আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘- আচ্ছা চে জানি কোন কান্ট্রির ? - ইয়ে….. মনে পড়তেশে না তো এখন…..’

View this link গতকাল আমড়া এমন মজা করশি । কি আর বলব । হইল কি , তখন দুপুর তিনটা বাজে । আমি ভার্শিটি থেকে এইসে ঘুমাইতেশি । এমন টাইমে আমার সেলটা বাজল ।

আমি আমাড় নোকিয়া এন এইটটা হাতে নিয়ে ডেখি আদনানের নাম্বার । আমড়া অবশ্য আমাদেড় ফ্রেন্ড সার্কেলে নামটাকে ছোট কড়ে “আডস” ডাকি । আমি ফোন টুলে বললাম - এই , কি হইশে ? - রশ , ম্যান টুই কি করতেশিশ ? বাইর হবি না ? - কেন ? - ওহ ডুড , টুই কি ভুলে গেশিশ , আজকে চে গুয়েভারা নিয়ে অনুষ্ঠান আছে না …… - ফাক ম্যান !! আমি টো ভুইলাই গেশিলাম । এই তোরা খাড়া , আমি আশতেশি । আমি তাড়াতাড়ি উঠলাম ।

আমার কাশে চে গুয়েভারাকে ড্যাম কুল লাগে । ওর ফেসটা অনেক ম্যনালি । আমিও কিশুদিন দাড়ি রেখে ওর মত করার ট্রাই করশিলাম , কিন্তু আমাকে অত ভাল লাগে নাই । চে গুয়েভারা পুরা নামটা যেন কী ? উফ শিট ভুইলা গেশি । প্রটিডিনই ভাবি যে নেট থেকে চে গুয়েভারার উপ্রে সব জানব , কিন্তু শেষে খেয়াল থাকে না ।

আমি আমাড় আলমাড়িটা খুললাম । চে’র ছবিওয়ালা দশটা গেন্জি আছে । আমি বাইছা বাইছা লাল রঙেরটা পড়লাম । ধানমন্ডি লেকে আজকে ফারিয়াও আসবে , ও বলশে যে সোলড্যান্স থেকে কিনা বারশ টাকার এই লাল গেন্জিটাতে আমাকে খুব কিউট লাগে । বাই দা ওয়ে , ফারিয়া আমার গার্লফ্রেন্ড এন্ড দা বিচ ইজ ড্যাম হট ! গেন্জি আড় জিন্স পড়ে আমি পনড় মিনিট ধরে আয়নাড় সামনে নিজেকে দেখলাম ।

তারপর আধাঘন্টা ধরে ডিসিশান নেয়ার ট্রাই কড়লাম চুল কিভাবে আচড়াব । শেষ পর্যন্ত চুল আচড়ে , শেভ করে গায়ে পাচটা বডিস্প্রে ছিটায়ে আমি ঘর থেকে বেড় হলাম । আব্বার ঘর নীচতলায় । এই সময় বাসায় আব্বাকে পাওয়া যায় না । বাট আই ওয়াজ লাকী ।

দেখলাম আব্বা ঘড়েই আছে । আব্বার অনেক টাকা । বিজনেস কড়ে কড়ে আব্বা টাকা বানাইশে । টবে আব্বা আমাড় মত কুল না । আমি যেন কুল হইতে পারি সেজন্যে আব্বা আমাকে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়াইশে , আড় এখন একটা প্রাইভেট ভার্শিটিতে ভর্তি করশে ।

এখানে ভর্তি হইতেও প্রচুড় টাকা লাগশে । কত লাগশে আমি জানি না । আব্বা বলশে ঢাকা ভার্শিটির পড়িবেশ ভাল না । আমাড়ও টাই মনে হয় । গ্রাম থেকে শব ক্ষ্যাত পোলাপান এখানে পঢ়তে আশে ।

এদের সাথে বসে ক্লাস করব এটা আমি ভাবতেই পারি না । আব্বা বলশে কোন ভাবে বিবিএ ডিগ্রী নিতে পারলেই আমাকে বিজনেসে ঢুকাই দিবে । আমি আব্বাকে বললাম - আব্বা তিনহাজার টাকা দাও …. - কেন কি করবি ? - বাইরে যাইতেশি , ডাও টো……… আব্বা টাকা বের করে দিল । আব্বা কখনও টাকা নিয়ে ঝামেলা কড়ে না । আমি একমাত্র ছেলে তো আমাকে টাই আব্বা আম্মা খুব আদর করে ।

