আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

Fire in Babylon - একটি ক্রিকেটীয় তথ্যচিত্র

অসীম ব্যাসার্ধের একটি বৃত্ত, যা এখনও সরলরেখায় পর্যবসিত হয় নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প‌ৃথিবীর মানচিত্রে আলাদা কোন দেশ নয়। বেশ কয়েকটা ছোট বড় ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্রের সমষ্টি। দেশগুলোর খাদ্যাভাস,সংস্কৃতি সব আলাদা হলেও তাদের একই সুতোয় বেঁধে রাখে শুধু একটি খেলা-ক্রিকেট। ক্রিকেট ক্যারিবীয়দের কাছে শুধুই একটি খেলা নয়।

এটা তাদের প‌্যাশন। তাদের দুঃখ ভোলার উপলক্ষ। বহির্বিশ্বের নাক উচু সাদাদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার মাধ্যম। তথ্যচিত্রটিতে ক্যারিবীয় দেশগুলোর জন্মলাভ থেকে শুরু করে ক্রিকেট বিশ্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রাজত্বকালীন সময়গুলো সুন্দরভাবে উঠে এসেছে। ১৯৭৫ সাল।

অস্ট্রেলিয়া সফর। লিলি-টমসনের দাপুটে বোলিংয়ের কাছে অসহায় আত্নসমর্পণ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজ হারে ১-৫ এ। পরের বছর ঘরের মাঠে ভারতকে হারানোর পর রওনা দেয় পুরনো শত্রু ইংল্যান্ডের মাঠে। সিরিজ শুরুর আগে ইংরেজ অধিনায়ক টনি গ্রেগ হুংকার ছাড়েন-আমরা তাদের মাথা নোয়াতে বাধ্য করবো।

মাঠে উল্টোটাই ঘটে। হোল্ডিং-রবার্টস-মার্শালদের বাউন্সারে আহত হয় ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। ইংলিশরা ০-৩ এ সিরিজ হারে। ক্যারিবীয় বোলারদের বাউন্সারের হাত থেকে ব্যাটসম্যানদের বাঁচাতে নতুন আইন করে আইসিসি। অথচ অস্ট্রেলিয়া সফরে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা লিলি-টমসনদের বাউন্সারের মুখে পড়লেও তখন তা নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য হয় নি।

অথচ ইংলিশ মিডিয়া ক্যারিবীয়দের আখ্যায়িত করে টেরোরিস্ট হিসেবে। তাদের আঁতে ঘা লাগে। ভিভ রিচার্ডস যথার্থই বলেছিলেন-England would rather lose a batlleship than lose a test match. ১৯৭৭ সাল। অস্ট্রেলীয় মিডিয়া ধনকুবের ক্যারি প‌্যাকার আয়োজন করেন বিদ্রোহী লীগ ওয়ার্ল্ড সিরিজ(সাম্প্রতিককালের আইসিএল এর মত) এর। অন্যান্য অনেক দেশের খেলোয়াড়দের মত ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররাও এতে যোগ দেন।

বোর্ড তাদেরকে বিদ্রোহী খেলোয়াড় হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করে দেয়। প্রতিবাদী হয় ক্যারিবীয় জনতা। তাদের আন্দোলনের মুখে বোর্ড নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়। ১৯৭৯ সাল। আবারও অস্ট্রেলিয়া সফর।

ব্যাটিংয়ে রিচার্ডস-গ্রিনিজ-লয়েড-মারে। বোলিংয়ে হোল্ডিং-রবার্টস-ক্রফটদের সাথে এবার যুক্ত হয় জোয়েল গার্নার। বিখ্যাত পেস কোয়ার্টেটের খুনে বোলিং আর ভিভের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে এবার সিরিজ জিতে নেয় ক্যারিবীয়রা। একই বছর ২য় বারের মত ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও জেতে ক্যারিবীয়রা। বিখ্যাত পেস কোয়ার্টেট দেশে-বিদেশে ক্যারিবীয়দের অগ্রযাত্রা চলতে থাকে।

১৯৮৫ সালে লয়েড অবসর নিলে ভিভ রিচার্ডস নেতৃত্ব পান। তার নেতৃত্বে আরও দশ বছর অজেয় রূপটি ধরে রাখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটানা ১৫ বছর তারা কোন টেস্ট সিরিজে হারে নি। তথ্যচিত্রটিতে সে সময়ের বেশ কিছু রিয়েল ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে যা এটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ঘটনাগুলির স্মৃতিচারণ করেছেন স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস,গর্ডন গ্রিনিজ,মাইকেল হোল্ডিং,কলিন ক্রফট,ক্লাইভ লয়েড,ডেরেক মারে এবং আরও অনেকে।

২০১১ সালে বিশ্বব্যাপী মুক্তি পাওয়া এ তথ্যচিত্রটি সম্প্রতি ভারতে মুক্তি পেয়েছে। ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য মাস্ট ওয়াচ। টরেন্ট লিংক দেখতে দেখতে সামু ব্লগে ৩ বছরে পা দিলাম। ব্লগিং সূত্রে বেশ কিছু শুভাকাঙ্খী তৈরী হয়েছে এই সময়ের মধ্যে যা আমার জীবনে পরম পাওয়া। এই সময়ের সবচেয়ে বড় আফসোস হল সামু থেকে যতটা নিতে পেরেছি সেই তুলনায় দিতে পারিনি তেমন কিছুই।

সবাই ভাল থাকুন। ভাল ভাল ছবি দেখুন। শুভকামনা।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।