো ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিলেন। ব্যস, নায়ক খুশি। এমন পুঙ্খানুপুঙ্খ ইন্সট্রাকশন ছাগলকে দিলে সেও নায়িকাকে নিয়ে সফলভাবে পালাতে পারবে। বহু পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে তারা আশ্রয় নিল পরিত্যাক্ত খামারবাড়িতে।

পাঠক মনে রাখুন, নায়িকার কাপড় তখন বৃষ্টিস্নাত, সে বাসা থেকে এক বস্ত্রে পালিয়ে জুকিবের বাসায় এসেছে। সেখান থেকে আবার ভোঁ দৌড়। জুকিবের হাতে শুধু একটা ব্যাগ। মনে রাখতে বললাম এ কারণে যে, দেখবেন একটু পরে এই ব্যাগ থেকেই কত কি বের হয়। রাতে দেখা গেল নায়িকা নতুন সালোয়ার কামিজ পরে ঘর্মাক্ত দেহে রান্না করছে।

প্রশ্ন, এই নতুন পোশাক সে কোথায় পেল? বাসা থেকে তো সে একবস্ত্রে বেরিয়ে এসেছে। তবে কি জুকিবের মা অতীতে এই জাতীয় টাইট কাপড় পরতেন। তাহলে সেগুলো এত নতুন থাকে কিভাবে? রান্না করার সরঞ্জামাদির ব্যাখ্যা অবশ্য সাথে সাথেই পাওয়া গেল। দেখা গেল অমিতের ভাই হেলাল খান এই খামারবাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছে। রাতে ভাইয়ের টাকায় মৌজ মাস্তি করার জন্য হেলাল এই গহীন জঙ্গলে কেমনে কেমনে যেন একটা বার খুঁজে পেয়ে মদ খেয়ে নাচগান করল, সেটা আবার অমিতের লোক দেখে ফেলল।

ব্যস, অমিত গাড়িতে করে এসে “অ্যা-অ্যা-অ্যা-ই-ই-ই!!! কারো হাত থাকবে না, কারো পা থাকবে না!!!” ইত্যাদি বলে শটগানের মোক্ষম গুলিতে হেলালকে পরপারে পাঠিয়ে দিল। মরার আগে অবশ্য হেলাল তাকে টাকার হদিস দিয়ে গেল। সকালে খামারবাড়ি হামলার সময় দেখা গেল নায়িকা আরেকটা হট ড্রেস পরে বসে আছে, নায়ক তার কোলে মাথা রেখে খোশগল্প করছে। এই হট অ্যান্ড টাইট ড্রেস নায়িকা পেল কোথায়? নীলগিরির বনে বাদাড়ে কি এরকম টাইট ড্রেস পড়ে থাকে? নাকি গাছে গাছে ঝুলানো থাকে এরকম হট ড্রেসগুলি? যাহোক, নায়ক নায়িকা লুকিয়ে থাকল, অমিতের লোক টাকা খুঁজে পেয়ে বেরিয়ে গেল। তারা চলেই যাচ্ছিল, এমন সময় খামারবাড়ির ঠিক যেদিকে অমিতের দলবল দাঁড়িয়ে আছে নায়ক নায়িকা তাদের লুকিয়ে থাকার সফলতম অংশ হিসেবে ঠিক সেদিকেই জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পড়ল।

অতঃপর রেডি-সেট-গো! আবার শুরু হল পলায়নপর্ব। ঠিক এ পর্যায়ে খবর দেয়া হল পঞ্চম ভিলেনকে। দেখে অনেকটা ইনসেপশন মুভির কথা মনে পড়ে গেল আমার পাশে বসা বন্ধুর। ভিলেন টু দি পাওয়ার ভিলেন টু দি পাওয়ার ভিলেন...সেই পঞ্চম ভিলেনের সারা গায়ে পাতা, মুখে কালিঝুলি, সে কথা বলে না, শুধু জিহবা বের করে নাড়াচাড়া করে। পুরাই অ্যাটিপিকাল জিনিস।

সে আবার লেগে গেল নায়িকাকে খুঁজতে। পালানোর এক পর্যায়ে নায়ক নায়িকা উভয়েই ডোবায় পড়ে গেল। ওঠার পর দেখা গেল নায়িকার মুখে কে যেন সুন্দর করে জুতার কালি মাখিয়ে দিয়েছে, আঙ্গুলের ছাপ পর্যন্ত স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। তবে কি ডোবার নিচে নায়ক নায়িকা...কি করছিল? আসলেই তো, কি করছিল তারা? পরদিন সকালে কেমনে কেমনে যেন নায়ক নায়িকার জামা কাপড় সব আবার নতুন হয়ে গেল। তাদের শরীরের মাটি কাঁদাও কিভাবে যেন উধাও হয়ে গেল।

