somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক্সট্রিম ট্রেকিং,বান্দরবান-২০১২...B-)B-)B-):D:D;) (প্রথম পর্ব)

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈদের দুইএকদিন আগে থেকেই মন খারাপ.যখন শুনলাম ফারুক ভাই আর আলিমরা আবার বান্দরবান যাচ্ছে.কিছু ঝামেলা থাকার কারনে মোটামুটি ধরেই নিয়েছিলাম এবার আর যাওয়া হচ্ছে না.এর মাঝেই আলিম ফোন দিয়া বললো টিকেট ম্যানেজ করার চেষ্টা কর.ঈদের পরেরদিন সকালে কঠিন ঘুমন্ত অবস্থায় আলিম আর ফারুক ভাইয়ের শতশত কল টের পাইনাই,এর মাঝে ফারুয়ক ভাইও মেসেজ পাঠাইলো ‘অলির বাচ্চা ফোন ধর’…ঘুম থেইকা উইঠা দেখি এই অব্থা,সাথে সাথে ফোন,ফারুক ভাই বললো এখনই রওনা দাও চিটং.এরপর আগামীকাল বান্দরবান দেখা হবে একসাথে.কিন্তু আমার যাবার ইচ্ছা ততক্ষনে উবে গেছে.এর কিছুক্ষন পরেই রুবেল ভাই ফোন দিয়া বললো ব্যাগ গুছাও,আজকে রাতে আমাদের সাথে বাসে যাচ্ছো.তখনও বিশ্বাস হয়নাই.সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ কনফার্ম হইয়া ৭ টার মধ্যে ব্যাগ গুছাইয়া দেই দৌড় ফকিরাপুল.বাস ছাড়ছিলো সবার আগে,আর বান্দরবান যাইয়া পৌছাইলাম আমরা সবার পরে.যাই হোক নামার পরপরই রিজার্ভ করা গাড়িতে উঠে রুমা ঘাটের উদ্দেশ্য যাত্রা,মাঝে আলিম আর কালপুরুষ অপু ভাইদের গাড়িতে উঠায় নেওয়া.অপু ভাইরা যাবে পুকুরপাড়া.আমাদের টিমে মোট ৯জন.রুমা ঘাট থেকে ট্রলারে উঠে রুমা বাজার,ওইখানেই গাইড ঠিক করে এবং যাবতীয় সবকিছু কিনে চাঁন্দের গাড়িতে চেপে বগার উদ্দেশ্যে রওনা।

রুমা ঘাট


বগালেক


বগায় যেয়ে সাধারনত অধিকাংশ ভ্রমনকারী একদিন থাকে এবং পরেরদিন ট্রেকিং এ বের হয়.আমরা বগায় যেয়ে ২০ মিনিট রেস্ট নিয়ে রওনা দিলাম জাদেফাই পাড়ার উদ্দেশ্যে,কেওংকারাডং থেকে জাদেফাই পাড়া কমকরে হলেও ২ থেকে ২.৩০ ঘন্টার রাস্তা.এবার কেওংকারাডং উঠলাম নতুন একটি রুটে,হারমাইন পাড়া হয়ে.কেওংকারাডং যেতে যেতে ততক্ষনে দিনের আলো শেষ.হাটতে হাটতে হঠাৎ খেয়াল হলো শরীরের জামা-কাপড় আর মাথা ভিজে যাচ্ছে.কিচ্ছুক্ষন পরেই বুঝলাম আমরা মেঘের মধ্যে দিয়ে হাটছি.জাদেফাই পাড়া পৌছাতে পৌছাতে ৮:১৫ মত বেজে গেলো.ততক্ষনে খিদায় সবার জান অস্থির,সেই দুপুরে খাবার পর আর তেমন কিছুই খাওয়া হয়নাই.ততক্ষনে আমরা সবাই একটা পাহাড়ি বাসায় উঠেছি.কিন্তু একটু পরেই বোমা ফোটানোর মত একটা নিউজ আসলো যে ভাত ছাড়া আর কিছুই নাই তাদের কাছে,শেষে একটা ছাগল পাইলাম ১৫০০ টাকায়,কিন্তু তেল আর মসলার অভাবে তাও রান্না করা সম্ভব হচ্ছিলো না.এই সময় খবর পেলাম ঢাকার কয়েকজন ট্রেকার কয়েকটা বাড়ি পরেই অবস্থান করছে.পরে তাদের কাছ থেকে অল্প একটু তেল আর মশলা জ়োগাড় করে আনলাম.ভাগ্য ভাল থাকায় একটা মুরগিও পেলাম,শেষে মুরগি আর ভাত দিয়া ভরপুর খাওয়ার পর সবাই দিলাম ঘুম.

নতুন পথে কেওকারাডং


হারমাইন পাড়া


মেঘে ঢাকা কেওকারাডং এর চূড়া


বব ডিলান তার এই বিখ্যাত গানটা মনে হয় আমাদের জন্যই গাইছে


রাতের বেলা মেঘের মধ্যে দিয়ে ট্রেকিং করা,আহা আহা!!!B-)


ঘুম.পরের দিন আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে তা তখনও বুঝি নাই.খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম,পুব আকাশে তখন আলো ফোটার অপেক্ষা.উঠেই কিছু অসাধারন দৃশ্যের মুখোমুখি.ফ্রেশ হয়ে কোন রকম নাস্তা করা ছাড়াই রওনা দিলাম জাদেফাই ঝর্না দেখার উদ্দেশ্যে.দ্বিতীয়বার জাদেফাই দেখার উদ্দেশ্যে.জাদেফাই থেকে আসার পর সৌদ ভাইয়ের আনা ম্যাগি ফ্যামিলি সাইজ নুডুলস রান্না করা হলো.সবার প্লেটে দেওয়ার এক পর্যায়ে যখন আমার প্লেটে নুডুলস দেওয়া হলো হঠাৎ মনে হলো নুডুলসের সাথে একটা জোকও আছে প্লেটে.বলার সাথে সাথে রুবেল ভাই সেটা সরাইতে সরাইতে বললো ‘আরে নাহ,মশলা জইমা এরম হইসে’.কিন্তু আমি ততক্ষনে শিওর এইটা জ়োক.কিন্তু কোন রকম চিল্লাচিল্লি ছাড়া ওই নুডুলসটাই খাইলাম কারন একটু পরেই শুরু হবে সারাদিনের ট্রেকিং,কারও সকালের নাস্তা নষ্ট করতে মনে সায় দিলোনা.খাওয়া শেষে হঠাৎ বাইরে তাকিয়ে দেখি পুরো জাদেফাই পাড়া মেঘে ঢাকা.পুরাই মাথা নষ্ট.

জাদেফাই ঝর্না


জাদেফাই ইজ অন ফায়ার


জাদেফাই থেকে আসার সময় হালকা জিরিয়ে নেওয়া!


জাদেফাই পাড়ার শিশুরা


ভোরে জাদেফাই পাড়া থেকে তোলা দূর পাহাড়ের দৃশ্য


মেঘে ঢাকা জাদেফাই পাড়া

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৩৯
১৯টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:০৫


আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×