somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার প্রেমবেলা এবং প্রথম ছ্যাঁক খাওয়া এবং দেওয়ার কাহিনীB-);):P:P

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছুডুবেলা হইতে খুব শান্ত ছিলাম বলিয়া জগতকুলে বিশেষত ইশকুল আর আমাগো এলাকায় আমার যথেষ্ট সুনাম আছিল। সকলে আমাকে অতীব ভালু চোখে দেখিত। পড়া-শুনায় যথেষ্ট পরিমাণ ভালু আছিলাম। নিজের ঢোল নিজেই পিটাই!:|:| কুনু ফরীক্কায় প্লেসের বাহিরে যাইতাম না। প্রত্যহ কিলাসের পরথম বেঞ্চ ছিল আমার জন্য বরাদ্দ! সকল টিচাররাই আমাকে কিঞ্চিত বেশি আদর-যত্ন করিত। এইরাম অবস্থায় কিলাস ফোর এ উঠিলাম। অন্য সব সাবজেক্টে হাইয়েস্ট মার্কস পাইলেও আমি সেকেন্ড বা থার্ড হইতাম ড্রয়িং এর কারণে। /:)/:) এইসব আকাবুকি আমার মাথার উপ্রে দিয়া যাইত। ইশকুলের ড্রয়িং আফা আমার ড্রয়িং লইয়া চিন্তিত হইয়া গেলেন। ইশকেল-কম্পাস দিয়া ভালু আকিতে পারিতাম কিন্তু ওইসব জিনিস-পত্র ব্যতীত আকাআকি আমার পক্ষে অসম্ভব আছিল এবং এখনও আছে! ড্রয়িং মিস ফ্রি হ্যান্ড আকাআকি করবার দিলে সব্বাই কি সুন্দর আঁকিত আর আমি কাকের ঠ্যাঙ আইকা বইসা থাকতাম।X((X(( ড্রয়িং ক্লাস ছিল আমার নিকট সাক্ষাত আজরাইল স্বরুপ। এমুন কুনু ক্লাস ছিল না ম্যাডামের ঝাড়ি খাইতাম না। :((:((



প্রতি দিন ড্রয়িং কেলাসে যাওনের আগে মনে মনে কইতাম ম্যাডাম ক্যান ইশকুল থিকা যায় না। আমার লাইফটারে পুরা তেজপাতা বানাইয়া দিছে।X((X( ম্যাডামের শাস্তি ছিল অতীব কঠিন। আমাগো পুলা-মাইয়া এক লগে কিলাস হইত। যেসব পুলারা আঁকতে পারিত না তাহাদের শাস্তি ছিল ব্যাকবেঞ্চের উপ্রে উইঠা কানে ধইরা দাঁড়াইয়া থাকা।:-/:-/ ললনাদের শাস্তি তেমন কিছু ছিল না। খালি ঝাড়ি মাইরাই ছাইড়া দিত। তয় দুক্কের কতা হইল কুনু পুলাই তেমন শাস্তি পাইত না কারণ প্রত্যেকেই কিছু না কিছু খালি হাতে আঁকিতে পারিত। আমি পাড় গাধা। কিছুই পারিতাম না। ফলশ্রুতিতে প্রত্যহ কানে ধরিয়া দাঁড়াইয়া থাকিতে হইত।/:)/:) উল্লেখ্য, ম্যাডাম ছিল আমাগো ইশকুলের সবচেয়ে সুন্দরী এবং সেরাম ফিগারওয়ালা...যদিও এইগুলা তখন তেমুন একটা বুজিতাম না, যা বুজিতাম তা হইল ম্যাডাম অনেক সুন্দর!:|:| সপ্তাহ খানেক ম্যাডাম কানে ধরিয়া দাঁড় করিয়া রাখনের পরে আমারে এমন দশা হইল আমি পারিলেও ছবি আঁকিতাম না! ইচ্ছা কইরা কানে ধইরা দাঁড়াইয়া থাকিতাম! ইহাকে প্রেমে পড়া বলে কি না লুলরাই ভালু বলিতে পারিবেন।:P:P এদিকে পুলাপানেরা আমার এইরাম কাহিনি দেখিয়া কিঞ্চিত টাস্কিত থাকিত। তদুপরি আমি আমার এই কীর্তিতে অনড়! তো একদা ম্যাডাম আকাশ-গাছ কি কি লইয়া কহিল ছবি আঁকিতে। সবাই ছবি আঁকা ইশটারট মারিল আর আমি খাতা পেন্সিল বাহির না করিয়া কান ধরিয়া দাঁড়াইয়া গেলাম!B-)B-) এইদিন আমার এইরাম উদ্ভট কর্ম ম্যাডামের দৃষ্টি এড়াইল না। উনি আমাকে সেদিনই কেলাস শেষে ডাকিয়া লইয়া গেলেন। তারপর কহিলেন আমি কি আসলেই ইচ্ছে করিয়াই এমুন উদ্ভট কর্ম সম্পাদন করি কি-না! আমি কহিলাম আমি ছবি আঁকিতে পারি না। অতঃপর ম্যাডাম আমাকে জড়াইয়া বুকে লইলেন। :P:P তারপরের ঘটনাবলী উল্কার বেগে ঘটিতে লাগিল। ম্যাডাম আমার প্রতি আদেশ দিলেন প্রত্যহ কিলাস ছুটির পরে তাহার নিকট গিয়া ড্রয়িং শিখিতে হইবেক...আমি মহান আনন্দের সহিত তাহার আজ্ঞা পালন করিতে লাগিলাম।:|:| ড্রয়িং শিখিতে গেলে প্রায়শই আমি চকলেট, আচার ইত্যাদি খাদ্য দ্রব্য ম্যাডামের নৈকট হইতে পাইতাম। এইভাবে দিন চলিতে লাগিল। কিন্তু আমার এইরাম আনন্দে তথা বাড়া ভাতে ছাই দিল ম্যাডামের হাজব্যান্ড!X((X( উনি বদলি হইয়া কুথায় জানি চলিয়া গেলেন। লগে ম্যাডামরেও লইয়া গেলেন!:((:(( যেদিন আমি কেলাশে গিয়া এই তথ্য জানিলাম সেদিনকা আমার মন খুব খুব খ্রাপ হইয়া গেছিল। কান্দসিলাম না এইটা হলপ কইরা কইবার পারুম না। যেদিনকা এই তথ্য পাইয়াছিলাম সেদিন সারা রাত কিছু খাই নাইক্কা। ছ্যাঁক খাওনের পরে লুল ভাই-ব্রাদারদের যেই দশা হয় আমার দশা অনেকটা ওইরকমই হইছিল।:P:P:P




