আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেখিয়াই ফেলিলাম ভালবাসার রং

ব্লগার না পাঠক হওয়ার চেষ্টায় আছি ভালবাসার রঙ এর ট্রেইলার যখন দেখিয়াছিলাম তখনই ভালবাসার রঙ মোটে কয়খান তাহা জানিতে ব্যাপুক আগ্রহ বোধ করিয়াছিলাম। অতঃপর যখন লালরঙ্গা মাহির পোষ্টার সংবলিত ছবিতে ঢাকা সিটি সয়লাব হইতে শুরু করিয়াছিল তখন হইতেই আমি ওই ছবির বিশাল ফ্যান। ঢাকার কিং শাকিপ খান কিংবা মহানায়ক অনন্ত জলিলের পর বাপ্পি আমার ফেবারিট নায়ক কিনা তাহা বলা মুশকিল হইলেও ববি ওরফে রাতের রাণী সুহানার চেয়ে মাহিয়া মাহিই যে আমার ফেবারিট এই ব্যাপারে সন্দেহের কুনু অবকাশ নাইক্কা। জ্যামের ভীড়ে কত্ত যে ঐ পুষ্টারের দিকে হা কইরা তাকাইয়া আছিলাম আল্লা মালুম! যা হোক, আইজ ক্লাস করিয়া ব্যাফুক টায়ার্ড হইয়া বাসায় যাইতে উদ্যত হইতেছিলাম। ছবি দেখার কুনু প্লান আছিল না।

হঠাত করিয়া এক বাসে দেখি লালরঙ্গা মাহি আপুর ছবি সংবলিত ভালবাসার ঢং ছবির পোষ্টার! তৎক্ষণাৎ আমি ঠিক করিলাম আইজই ছবি দেখা চাই। বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেওনের বদলে রওনা দিলাম বলাকার উদ্দেশ্যে। বাসে আমি সচরাচর ঘুমাই না! তয় আইজ ক্লান্তিতে হউক কিংবা ছবি দেখনের উত্তেজনায় হউক বাসের মইধ্যে ঘুমাইছি। বাস নিউ মার্কেট পৌছানোর ক্ষণকাল আগে হেল্পার যখন নিউ মার্কেট নিউ মার্কেট কইয়া চিল্লাইতাছিলেন তখনি লাফ দিয়া উঠিয়া পড়িলাম। ঘড়ির দিকে তাকাইয়া দেখি ৩ টা ১০ বাজিয়া গেছে।

নামার আগে হেল্পার আবার জিগাইল ভাড়া দিছেন তো? আমি কহিলাম, “ইউ পোম গানা?? উইল ইউ টেক ভাড়া ২ বার!” বেচারা হা কইরা আমার দিকে চাইয়া ছিল। অবশেষে টিকিট কাটিয়া ভিতরে ঢুকিয়া পড়িলাম। কপোত-কপোতীদের ভীড়ে নিজেরে কিঞ্চিত অবাঞ্ছিত মনে হইতেছিল। হঠাত করিয়া দেখি এই ডিজুস যুগে এক বোরখা পড়া আপামণি মুবাইলে চিল্লায়ে চিল্লায়ে কহিতেছেন, “আমি ক্লাসে। আরে বললাম তো আজকে একটা বেশি ক্লাস হবে! আসতে দেরী হবে।

” পাশে উহার বয়ফ্রেন্ড কিঞ্চিত হতাশ দৃষ্টিতে তাকাইয়া ছিল। তয় ফুন রাখার পর বয়ফ্রেন্ড এবং ওই বোরখা আপা এক লগে হাসিয়া উঠিলেন। বুঝলাম আপার সমস্যার সমাধান হইয়াছে। ছবি শুরু হইল। ছবির শুরুতেই ক্যাপশনে দেখিলাম যে সুন্দরী নায়িকা মাহি বইসা আছে আর নায়ক বাপ্পি উলটা হইয়া তাহাকে লাল ফুল দিতেছে।