শুধু তাই নয়, নায়িকার লিপস্টিক প্লাস মেকআপও কিভাবে কিভাবে যেন আগের মত হয়ে গেল। অথচ গত রাত তারা কাটিয়েছে গভীর জঙ্গলে, পলায়নরত অবস্থায়! যাহোক, ঘটনাচক্রে নায়িকা একসময় বাম হাতে গুলি খেয়ে বসল। নায়ক তাকে রেখেই পালানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সাঁই সাঁই করে দৌড়াতে লাগল। মাশাল্লাহ, এই ছেলে আর কিছু না পারলেও দৌড়াতে পারে। পুরাই চিতাবাঘের স্পিড।

ওদিকে পরিচালক গাঞ্জা খেয়ে সিনেমা বানাতে নামলেও আগে থেকে বুঝতে পেরেছিলেন যে এই হ্যাংলা পাতলা জুকিবকে দিয়ে পাঁচ পাঁচটা ভিলেনকে খতম করা গাঞ্জাখুরি টু দি পাওয়ার গাঞ্জাখুরি হবে। তাই তিনি মিজু, উকিল আর নাসরিনের মধ্যে প্যাঁচ লাগিয়ে দিলেন। ফারিয়া গ্রুপের এক হাজার কোটি টাকার (বাপরে বাপ) ভাগ কমাতে নাসরিন মারল উকিলকে, মিজু মারল নাসরিনকে। ওদিকে পালাতে পালাতে একসময় নীলগিরির (বান্দরবান জেলায় অবস্থিত) জঙ্গলে কোথা থেকে যেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার হাজির হল। সে এসে তর্জন গর্জন হুঙ্কার করে নায়ককে ধাওয়া করতে লাগল।

আমরা তো টাশকি, বান্দরবানের পাহাড়ে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার আসল কিভাবে? পরিচালকের গাঞ্জার পরিমাণ কি একটু বেশি হয়ে গেছে? নাকি পরিচালক বিশ্বাস করেন “যাহা বান্দর তাহাই সুন্দর”? নাকি উচ্চারণে অনেকটা একই রকম হওয়ায় তিনি বান্দরবান ও সুন্দরবনের মধ্যে মৌলিক ও ভৌগোলিক পার্থক্য ধরতে পারেন নি? নাকি আজকাল সুন্দরবনের হাড্ডিসার হরিণে অরুচি ধরে গেছে বলে বাঘেরা দলে দলে জাহাজে করে পার্বত্য চট্টগ্রামে হাওয়া বদল করতে আসছে? যাহোক, সেই লতাপাতা পরিহিত পঞ্চম ভিলেন মারা গেল বাঘের কবলে পড়ে। সুদূর সুন্দরবন থেকে এতটা পথ পাড়ি দিয়ে এসে ভাগ্যে শুধু এই একটা লতাপাতাঅলা ভিলেন জুটল, ধুর শালা বাঘ না হইয়া ছাগল হইলেও পারতাম – এই বলে বাঘমামা এই লেখকের কাছে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বাঘমামার দুঃখে এই লেখকও ব্যথিত, দুঃখভারাক্রান্ত। তারপর মুখোমুখি হল জুকিব, নায়িকা, মিজু আর অমিত। মিজুর বুদ্ধি শুনে মিজুকেই খুন করে বসল অমিত।

তারপর সব সম্পত্তি তাকে লিখে দেবার জন্য নায়িকাকে নানাভাবে চাপ দিতে লাগল সে (না না এ চাপ সে চাপ নয়!) এই টাকায় নাকি তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট হবে। এটা না পেলে নাকি সে বাঁচবে না। আবার টাশকি! তবে হেলালের লুকিয়ে রাখা টাকাটার কি হল? ওটা কি গায়েব হয়ে গেছে? যথাসময় শুরু হল জুকিব ভার্সেস অমিত মরণপণ যুদ্ধ। জুকিব ফিজিক্সের সূত্র অগ্রাহ্য করে উড়ে এসে অমিতকে লাথি ঘুষি মেরে কুপোকাত করে দিতে লাগল, অমিতও তার জবাব দিতে লাগল ভালভাবেই। এমন সময় হঠাৎ কোত্থেকে চলে এল সেই ঘুষখোর পুলিশ অফিসার।

সেই পুলিশ অমিতকে বলল, “হে হে, আমি তোরে ফান্দে ফালাইসি। তোর সব প্ল্যান আমি যাইনা নিসি। ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট”। অমিত অবাক হয়ে বলল, “তুই যে আমার টাকা খাইসশ হেইডা কি ভুইলা গেলি? আর ইউ পম গানা?” পুলিশ বলল, “তোর টাকা আমি সরকারি ফান্ডে দিয়া দিসি। জীবনে আমি এক টাকাও ঘুষ খাই নাই।

আর সেইজন্যেই তো আমারে বান্দরবানে ট্রান্সফার দিসে। তুই আইজ শ্যাষ”। বহুদিন পর এমন মহান পুলিশ অফিসারের দেখা পেয়ে আমরা সবাই সমস্বরে Thumbs Up দিলাম। পুলিশের পিস্তল কপাৎ করে ছিনিয়ে নিয়ে অমিত পুলিশের হাঁটুতে গুলি করল। কিন্তু কি আশ্চর্য! গুলি খাবার পরও পুলিশ সেভাবেই দাঁড়িয়ে থেকে মুখ ব্যথায় বিকৃত না করেই কি একটা ডায়লগ দিলেন।

