আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাজ্ঞানীর কতা ঃআমি কার খালা রে...

মানবিক দায় ও বোধহীন শিক্ষা মানুষকে প্রশিক্ষিত কুকুরে পরিণত করে....আইস্ট্যাইন। দেখেন বেয়াদবরা নানারকম খারাপ কথা বলবেই। আপনাদের তাতে কান দিলে চলবে না। আপনারা হলুদ সাংবাদিকতা করবেন না। আমি অতীতেও বলেছি, আবারও বলছি—আমার জমানায় কোনো খাতেই কোনো রকম দুর্নীতি হয়নি।

হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আসলে দুর্নীতি শব্দটাই একটা দুষ্ট শব্দ। এই শব্দটাকেই ডিকশনারিতে রাখা উচিত নয়। নীতি তো নীতিই। দুর্নীতি আবার কী জিনিস? নীতি আবার দূরের হয় কেমন করে।

আমার জমানায় দূরের নীতি বলে কিছু নেই। সবই কাছের নীতি। সবই পাওয়ার নীতি। দেয়ার কোনো নীতি নেই। আমরা কোনো কাজই রাখঢাক করে করিনি।

সব ওপেন সিক্রেট। ড্যাম কুর কুর; ঢাক গুড় গুড় কাজ-কামের মধ্যে আমি নেই। আমি কেবল বুঝি সেবা আর সেবা। সবগুলো খাতে অবিরাম সেবা করে চলেছি আমি এবং প্রতিটি খাতে আমাদের হাতে সোনা ফলেছে। বিদ্যুত্ খাতে হাত দিয়েছি।

সেখানে এত বিদ্যুত্ উত্পাদন হয়েছে—এখন দেশে বিদ্যুত্ রাখার জায়গা নেই। আপনারা আমেরিকায় থাকেন, তাই দেশের অবস্থা ঠিক বোঝেন না। উল্টোপাল্টা শোনেন আর বসে বসে ভাবেন—দেশটা রসাতলে গেল। বাস্তবে রসাতলে যায়নি, বরং ভেসে যাচ্ছে বিদ্যুতে। দেশে কোনো লোডশেডিং নেই।

তাই আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভিসি সাহেবকে বলেছি—লোডশেডিং শব্দটা ডিকশনারি থেকে উঠিয়ে দেয়া যায় কিনা। তিনি খুবই জ্ঞানী মানুষ। জ্ঞানের ভারে চলাফেরাই করতে পারেন না। সব সময় খুব ভাব নিয়ে চলেন। তিনি বলেছেন, অবশ্যই যায়।

সংসদ থেকে একটা ফরমান জারি করে দিলে অবশ্যই বাংলা একাডেমী উঠিয়ে দিতে বাধ্য। এছাড়া মণি-মাণিক্যকে বললেও সে কাজটা করে দিতে পারে। ভিসি বলেছেন—আমি চাইলে সবই সম্ভব। ভিসি সাহেবের কাছেই প্রথম শুনলাম, ওয়েস্ট মিনস্টার ডেমোক্র্যাসিতে চাইলে দুর্নীতি শব্দটাও ডিকশনারি থেকে তুলে দেয়া সম্ভব। নীতির অপজিট শব্দ হবে অনীতি।

দুর্নীতি শব্দটাই নাকি ভুল। স্পিকারের উচিত এসব বিষয়ে রুলিং দেয়া। তারপর, হ্যাঁ, জয়যুক্ত হয়েছে—তিনবার বলে তিনি তা জায়েজ করতে পারবেন। সবকিছুতেই নাক গলাতে পারবেন। ওয়েস্টমিনস্টার গণতন্ত্রের এটাই নাকি বিউটি।

আপনারা তো জানেনই—তদুপরি বিশিষ্ট টকেটিভ—ওই যাত্রার ভাষায় কথা বলেন—সৈয়দ সাহেব; তিনিও আমায় সবক দিয়েছেন—ব্রিটেনের কোনো সংবিধান নেই। মানে কোনো লিখিত রূপ নেই। মুখে মুখে বললেই সেখানে সবকিছু সংবিধানসম্মত হয়ে যায়। ব্রিটেনের মতো ইংরাজি শিক্ষিত দেশেই তারা সংবিধান লিখে রাখার দরকার মনে করেনি। সেখানে আমাদের মত গরিব-মূর্খ-নিরক্ষরদের দেশে লিখে রাখার কী দরকার ছিল? এইটা আমার বুঝে আসে না।