এইরাম ফটুক দেওনের কারণ বুঝিলাম না। যাহা হউক, আনুষ্ঠানিকভাবে ছবি শুরু হইল। শুরুতেই দেখিলাম কতিপয় গ্রাম্য যুবক পুকুরে গোসল করিতেছে। তাহাদের পাশে গ্রামের কিছু মেয়েরাও গোসলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। হঠাত করিয়া বলা নাই কওয়া নাই এক পুলা দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া উড়িয়া আসিয়া ঝাঁপ দিয়া পানিতে পড়িল।

এই পুলাই আমাদের দুষ্টু নায়ক বাপ্পি ভাই। ঐ সকল ছেলেদের ভীড়ে একজন ছিল কাবিলা। উনি যেই মেয়েকে পছন্দ করিতেন সেই মেয়েও ঘাটে বসিয়া গোসলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। হঠাত করিয়া বাপ্পি বলিয়া উঠিল, কাবিলা মামা, তুমার সাথে ঐ মেয়ের কি প্রেম চলিতেছে নাকি? ইহা শুনিয়া কাবিলা তাহাদের প্রেমের রসময় বর্ণনা দিতে লাগিল এবং প্রমাণ স্বরূপ ওই মেয়ের কাছে গেল। তয় ওই মেয়ে কাবিলাকে বেইল দিল না কিন্তু তাও কাবিলা মামা আসিয়া কহিল যে ওই মেয়ে তাহাকে অনেক পছন্দ করে! বাপ্পিরাও এক বাক্যে তাহা মানিয়া লইল।

এদিকে বাপ্পি ভাই যখন গভীর মনোযোগ দিয়া ক্রিকেট খেলতিছেন তথা ব্যাটিং করিতেছেন তখন তাহার এক বন্ধু খবর লইয়া আসিল উহাদের পাড়ায় বিশাল গাড়ির বহর আসিয়াছে। খবর লইয়া তাহারা জানিতে পারিল তাহাদের কাবিলা মামা যাহাকে ভালবাসিত তাহার বিবাহ হইতেছে। হঠাত করিয়া হারিকেন সিডরের বেগে বাপ্পি আসিয়া কহিল এই বিবাহ হইবে না কারণ কুনু মেয়ের এক পুলার লগে প্রেম কইরা আরেক পুলাকে বিবাহ করার অধিকার নাই। কাবিলাও বাপ্পির লগে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করিল। কিন্তু ইহা শুনিয়া ওই মাইয়া ক্ষেপিয়া গেল এবং কহিতে লাগিল সবই ভুয়া।

বিবাহ ভণ্ডুলের লাগিয়া বাপ্পিরা এইসব করিতেছে। কিন্তু তারপর মেয়ে যা করিল তাহা রীতিমত ভয়ানক! উহার হবু বরের সম্মুখে কাবিলাকে পিটাইতে আরম্ভ করিল। অতঃপর বিবাহ ভন্ডুল হইয়া গেল। যাইবার আগে পুলার বাবা কহিয়া গেলেন, যেই মাইয়া এমনে কুনু পুলাকে পিটায় তাহার লগে তিনি তাঁর পুলার বিবাহ দিবেন না! অতঃপর গ্রামের মাতবরেরা বিবাহ ভন্ডুলের জন্য বাপ্পিকে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দিলেন। নির্দেশ কার্যকরী হওয়ার ঠিক আগ মূহুর্তে বাপ্পির বাপ আসিয়া কহিল যেই পুলার সাথে মেয়ের বিবাহ ঠিক হইয়াছিল সে নাকি সেই রাত্রেই ইয়াবা সহ পুলিশের কাছে ধরা পড়িয়াছে।

কাজেই বাপ্পি ভাল কাজই করিয়াছে। অতঃপর সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হইল। এদিকে উহাদের গ্রামে নির্বাচন লইয়া দুই প্রার্থীর মইধ্যে ধুন্দুমার হাতাহাতি লাগিয়া গেল। ক্যাচাল যখন চরমে তখন বিরাট গাড়িতে করিয়া চৌধুরী সাব রাজ্জাক আসিয়া মীমাংসা করিয়া দিলেন। উনি প্রার্থী হিসেবে দুইজনের কাওকে মনোনয়ন না দিয়া জনৈক হিন্দুকে নির্বাচনে দাঁড়াইতে কহিলেন।

