somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সরকার টু সরকার সমঝোতা

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সরকার টু সরকার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে উভয় দেশ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করতে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা চূড়ান্ত কার্য বিবরণীতে স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ কর্তা প্রতিষ্ঠান কর্মীর বেতন থেকে উড়োজাহাজ ভাড়া কিস্তিতে পরিশোধ করবে। প্রাথমিকভাবে একজন শ্রমিক ৫ বছরের জন্য সে দেশে যাবেন। ৫ বছর শেষ হওয়ার পর ওই কর্মী ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়ার আগে অবশ্যই ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় অংশ নিতে হবে। জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি প্রতি মাসে দুই দেশে কর্মীদের তদারক করবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ইস্কাটনস্থ প্রবাসী কল্যাণ ভবনে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার রাতেই মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে মালয়েশিয়া ফিরে গেছেন। জনশক্তি নিয়োগে বাংলাদেশকে উৎস দেশ (সোর্স কান্ট্রি) ঘোষণা করতে রাজি হয়েছে সফররত মালয়েশিয়া প্রতিনিধি দল। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ড. এস সুব্রামানিয়াম অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় এবং দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর দেশেও এ বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। উভয় দেশই সরকারী পর্যায়ে কর্মী নিযোগের বিষয়ে এক মত পোষণ করেছে। সরকারী পর্যায়ে কর্মী নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে উভয় দেশের প্রতিনিধি নিয়ে একটি ওয়ার্কিং কমিটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মালয়েশিয়া মানবসম্পদমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এই কমিটি বৃহস্পতিবার একটি নীতিমালা তৈরি করেছে। ওই নীতিমালায় উভয় দেশের প্রতিনিধিরা স্বাক্ষর করেছেন। যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে যৌথ-কমিটির প্রতিমাসে শ্রমিক নিয়োগের বিষয়টি তদারক করার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দলের মধ্যে বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত যৌথ বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সফররত মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী ড. এস সুব্রামানিয়াম এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। উভয় দেশেরই ১০ সদস্যের একটি করে প্রতিনিধি দল বৈঠকে যোগ দেয়। মালয়েশিয়া বর্তমানে ১৩টি উৎস দেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে। বাংলাদেশও সেখানে উৎস দেশ হতে আগ্রহী। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, এর ফলে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো সহজ হবে এবং খরচও কমে যাবে। এটি জনশক্তি নেয়ার স্থায়ী বাজার হবে। স্থায়ী বাজার হলে আর কলিং ভিসার (আহূত ভিসা) মতো নির্দিষ্ট সংখ্যক জনশক্তি নেয়ার পর লোক নেয়া বন্ধের সুযোগ থাকবে না। মালয়েশিয়ায় ‘উৎস দেশ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত হলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠাতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হবে।
সফররত মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তারা চায় অভিবাসন ব্যয় কমাতে। অভিবাসন ব্যয় কমলে, তিন বছরে একজন শ্রমিক পুষিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু দালাল চক্র বা মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ হলে অভিবাসন ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী। কারণ সেদেশে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করত ইন্দোনেশিয়ার। এর পরই নেপালের। তৃতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় স্থানে থাকার পরও বাংলাদেশ মালয়েশিয়া সোর্স কান্ট্রি করা হয়নি। বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারী ব্যবস্থাপনায় লোক নিয়োগে সরকারের কোন প্রকার অসুবিধা হবে না। কারণ জনশক্তি রফতানি বিষয়ক কার্যালয় দেশের সব জেলাতেই রয়েছে। সফররত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আমাদের এমনই আলাপ আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের স্থায়ী একটি বাজার। এই বাজার সৃষ্টি করতে পারলে আর কর্মী নিযোগে কোন অসুবিধা থাকবে না। এটা চলমান প্রক্রিয়া হয়ে যাবে। মধ্য স্বত্বভোগীদের হাত থেকে দেশের গরিব মানুষকে মুক্তি দিতেই সরকারী ব্যবস্থাপনায় কর্মী নিযোগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রতিনিধি দল দেশে ফিরে গিয়ে কেবিনেটে প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন নেবে। বাংলাদেশেও বিষয়টি কেবিনেটে অনুমোদন করাতে হবে। আশা করা যায় উভয় দেশেই কাজগুলো সম্পন্ন হবে। কেবিনেটে অনুমোদনের পরই দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে। চুক্তি হওয়ার পর থেকেই কর্মী নিযোগ শুরু করা যাবে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ ও ২০০৮ সালে মালয়েশিয়ায় কলিং ভিসায় কর্মী নেয়া শুরু করলে বাংলাদেশী কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এজন্য ২০০৯-২০১০ সালে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বাংলাদেশী কোন শ্রমিককে যেন বিমানে বহন করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে এ সংক্রান্ত চিঠি কুয়ালালামপুর অভিবাসন দফতর থেকে সব বিমান সংস্থার কাছে পাঠানো হয়। সেই থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী শ্রমিক রফতানি বন্ধ রয়েছে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×