এসবই হচ্ছে ওই ব্যাটা ডা. কামালের উর্বর মস্তিষ্কের দুষ্ট শয়তানি। আমাদের আব্বাকে তারা ভুল বুঝিয়েছে। তার খেসারত এখন আমরা দিচ্ছি। জাতি দিচ্ছে। আমরা তো ঐতিহাসিকভাবে শুরু করেছিলাম।

আমাদের জাতির পিতার কথা তার আমলে আইনই ছিল। তিনি যখন যা বলতেন, সবাই তা আইন হিসেবে মানত। তিনি বলেছিলেন—যদি হুকুম দিবার না পারি...। পাবলিক কি তা মানেনি? রাজার হুকুম যে আইন, সেটা খোলাসা করে বলার প্রয়োজন দেখি না। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়েস্ট মিনস্টার সংসদে তিনি যা বলতেন, তা আইনই ছিল।

সিরাজ সিকদারকে যে তিনি মারলেন, সেজন্য তার হুকুমই তো ছিল আইন। তাই তো তিনি বলতে পেরেছিলেন বজ্রকণ্ঠে, কোথায় সিরাজ সিকদার? আসলে প্রধানমন্ত্রীর কথামাত্রই আইনের মর্যাদা পাওয়া উচিত। তিনি যা বলবেন, তা-ই ঠিক। তা-ই সত্য। এমন প্রিভিলেজ অবশ্যই তাকে দেয়া উচিত।

আমি যা ইচ্ছা তা-ই বলব, যা ইচ্ছা তাই করব—এ নিয়ে প্রশ্ন তোলাই হচ্ছে বেআইনি; এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা; এটা যুদ্ধাপরাধের মতো ঘৃণ্য অপরাধ। হ্যাঁ ভাই—ওই যে কোনায় বসা লাল ক্যাপ পরা সাংবাদিক; আপনি যেন কি বলতে চাচ্ছিলেন—এবার বলেন। না ভাই, লোডশেডিংয়ের ব্যাপারটা আমি তামাশা করে বলিনি। আমার বাসায় কখনও লোডশেডিং হয় না। আমার বোন যখন দেশে থাকে তখন তার বাসাতেও লোডশেডিং হয় না।

আমার ছেলে দেশে আসছে বেশ কয়েকবার, তার মুখেও লোডশেডিংয়ের অভিযোগ শুনিনি। আমার মেয়ে, জামাই, বোন-ঝি—কেউ কখনও লোডশেডিং দেখেনি। এখন আপনারাই বলেন, দেশে লোডশেডিং হয় কোথায়! এতগুলো মানুষ লোডশেডিং দেখেনি। একটা সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে কতজনের সাক্ষ্য লাগে! আমরা কি এই দেশের মানুষ নই। আমরা কি অন্ধ! আসলে এই সবই হচ্ছে অপপ্রচার।

এসবই হচ্ছে আমাদের হাজার বছরের সেরা পরিবারের বিরুদ্ধে সংগঠিত জঙ্গি অপপ্রচার। যারা আমাদের ভালো দেখতে পারে না, যাদের চোখ টাটায়, তারা এটা করছে। আমার কথা খুব পরিষ্কার—বাংলাদেশে থাকতে হলে আমরা যেভাবে রাখব, সেভাবে থাকতে হবে। অন্যথায় কারে কীভাবে টাইট দিতে হয়, সেইটা আমার ভালো জানা আছে। আমাকে না ক্ষেপানোই ভালো।

