somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাঙামাটির রাঙা পথে - প্রথম কিস্তি

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভোরের আলো অনেক আগেই ফুটেছে। কিন্তু শীতের আড়মোড়া ভেঙে সকাল এখনো জেগে উঠতে পারেনি। হোটেলের রিসেপশানের ছেলেটাকে ঘুম ভাঙিয়ে আমরা রুম ছেড়ে দিলাম। সে ঘুমিয়ে কাঁদা হয়ে ছিলো। আমরা বললাম, রুম চেক করে নেন। সে বলে দরকার নাই। কোনমতে গেট খুলে দিলো। আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আগে কখনো নিজে হোটেল ভাড়া করে থাকতে হয়নি আমাকে। গতকাল প্রথম হোটেল ভাড়া করার অভিজ্ঞতা হলো।



সারারাত বাস জার্নি করে ঢাকা থেকে চিটাগং পৌঁছে প্রচন্ড টায়ার্ড ছিলাম। এত দ্রুত প্লান করা হলো যে আগেভাগে হোটেল ভাড়া করার সময় পাওয়া গেলো। কোন মতে সিট পেলাম বাসের পেছনের সারির এক সারি আগে। আম্মাকে জানানোর সময় পেলাম না। যখন জানালাম তখন মনে হলো তিনি অখুশী হয়েছেন। আমি হলাম মা ভক্ত ছেলে। আম্মার পারমিশান ছাড়া এক পা ফেলিনা। যত যাই হোক। পাহাড় দেখার শখ আমার কৈশোর থেকে মনের উপর চেপে আছে। সু্যোগ আর হাত ছাড়া করতে পারছি না। রাত তিনটায় চট্রগ্রাম পৌঁছলাম। এখন কোথায় যাবো।

আমি আর শরীফ। শরীফকে বললাম চল বাসের কাউন্টারে গিয়ে বসি। শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে বসে আছি ভোরের অপেক্ষায়। নানা ধরনের মানুষ অপেক্ষা করে আছে। কেউ বাস ধরবে। কেউবা আমার মত অপেক্ষায়। ফুটপাতে চায়ের দোকান গুলো তখনো খোলা। উঠে গিয়ে চা খেয়ে এলাম। অবশেষে আলো ফুটলো। এবার হোটেল খোঁজার পালা। চিটাগাঙে আমার চেনাজানা খুব কেউ নেই। আমার কিছু ফেসবুক বন্ধু আছে। বিপদে মানুষের সাহায্য খোঁজা ভালো মানসিকতার পরিচয় নয়। গুগল ঘেঁটে হোটেল খোঁজার চেষ্টা করলাম। হোটেল পেনিনসুলার নাম আসে সবার আগে। খাইছেরে। পাঁচ তারকা হোটেলে থাকার মত যোগ্যতা কি আমার মানিব্যাগের এখনো হয়েছে! আমার বেশ পরিচিত এক ফেসবুক ফ্রেন্ডকে ফোন দিলাম। বছর দুয়েকের পরিচয়। দেখা হয় নাই কখনো। সুযোগ আসেনি। কিন্তু আবেগে অনুভূতিতে আমরা ফেসবুকে একে অন্যের পাশাপাশি থাকতাম। আমাকে বলল, তুই জিইসির মোড়ে দাঁড়া, আমি আসছি। আগ্রাবাদ থেকে জিইসি আসতে কতক্ষণ লাগে আমার আইডিয়া নাই। সে আমাদের ঝাড়া আড়াই ঘন্টা বসিয়ে রাখলো। এই ফাঁকে আমরা মোড়ের হোটেল থেকে ব্রেকফাস্ট সেরে নিলাম। আদা আর হলুদ এত বেশী পরিমানে দিয়েছে যে আমার দৃষ্টিতে খাবার অতিশয় জঘন্য বলে মনে হলো। অপেক্ষায় মেজাজ উত্তপ্ত হয়। আমি সেই ফেসবুক বন্ধুর উপর বিড়বিড় করে বিরক্তি ঝাড়া শুরু করলাম। দুই বন্ধু কাছাকাছি থাকলে কি ধরনের স্লাং মুখ দিয়ে বের হয়ে তা নিশ্চই সাহিত্যের খাতায় লেখা হয় না।

