আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোনটি সঠিক? আমরা কি ভুল করছি? আসুন জানার চেষ্টা করি।

আল্লাহ তা'লা বলেন, "নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমাসমূহ এবং ভাগ্য নির্ধারক শরকসমূহ অপবিত্র ও শয়তানের কাজ ছাড়া কিছুই না। অতএব, এগুলো থেকে বিরত থাক যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। " সূরা আল মায়েদা - ৯০ নামাজে দাড়িয়ে হাত কোথায় বাঁধবেন; ক) সাহাল ইবন সা'দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, লোকদের নির্দেশ দেওয়া হতো যে, সালাতে প্রত্যেক ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখবে (২/১০২ হাঃ ৭০৪ বুখারী) খ) হুলব আ-ত্বঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বাম হাতের জোড়ের (কব্জির) উপরে ডান হাতের জোড় বুকের উপরে রাখতে দেখেছি (আহমদ, ১/৯০ তুহফাতুল আওয়াযী, ১/১০৯ ফিকহুস সুন্নাহ) গ) তাউস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সলাতরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করতে তা নিজের বুকের উপর বেঁধে রাখতেন (১/৪১১ হাঃ ৭৫৯ আবূ দাউদ) ঘ) ওয়ায়েল ইবনে হোজর (রাৎ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে সলাত আদায় করলাম, তিনি বাম হাতের উপর ডান হাত সংযোগ করে স্বীয় বুকের উপর রাখলেন (তাঃ ৪৭৯ ইবনে খুযাইমাহ, হাঃ ২৭৫ বুলুগুল মারাম) এই হাদীসটি ইমাম ইবনে খুযায়মাহ স্বীয় গ্রন্থে সহীহ সনদে রিওয়ায়েত করেছেন ৯২০ পৃঃ বুলুগুল মারাম) অনুচ্ছেদঃ ১৫ তাকবীরে তাহরীমার পর বুকের নীচে কিন্তু নাভির উপরে বাঁ হাতের ওপর ডান হাত রাখবে; সিজদারত অবস্থায় হাত কাঁধ বরাবর মাটিতে রাখবে। (মুসলিম) ঙ) হাদীস নং- ৭৯১ ওয়াইল ইবনে হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি নবী (সাঃ) কে দেখলেন, তিনি নামাযে প্রবেশ করার সময় দুই হাত তুললেন এবং তাকবীর বললেন। হাম্মামের বর্ণনায় আছে, তিনি দুই হাত কান পর্যন্ত উঠালেন; অতপর চাদরে ঢেকে নিলেন এবং ডান হাত বাঁ হাতের ওপর রাখলেন।

তিনি যখন রুকুতে যাওয়ার ইচ্ছা করলেন, উভয় হাত কাপড়ের ভিতর থেকে বের করলেন, অতপর তা উত্তোলণ করলেন, অতপর তাকবীর বলে রুকুতে গেলেন, তিনি যখন "সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ' বলে উভয় হাত উপরে উঠালেন। তিনি যখন সিজদায় গেলেন, দুই হাতের তালুর মাঝখানে সিজদা করলেন। চ) ইবন জুরাইজ থেকে তাঁর পিতার সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ)-কে সালাতে নাভীর উপরে ডান হাত দিয়ে বাম হাতের কব্জি ধরে রাখতে দেখেছি (১/৪১০ হাঃ ৭৫৭ আবূ দাউদ) ইমাম আবূ দাউদ (রাঃ) বলেন, সাঈদ ইবন জুবাইর থেকে 'নাভীর উপরে' উপরে বর্ণিত আছে। আর আবূ মিজলায বলেছেন, "নাভীর নীচে"। আবূ হুরায়রা থেকেও অনুরূপ বর্ণিত আছে, কিন্তু তা তেমন শক্তিশালী নয়।