কী বললেন আপনি? সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড! কিসের সাগর-রুনি! কারা তারা! তাদের পরিচয় কি! হাজার বছরের ইতিহাসে তাদের কোনো নামগন্ধ আছে! তাদের আপনারা ইস্যু বানাচ্ছেন কেন! একটা দেশে বছরে দুই-চার-দশটা সাংবাদিক মরবেই। একেকজনের একেক রকম আয়ু। কেউ ২২ বছরে মরে। কেউ ৯২ বছরে মরে। এই ব্যাপারে তো আমার কোনো হাত নাই।

অযথা আমারে জড়ান কেন। তাদের আয়ু বেশি ছিল না। তাই আল্লাহর মাল আল্লায় নিয়া গেছে। তারা আল্লার পেয়ারা হয়ে গেছেন। যত তাড়াতাড়ি আল্লাহর পেয়ারা হওয়া যায়, ততই ভালো।

ওপারে তো একদিন যেতে হবেই। খোদার ওপর খোদকারি করা ঠিক নয়। আজরাইল আলাইহেসসালামের খাতায় লেখা ছিল তাদের নাম—তারা কীভাবে মারা যাবে, কখন মারা যাবে! সেইটা একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠেকাবেন কীভাবে! আরে সাংবাদিক মিয়া, খালি প্রশ্ন করলেই হবে না। একটা চোঙা লাগিয়ে মনে করছেন, আমি কী হনু রে। আরে আপনাদের কি বিবেক বলে কিছু নেই।

বঙ্গবন্ধু ’৭৫ সালে খুন হলেন। তার পর মোশতাক কি কোনো প্রেস কনফারেন্স করেনি। সে কি প্রেসিডেন্ট হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়নি। সেদিন কোথায় ছিলেন আপনারা! সেদিন কেন জিজ্ঞেস করেননি—বঙ্গবন্ধুকে কারা মেরেছে! রাসেলকে কারা মেরেছে! সেদিন যখন পারেননি, আজ আপনারা কোন মুখে জিজ্ঞেস করছেন—সাগর-রুনিকে কারা মেরেছে। বঙ্গবন্ধুর সামনে সাগর-রুনি কোনো ইস্যু, বলার মতো কোনো ইস্যু? তাছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতে কত বছর লেগেছিল।

৩৫ বছরেও বিচার হয়নি। যেখানে জাতির জনকের হত্যার বিচার ৩৫ বছরে হয়নি—সেখানে সাগর-রুনির হত্যার বিচারের জন্য আপনারা দু-তিন বছর আপেক্ষা করতে পারছেন না কেন! আপনারা যদি ইতিহাস-সচেতন হতেন; ইতিহাসে আপনাদের সামান্যতম জ্ঞান থাকত, তবে এই প্রশ্ন আমার সামনে তুলতে পারতেন না। আসলে আপনারা অতি স্বাধীনতা পেয়ে গেছেন। এখন বুঝি কেন বাকশাল জমানায় মাত্র চারটা পত্রিকা রাখা হয়েছিল। যত পত্রিকা তত প্রশ্ন।

তত জঞ্জাল। লাল ক্যাপ সাংবাদিক, আপনি কোন পত্রিকার বলেন তো! আপনার পত্রিকার মালিক কে! পেট্রন কে করে! জামায়াতের মালিক মনে হয়! নইলে বিএনপির হারিস চৌধুরি হবে। সে নিশ্চয়ই বিদেশে মিডিয়ায় ইনভেস্ট করছে! মাহফুজুর রহমানের নাম যে আপনি বললেন—আপনি কি দেখেছেন তাকে খুন করতে? কোনো ভিডিও ফুটেজ আছে? দেখেননি। আচ্ছা মিয়া, সে নিজেই দায় কবুল করেছে বিলাত বসে। তো তখন আপনারা তারে ধরে লন্ডন বা আমেরিকার আদালতে সোপর্দ করলেন না কেন! শুনেছি আমেরিকার আইন নাকি কাউকে ছাড়ে না।

লন্ডনে তো স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড রয়েছে। তারা বিচার করতে পারল না কেন! আসলে যত বলা যায়, তত করা কোনো দেশেই যায় না। লন্ডন-আমেরিকাতে যায় না। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যার কথাও তো খুনি ফারুক-রশীদ এই বিলাত বসেই বড়গলায় বলেছিল। কই সেদিন তাদের বিচার করা কী গিয়েছিল।

