ফ্যামেলি ভিসায় কঠোর নিয়মকানুন আরোপের পর এবার ব্রিটেনে বসবাসকারী নন ইউরোপীয়ান নাগরিকদের বিয়ের ক্ষেত্রে ও কঠোর সব নিয়মকানুন আরোপ করা হচ্ছে। ঐ সমস্ত্ম নাগরিকগণ তাদের বিয়ের সময় কঠোর যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হবেন।
ভূয়া বিয়ে বন্ধে এমন সিদ্ধান্ত্ম নিয়েছেন হোম সেক্রেটারি থেরেসা মে। তিনি বোগাস বিয়ের সংস্কৃতির ইতি টানতে এর বিরুম্দ্ধে দমন অভিযান শুরুরও ঘোষণা দিয়েছেন। দি সান নিউজ পেপারে এক নিবন্ধে ভূয়া বিয়ে বন্ধের নিজের এই কঠোর অবস্থানের কথা উলেস্নখ করেন হোম সেক্রেটারি। তিনি এই নিবন্ধে বলেন, তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভূয়া বিয়ে রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। আর এরই আওতায় ব্রিটেনে বসবাসরত নন-ইউরোপীয়ান নাগরিকদের বিয়ে অনুমোদন করার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময় নিতে ইউকে বর্ডার এজেন্সিকে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। এই পর্যাপ্ত সময় নেওয়ার মাধ্যমে বর্ডার এজেন্সি সংশিস্নষ্ট বিয়ে সম্পর্কে ব্যাপক যাচাই-বাছাই করার সুযোগ পাবে। এর মাধ্যমে বিয়েটি প্রকৃত বিয়ে কি না সেটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকলে সংশিস্নষ্ট বিয়ের ক্ষেত্রে অনুমোদন প্রদান করা হবে না। হোম সেক্রেটারি ভূয়া বিয়ে বন্ধে এমন যুদ্ধ ঘোষণা করলেও তার গৃহিত এই পদক্ষেপের ফলে প্রকৃত অর্থে ব্রিটেনের নন-ইউরোপীয়ান নাগরিকদের অধিকাংশ বিয়ের আয়োজনই থাকবে সন্দেহের আওতায়। বিয়ের অনুমোদনের জন্য তাদেরকে সাধারণ সময়ের চাইতে অধিক বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে এবং নানান ধরণের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে, দাখিল করতে হবে পর্যাপ্ত কাগজপত্র। নতুন ঘোষিত পরিকল্পনার অংশ অনুযায়ী বিয়ে রেজিস্ট্রারদেরকেও ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তারা কাউকে সন্দেহ করলেও বিয়ে পড়াতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন।
এদিকে এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, ২০০৮ সালের চেয়ে ২০১১ সালে ৫ গুণ বেশী ভুয়া বিবাহ সংগঠিত হয়েছে। গত বছরের ভুয়া বিবাহের সংখ্যা ১ হাজার ৭ শ ৪১। থেরেসা মে জানিয়েছেন, কোয়ালিশন সরকারের আমলে বোগাস বিয়ে বন্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে যারা জড়িত আছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। গত বছর ৩ শ ভূয়া বিয়ে সম্পাদনের জন্য একজন ভিকারকে জেলদন্ড দেয়া হয়েছে।
ঐ নিবন্ধে থেরেসা মে অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট সম্পর্কেও সরকারের কঠোর মনোভাবের কথা পুর্নব্যক্ত করেন। ব্রিটেনে অবস্থানরত অবৈধ ইমিগ্র্যান্টরা যাতে ক্রেডিট কার্ড না পেতে পারে, মোবাইল ফোনের লাইন নিতে না পারে, ব্যাংক একাউন্ট খোলা কিংবা ওভারড্রাফট সুবিধা না পেতে পারে সে জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।। ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ক্রেডিট রেফারেন্স এজেন্সিকে জড়িত করা হবে এবং এই এজেন্সি ক্রেডিট চেকের সময় অবশ্যই দেখতে হবে আবেদনকারীর ব্রিটেনে থাকার অধিকার রয়েছে কি না। একই সঙ্গে আগামীতে অবৈধরা বেনিফিট নিয়ে থাকলে সে ব্যাপারে পরীক্ষার জন্য নতুন অভিযান চালানো হবে।
একই নিবন্ধে বোগাস কলেজ সম্পর্কে থেরেসা মে বলেন, এই সরকার আসার পর বোগাস কলেজের বিরম্নদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত্ম এ ধরণের প্রায় ৫শটি কলেজের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে যাতে তারা টায়ার ফোর এর আওতায় বিদেশি ছাত্রছাত্রী ভর্তি করতে না পারে। তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে প্রথম তিন মাসে বিদেশি ছাত্রদের ভিসা প্রদানের হার ৬২ ভাগ কমে গেছে।
বাংলা টাইমস রিপোর্ট