somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক- আল্লাহর মেহমান হজ্বযাত্রীদের প্রতি কিছু কথা-বাস্তব অভিজ্গতার ভিত্তিতে কিছু টিপস(২য় পর্ব)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হজ্বের ব্যাপারে নিজেকে প্রস্তুত করুন মনে মনে।মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার আগে মানসিক প্রস্তুতু নিন ।এখন থেকেই শুরু হবে হজ্বের ফরয সমস্ত রুকন।
১।নিজের জন্য একটি ব্যাগ আলাদা করে গুছিয়ে নিন ।সাধারনত হজ্ব যাত্রীদের একটি কালো রংয়ের সাইড ব্যাগ দেয়া হয়।সেটাতে প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে নিন।ইহরামের কাপড় ত পরেই যাবেন।সাথে নিবেন আরেকটি কাপড় হতে পারে জোব্বা বা পাজামা-পান্জাবী মেয়েদের ক্ষেত্রে আরেক জোড়া সালোয়ার কামিজ।
২।ব্যাগে পাতলা চাদর নিবেন সাথে একটা প্লাস্টিকের বোতল।গ্লাস নেবার দরকার নেই।
৩।পাথরের জন্য ছোট একটি বটুয়া/কাপড়ের ব্যাগ বানিয়ে নিয়ে যাবেন।
৪।জায়নামাজ ,তজবী,ওজিফার বই ইত্যাদি সাথে নিবেন।
৫।পায়ে এবার অবশ্যই থাকবে পিটি স্যু।স্পন্জের স্যান্ডেল একজোড়া নিতে পারেন বাথরূমের জন্য।
৬। হাতের গ্লাভসের প্যাকেট নিবেন।
৭।মিনায় যাবার আগে হাতের ব্যান্ড, মিনার তাবুর আই ডি কার্ড ও ঠিকানা লেখা কার্ড গলায় ঝুলিয়ে নিবেন।
৮।সেই যে টাকার প্যাকেটের কথা বলেছিলাম সেটা বুকে বাধার ব্যাগে বুকে বেধে রাখবেন।
৯।অন্যান্য জিনিসপত্র হোটেল রুমে তালা দিয়ে রেখে আসবেন।



৬-৭ জিলহজ্ব তারিখে আপনাকে গাড়ীতে করে মিনায় তাবুতে নিয়ে যাওয়া হবে.হয়তো পুরোটা পথ যেতে পারবেন অথবা কিছু পথ হেটেও যেতে হতে পারে ।সেজন্যই হাতে যত কম জিনিস থাকে ততই ভালো। বাংলাদেশের তাবু সাধারনত খুটি নম্বর ৫-৭ এর মধ্যে থাকে । মিনাতে যেয়ে নিজের তাবু বুঝে নিন। তাবু চিনাতে প্রথমে একটু কস্ট হতে পারে দেখবেন তাবুর উপরে গোলাপপ কাগজে তাবু নম্বর দেয়া আছে । আবার বাংলাদেশের এড়িয়া ছেড়ে না গেলে তাবু হারাবেনা ।তাবু মনে রাখার অন্যতম উপায় হলো বাথরুম দিয়ে খেয়াল করুন আপনার তাবুটি বাথরুম হতে কোন দিকে কত দুরে।
১০।তাবু পেলে চেস্টা করবেন নিজের বিছানাটা যেন এসির ঠিক নীচে হয় কারন রাতে মারাত্মক ঠান্ডা পরে এসি থেকে মুখোমুখি দুরে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে।
১১।তাবুতে যেয়ে নিজের অবস্হান ঘুরে বুঝে নিন ।এড়িয়ার বাইরে যেয়ে রাস্তার অপর পাশে বেশ কিছু বাঙালী হোটেল আছে সেখানে খাবার পাওয়া যায় ।
১২।অবশ্যই তাবুর আই ডি ও ঠিকানা সম্বলিত কার্ডটি কাছে রাখবেন।নিজ মোয়াল্লেমের মোবাইল নম্বরও কাছে রাখুন।
১৩।নিজের জিনিস নিজ বিছানায় গুছিয়ে রাখুন ।বাঠরুমের স্যান্ডেল পলিথিনে করে পায়ের কাছএ রেখে দিবেন।


রাতের খাবার খেয়ে অযথা ঘোরাঘুরি না করে ইবাদতে মশগুল থাকুন।
১৪।বাথরুমে যেয়ে লাইনে দাড়ান ।অবশ্যই গ্লাভস সাথে নিয়ে যাবেন ।কারন আপনি জানেন না বাথরুমের পরিবেশ কেমন ।বেশীরভাগ সময়ই নোংরা প্যানে পানি ঢালার নলটি গড়াগড়ি খায়।সেজন্য গ্লাভস ব্যাভার করুন ।ভালো মত নলটি ধুয়ে ব্যাবহার করুন ।কাজশেষে গ্লাভসটি পাশের ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন।
১৫।অনেকেই বাথরুমে ঢুকে গোসল করে এটা করবেন না।অন্যের কস্ট বুঝুন ।বাহিরে কেউ না কেউ আপনার বের হবার অপেক্ষা করছে।
১৬।রাতে বের হয়ে ছোট ছোট পাথর কুড়িয়ে আনুন।মোট ৭০ টি পাথর লাগবে(২১+২১+২১=৬৩+৭=৭০)