ফারুক-রশীদের বিচার যখন সেদিন হয়নি, তখন সাগর-রুনির জন্য মাহফুজের বিচারও হবে না। তাতে ইকবালরা যতই চেঁচামেচি করুক না কেন। ওদের তো সেদিন ফারুক-রশীদের বিরুদ্ধে অবরোধ, ধরনা, মিছিল-মিটিং করতে দেখিনি। উত্তর কোনায় বসা স্যুট পরা সাংবাদিক সাহেব, আপনি অনেকক্ষণ ধরে উসখুস করছেন। আপনার প্রশ্ন আমি শুনেছি।

না না। রেন্টাল প্রজেক্টে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আসলে দুর্নীতির ভূত চেপেছে আপনাদের মাথায়। নীতি-দুর্নীতি এখন প্রাগৈতিহাসিক ব্যাপার। এখন সিস্টেম হচ্ছে।

পয়সা দেবেন। সেবা পাবেন। বিদ্যুত্ এলাহী তো ব্যাপারটা খুব পরিষ্কার করে বলেছেন। আপনারা এত মুর্খ কেন? কোথায় পড়াশোনা করেছেন আপনারা! আপনারা যদি অক্সফোর্ডে পড়াশোনা করতেন, তবে ঠিকই বুঝতেন। খুবই প্রাঞ্জল কথা।

এখন হচ্ছে বাজার অর্থনীতির যুগ। একহাতে পয়সা দেবেন, অন্যহাতে বিদ্যুত্ নেবেন। পয়সা নেই। মাগনা বিদ্যুত্ নেই। আমি কত খরচ করে বিদ্যুত্ বানাচ্ছি।

তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। ফারুক খান, সৈয়দ আবুল হোসেন, মসিউর—ওরা অত্যন্ত সত্ লোক। ওরা সততার ওপর পড়াশোনা করছে। বলতে গেলে তারা সততার ওপর পিএইচডি। আর সেই পিএইচডি বিশ্বব্যাংকের মতো চোরদের প্রতিষ্ঠান থেকে পায়নি।

পেয়েছে দুদকের মতো কঠিন প্রতিষ্ঠান থেকে। তারা তাদের মানপত্র দিয়েছে। কোনো রকম ঘুষ-উেকাচ নেয়নি। পয়সা খায়নি। এখন দেশে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান কি আছে— পয়সা ছাড়া কাজ করে।

আমি ঠিক কাজই করেছি। বিদ্যুত্ এলাহী আমাকে বলেছেও—যারা পয়সা দেবে, ১০/২০ টাকা ইউনিট দামে বিদ্যুত্ কিনতে পারবে, আমরা তাদের জন্য লোডশেডিং ফ্রি বাড়ি করে দেব। আর যারা পয়সা দিতে পারবে না, তারা হ্যারিকেন জ্বালিয়ে থাকবে। ওরা একসময় কুপি, ল্যাম জ্বালিয়ে চলেনি? হা হা, মহিষাসুরের ছুটির ব্যাপারটা কে বললেন। কী পত্রিকা আপনার! বাংলা নাউ? বেরয়? হা হা, আপনি ঠিক ধরেছেন।

আমি নিজেই ওকে মহিষাসুর বলে ডাকি। আরে ও তো ঠিকই বলেছে। ওকে আমি ছুটি দেব কেমন করে। ও তো আসলে আমার চাকরি করে না। ও ভাব ধরে থাকে—যেন আমার অত্যন্ত কাছের লোক।

আমলে বাস্তবে ও দুর্গা মায়ের বড় ভক্ত। ও নিজের জান কবুল করে রেখেছে দেবীর চরণে। এজন্য দেখবেন ও কিছু হলেও কলকাতা যায়। কিছু না হলেও দিল্লি-হিল্লি যায়। হি হি।

ছুটির দরখাস্ত সেখানেই দেবীর চরণে দেয়। দেবী তা মঞ্জুর করেছেন কিনা আমি কেমন করে বলব? ও মহিষাসুর। ওর হাতে যখন ক্ষমতা থাকে, তখন সে অসুরের চেয়েও প্রচণ্ড। আবার বিপদে পড়লে দেখেননি—সে পদলেহন করতেও দ্বিধা করে না। হা হা।