আমি আম্মাকে ‘বাই’ বলে বাইড়ে চলে এলাম । গাড়ি নিলাম না । আদনান বলশে ও গাড়ি নিয়ে আসবে । দেখলাম আমার বাসার সামনেই আদনান গাড়ি নিয়ে দাড়ায়ে আছে । আমি লেট কড়ার জন্য সরি বলে গাড়িতে উঠলাম ।

গাড়ি আদনান চালাইতেশে । আদনানের পাশের সিটে ওর গার্লফ্রেন্ড রিমি । রিমি মেয়েটা অনেক কিউট । ও একটা স্কিন টাইট গেন্জি আর জিন্স পড়শে । গেন্জিতে চে’ আঁকা ।

ওকে এত্ত জোস লাগতেশে । ও আমার ডিকে টাকায়া হাসল । আমিও হাসলাম । আদনানের এই সেলিকা গাড়িটা নতুন । আমারও সেলিকা আছে ।

আমারটা আজকে বাইড় করা হইল না । গাড়িতে আরো দুটা ছেলে আর একটা মেয়ে আছে । একটা ছেলেকে আমি চিনি না । ওজানি একটু কিড়কম । মুখ ভর্তি দাড়ি ।

আমি পরিচিত হলাম । জানলাম ওড় নাম রাশেদ ( কিড়কম ক্ষ্যাত একটা নাম না ?) । ও আমাকে বলল -তুমি কি কম্যুনিজম কর ? - অফকোর্স ম্যান.. আমরা সবাই কম্যুনিস্ট । আমরা সবাই সাম্যবাদী । এই কথাটা আগে বলা হয় নাই ।

আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের আমরা সবাই কম্যুনিস্ট । আমাদের এফবির প্রোফাইলে এটা লেখা আছে । political view - communist , religious view - atheist……………. । আমাদের একটা ‘গ্যাং’ আছে । কম্যুনিস্ট গ্যাং ।

নাম হল BIPLOBIZ । আমড়া ড়াতের বেলা ধানমন্ডিড় ডেয়ালে ডেয়ালে এই নামটা লিখি স্প্রে পেন্ট ডিয়ে । আমরা এত্তো খাড়াপ ! আমি গত একবছর ধরে ‘এথিস্ট’ হইশি । আজকাল ‘এথিস্ট’ না হইলে সবাই কুল বলে না । ধানমন্ডি লেকে অনুষ্ঠান হইতেশে ।

ড্যাম ম্যান । এখানে এত্ত ক্রাউড । রিক্সাওয়ালা টাইপেড় নোংরা নোংরা লোকগুলা হাঁ করে তাকায়া থাকে , গায়ে গা লাগায়ে ডাড়ায় । ওদেড়কে দেখলেই আমার কেমন জানি ঘিন্না লাগে । আমি ফারিয়াকে খুঁজে পাইলাম ।

ফারিয়ার সাথে আরও ডুটা ফ্রেন্ড আশছে । ইফতি আর অনিক । ফারিয়া আমাকে দেখেই ‘হায় বেবি’ বলে চিৎকার ডিল । ও যে কি করে না! তারপর আইশে জড়ায়ে ধরল । আশেপাশের সব লোক হাঁ করে তাকাচ্ছে ।

কতগুলা বস্তির মাস্তান টাইপের ক্ষ্যাত পোলাপান কমেন্ট করতেশে । এইশব ফালতু পোলাপানগুলারে নিয়ে সমস্যা । যেখানেই যাই , ছোটলোকের বাচ্চাগুলা আমাদের সাথের মেয়েগুলার ডিকে হাঁ করে টাকায়া থাকে , চান্স পাইলে গায়ে হাত ডেয় । আমি লেকের ডিকে টাকালাম । একটা বড় ডিজিটাল স্ক্রীনে লালের মধ্যে চে গুয়েভারার ছবি জ্বলজ্বল করতেশে ।

কবিটা আবৃত্তি হইতেশে , গান হইতেশে কিন্তু আমাড় মনে হয় না স্টেজের কাছাকাছি থাকা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ এগুলা শুনতেশে । আমি আশেপাশের লিকজনকে কয়েকটাভাগে ভাগ কড়লাম । একদল হল রিকসাওয়ালা চাওয়ালা টাইপের লোকজন , এরা মজা দেখতেশে কিন্তু কিশুই বুজতেশে না । আরেকদল হল ওর্গানাইজারদের বন্ধু-বান্ধব-ভাই-বেরাদার । কবিটা , গান এইসব শিট্ গুলা এরাই ইন্টারেস্ট নিয়ে শুনতেশে ।

