আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হলো না বলা শেষ কথাটি

শোভন। বিশ্ববিদ্যালয় এর ৩য় বর্ষের ছাত্র, খুব একটা মেধাবী বলা যায় না , দেখতে ভালো ই । সব সময় খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি নিয়ে চলাফেরা তার। খোঁচা দাড়িতে তাকে খুব একটা খারাপ লাগে না। বলা চলে ভাল ই লাগে।

নওশীন- মাত্র বিশ্ববিদ্যালয় এর গন্ডি পার হলো। পাশ করার সাথে সাথে ই একটা প্রাইভেট ব্যাংকে জব পেয়ে গেলো। নওশীন দেখতে সুন্দরী- তার বিশেষ বৈশিস্ট তার দীঘল কালো লম্বা চুল শোভন সেই প্রথম বর্ষ থেকে ই নওশীন কে পছন্দ করে , সিনিয়র হওয়ার কারনে কখন ও বলা হয় নি ডিপার্টমেন্ট এর জুনিয়র হিসেবে নওশীন মাঝে মাঝে মাঝে শোভন এর সাথে কথা বলত। কিন্তু শোভন নওশীনকে নিয়ে ভালবাসার ঘর সাজায়। কিছু দিন ধরে ই শোভন এর নিয়মিত অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে সকালে ঘুম থেকে উঠে ই নওশীন এর অফিস যাওয়ার পথে দাঁড়িয়ে চুপি চুপি নওশীন কে দেখা।

আজ কে সাহস করে সামনে গিয়ে ই দাড়ালো। নওশীনঃ হাই শোভন তুমি এই দিকে ? শোভনঃ এই তো ধানমন্ডি যাবো একটু , নওশীনঃ আমি ও তো ওই দিকে যাচ্ছি চাইলে তুমি ও আসতে পারো। এক রিকশায় যেতে পারি। শোভন ইতিস্তত ভঙ্গিতে উঠে পরলো রিকশায়। এই যেনো মেঘ না চাইতে ই বৃষ্টি।

নওশীন টুকটাক কথা জিজ্ঞাস করলো সেই সব এর উত্তর দিয়ে ই শোভন চুপ । দেখতে দেখতে নওশীন এর অফিস এর সামনে চলে আসে রিক্সা । দুই জনে নেমে পড়ে। নওশীন এর অফিস এর সময় হয়ে গেলো , তাই শোভন থেকে বিদায় নিয়ে অফিস এ যাবে ঠিক এই মুহুর্তে শোভন পিছন থেকে ডাক দেয়, থমকে দাড়ায় নওশীন। শোভনঃ আমি আসলে আপনার সাথে দেখা করতে ই এই পথে দাড়িয়ে ছিলাম, নওশীন খুব অবাক হয়।

শোভন আবার বলে উঠে আপনি খুব সুন্দর। নওশীনঃ দেখতে হবে না। আমি তোমার আপু না সুন্দর না হয়ে পারি ? শোভনঃ না মানে আমি আসলে একটা কথা বলতে চাই। কিন্তু এখন তো সময় নেই । আপনার অফিস এর দেরী হয়ে যাচ্ছে।

আমরা কি বিকালে কোথাও বসতে পারি? নওশীনঃ তুমি এক কাজ করো বিকাল ৫ টায় রবীন্দ্র সরোবরে চলে আসো, চা খেতে খেতে তোমার কথা শুনা যাবে। শোভনঃ ঠিক আছে। আমি তাহলে এখন আসি। শোভন আজ কে তার ভালোবাসার কথা বলবে। যা এই ৩ টা বছর সে বলত পারে নি।

অস্থিরতার মাঝে প্রতিটা সেকেন্ট কাটতে থাকে , শোভন বাসা থেকে বের হয় নওশীন কে মনে কথা বলবে বলে। এই দিকে নওশীন অপেক্ষা করতেছে রবীন্দ্র সরোবরে বিকাল ৫ টা বাজে কিন্তু শোভন এর কোনো খবর নেই। আস্তে আস্তে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে চলছে। তার ফোন এ অনবরত ফোন বেজেই চলছে কেও তুলছে না। আবার ও ফোন দিয়ে ই যাচ্ছে।

হুম এই বার ফোন টা কেও এক জন রিসিভ করলো । তবে সে শোভন না। জানা গেলো শোভন ল্যাব এইড এ আছে , নওশীন ছুটে যায় ল্যাবএইড এ। গিয়ে দেখে পড়ে আছে শোভন এর নিথর দেহটি। জানা যায় আজ বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট এ রোড এক্সিডেন্ট এ শোভন মারা যায়।

যার সাথে আজ কে সকালে ও এক ই রিকশায় এক সাথে বসে গল্প করলো সে আজ মরা লাশ হয়ে পড়ে আছে। নওশীন এর জানা হলো না কি কথা বলতে চেয়েছিলো শোভন। তবে তার বাম পকেটে একটি লাল গোলাপ পাওয়া গেছে। আর বেশী লাল দেখাচ্ছে গোলাপ টি , রক্তের লাল। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।