শরীফ বলল, দেখিস আবার ডাইরেক্ট হিট করিস না। বেচারা আসতে চাইছে সেটাই তো কত। আমি বললাম, বেচারা না আসলে আর কিবা ক্ষতি হত। অবশেষে তিনি এলেন। ও আল্লাহ একি। তাকে যা জিজ্ঞেস করি সে সোজা কোন উত্তর দিতে পারে না। আমি বললাম, ভালো হোটেল কোথায় পাওয়া যায়। সে বলে, আমি কখনো হোটেলে থাকিনি, কিভাবে জানবো! আমি বলি চট্রগ্রাম শহরে দেখার মত কি কি আছে। সে বলে দেখার কিছু নাই। ধ্যুর, একেই বলে গোঁয়ালের পাশের ঘাস গরুতে খায় না। শরীফ মিটমিটি হাসছে। আমার মেজাজ তো খঁচে গেছে। এই উটকো ঝামেলা কিভাবে বিদায় করা যায়! ফেসবুকের টেক্সটের মানুষ আর বাস্তবের মানুষের যে আকাশ পাতাল ব্যবধান হতে পারে তা আজ হাতে নাতে জানলাম। আমি বললাম, এটা তো বলতে পারবে চট্রগ্রামের আবাসিক হোটেলগুলো কোনদিকে? সে বলল, নিউমার্কেটের দিকে। আমরা তিনজন নিউমার্কেট চলে এলাম। অনেকগুলো হোটেল। গাঁয়ে গাঁয়ে লাগা। নাম দেখে আলাদা করা যায় না। হোটেল গেস্ট ইন। নাম দেখে পছন্দ হলো। প্রচন্ড টায়ার্ড আমরা দুজনেই। রুম দেখার প্রয়োজন মনে করলাম। টাকা মিটিয়ে চাবি নিয়ে ঢুকে গেলাম। গোছল সেরে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। একি ঘরের ভিতর শুটকো গন্ধ। আমরা রুম সার্ভিসকে স্প্রে করতে বললাম। তারা নাকি স্প্রে করে না। পানি দিতে বললাম। বলে পানি আমাদের কিনে আনতে হবে। শরীফকে বললাম, চল অন্য হোটেল দেখি। সে বলল, টাকা তো দিয়ে দিয়েছি। ফেরত দেবে না। আর হোটেলে কয়েক ঘন্টা মাত্র। চলে যাবে। কথাটা অযৌক্তিক না। চট্রগ্রামে তো আমরা ঘুমাতে আসি না।

ফেসবুক বন্ধু টা এখনো আছে। গাধা দেখেছি আমি কিন্তু ফার্স্ট ক্লাস গাধা এই প্রথম দেখলাম আমি। স্পষ্ট বিরক্তি প্রকাশ করছি তাও সে যাওয়ার নাম করছে না। বলছে বিকেলে কোথায় ঘুরবে, আমি ফ্রি আছি। শরীফ বলল, তুই তাহলে ওনার সাথে গল্প কর, আমি ঘুমিয়ে নেই। আমি বললাম, আমি ওকে নাস্তা করিয়ে আনি। বলে তাকে সাথে করে নিচে নামলাম।