এদিকে বাপ্পি তাহার এক দর্জি বন্ধুর দুকানে গেল এবং চা খাইতে চাইল। কিন্তু বন্ধু কহিল, সে চৌধুরী সাবের সুন্দরী নাতনীর কাপড় দিয়া আসতে যাবে। সুন্দরী মেয়েছেলের কথা শুনিয়া বাপ্পিও যাইবার চাইল। বহু জোড়াজোড়ি করার পর বন্ধু রাজী হইল কিন্তু বাপ্পিকে নিয়া চৌধুরীর বাসার ভেতরে ঢুকিল না। কারণ ক্যাচালবাজ এই পুলা কুন ঝামেলা পাকায় কে জানে! কাজেই বাপ্পি চৌধুরী সাবদের বিরাট বাড়ির সম্মুখে সাইকেল লইয়া দাঁড়াইয়া ছিল।

বাপ্পির দোস্ত কাপড় মাহির হাতেই দিতে চাইছিল কিন্তু মাহিদের কাজের বুয়া আসিয়া কহিল মাহি গোসল করিতেছে। এই জন্য বোধ করি বাপ্পির বন্ধু কিঞ্চিত মন খারাপ করিল। এদিক হাই বিটে গান বাজা আরম্ভ করিল এবং গানের তালে বাসার সকলে নাচিতে লাগিল। ঘটনা হইল আমাদের মাহি আপু হাই ভলিউমের গান ব্যতীত গোসল করিতে পারেন না। কাজেই বাথটাবে ভেতরেও মাহিপু দেহ নাচাইতে লাগিলেন।

এদিকে উহাদের এই নাচানাচি দেখিয়া আমার মাথাও কিঞ্চিত নড়িয়া উঠিল। পাশের সিটে এক বড় ভাই তাহার গার্লফ্রেন্ড লইয়া বসিয়া আছেন এবং সামনে একজন মুরুব্বি আছেন দেখিয়া আমি সিট ছাড়িয়া লাফাইয়া উঠি নাই! কিন্তু চৌধুরী সাব এই গান সহ্য করিলেন না। তাহার আদেশে গান থামাইয়া দেওয়া হইল। কিন্তু এতে মাহি চরম রাগ করিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন গান না ছাড়িলে সারা দিন পানিতে থাকিবেন! অতঃপর আবার গান ছাড়া হইল। মাহি গোসল শেষ হওয়ার পরও গানের তালে নাচিতে নাচিতে আর দর্শককুলের হৃদয় নাচাইতে নাচাইতে তাহাদের বেলকনিতে আসিয়াও নাচিতে লাগিলেন।

এদেকে দূর থেকে বাপ্পি মাহীর এইরাম নাচ দেখিয়া নিজেও ডিজুস পদ্ধতিতে নাচিতে লাগিল। বড়ই কঠিন অবস্থা! হঠাত করিয়া সে মাহির নজরে পড়িয়া গেল। মাহী তাহার দিকে নিবিষ্ট চিত্তে তাকাইয়া ছিল। কিন্তু বাপ্পীর আর কুনুদিকে কুনু খিয়াল নাই। সে নাচিতেই থাকিল।

এদিকে বাপ্পির বন্ধু কাপড় দিয়া বাপ্পির কাছে আসিয়া তাহার এই নাচের কারণ জানিতে চাইল। অতঃপর তাহার বন্ধুকুলে ছড়াইয়া গেল যে সে মাহীকে ভালুভাসে! এদিকে বাপ্পি বন্ধু মারফত জানিতে পারিল মাহি রোজ সকাল এগারটায় শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশে নদীর পাশ দিয়ে কোথায় যেন যায়! সে মাহির যাত্রাপথে আসিয়া উপস্থিত হইল। তখনই চিল্লায়ে চিল্লায়ে তাহার ভালবাসার কথা কহিল। মাহি কইল ভালবাসার পরীক্ষায় পাস করিতে পারিলেই সে বাপ্পিকে ভালবাসবে! এদিকে মাহির লগে থাকা বিচ্ছুবাহিনীর মইধ্যে থেইকা ছুডু একটা পিচ্চি মেয়ে মাহিকে কানে কানে পরামর্শ দিল। অতঃপর মাহি কহিল বাপ্পি যদি মাহীর দাদা মানে চৌধুরী সাবের লাঠিটা চুরি করতে পারে তাহলেই সে বাপ্পির প্রেমে পড়বে! বাপ্পি লাফাইতে লাফাইতে রাজী হইয়া গেল! বাপ্পিকে একাজে সহয়তা করার লাগিয়া ছুটিয়া আসিল কাবিলা! সে আস্তে কইরা দরজায় ধাক্কা দিল।

