somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াত নেতার সমকামিতা নিয়ে নিশ্চুপ, কিন্তু ঘেটুপুত্র নিয়ে কলরব। কেন?

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই জেনে নিন ঘেটুপুত্র কমলার কাহিনী সংক্ষেপ।
চলচ্চিত্রটির সময়কাল ব্রিটিশ আমল। প্রায় দেড়শ বছর আগের এক গ্রামীন পরিবেশের কথা খুজে পাওয়া যায় চলচ্চিত্রটিতে। ব্রিটিশ শাসনাধীন (বর্তমান বাংলাদেশের) হবিগঞ্জ জেলার জলসুখা গ্রামের পটভূমিতে চলচ্চিত্রটির কাহিনী চিত্রিত। সে সময় জলসুখা গ্রামের এক বৈষ্ণব আখড়ায় ঘেটুগান নামে নতুন গ্রামীন সঙ্গীতধারা সৃষ্টি হয়েছিল। নতুন সেই সঙ্গীত ধারাতে মেয়েদের পোশাক পরে কিছু সুদর্শন সুন্দর মুখের কিশোরদের নাচগান করার রীতি চালু হয়। এই কিশোরদের আঞ্চলিক ভাষাতে ঘেটু নামে ডাকা হতো। নব এই সঙ্গীত ধারাতে গান প্রচলিত সুরে কীর্তন করা হলেও উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের প্রভাব বেশ লক্ষনীয় ছিল। গ্রাম্য অঞ্চলের অতি জনপ্রিয় নতুন সঙ্গীতরীতিতে নারী বেশধারী কিশোরদের উপস্থিতির কারণেই এর মধ্যে অশ্লীলতা ঢুকে পড়ে। সমাজের বিত্তবানরা বিশেষ করে জমিদারদের এইসব কিশোরকে যৌনসঙ্গী হিসেবে পাবার জন্যে লালায়িত হতে শুরু করেন। একসময় সামাজিকভাবে বিষয়টা স্বীকৃতি পেয়ে যায়। হাওর অঞ্চলের জমিদার ও বিত্তবান শৌখিন মানুষরা বর্ষাকালে জলবন্দি সময়টায় কিছুদিনের জন্যে হলেও ঘেটুপুত্রদের নিজের কাছে রাখবেন এই বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে বিবেচিত হতে থাকে। আর তাদের বিত্তবানদের স্ত্রীরা ঘেটুপুত্রদের দেখতেন সতীন হিসেবে। কমলা নামের এমনই এক ঘেটুপুত্রের গল্প নিয়েই হুমায়ুন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। ঘেটুপুত্র কমলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী মামুন।
সূত্র: http://bn.wikipedia.org

এই ছবির মাধ্যমে হুমায়ুন আহমেদ এক সময়ের একটি অন্ধকার যুগকে তুলে ধরেছেন। আমি ছবিটি দেখিনি তবে না দেখেও হলফ করে বলতে পারি সে সময়টাকে অবশ্যই তিনি অন্ধকার সময় হিসেবেই তুলে এনেছেন। যুগে যুগে মানবসভ্যতায় অনেক অন্ধকার যুগ এসেছিল। এক একটি সময় এক একটি কুঅভ্যাস মানুষের উপর ভর করত, আবার সেই অন্ধকার সময়কে পরাজিত করে মানুষই একসময় আলোর পথে এসেছে।
মানব সভ্যতার সবচে অন্ধকার যুগ ছিল আয়ামে জাহেলিয়া যুগ। এখন আমি যদি আয়ামে জাহেলিয়া যুগে কি কি বর্বরতা হত তা যদি বলি তাহলে আমাকে কি বলা হবে আমি সে যুগের সে বর্বরতা গুলোরা গুনগান করছি?

