আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি দায় নিতে বলছি না, ইসলামকে অবমাননা করার তীব্র প্রতিবাদ জানাতে বলছি

আমি ভাল নেই পৃথিবীর কোথাও যদি আজ কোন মুসলমান নিগৃহীত হয়, অত্যাচারিত হয়; তার ঢেউ এসে লাগে বাঙলার জমিনে। মুসলমানদের ওয়াজ-মাহফিলে, খুতবায়-খুতবায় আর বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে সারা দেশ। তীব্র প্রতিবাদ, ক্ষোভ আর ঘৃনা জানানো হয় অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে। মুসলমানরা কিছুতেই তার ধর্ম এবং ধর্মপ্রবর্তকের কোন অপমান সহ্য করবে না। যেখানে মুসলমানদের দ্বারা ভিন্নধর্মাবলম্বীরা অত্যাচারিত হয়, নিগৃহীত হয়-সে ক্ষেত্রে এই সব প্রতিবাদ মুখর মুসলমানরা কোন প্রতিবাদ করে না।

“মুসলমানদের কতিপয় অংশ এ কাজ করেছে যা সহী ইসলাম নয়, এর দায় মুসলমানরা নিতে পারে না” বলেই দায়িত্ব শেষ করে আলেম-ওলামা আর ইসলামিক নেতারা। আমি দায় নিতে বলছি না, ইসলামকে অবমাননা করার তীব্র প্রতিবাদ জানাতে বলছি। কোন অমুসলিমদের দেবালয় যখন মুসলিম নামধারী কারো দেয়া আঁগুলে লকলক করে জ্বলে-তখন কি ইসলামের অবমাননা করা হয় না? কোন একজন অমুসলিমের অপ্রমানিত অপরাধের জন্য যখন কতিপয় মুসলমানরা নিরপরাধ হাজার হাজার অমুসলিমদেরকে রাতের আধাঁরে পুঁড়িয়ে মারার চেষ্টায় ঘর-বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, লুটপাট করে, তাদের দেবতার মূর্তিগুলোকে ভাঙচুর করে-তখন কি ইসলামের অবমাননা করা হয় না? শুধুমাত্র মুসলমান না হওয়ার অপরাধে মুসলিম শাসকগন যখন অমুসলিমদের কাছ থেকে জিজিয়া কর আদায় করেছে-তখনও কি ইসলামের অবমাননা করা হয় নি? কই, কোথাও তো তার জন্য একটি প্রতিবাদ মিছিল, একটি বিক্ষোভ সমাবেশ অথবা একটি খুতবায়ও কোন আলেম কিংবা ইসলামী নেতারা কোন বক্তব্য রাখেনি! এসব বিষয় নিয়ে কখনো একটি জরুরী বৈঠক ও হয়নি ওআইসি কিংবা আরবলীগ প্রতিনিধিদের। সেই সব দুস্কৃতিকারী মুসলিম ধজ্জাধারীদেরকে কখনোই হুশিয়ার কিংবা ধমক দেয়া হয়নি মুসলিমদের কোন বিশ্ব সভা থেকে। জামায়াত ইসলাম যখন ৭১ এ ইসলামের নাম দিয়ে গনহত্যা-গনধর্ষন চালিয়েছে, তখনতো কোন আরব দেশ তার প্রতিবাদ জানায় নি।

আজ যখন এই সব পশুদের বিচারকার্য শুরু হয়েছে, তখন সৌদিআরব সহ একেকটি আরব দেশ-”বাংলাদেশ ইসলাম নির্মূল করছে” এই ঘ্যানর ঘ্যানর করে যাচ্ছে। পাকিস্তানে প্রতিদিনই নিরপরাধ শিয়া মুসলিমদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, ওআইসিকে কি কখনো শুনেছেন এ বিষয়ে কথা বলতে? কায়রো, দিল্লি কিংবা বায়ুতুল মোকাররম থেকে জুম্মার নামাজ শেষ করে কখনো কি কোন মুসলমানকে দেখেছেন, এসব হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করে কোন মিছিল করতে? এইসব শিয়াদেরকে বাচানোর জন্য যদি কখনো জাতিসংঘ বাহিনী পাকিস্তানের ঐসব দুস্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়, তখন দেখবেন বিশ্বময় মুসলমানদের বিক্ষোভ মিছিল-জাতিসংঘের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও-গুড়িয়ে দাও। বরং, যে সব উদারপন্থী মুসলমানরা ব্যাক্তিগত অবস্থান থেকে এসব কাজের প্রতিবাদ করেছে মানববন্ধন কিংবা লেখনীর মাধ্যমে-উল্টো ইসলামী নেতারা তাদের গায়েই নাস্তিকের ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছে, মুরতাদ ঘোষনা দিয়ে তাদের হত্যা করার জন্য পুরস্কার দিয়েছে। আর মডারেট নামধারী মুসলমানরা সেসব তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে-কিছুতেই যেন তাদের কিছু আসে যায় না! বিশ্ব বিজয় করা এই মুসলমান জাতি আজ কতিপয় ধর্মীয় নেতা আর নির্লজ্জভারে নির্লীপ্ত কোটি কোটি মডারেট মুসলমানদের “একচোঁখা নীতির” কারণে ক্রমশই তলিয়ে যাচ্ছে, তা হয়তো তারা এখনো উপলদ্ধি করতে পারছে না। যদি স্বয়ং বিধাতা তাদেরকে বাচিয়ে-খাইয়ে রাখতে পারেন যারা তাকে অস্বীকার করে-তাহলে মুসলমানদের এত ক্ষোভ কেন? কেন তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য এত অপচেষ্টা? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।