দারোয়ান বাহির হইয়া চোর চোর করিয়া চিল্লায়া কাবিলাকে ধাওয়া দিতে লাগিল। এইফাকে বাপ্পি লাঠি চুরি করিয়া আনিল। তয় কিছুদূর দৌড়ানোর পর টায়ার্ড হইয়া কাবিলা ঝোপের আড়ালে গিয়া তাহার পরণের লাল গেঞ্জি পাল্টাইয়া কাল গেঞ্জি পড়িল এবং মাথার রুমাল খুলিয়া নিজেও চোর চোর করিতে লাগিল! এ ঘটনায় হতভম্ব দারোয়ান আর বুঝিল না কাবিলাই দরজায় ধাক্কা দিয়াছিল। যাহা হউক, পরীক্ষায় বাপ্পি গোল্ডেন এ পিলাচ সহ পাশের পরও মাহি তাহার আবার পরীক্ষা নিতে চাহিল। যদিও ইতোমধ্যে মাহি শয়নে স্বপনে বাপ্পিকে দেখিতে লাগিল।

মাহির নয়নে, শয়নে, গোপনে, বাহিরে সবজায়গায়ই বাপ্পি! এই পরীক্ষা আরও কঠিন। মাহিদের বাসার টেপরেকর্ডার চুরি করিতে হইবে! কাবিলা একই পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া বাপ্পিকে বাসার ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। কিন্তু রেকর্ডার চুরি করে নিয়ে আসার সময় হঠাত ধাক্কা খেয়ে বাপ্পি একটা ক্যাসেট ফেলে দেয়। বাসার সবাই জেগে উঠে। চোর চোর করে চিল্লাপাল্লা শুরু হয়।

বাপ্পি কুনুরকমে বাসার সামনে থাকা বিশাল একটা ঝোপের মধ্যে আশ্রয় নেয়। কিন্তু, মাহির ভাই সেই ঝোপে বল্লম দিয়ে গুতা দিতে থাকে পাছে চোর বের হয়ে আসে কি না! বাপ্পির শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেলেও সে বের হয়ে আসে না! এদিকে মাহির মনের প্রেমবাসনা পুরোপুরি জাগ্রত হয় যখন বিচ্ছুদলের একজন এসে বলে বাপ্পি প্রায় মরতে বসেছে! মাহি ছুটে বাপ্পির কাছে চলে যায়। এদিকে যাওয়ার আগে আরেক বিচ্ছু মাহিকে স্যাভলন আর তুলা দিয়ে দেয়। অতঃপর মাহি বাপ্পিকে সেবা করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বাপ্পির প্রেমে পড়ে! এদিকে মাহি যখন একদিন শপিং করতে যায় তখন এক গুন্ডা মাহিকে দেখে চিনে ফেলে। আসল ঘটনা হল মাহি চৌধুরীর নাতনী না! তার আসল নাম ফারিয়া।

ফারিয়ার বাবা বিশাল বড়লোক। তার বাবার ম্যানেজার তার বাবা এবং মাকে টাকার লোভে মেরে ফেলে। অতঃপর তাকে এক মহিলা মোটা ডাক্তার দিয়ে ইনজেকশন দিয়ে অবেচতন করে ফেলে। কিন্তু এক নার্স এসে কুনুরকমে তাকে মানসিক হাস্পাতাল থেকে পালানোর ব্যাবস্থা করে দেয়। প্রায় অবেচতন ফারিয়া রাস্তায় এসে একটা গাড়িতে লিফট চায়।