আরেকদল হল আমাদের মত কুল পোলাপান ,যারা চে’র ব্যপারে আসলেই সিরিয়াস । আর বাকী অংশ হল সাধারণ মানুষজন যারা যেকোন জায়গাতেই কোন ফ্রি অনুষ্ঠান এমনকি একটা মাইক দেখলেও ওইখানে বসে যাওয়াটা দ্বায়িত্ব বলে মনে কড়ে । ফারিয়া আমাকে বল্ল - জানু চে গুয়েভারা অন্নেক কিউট , টাই না ? -হুঁ -টুমি ওর মত করে দাড়ি রাখ না কেন ? - রাখশিলাম না একবার , ভাল লাগেনা তো ডেখতে…. - আরে ধুড়…তোমাকে অবশ্যই ভাল লাগবে….. ফারিয়া আরও কিছুক্ষণ চে’র ছবির ডিকে টাকায়া থেকে বল্ল - আচ্ছা চে জানি কোন কান্ট্রির ? - ইয়ে….. মনে পড়তেশে না তো এখন….. - আচ্ছা বাদ দাও…… আমরা ওখানে দাড়ায়ে ছবি তুললাম ,অনেকগুলা । আশেপাশের লোকজন এমনভাবে টাকায়তেসে যেন আমরা কতগুলা জোকার । শালার এই সোসাইটিটাই ফাউল…. ।

প্রথমে যে মাস্তান টাইপের ছেলেগুলা ফারিয়াকে ডেখতেশিল ওড়া এখনও আশেপাশে ঘুরঘুর করতেশে । আমি খেয়াল রাখতেশি । ওড়া যদি আমাদেড়কে ‘চকলেট’ পোলাপান ভেবে থাকে তাহলে ওরা মিসটেক কড়ল । আমরা খূব খাড়াপ ছেলেপেলে । ধানমন্ডিতে আমাদেরও লীগ করা বড়ভাই আছে ।

আমাদের মত বড়লোকের পোলাপানদেরকে - যারা বড়ভাইদের বিড়িসিগারেটের খরচ দিয়ে দেয় , কেএফসিতে খাওয়ায় , টাকা ধার ডিয়ে ফেরত চায় না , মাঝেমাঝে এসি গাড়ি করে ঘুরতে দেয় - তাদেরকে লীগের বড়ভাইরা খুব পছন্ড করে । কারণ তারা জানে যে আমড়া বিপ্লবী । আমড়া বারশ টাকা ডিয়ে চে’র ছবি আঁকা গেন্জি পড়ে , পিঠে আটশ টাকা দিয়ে কেনা চে’র ছবি আঁকা ব্যাগ ঝুলায়ে ,বেনসন লাইট টানতে টানতে ঘুড়ে বেড়াই । আমরা এরকম বিপ্লবী । আমাদেড় সাথে ঝামেলা কড়লে খবড় আছে , আমাদের বড়ভাইরা টান দিয়ে ওদের পাছার চামড়া ছিড়ে ফেলবে ।

লেকের এই বাল অনুষ্ঠানে বসার আর কোন মিনিং পাইতেশিলাম না । টাই আমরা রাইফেলস্কয়ারে আসলাম ,সীসা খাইতে । সিসার ধুয়া ছাড়তে ছাড়তে আমরা প্রত্যেকেই আমাদের গার্লফ্রেন্ডের সাথে মেকাউট কড়লাম । ছবি তুললাম । ধুয়া মুখে নিয়ে ছবি , গার্লফ্রেন্ডরে জড়ায়ে ধরে ছবি ।

এগুলা সব ফেসবুকে আপলোড যাবে । রাত আটটার দিকে মেয়েরা সবাই বাসায় চলে গেল । আমরা ছেলেড়া চলে আসলাম আদনানের বাসায় । আদনান আগেই উইড যোগাড় করে ড়াখশিল । প্রত্যেকে একটা করে স্টিক ফাটাইলাম আর হারায়া গেলাম ।

রাত হইশে । আকাশে চাদের আলো । ছাদে আমড়া সবাই পিনিকে । অনিক আর আদনান গিটার বাজায়ে কি জানি একটা গান গাইতেশে । চাদের আলো পইড়া সবার গেন্জিতে চে গুয়েভারার সাদা সাদা মুখগুলা জ্বলজ্বল করতেশে ।

আমার মনে হল মুখগুলা আমাকে ডেখে মজা পেয়ে ঠোঁট টিপে হাশতেশে । এত মজা পাওয়ার কি হইল , বুঝলাম না । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।