অথবা আমরা যে সমকামিতার কথা বলছি সে সমকামিতারও একটা অন্ধকার যুগ ছিল।
হযরত লুদ (আঃ) এর সময় সমকামিতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। আল কুরানের সাত জায়গায় লুত (আঃ) এর কওমের কথা বলা হয়েছে যাদের কে সমকামিতার অপ্রাধের জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিন ধংশ করে দেন। লুত (আঃ) এর কওম বাস করত সোদম ও গোমরাহ নগরীতে। এই সোদম থেকে ইংরেজী সোডোমি শব্দটি এসেছে যেটা পায়ুকাম বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

*আল কোরআনের সাত জায়গাঃ
১। সুরা আল আরাফের ৮০-৮৪ আয়াত
২। সুরা হুদ এর ৭১-৮৩ আয়াত
৩। সুরা আল আম্বিয়া এর ৭৪ আয়াত
৪। সুরা আল হাজ্জ্ব এর ৪৩ আয়াত
৫। সুরা আশ-শুয়ারা এর ১৬৫-১৭৫ আয়াত
৬। সুরা আন-নামল এর ৫৬-৫৯ আয়াত
৭। সুরা আনকাবুত এর ২৭-৩৩ আয়াত
সূত্র

এখন হযরত লুত (আঃ) এর সময় যে ধরণের সমকামিতা হত তা নিয়ে কথা বললে কি বলা হবে যে আমি সেই সময়টির গুনগান করছি?

যদি তা না হয় তবে হুমায়ন আহমেদ তার ছবির মাধ্যমে একটি অন্ধকার যুগকে তুলে আনলে, আমাদের জানালে সেটা কেন সেই অন্ধকার যুগের গুনগান করা হচ্ছে বলে ধরে নিতে হবে?

যখনই আপনি কাউকে একটি ভাল উপদেশ বা নির্দেশ দিতে যাবেন তখনই আপনাকে আগে খারাপ জিনিসটার কথা বলতে হবে, তা না হলে খারাপ ভালটা বুঝাবেন কি করে?

আয়ামে জাহেলিয়া যুগ যেমন থাকেনি, তেমনি থাকেনি হযরত লুত (আঃ) এর সময়কার সেই অন্ধকার যুগ। থাকেনি প্রায় দেড়শ বছর আগের ঘেটু নাচের যুগও। কিন্তু সেই খারাপ সময় গুলো পার হয়ে আসা মানেই সেই খারাপ সময়কে ভুলে যেতে হবে তা নয়। সেই খারাপ সময় গুলো কে মনে রেখেই সামনে ভাল সময়ের দিকে এগিয়ে যেতে হয়।

অনেকেই ঘেটুপুত্র কমলা নিয়ে বেশ হুলুস্থুল শুরু করে দিয়েছেন। সেই প্রায় দেড়শ বছর আগের ঘেটুনাচের কাহিনী নিয়ে এত কাহিনী অথচ নিকট অতীতে একজন ধর্মের লেবাসধারী রাজনীতিক অনেক বড় কুকীর্তি করেছিলেন সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নাই।

অথচ আমরা সেই নেতার নামে এখনও জিগির তুলি, গলা ফাটাই। উনার কিছু হলে আমরা শহীদ হতেও প্রস্তুত। কি নির্লজ্জ দ্বিমুখীতা।

আসুন সেই কাহিনী আমরা একটু একটু পড়ি এবং ভাবি কার বিরুদ্ধে মুখর হওয়া উচিত, হুমায়ুন আহমেদ নাকি সেই ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্মের লেবাসধারী নেতার।

আসুন পড়ি সেই জামায়াত নেতার সমকামিতার কাহিনী।
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাইনারি চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি: পূর্ণাঙ্গ তুলনার ধারণা এবং এর গুরুত্ব

লিখেছেন মি. বিকেল, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩০



সাধারণত নির্দিষ্ট কোন বস্তু যা শুধুমাত্র পৃথিবীতে একটি বিদ্যমান তার তুলনা কারো সাথে করা যায় না। সেটিকে তুলনা করে বলা যায় না যে, এটা খারাপ বা ভালো। তুলনা তখন আসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×