আমাকে হাসতে দেখে আপনারা হাসছেন। আরে ভাই, আমাকে সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। আমার চেয়ারে এসে বসলে আপনারাও বুঝতেন। কি ভাই, কালা তারু, আপনি এই আমেরিকায় বসেও বাঙালি গো মতো কান খোঁচাচ্ছেন কেন! দেশের অভ্যাস এখনও ছাড়তে পারেননি? বিশ্বব্যংক নিয়ে আপনি আমাকে খোঁচাবেন, আমি জানতাম। তারা আসলে আসবে; না আসলে, না।

তাদের জন্য কদমবুসি তো কম করিনি। তাদের তো এখন পালকি পাঠিয়ে আনতে পারব না। এটা নিশ্চয়ই আপনারা মানবেন, বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য তারা ফিট নয়। তারা সাধুবাবা হয়ে থাকলে চলবে না। তারা টাকা দেবে।

তারপর টাকা উঠিয়ে নিয়ে যাবে। সেই টাকা আমি ছাত্রলীগের পোলাপানরে দিলাম; নিজের পুত্রকন্যা-ভাইগ্না-ভাতিজিরে দিলাম—সেই ব্যাপারে নাক গলাবার তারা কে। গরিব দেশের অর্থনীতির তারা কি বোঝে? কেমনেই বা বুঝবে। তাদের প্রেসিডেন্ট হতে হলে নাকি মার্কিন নাগরিক হতেই হবে। এটা কোনো কথা হলো।

একজন মার্কিন সে আমেরিকার অর্থনীতি ভালো বুঝবে। বাংলাদেশ নাইজেরিয়া উগান্ডার অর্থনীতি তো তার জানার কথা নয়। এজন্য অবশ্যই সিস্টেমটা পাল্টানো দরকার। ইউনূসমার্কা কাউরে প্রেসিডেন্ট করো। তারা দাদন বুঝবে।

তারা একটা দেশের প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী—তাদের পোলাপানরে কত হিস্যা দিয়ে ব্যবসা করতে হয়, সেটা ভালো বুঝবে। তাদের কাছে এজেন্ট পাঠিয়ে কমিশন চাইতে হবে। আপনা-আপনি কমিশনের স্যুটকেস চলে আসবে। আমাদের লাভালিন-টাভালিনের পেছনে ফালতু টাকা খরচ করতে হবে না। আমাদের আমলে আমরা কি ইউনূসের গ্রামীণফোনের লাইসেন্স দিইনি।

সেই সময়ে ইউনূস তো সব ধরনের দেয়া-থোয়া করেই সুইস কম্পানি টেলিনরের হয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন। ধরা যাক, টেলিনর যদি নিজে আসত—বলত, তোমাদের দেশে মোবাইল ফোনের বিপ্লব করে ঘরে ঘরে ফোন পৌঁছে দিতে চাই। তাদের সঙ্গে কি রফাদফা বোঝাপড়া হতো? আমরা কি অত ইংরেজি জানি? কী চাই, কত পার্সেন্ট চাই, তা কি আমরা ঠিকমত বুঝিয়ে বলতে পারতাম না। রফা-দফা একজন বাঙালি করেছেন বলে কাজ কত সুন্দরভাবে হয়েছে। আর টেলিনর নিজে এলে আমাদের খালি সততা শেখাত।

বলত, এত তোমাদের দিতে হবে কেন? আরে বিলাতি লালসাহেব, আমার আবুলও সততার ওপর মাস্টার্স, পিএইচডি করেছে। গোলাপ-জবাও করেছে। তোমাদের সততার থিওরি তোমাদের, আর আমাদের সততার থিওরি আমাদের। তোমরা খাও হাত ঘুরিয়ে মাথার পেছন থেকে এনে; আর আমরা খাই সরাসরি। তাই বিশ্বব্যাংকের অনেক অদলবদল দরকার।