দিন কাটিতে লাগিল। এইভাবে কিলাস এইটে উঠিয়া গেলাম। যথারীতি ভালু রেসাল্ট আর পেলেস লইয়া। কুনু অসুবিদা ছিল না। মাঝে মাঝে অনেক পুলা মাইয়ারা মোর নিকট অঙ্ক বুজিতে আসিত। তাহাদিগকে অনেক আগ্রহ লইয়া অঙ্ক বুজাইতাম। একদিন এক মাইয়া অঙ্ক বুঝবার লাগিয়া আমার নিকট আসিল। উল্লেখ্য, উনি আমাগো ইশকুলের হট গার্ল মানে সক্কলের প্রিয় পাত্রী আছিলেন।B-);) তাহার সৌন্দর্যের লাগিয়া বড় ভাই হইতে শুরু করিয়া আমাগো ব্যাচের প্রায় প্রত্যেকেই তাহার পিছন পিছন ঘুড়িত। হঠাত একদিন সে আমার কাছে আমার একখান বই চাহিল। আমি বই দিলাম। পরের দিন বই ফিরত দিল। বাসায় আসিয়া দেখি বইয়ের ভিতরে একখান কাগজ! আমি ভাবিলাম ভুলে হয়ত আইসা পড়ছে। ভাবিলাম নেক্সট দিনই কাগজটা দিয়া দিমু। তয় কাগজের ভিতরে কি আছে দেইখা লই। কারণ কাগজটা তো আমার নিজের কাগজও হইবার পারে। যা হোক, কাগজ খুলিয়া পরথমই আমার নাম দেখিয়া পুরাই টাস্কিত হইয়া গেলাম।:-*:-* পরে পুরাটা পড়িলাম এবং হাত পা রীতিমত কাঁপিতে লাগিল। সে এক নাতিদীর্ঘ পেরেম-পত্র! আমি পুরাইও টাস্কিত। ক্যান ওই ললনা আমারে এইটা দিব ওইটা আমি বুজিবার পারিলাম না। আর তখন আমি যথেষ্ট ব্রিলিয়েন্ট আছিলাম। পড়ার বাইরের জগত লইয়া চিন্তা করনের টাইম আছিল না। আর সেই সময় আমি ভাবিতাম পড়া বাদ দিয়া পেরেম করার মত জঘন্য কাম আর নাই!:|:| তাই সাথে সাথেই রিফিউজ। আমি পরের দিনই কাগজটা ওই মাইয়ার হাতে দিয়া আসিলাম। যখন দিলাম মাইয়া আমার দিকে অবাক চুখে তাকাইয়া ছিল! :|:|


