আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিবাহ করিতে মুন্চায়

inside you're ugly ugly like me প্রায় পাঁচ বছর পরে আজ গ্রামের বাড়ি গেলাম। শুনলাম আমার শ্রদ্ধেয় দাদাজান অসুস্থ। বাড়িতে পৌছতেই মিজাজডা বিলা হইয়া গেল যখন শুনলাম দাদা বাড়িতে নাই। বাজারে গেছে চা খাইতে। অসুস্থ লোক বিছানায় শুইয়া থাকব মাথার দুইপাশে দুইজন বইস্যা বাতাস দিবে তা না উনি বাজারে ঘুরাঘুরি করতাছে।

যাক উনি বাজারে চা খাক আমি গেলাম বাল্যবন্ধুদের বাড়িতে। এতদিন পরে বাড়ি আসছি, তাহাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতেরও দরকার আছে। প্রথমেই গেলাম সোহাগের বাড়িতে। গিয়ে শুনলাম সোহাগ ইতালি চলে গেছে তিন চার মাস আগে। ঘরের ভিতর থেকে এক মেয়ে বলল।

আমি গদগদ হয়ে জিজ্ঞাসিলুম, আপনি কে? -আমি উনার মিসেস। ও আচ্ছা তার মানে সোহাগ বিয়া করছে। এরপর গেলাম আবদুল মালেকের বাড়ি। -কিরে মালু আছোছ কেমন? সে তো আমারে দেইখ্যা এমন ভাব করছে যেন এলিয়েন দ্যাখছে। এরপর বইতে কৈল।

সামনে আইন্যা মুড়ি চানাচুর দিল। মুড়ি মুখে দিতাছি এমন সময় মালু এক পিচ্চিরে লইয়া ঘরে ঢুকল। এরপরে আমারে দিকে দেখাইয়া পিচ্চিরে কয়, এইডা তোমার কাকা। কাকারে সেলাম দেও। -কিরে তোরা সবডি কি শুরু করলি।

তে দেহি কিছু কয়না খালি বত্রিশটা দাত বাইর কইরা হাসে। এই প্রথম আমার গ্রাম ছাইড়া আসার কারনে আফসুস হইল। এরপরে আর কোন বন্ধুর বাড়িত যাওনের সাহস করলাম না পাছে আবার কেডা দাদা হইয়া বইয়া রইছে কে জানে? সোজা বাড়ির দিকে হাটা দিলাম। চাচার ঘরে গিয়া বসলাম। চাচীরে কইলাম, আমার দোস্তরাতো সব বাপ দাদা হইয়া যাইতাছে।

এই সময় আমার পাখির কতা মনে পড়লো। ছুডুকালে গেরামে থাকতে পাখির লগে কত চড়ুইভাতি খেলছি। আহারে কি দিন আছিল? চাচীরে জিগাইলাম, পাখি এখন কই? চাচী কয়, পাখিতো উড়াল দিছে। হে খোদা ইহা আমি কি শুনিলাম। চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করলাম।

একটা পোড়া গন্ধও নাকে লাগল। সম্ভবত আমার হৃদয় পুড়া গন্ধ। এই সময় চাচা আইয়া জিগাইল, ভাতিজা কি খবর? দেহি চাচার হাতে বিড়ি। ওহ তাইলে এইডা হৃদয় পুড়া গন্ধ না বিড়ির গন্ধ। শালার লাইফ!! একটু ইমোশনালও হৈতে দিল না।

এত্তগুলা শকিং নিউজ শুনার পরে আর দাদারে কি দেখমু কোনমতে হাই হ্যালো জানাইয়া নিজ গৃহাভিমুখে যাত্রা করিলাম। মাঝপথে মনের দুঃখে কইষ্যা বিড়ি টানলাম। সন্ধ্যায় বাসায় বইয়া আছি এই সময় আম্মা বাড়ির ময় মুরুব্বীর খবর জিগাইতাছে। আমিও চান্সে খালি আমার ভাইয়াপ বন্ধুরার বউ পুলামাইয়ার খবর দিতাছিলাম। মায় দেখি টিভির দিকে তাকাইয়া মিটমিট কইরা হাসে।

আমারতো মনে লাড্ডু ফুটতাছে। ভালা কৈরা চাইয়া দেখি মায় আমার কোন কথাই হুনে নাই পুরা কনসেনট্রেশন দিয়া রাখছে ইস্টার জলসার সিরিয়ালে। ইন্ডিয়ার চৌদ্দগুষ্ঠী উদ্ধার করতে করতে বাসা থেইকা বাইর হইয়া গেলাম। পূর্বকথাঃপ্রায় মাস চারেক পূর্বে হইতেই আমার মস্তিষ্কে বিবাহের ভূত সওয়ার হইয়াছে। অবসর সময়ে এই ভূত নাড়াচাড়া দিয়া থাকে।

চেয়ারম্যান০০৭ নামে এক ব্যাক্তি কিছুদিন পূর্বে একখানা লেখা পোস্ট করিয়াছিল। কিভাবে মা বাপ্রে বুঝাইবেন যে বিয়া করতে মুন্চায় তার অসংখ্য উপায় বিশদ বর্ননা করা হয়েছিল ঐখানে। আমি তা দেখিয়া ব্যাপক ইনফ্লুয়েন্সড হয়েছিলুম। একবার তো ফেবুতে স্ট্যাটাসই দিয়া বসিলাম এইরুপ "পুলাপাইনের আঠার বছরের মধ্যে বিবাহ বাধ্যতামূলক-শুধুমাত্র এই আইন পাস করে দেশের অপরাধের মাত্রা ৯০ ভাগ কমানো সম্ভব" এরপর চেয়ারম্যানরে দাওয়াত দিয়া ঐখানে একটা সুপারিশমূলক কমেন্টও করাইছিলাম। কিন্তু কিয়ের কি যেই লাউ হেই কদু।

এহনো আবিয়াইত্যা রইয়া গেলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।