গাড়িতে থাকে এক বদমাইশ। ফারিয়া গাড়িতে উঠার লগে লগে বদমাইশ মাহির উপ্রে ঝাপাইয়া পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখিলে ফারিয়া মাইক্রোর দরজা খুলিয়া রাস্তায় ঝাঁপ দেয়। এদিকে তখন ঐ রাস্তা দিয়া নিজের নাতনী মাহিকে কবর দিয়া বাসার পথে আসিতেছিলেন চৌধুরী সাব। ফারিয়াকে অচেতন অবস্থায় বাসায় নিয়া যান তিনি এবং জ্ঞান ফিরনের পর দেখেন ফারিয়ার কিছুই মনে নেই।

অতঃপর ফারিয়াকে মাহি নামে তিনি ডাকিতে থাকেন। এদিকে মাহি এ ঘটনা পুরো জেনে যায়। ইতোমধ্যে মুটি ডাক্তারকে লইয়া ম্যানেজার জোয়ার্দার মাহিকে উঠাইয়া নিতে আসে! চৌধুরী সাব থাপ্রাইয়া তাহাকে বিদায় করেন। এদিকে থাপ্পরের প্রতিশোধ নিতে তথা মাহিকে উঠাইয়া নিয়া আসতে জোয়ার্দার সাব কুখ্যাত খুনি তুফানকে ভাড়া করেন। এদিকে তুফানের লিভারে ব্যাপুক সমস্যা।

লিভার সমস্যা ছাড়ান্নর জন্য তুফান ব্যাঙ্ক থেকে অনেক টাকা লুট করে আনে কিন্তু দুঃখজনক ভাবে তুফানের ভাই টাকা লইয়া ভাগিয়া যায়। যা হোক, তুফান মাহিকে তুলিয়া লইতে আসিলে চৌধুরী বাধা দেয় এবং তুফান ভাই তুফানের বেগে গুলি করে চৌধুরীকে ঝাঁজরা করে দেয়! ইতোমধ্যে মাহি কুনুরকমে পালাইয়া বাপ্পির বাসায় চলিয়া আসে। বাপ্পির বাবা পুলিশে খবর দিতে গিয়া দেখতে পায় তুফান ভাই মুটা অঙ্কের টাকা দিয়া পুলিশোকে কিন্না ফালাইছে। অতঃপর বাপ্পির বাবা বাপ্পি এবং মাহিকে গভীর জঙ্গলে তাদের বাগানবাড়িতে পাঠায়ে দেয়। বাগান বাড়িতে তাদের লুতুপুতু দিনকাল বেশ ভালই চলিতেছিল।

কিন্তু হঠাত করিয়া তুফানের পলায়ত ভাই ওখানে আসিয়া হাজির হয় কারণ ওটা তার পালানোর জায়গা। ভাইয়ের নিকট হইতে টাকা আনিয়া সে ওই বাগানবাড়িতে রাখে। যখন বাপ্পির সাথে তুফানের ভাইয়ের দেখা হয় তখন সে বাপ্পিকে জানায় সে তাদের বিপদের কুনু কারণ হবে না। অতঃপর সে মৌজ করতে চলিয়া যায়। মৌজের শুরুতেই লাক্স কন্য বিপাশার অত্যানুধিক ডিজুস ড্যান্সের সহিত তুফানের ভাই নাচিতে থাকে।

দর্শককুল হাততালি দিয়া তাহাদের মৌজকে সমর্থন জানায়। অতঃপর মাতাল অবস্থায় তুফানের ভাই ক্লাব হইতে বাহির হইলেই তুফানের সাথে দেখা হয়। তুফান টাকার কথা জিগাইলে তুফানের ভাই বাগানবাড়ির কথা বলিয়া দেয়। কিন্তু তারপরও ভাইকে তুফান মারিয়া ফেলে। নিতান্তই কপালদুষে মাহি-বাপ্পিকে তুফান টাকা উদ্ধারের সময় বাগানবাড়িতে দেখিয়া ফেলে।

অতঃপর তাহার দৌড়াইতে থাকে। দৌড়াইতে দৌড়াইতে কাদার ভিতরে ডুবিয়া তাহারা কুনুরকমে আত্মগোপন করে। কাঁদার ভিতরে থাকিয়াও গানের মাধ্যমে তাহার কেমনে সুখের কল্পনা করে আল্লা মালুম! ইতোমধ্যে, বাগানের আরেক ডাকাইত মাহিকে ব্যাপুক চয়েস কইরা ফেলে। বাপ্পি তাহার লোলুপ দৃষ্টি হইতে মাহিকে বাঁচায়! এদিকে ভিলেনরা মরিতে থাকে। হোতারা একে অন্যকে মারিতে থাকে।

