somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) বিল, ২০১৩ সংসদে পাস : : পুলিশের লাগামহীন ক্ষমতা আর ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা হবেন সাক্ষী গোপাল

১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) চাপে এবং কালো তালিকাভুক্তি এড়াতে তড়িঘড়ি করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) বিল, ২০১৩ সংসদে পাস করা হয়েছে।

আইনটি পাস করার আগে তাড়াহুড়া করতে গিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দুটি ধারা যুক্ত করা হয়, যা মন্ত্রিসভার বৈঠকে ও আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে (ভেটিং) অন্তর্ভুক্ত ছিল না। এমনকি গত তিন বছরে এ বিলসংক্রান্ত বিষয়গুলো আলোচনাও হয়নি। এভাবে আলোচনা না করে এমন দুটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করায় নানা মহলে বিষয়টি সমালোচিত হচ্ছে।

এ দুটি বিষয় হচ্ছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ক্ষমতা খর্ব এবং ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা ইন্টারনেট মাধ্যমের কথোপকথন ও ছবি মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আদালতে ব্যবহার করা।

৩ জুন সম্পূরক কার্যসূচি হিসেবে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) বিল, ২০১৩ সংসদে উত্থাপন করা হয়। আট দিনের মধ্যেই সংসদীয় কমিটিতে পরীক্ষার পর তড়িঘড়ি করে ১১ জুন বিলটি পাস হয়।

সর্বশেষ এ বছরের ১৪ থেকে ১৮ জানুয়ারি হংকংয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় গৃহীত ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন, ২০০৯’ এবং সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইন, ২০১২ সংশোধন করে ‘সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধনী) আইন, ২০১৩’-এর একটি খসড়া প্রণয়ন করে এবং এ খসড়া সংশোধন আইনের ওপর অনুমোদনের জন্য এনসিসিতে কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। পরে গত ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করে নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর সারসংক্ষেপে বলা হয়, এসব সংশোধন প্রস্তাব জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন নিরাপত্তা পরিষদের বিভিন্ন কার্যবিবরণীর বিপরীতে চিহ্নিত বিভিন্ন ঘাটতি পূরণের জন্য করা হয়েছে।

দুটি বিতর্কিত ধারা: সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বলা হয়েছে, কারও অপরাধ তদন্ত করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিসির পূর্বানুমোদনের বিধান বাদ দিয়ে শুধু অবহিত করার বিধান আনা হয়েছে। অর্থাৎ কারও অপরাধ তদন্ত করার জন্য ডিসির অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এ তদন্ত করতে পারবে। সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ৫ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ৪০ ধারা সংশোধন করে এ ধারা যুক্ত করা হয়।

সংসদীয় কমিটিতে সংশোধন প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হলে সভায় আইনের ৪০(১) ধারায় সংশোধনী আনা হয়। তদন্ত ও বিচার বিষয়ে পূর্বানুমোদনের অপরিহার্যতাবিষয়ক এ ধারায় বলা ছিল, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা এ আইনের অধীন কোনো অপরাধের তদন্ত করতে পারবেন না। সংশোধনীতে এ বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়ে বলা হয়েছে, এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করতে পারবেন।

জানা গেছে, ওই বৈঠকের আগে পুলিশের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দুটি ধারা যোগ করার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানায়। তারা রামুসহ বিভিন্ন ঘটনার উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এসব সংশোধনী আনতে রাজি করায়। পরে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও পুলিশের একটি প্রতিনিধিদল গিয়ে হাজির হয়। এ সময় কমিটির সভাপতি বৈঠকে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্যদের বাইরে যেতে বললেও তাঁরা সেখানে উপস্থিত থাকেন। সভায় একটি ধারার বিরোধিতা করেন সরকারদলীয় সাংসদ সানজিদা খানম। তবে তাঁর আপত্তি আমলে নেওয়া হয়নি।

যোগাযোগ করা হলে সানজিদা খানম বলেন, ‘মত প্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকার সবারই আছে। সেদিনের কিছু সিদ্ধান্তে আমি একমত হতে পারিনি। আর আমার মতামত যে সঠিক, সেটা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।’ তবে ফেসবুক, টুইটার, ইন্টারনেটের বিষয়টি যুক্ত করা সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা শুধু অপরাধীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এভাবে পুলিশকে লাগামহীন ক্ষমতা দেওয়া হলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। যাকে-তাকে এ আইনের আওতায় এনে পুলিশ ক্ষমতার অপব্যবহার করার সুযোগ পাবে।

এ ছাড়া ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা অন্য কোনোভাবে ইন্টারনেটে ব্যবহূত আলোচনা, কথাবার্তা, স্থির বা ভিডিওচিত্র সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আদালতে উপস্থাপনের ধারাটিও নতুন যুক্ত করা হয়েছে।

আইনের ২১ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সন্ত্রাসী ব্যক্তি, সত্তা বা সংগঠনের ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা ইন্টারনেটের যেকোনো মাধ্যমের অপরাধ-সংশ্লিষ্ট আলাপ-আলোচনা ও কথাবার্তা অথবা অপরাধ-সংশ্লিষ্ট স্থির ও ভিডিওচিত্র অপরাধের সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে এবং তা আদালতে গ্রহণযোগ্য হবে।

সূত্র :
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাইনারি চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি: পূর্ণাঙ্গ তুলনার ধারণা এবং এর গুরুত্ব

লিখেছেন মি. বিকেল, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩০



সাধারণত নির্দিষ্ট কোন বস্তু যা শুধুমাত্র পৃথিবীতে একটি বিদ্যমান তার তুলনা কারো সাথে করা যায় না। সেটিকে তুলনা করে বলা যায় না যে, এটা খারাপ বা ভালো। তুলনা তখন আসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×