জামারাত-

১।পরেরদিন সকালে যাত্রা শুরু হবে জামারাতের উদ্দেশ্যে। মনে রাখবেন এদিন হাতে শুধু পানির বোতল নিবেন।পায়ে পিটি স্যু। আই ডি কার্ড বুকে ঝোলানো । আর টাকার ব্যাগ বুকে ।ব্যাস ।
২। জামারাতের পথে যাবার জন্য কখনও ই ছাতা নিবেন না।কারন সমস্ত পথই বলতে গেলে শেড দেয়া তাতে বাতাসের ব্যাবস্হা আছে আর একটা হলো শেডে ঢুকার আগে নিরাপত্তা রক্ষীরা ছাতা হাতে থেকে নিয়ে ফেলে দেয় ।কারন এটা লোকের চলার পথে বাধার সৃস্টি করে।
৩।জামরায় যাবার সময় আপনার মোয়াল্লেম পতাকা হাতে এগিয়ে যাবেন । আপনি সাথে সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেস্টা করবেন।শহরের মানুষ যাদের বেশী হাটার অভনেই তারা অন্তত পতাকার রং খেয়েল রাখবেন এবং তাল মেলাতে চেস্টা করবেন। হারিয়ে গেলে বিচলিত হবেন না সবাই একই পথে যাবে। জামারায় পৌছে মোয়াল্লামকে ফোন করে নিজের অবস্হান সম্পর্কে বলুন।
৪।জামারাতে যাবার পথের দুই পাশে ঠান্ডা পানির কল ও বাথরুম রয়েছে ।খেয়াল রাখবেন পানি খাবার তালে যেন কাফেলা বেশী দুর এগিয়ে না যায়
৫।জামারাতে যেয়ে ভীড় এড়াবার জন্য একটু ঘুরে যান মানে সরাসরি কোনাকুনি চলে যাবেন না ঘুরে সামনে যান।বিসমিল্লাহ বলে ৭ টি পাথর একেএকে ছুড়ে মারুন তারপর জয়গা ছেড়ে পিছনে এসে মন ভরে দোয়া করুন। এটি দোয়া কবুলের স্হান
৬।ফিরে আসার সময় হাতের ডানে মসজিদ আল খায়েফ পরবে সেখানে ওয়াক্তের নামাজ বা দুই রাকাআত নফল নামাজ পড়বেন।
৭।ফিরে আসার সময় অনেকটা দুর কিন্তু পানির কল নেই তাই পানির বোতলে আসার পথে পানি ভরে নিবেন। তাবুতে ফিরে এসে বিশ্রাম নিন।রাতে যেতে হবে আরাফাতে

আরাফাত- রাতে এশার নামাজের পর সাধারনত গাড়ী করে অথবা হেটে নিয়ে যাবে আরাফাত ময়দানে সেখানে রাতে তাবুতে কাটাতে হবে ।
সকালে মসজিদে নামিরাতে খুৎবা হবে ।যেখানে বাঙালীদের তাবু তা থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দুরে।খুব ভোরে উঠে সেখানে চাইলে যেতে পারেন।তবে অবশ্যই যদি চিনে ফিরে আসতে পারেন তবেই যাবেন।সাধারনত একটি দলে যে মুফতি সাহেব থাকে ওনারা যান পারলে ওনাদের সাথে যোগাযোগ করে নিবেন।
২।আরাফাত দুয়া কবুল হবার স্হান।এখানে বেশী বেশী দোয়া করবেন আল্লাহর কাছে একাগ্রচিত্তে ক্ষমা চাইবেন।খোলা ময়দানে দোয়া চাইবেন এ ময়দানে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে হবে।সময়টি কাজে লাগান।হয়ত জীবনে ২য় বার না ও আসতে পারেন।
৩।আরাফাতে জাবলে রাহমাতে হয়ত হজ্বের দিন যেতে পারবেন না তাই আগেই সেই জায়গা যখন ঘুরাবে তখন জিয়ারত দোয়া দুরুদ পড়ে নিবেন



মুজদালেফা-

আরাফাতের রাত কাটাতে হবে মুজদালেফায় সেদিন সন্ধ্যার পর আরাফাতের পর মুজদালেফায় চলে আসবেন তারপর এক নিয়তে মাগরিব ও এশার নামাজ পড়তে হবে ।এক্ষেত্রে আগে মাগরিবের ফরয তারপর এশার ফরয এরপর মাগরিবের সুন্নত তারপর এশার সুন্নত এরপর বিতরের নামাজ পড়তে হবে। মুজদালেফায় সারারাত খোলা আকাশের নীচে থেকে দোয়া ইস্তেগফার পড়তে হবে। এসময় আবার জামারাতে মারার জন্য পাথর নিয়ে নিতে পারেন।

তারপরের দিন আবার জামারায় পাথর মেরে তারপর ফরয তওয়াফের জন্য মক্কায় আসতে হবে। তারপর আবার মিনায় যেয়ে জামারায় পাথর মেরে কুরবানী দিয়ে মাথা মুড়িয়ে ইহরাম মুক্ত হবেন।

মাথা মুড়ানোর জন্য নিজের রেজার ব্যাবহার করবেন ।একজন অন্যজনকে সাহায্য করতে পারেন।তবে আগে যাদের মাথা মুড়িয়েছে তারাই অপরকে সাহায্য করবেন। এরপর মক্কায় ফেরার পালা তারপর বিদায় তওয়াফ।

(আগামী পর্বে মদীনা)

১ম পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১০:১৬
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×