জোয়ার্দার, উকিল আর মোটি ডাক্তার গবেষণা করিয়া বাহির করে মাহিকে ধরতে পারলে তাহার বাবার সম্পত্তি ভাগ করিলে প্রত্যেকে ২৫০ কোটি টাকা পাবে। টাকা নিয়া ভাগাভাগি করণের সময় হঠাত করিয়া উকিল বলিয়া উঠে অনেক টাকা। সে দুই পাশে দুই ললনা লইয়া ফুর্তি করিতে পারিবে। কথা শেষ হইতে না হইতেই মোটি ডাক্তার গুলি করিয়া উকিলরে মাইরা ফেলে! এদিকে টাকার ভাগীদার কমানোর এ অভিনব ব্যবস্থার জন্য জোয়ার্দার মোটি ডাক্তারকে জড়াইয়া ধরে এবং গুলি করিয়া মারিয়া ফেলে। এখন টাকার অংশীদার মাত্র দুইজন।

তুফান আর জোয়ার্দার! এদিকে বাপ্পি আহত মাহিকে গাছের নিচে আশ্রয়ে রেখে একে একে পাতি গুন্ডাদের মেরে এসে দেখে মাহি নেই। তুফান তাকে ধরে নিয়ে গেছে। অতঃপর তুফানের বেগে সে ছুটতে থাকে। এদিকে তুফান মৃত মোটি ডাক্তারের দেখানো পথ অবলম্বন করিয়া জোয়ার্দারকে মেরে ফেলে মাহিকে দলিল সাইন করাতে বলে। মাহি কিছুতেই রাজি হয় না।

অতঃপর মাহিকে সে মেরে ফেলতে উদ্যত হয়। হঠাত করিয়াই নায়ক বাপ্পি লাফাইয়া আসিয়া তুফানকে ধাক্কা মারিয়া ফালাইয়া কুপোকাত করে ফেলে। এদিকে অন্যান্য প্রথাগত বাংলা চলচ্চিত্রের ন্যায় ছবির শেষ অংশে ওই টাকা খাওয়া পুলিশ আপিসার আসেন এবং বলেন এ যে তিনি টাকা খান নি! এদিকে তুফান ছলে বলে কৌশলে পুলিশ অফিসারের পিস্তল ছিনাইয়া মাহিকে আটকে ফেলে এবং বলে কেউ কিছু করলে মাহিকে মেরে ফেলবে। এদিকে হঠাত করিয়াই তুফানের লিভারে ব্যাথা উঠে। সে অষুধ খাইতে নিলে মাহি ধাক্কা দেয়।

ফলে অষুধের ডিব্বা বাপ্পির হাতে গিয়ে পড়ে। অতঃপর বাপ্পি-মাহি-অফিসার ডিব্বা একে অন্যকে ক্রমান্বয়ে দিতে থাকে এবং তুফান ভাই জানে বাঁচার লাগিয়া বলচোরের লাহান ছোটাছুটি করে। কিন্তু একসময় বাপ্পি অষুধের ডিব্বা ভেঙ্গে অষুধ সব গুড়ো করে ফেলে। মুখ দিয়ে ফেনা উঠতে উঠতে তুফান মারা যায়। অতঃপর মাহি এবং বাপ্পি সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল।

পুনশ্চঃ অতিশয় হালকা একটা রিভিও লেখার চেষ্টা। ছবিটি মাঝারি মানের। কিছু কাহিনীতে সামান্য ঘাপলা আছে! তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমিও চাই বাংলা ছবি একদিন বিশ্ব দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াক। শুরুটা কাউকে না কাউকে করতে হবে। অনন্ত সেটা করেছে! ভুল হউক খারাপ হউক করেছে তো! মাহি- বাপ্পিরা তা এগিয়ে নিতে থাকুক! মানুষের মুখে ইংলিশ কিংবা হিন্দি ছবির গুণগান শুনতে কার ভাল লাগে? সময় লাগবে কিন্তু একদিন অবশ্যই বাংলা ছবি বিশ্ব দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াবেই...... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।