হাদীসটি "যঈফ"। ছ) সলাতে নারী-পুরুষ উভয়েই বুকের উপর হাত বাঁধিকে। নারীরা বুকের উপরে আর পুরুষেরা নাভীর নীচে হাত বাঁধিবে এইরূপ পার্থক্যের কথা সহীহ হাদীসে নেই। নারী-পুরুষ ইভয়ের জন্য একই নির্দেশ (সূত্রে শাইখ আবদুস সত্তার {ত্রিশালী} জ) কোন সহীহ হাদীসে নাভীর নীচে হাত বাঁধার কথা নেই। হানাফী মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ ফেকার কিতাব হিদায়া, ইউসুফী প্রেসের ছাপা, বাবে ছিফাতুস সলাত ১ম খন্ডের হাশিয়া ৮৬ পৃষ্ঠায় আছে।

অর্থাৎ সলাতে নাভীর নীচে হাত বাঁধিবার হাদীস "যঈফ" এবং উহার যুউফ বা দুর্বলতা সম্বন্ধে মুহাদ্দিসগণ সকলেই একমত। (সূত্রে শাইখ আবদুস সত্তার {ত্রিশালী}। ঝ) নাভীর নীচে হাত বাঁধা সম্পর্কে মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ ও অন্যান্য হাদীস গন্থে চারজন সাহাবী ও দুজন তাবেঈ থেকে যে চারটি হাদীস ও দু'টি আছার বর্ণিত হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে মুহিদ্দিসীনের বক্তব্য হলো "লা-ইয়াসলুহু: ওয়া হি:দুম মিনহা-লীল ইসতিদ লা-লী" (যঈফ হওয়ার করণে) এগুলির একটিও দলিল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় (১/৫৫৭-৫৫৮ মিরা'আতুল মাফাতীহ, ২/৮৯ তুহফাতুল আহওয়াবী) ঞ) প্রচলিত সলাতে দাঁড়িয়ে নাভীর নীচে হাত বাঁধা হয়। এটা সহীহ হাদীসের বিপরীত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সব সময়ই ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর বা সিনার উপর হাত বাঁধতেন। এটাই সুন্নত (১/১০২ বুখারী "মূল", ১/১৭৩ মুসলিম "মূল", ১/১১০ আবূ দাউদ "মূল", ৬ পৃষ্ঠা মারাসিল "মূল"ম ১/৩৪-৩৫ তিরমিযী "মূল", ১/৫৯ ইবনে মাজাহ "মূল", ১/৭৫ মিশকাত "মূল", ১/২৩৩ ইবনু খুযায়মাহ "মূল", ১৬০ পৃঃ মুয়াত্তা মুহাম্মদ "মূল")।

ট) প্রচলিত সলাতে নাবী ও পুরুষের কিছু নিয়ম পার্থক্য দেখা যায়। কিন্তু কোন সহীহ হাদীসে এরূপ পার্থক্যের কথা বলা নেই। বরং পুরুষ ও নাবী নির্বিশেষে সলাতের পদ্ধতি একই রকম (২/৫২ হাঃ ৬০৩ বুখারী, মিশরী ছাড়া ১ম খন্ড ১৪৯ পৃঃ, সুত্রে মুফতী মোহাম্মাদ আবদুর রউফ)। সামান্য কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া। (টিকাঃ ইমাম আবু হানিফার মতে তাকবীরে তাহরীমার সময় কান পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে; ইমাম মালেক ও শাফেয়ীর মতে কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাতে হবে।

আবু হানিফার মতে, নাভির নীচে হাত বাঁধতে হবে, মালিক ও শাফেয়ীর মতে, বুকের নীচে কিন্তু নাভির ওপরে যে কোন স্থানে হাত বাঁধতে হবে। হাত উঠানো ও হাত বাঁধার ব্যাপারে ইমাম আহমেদে একমত হানাফীদের অনুরূপ এবং অপর মত মালেকী ও শাফেযীদের অনুরূপ। ) এবার নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন। কোনটি মানবেন? সহীহ হাদীস? না-কি অন্যকিছু? না-কি কারো মতবাদ? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.