আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিলেটে চালিবন্দরস্থ শ্মশানঘাট বিঘিœত হচ্ছে পবিত্রত......

শ্মশান হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে মহাপবিত্র স্থান। মানব জীবনের সায়াহ্নে শেষকৃত্ত ‘দাহ’ করা হয় মহাশ্মশানে। তেমনই সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর আওতাধীন চালিবর্ন্দস্থ শ্মশানঘাট, সিলেট হিন্দু সম্প্রদায় লোকেদের কাছে পবিত্র এবং সংবেদনশীল স্থান। সিলেট সিটি কর্পোরেশন ভেঙ্গে নতুন ভাবে সাম্প্রতিককালে ‘‘নগর ভবন’’ করা হয়। নগর ভবনের কার্যক্রম (ভবন) তৈরীর সময় পুরাতন ভবনটি উপরিভাগ ভাঙ্গার পর মাটি খনন করতে হয়েছে।

স্থানীয় ভাবে জানাযায়, “সেই স্থান এক সময় সিলেট লালদীঘির একাংশ ছিল। যা তৎকালীন সময়ে নগরীর পৌর এলাকার ময়লা দিয়ে সেই দীঘি ভরাট করা হয়। ’’ নগরভবন তৈরিতে মাটি খনন করলে, সেই সময়ের দীঘি ভরাটের আবর্জনা বিশিষ্ট মাটি উঠে আসে। আর সেই মাটির শতশত ট্রাক, সিলেট এর প্রাচীন শ্মশান ঘাট সংস্কারের নামে কয়েক মাস ধরে পড়ে আছে চালিবন্দরস্থ শ্মশান ঘাটে। শ্মশান ঘাটের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি কমিটি থাকলেও ‘‘নগর পিতা’’ মেয়র মহোদয় এর কাছে অন্ধত্ব, বধিরতায় আর বাকরুদ্ধ অবস্থায় কেন আছে এ শ্মশান কমিটি ? ‘নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কমিটির এক সদস্য মোঠো ফুনে জানান, কমিটির জ্ঞাতসারে খননকৃত সিটি কর্পোরেশনের শ্মশানের সংস্কারের কাজের মাটি তবে তাতে আবর্জনা নেই।

যদিও থেকে থাকে তা পরে বালি দিয়ে ঢাকা পড়ে যাবে’। এতে হিন্দু সম্প্রদায়কে অসম্মানিত করার এবং পবিত্র স্থানকে কেন অপবিত্র সাজানো হচ্ছে। তা হিন্দুসচেতন সমাজের কাছে, তথা হিন্দু সুধি সমাজে আলোচনা হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ক্ষোভ। শ্মশানে একটি প্রাচীন কালি মন্দির রয়েছে। শ্মশান ঘাটে নেই পানীয় জলের (টিউবয়েল) সুবিধা।

চিতা শান্তির জন্য যে পুকুর হতে মটর’র মাধ্যমে পাইপ ছিল সেগুলো বহুদিন ধরে বিকল অবস্থায় রয়েছে। শ্মশান ঘাটের বিশাল এলাকার মধ্যে রয়েছে একটি পুকুর ঘাট, সেটাও সংস্কার বিহীন অবস্থায় আছে। পুকুরের পাশে বর্তমানে স্তুপ করে রাখা আছে আবর্জনার বিশালাকায় মাটি। নেই শ্মশান এলাকার সুষ্ঠু জায়গার পরিমিত নির্ধারিত সীমানা প্রাচীর। ২০০৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম সাইফুর রহমান শবদাহ শেড সংস্কার, বাস্তবায়নে: জেলাপরিষদ সিলেট, করে দিয়েছিলেন।

সেই শবদাহ শেড বিগত দিনে আর কোন সংস্কার হয় নাই। সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক টালি দিয়ে তৈরি জনসাধারন বসার জন্য ৪/৫টি ব্রেঞ্চি আর মূল ফটক তৈরী করা হয়েছিল। বর্তমানে ২০১২ সালে সংস্কারের নামে আবর্জনা বিশিষ্ট মাটি স্তুপ করে, মাসের পর মাস রয়েছে, নেয়া হচ্ছেনা পবিত্রতা রক্ষার উদ্যোগ। সিলেট সিটি কর্পোরেশন স্থাপনকল্পে প্রণীত আইন। যেহেতু সিলেট সিটি কর্পোরেশন স্থাপনকল্পে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্বারা নিন্মরূপ আইন করা হইলbr /> এই আইন সিলেট সিটি কর্পোরেশন আইন, ২০০১ নামে অভিহিত হইবে।

সপ্তম পরিচ্ছেদ ঃ গোরস্থান ও শ্মশান ১৩২। (১) কর্পোরেশন মৃত ব্যক্তির দাফন বা দাহের জন্য গোরস্থান ও শ্মশানের ব্যবস্থা করিবে এবং উহার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। (২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সর্বসাধারণের ব্যবহার্য কোন গোরস্থান বা শ্মশানকে কর্পোরেশনের উপর ন্যস্ত বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিবে এবং অনুরূপ ঘোষণার পর উহা কর্পোরেশনে ন্যস্ত হইবে এবং কর্পোরেশন উহার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে। (৩) যে সকল গোরস্থান বা শ্মশান কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত হয় না সেই সকল গোরস্থান বা শ্মশান কর্পোরেশনের নিকট রেজিষ্ট্রিভুক্ত করাইতে হইবে এবং উহা প্রবিধান অনুযায়ী কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণ ও পরিদর্শনাধীন থাকিবে। (৪) কর্পোরেশন কর্তৃক মঞ্জুরীকৃত কোন লাইসেন্স ব্যতিরেকে এবং উহার শর্তানুযায়ী ব্যতীত কোন নূতন গোরস্থান বা শ্মশান প্রতিষ্ঠা করা যাইবে না।

পরিতাপের বিষয় সিটি মেয়র তখন হতে (সিলেট জেলা চেয়াম্যান) আজ অবধি বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের একজনই বর্তমান “নগর পিতার” দয়িত্বে আছেন। কিন্ত সিলেট বাসীর ‘নগর পিতা’র কাছে অবহেলিত অপবিত্র অবস্থায় রয়েছে প্রাচীনতম চালিবন্দর শ্মশানঘাট। বর্তমানে স্থানীয় হিন্দু ধর্মালম্বীরা এ মহাপবিত্র স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন। সিলেটবাসীর সিটি মেয়র’র কাছে এখন একটাই আশা উক্ত শ্মশান ঘাটটির সংস্কারের জন্য আশু উদ্যোগের ব্যবস্থা গ্রহন কবে করবেন? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।