কিছুদিন পরে আমার এক বেস্ট ফ্রেন্ড আমারে কইতাছে “দোস্ত, ওই মেয়ে কিন্তু তোরে অনেক লাইক করে। তুই একটু ভাইব্বা দেখ। পরে রিলেশন করিস। এখন জাস্ট... ” আমি দোস্তরে থামাইয়া কহিলাম ওই ব্যাটা চুপ থাক। পেরেম কি ভালু পোলারা করে! যা ভাগ এখান থিকা...উল্লেখ্য, ইশকুল লাইফে ওই মাইয়া আমার লগে আর কুনুদিন কতা কয় নাই। :|:|



জীবনের পরথম এবং এখুন পর্যন্ত শেষ পাওয়া লাব প্রপোজালের কতা ভুইলাই গেছিলাম প্রায়। কিছুদিন আগে দূর থেইকা একটা মার্কেটের ভিতর ওই মাইয়ারে আবার দেখলাম! মাথা এইদফায় পুরা ঘুড়িয়া পইড়া যাইতে যাইতেও নিজেরে সামলাইয়া লইলাম...ওমাগো!! পুরাই আগুন! ফুলকির মতন রূপ বাইর হইতাছে!:P:PB-) আগেই সুন্দরী আছিল তয় ইদানিং চুলের কাটিং টাটিং ইত্যাদি করিয়া হুর পরী আকৃতি ধারণ করিয়াছে। তয় মন খ্রাপ হইয়া গেল ইহা দেখিয়া যে, এই আগুন মাইয়ারে জড়াইয়া আছে এক বড় ভাই পাগলা পীর সাহেব!!:-*:-*:-/ বুঝিলাম, সুন্দরীরা খালি থাকে না! উল্লেখ্য, আমি ইতোমধ্যে ব্রিলিয়েন্ট হইতে গাধা থুক্কু গর্ধব সম্প্রদায়ভুক্ত ইশটুডেন্টে পরিণত হইয়াছি। পড়ালেখার যেই দশা গার্লপেরেন্ড দূরে থাউক বউ পামু কিনা সন্দেহ আছে বলিয়া মনে লয়। :|:| আর আমার মত বেক্কল আর গাধারে কুনু ললনা চয়েসও করব বলিয়া মনে লয় না। কিন্তু মেঘ না চাইতেই জল থুক্কু আগুন পাইয়াছিলাম কিলাস এইটে থাকিতে। নাদানের মতন আমি ওই আগুনকে সড়াইয়া দিছিলাম। আপসুস। এই ললনার কথা চিন্তা করিলে এখুনু আমার কচু গাছে ফাঁস নিবার মুন চায়।:|:|
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এমপি আনারের মৃত্যু এবং মানুষের উষ্মা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:২৯


সম্প্রতি ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার পর আনোয়ারুল আজীম আনার নামে একজন বাংলাদেশি এমপি নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে হাপিত্যেশ করে দেওয়া হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

দোয়া ও ক্রিকেট

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৪


দোয়া যদি আমরাই করি
তোমরা তাইলে করবা কি?
বোর্ডের চেয়ারম্যান, নির্বাচকের
দুইপায়েতে মাখাও ঘি।

খেলা হচ্ছে খেলার জায়গা
দোয়ায় যদি হইত কাম।
সৌদিআরব সব খেলাতে
জিতে দেখাইত তাদের নাম।

শাহাবুদ্দিন শুভ ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!!

লিখেছেন অন্তর্জাল পরিব্রাজক, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:২১



দয়া করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে “বাঘ” বলা বন্ধ করুন!! X( এরা ছাগলের দলই ছিল, তাই আছে, তাই থাকবে :-B !! এরা যেমন ধারার খেলা খেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমার বকুল ফুল

লিখেছেন নীল মনি, ২৪ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৪

বকুল ফুলের মিষ্টি গন্ধে ভরে থাকে আমার এই ঘর। আমি মাটির ঘরে থাকি। এই ঘরের পেছন দিকটায় মা'য়ের হাতে লাগানো বকুল ফুলের গাছ৷ কী অদ্ভুত স্নিগ্ধতা এই ফুলকে ঘিরে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেট্রোরেল পেয়েছি অথচ হলি আর্টিজানে নিহত জাপানিজদের ভুলে গেছি

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৫ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১১

জাপানে লেখাপড়া করেছেন এমন একজনের কাছে গল্পটা শোনা৷ তিনি জাপানে মাস্টার্স করেছিলেন৷ এ কারণে তার অনেক জাপানিজ বন্ধু-বান্ধব জুটে যায়৷ জাপান থেকে চলে আসার পরেও জাপানি বন্ধুদের সাথে তার যোগাযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×