আমরা ভাবলাম, ব্যাটা কি তবে গুলি খাবার কথা বেমালুম ভুলে গেছে? একটু পরেই অমিতের Acute Liver Pain শুরু হল। অমিত পকেট হাতড়ে বের করল...আরে, ইয়ে কেয়া!! এ তো দেখি ভিটামিন-সি ট্যাবলেট! পরিচালক মহোদয় এই অব্যর্থ অনাবিষ্কৃত মহৌষধের নাম পেটেন্ট হারানোর ভয়ে আমাদের জানতে দিতে চাননি, ট্যাবলেটের বোতলের কাভার উঠানোর অপটু চেষ্টাও তিনি করেছেন, কিন্তু C লেখাটা শেষ পর্যন্ত ওঠে নি, আমাদের চোখও এড়ায় নি, আর আমরা যা বোঝার বুঝে নিয়েছি। তাহলে কি পরিচালক আসলেই গাঞ্জা খেয়ে এ লাইনে হাঁটছেন? নাকি তিনি ভয়ানক মারণব্যাধি লিভার সিরোসিসের অব্যর্থ দাওয়াই “ভিটামিন-সি” আবিষ্কার করে ফেলেছেন? তাহলে তো তাকে এখনই জরুরী ভিত্তিতে দুই তিনটা নোবেল প্রাইজ দিয়ে দেয়া উচিৎ! ওরে, আমাদের ডাক্তারদের তো ভাত মারা গেল রে, এখন তো আর লোকজন পঞ্চাশ ষাট লাখ টাকা দিয়ে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করাবে না রে, ভিটামিন সি খেলেই তো সবার লিভার ভাল হয়ে যাবে রে, শুধু ভাল বলছি কেন পুরানোটার জায়গায় নতুন লিভার গজাবে রে! শুধু তাই নয়, এমন চলতে থাকলে তো সোডিয়াম ক্লোরাইড খেলেই রেনাল ফেইলিউর ভাল হয়ে যাবে রে, ওরে পানি খেলেই তো মরা মানুষ জ্যান্ত হয়ে যাবে রে! আব্বা আমার কি হবে! যাই হোক, নায়িকা গুতা মেরে অমিতের হাত থেকে ভিটামিনের বোতল উড়িয়ে দিল, সেটা গিয়ে পড়ল নায়কের হাতে। অমিত নানারকম কাকুতি মিনতি করতে থাকল, কোন কাজ হল না। নায়ক সেটা ছুড়ে দিল পুলিশের দিকে, পুলিশ দিল নায়িকার দিকে।

আর ব্যথায় উহ আহ করা অমিতও তাদের কাছে লাট্টুর মত ঘুরপাক খেতে লাগল। ঠিক যেন মেয়েদের বালিশ বালিশ খেলা। একসময় জুকিব “খায়ালামু” টাইপ লুক নিয়ে সব ট্যাবলেট মাটিতে ফেলে প্রবল আক্রোশে পিষে ফেলল। ওমনি অমিতের মুখ দিয়ে পানি বেরুতে লাগল, অতঃপর রক্ত বেরুতে লাগল গলগল করে। উ আ আ উ করতে করতে মারা গেল অমিত।

আমরা বুঝলাম, “Fatal liver pain whose symptoms include massive GIT hemorrhage and water loss through oral route relieve only by vitamin C” নামক দুরারোগ্য রোগটা আজই এখনই পৃথিবীতে প্রথম আবিষ্কৃত হল। এই রোগে একটু পর পর ভিটামিন সি খেতে হয়। নাহলে গলগল করে মুখ দিয়ে পানি ও রক্ত বের হয়। নাহ, ব্যাটা পরিচালকের নোবেল মনে হয় আরও একটা বাড়ল। সব শেষ হয়ে গেল।

নায়ক নায়িকার শেষ খুনসুটির দৃশ্যে নায়িকাকে ডান বাম উভয় হাতই সমানে ব্যবহার করতে দেখা গেল। নায়িকার বাম হাতের যেখানে গুলি লেগেছিল তার অনেক নিচে চেপে ধরে মধুর মধুরে প্রেমের ডায়লগ দিতে দেখা গেল। তাহলে কি নায়িকাও ভুলে গিয়েছে যে সে গুলি খেয়েছে? নাকি গুলি খেয়েছে মনে করতে পারলেও কোথায় খেয়েছে সেটা ভুলে গেছে? তাহলে কি পরিচালক Altered Pain Sensation Syndrome in Bangla Cinema (APSSBC) নামের নতুন আরেকটি রোগ আবিষ্কার করেছেন? নাহ, এ ব্যাটা দেখি নোবেলের পর নোবেল বাগাচ্ছে!! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।