আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশ দাঁড়িয়ে আছে সেই একই তিমিরে?

স্বীকার করি কোনও কিছু বদলে দেওয়ার ক্ষমতা আমার নাই, আমি ভীরু। তবুও, লিখি, লিখতে ইচ্ছে করে। অন্তত কিছু কথা, কারও না কারও কাছে বলতে পারছি! ৮ বছর খুব বেশি সময় নয়। এই সময়ে কোনও একটা দেশ আমূল বদলে যাবে সেটা হয়ত আশাও করা যায় না, অন্তত বাংলাদেশের বেলাতে তো না-ই। কিন্তু তাই বলে এই ৬ বছরে দেশ দাঁড়িয়ে থাকবে একই বিন্দুতে? আক্ষরিক অর্থেই কোনও পরিবর্তন থাকবে না? পুরনো কাগজপত্র ঘাটতে গিয়ে ২০০৫ সালের আজকের কাগজ পত্রিকার একটা কপি পেয়ে গেলাম।

সে বছর ১১ সেপ্টেম্বর আমার একটা লেখা ছাপা হয়েছিল ‘সুশাসনের প্রত্যাশায়’ শিরোনামে। আহামরি কোনও লেখা নয়, নয় মানোত্তীর্ণও। কিন্তু অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, ঠিক একই লেখা, একই শব্দ, একই বাক্য ব্যবহার করা যায় আজও! বিন্দুমাত্র কোনও পরিবর্তন বা সম্পাদনা না করেও! আমরা, পুরো দেশ, পুরো জাতি কি তাহলে দাঁড়িয়ে আছি একই তিমিরে? সেই লেখাটার অংশ বিশেষ: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংস্কার প্রসঙ্গ নিয়ে আমাদের রাজনীতি এখন যথেষ্টই উত্তপ্ত। অনেক গবেষক, বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের অনেক প্রাজ্ঞ প্রতিনিধিই মনে করেন, শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারই নয়, বাংলাদেশের পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থাতেই আমূল সংস্কার প্রয়োজন। যে স্বপ্ন, যে সম্ভাবনা, যে প্রত্যাশাকে শক্তি হিসেবে নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম, সে স্বপ্ন পূরণে, সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নে, সে প্রত্যাশাকে মর্যাদা প্রদানে বলা চলে বড় ধরনের ব্যর্থতার হাজারো উদাহরণ ছড়িয়ে আছে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন অথচ প্রকৃতঅর্থে এখনো মারাত্মকভাবে পরাধীন বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি স্তরে।

স্বাধীনতার অপরিহার্য একটি শর্ত বা উপকরণ হলো সার্বভৌমত্ব। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় সার্বভৌমত্ব দুই রকমের হতে পারে- নাম সর্বস্ব সার্বভৌমত্ব ও প্রকৃত সার্বভৌমত্ব। আমরা যেহেতু আমাদের আর্থিক নীতি আমাদের প্রয়োজনানুসারে আমাদের মতো করে সাজাতে পারি না, আমরা যেহেতু আমাদের রাজনীতিতে বর্হিশক্তির অযাচিত-সীমাহীন নাক গলানোর প্রতিবাদ করার মতো দৃঢ়তা ধারণ করি না, আমরা যেহেতু আমাদের নিজেদের রাজনৈতিক সমস্যা মিটমাট করার জন্য অন্যের কাছে দেন-দরবার করে বেড়াই, সুতরাং আমাদের সার্বভৌমত্ব যে ‘নাম সর্বস্ব’ তা অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বীকার করতে হবে। কেননা প্রকৃত সার্বভৌম একটি দেশের বেলায় এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হবার কোনও সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এতসব সুযোগ সৃষ্টি হবার কারণ অবশ্যই রাজনীতি।

আমাদের অবশ্য অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাও প্রচুর, কিন্তু আমাদের রাজনীতি সঠিক পথে চললে, দেশপ্রেমের দৃঢ়তায় সমৃদ্ধ হলে অর্থনৈতিক দীনতার কোনও অস্তিত্বই আমাদের দেশে থাকতো না। আর রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি ওঠে এই কারণেই । ..................................... আমাদের প্রিয় এই যে বাংলাদেশ, আমরা কেউই এই বাংলাদেশ কামনা করিনি। আমাদের পূর্ব পুরুষরা তাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করে যে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা কোনভাবেই এখনকার বাংলাদেশ হতে পারে না। .... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।