তাদের ক্ষেপানোর জন্য আমরা কিছু বলিনি। তৃতীয় বিশ্বের দেশে দেশে বিজনেস করতে হলে অবশ্যই আমাদের প্রস্তাব মানতে হবে। তারা যেটাকে দুর্নীতি বলে সারা দুনিয়া মাতাচ্ছে, ওইটাই হচ্ছে আধুনিক অর্থনীতির মূলনীতি। কোনো মার্কিনির জন্য প্রেসিডেন্ট পদ সংরক্ষিত রাখা খুবই অন্যায়। খুবই অবৈজ্ঞানিক।

তারা সোনালী ব্যাংক-হলমার্কের মধুর অর্থনীতি কেমন করে বুঝবে? আড়াই হাজার কোটি টাকা যে হলমার্ক নিয়েছে, তা তো দেয়া-থোয়া ছাড়া নিতে পারেনি। কত ঘাটে দিতে হয়েছে। ব্যাংকের লোকজনরে দিতে হয়েছে। উপদেষ্টাকে দিতে হয়েছে। পরিচালকদের দিতে হয়েছে।

সাতঘাটে দিয়ে তবে লোন পেয়েছে তারা। সোনালী ব্যাংক কি তারপর দেখতে গেছে আড়াই হাজার কোটি টাকা কোথায় গেছে। এইটা তো ব্যাংকের কাজ নয়। তারা দেয়া-থোয়ার পর টাকা দিয়ে খালাস। টাকা আমরা কোথায় রাখি, কোথায় খাটাই, তা দিয়ে তারা কী করবে? তানভীর যদি ২২ বছর বসে মৃত্যুর আগে টাকা দিতে পারে, আমরা যেখানেই খাটাই না কেন টাকা ৫০ বছরে অবশ্যই ফেরত দিতে পারব।

আর তাদের কমিশন ঠিকমত পৌঁছে দেয়ার জন্য লাভালিনকে তো নিয়োগ দেয়া হয়েছিল আমাদের গাঁটের পয়সা খরচ করে। তার পরও তাদের এত নাকগলানো কেন। এটা তো কোনো অবস্থাতে গ্রহণযোগ্য নয়। তারা এত নাক গলিয়ে সারা দুনিয়ায় ব্যবসা করতে পারবে না। এই ব্যাংক অচিরেই লাটে উঠবে।

লালবাতি জ্বলবে। দেউলিয়া হবে। আমরা বিশ্বব্যাংকের ভালো চাই বলেই জরুরি সংস্কার চেয়েছি। আমরা চাই বিশ্বব্যাংক বাঁচুক, অপমৃত্যু না ঘটুক। ওবামাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলা হয়েছে।

তিনি বিচক্ষণ। তাকে খুবই বুদ্ধিমান মনে হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের বিশ্বব্যাপী লাভজনক ব্যবসাতে ধস নামুক, এটা তিনি চান না। পরিষ্কার খোলাসা করেই বলা ভালো—আমরা তো ভেসে আসিনি। সারা দুনিয়ার লোকজন আমাদের চেনে।

আমার পরিবারকে চেনে। আমাদের অবস্থা তো সেই লোকটার মতো নয়—ওই যে সে যখন বাজারে গেছে, কেউ তাকে চিনতে পারছে না। কেউ বুঝতে পারছে না, সে একজন মহা হনুরে। ঢাকায় কত বড় ব্যবসা রয়েছে। তার ছেলেপুলে দুবাই-সৌদি আরব রয়েছে।

শেষে সে কী করে—ঘুরে ঘুরে সে বলতে লাগল—আমি কার খালুরে; আমি কার খালু রে। ওই আইডেনটিটি ক্রাইসিস আমার নেই। আমি কার খালা, কার আন্টি, কার শাশুড়ি, কার ফুপি—তা সবাই জানে। কোন পলিসিতে আমরা দেশ চালাই, তা জনে জনে বলার দরকার নেই। বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশে আসতে হলে বাংলাদেশ স্টাইলে আসতে হবে।

আমেরিকা, কানাডা কিংবা চীনা স্টাইলে আসতে চাইলে চলবে না। View this link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.