তাকে বাসে তুলে দিয়ে ঘন্টাখানেক বাদে রুমে ফিরলাম। সারা শরীর আলস্য। বিছানায় মাথা ঠেকাতে কখন ঘুমিয়ে গেলাম টের পেলাম না। ঝরঝরে শরীর নিয়ে ঘুম ভাঙলো দুপুরে। আমরা পতেঙ্গার পথে পা বাড়াবো এবার। নিউমার্কেটের সামনেই বাস পেয়ে গেলাম। বিশ টাকা ভাড়া। ভেবেছিলাম কাছেই হবে। কিন্তু বেশ দূরে। তিনটার দিকে পতেঙ্গায় পৌঁছে গেলাম। আগে আমার কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিনে সাগর দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। পতেঙ্গার সাগর দেখলাম এই প্রথম। সাগর বলে মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে দিগন্তবিস্তৃত এক নদী। নদীর মত ঘোলা জল। কিছু জায়গায় পাথর ফেলে কর্তৃপক্ষ বাধিয়ে রেখেছে। আমরা তাতে বসলাম। বিকেল গড়িয়ে গেলে হিমেল বাতাসের ঝাপটা মুখে লাগাতে বেশ ভালো লাগলো। প্রচুর মানুষের ভীড়। কেউ ঘোড়ায় চাপছে, কেউবা স্পিড বোটে। সাম্পানের দাঁড় টেনে মাঝি গান গাইছে এই দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে।

আমাদের এক কলিগ তমালের বাড়ী চট্টগ্রামে। সে বলেছিলে, চিটাগাঙে আপনারা বাটারফ্লাই পার্কে যেতে পারেন। নেট ঘেঁটে দেখলাম বাটারফ্লাই পার্ক পাতেঙ্গার কাছেই। পরিবেশ রক্ষায় পার্কটা কি কি পুরষ্কার পেয়েছে দেখলাম। সিএনজি নিয়ে চলে গেলাম বাটারফ্লাই পার্ক। প্রবেশমূল্য জন প্রতি একশো টাকা। পার্কে ঢোকার পরে মনে হলো টাকাটা পার্ক কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে কোন ফকিরকে দিলে ভালো করতাম। কোথায় বাটারফ্লাই? একটা জ্যান্ত প্রজাপতি তো চোখে পড়ছে না। পার্কের ভেতর প্রজাপতিদের যে অভয়াশ্রম বানানো হয়েছে তার ভিতর যুবক যুবতী জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে। যৌবনের রসে মজে তার বর্তমানকে ভূলে আছে। অনেক অভিভাবক তাদের বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে এসেছে। বাচ্চাদের জন্য শিশুপার্ক আছে তাহলে যুবকদের জন্য কি ইয়থ পার্ক খোলা যায় না? কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। ওপাশে শ্যুটিং চলছে। স্থানীয় পরিচালক, স্থানীয় অভিনেতা, স্থানীয় ভাষা। মজা করে আমরা শ্যুটিং দেখা শুরু করলাম। আরে ভাই টাকাটা উশুল করতে হবে না। কাহিনীতে দেখা যাচ্ছে, বিদেশ ফেরত একটা মেয়ে আর ছেলে রাস্তা ধাক্কা খেয়েছে। মেয়েটার ভ্যানেটি ব্যাগ পড়ে গেছে। সেটা তোলার সময়ে চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে আছে। কয়েকবার শর্টে ওকে হলো সিন টা। ছেলেটা কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পা দিয়েছে। মেয়েটা ছেলেটার থেকে বছর দশেকের বড় হবে। অন্তত দেহের সাইজ তো তাই বলে। তার উপর স্কার্ট টপে তাকে উৎকট লাগছে। পরের দৃশ্য একটা ফুল বালিকা এই সময়ে এসে ফুল কেনার জন্য ছেলেটাকে সাধছে। ছেলেটা ফুল কিনে নিয়ে মেয়েটাকে মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিলো। ছোট মেয়েটাকেও দেখছি পারলার থেকে সাজিয়ে এনেছে। এরকম চকচকে জমকালো ড্রেশ পরে, চুলে দামী ব্যান্ড পরে ঢাকা শহরে কোন মেয়ে ফুল বিক্রি করে বলে তো মনে হয় না। পরিচালকের জন্য আমার দূঃখ হতে লাগলো। আরে যারা বাস্তবতাকে পাশ কাটিয়ে সিনেমায় রঙ মাখাতে চায় তারা আর যাই হোক চিরকাল সি ক্লাসে থেকে যায়। শ্যুটিং এর পরবর্তী সেট পড়েছে পুকুর ঘাটে। আমরা শ্যুটিং দেখা বাদ দিয়ে পুকুরে বাহারী আমেরিকান রুই দেখতে লাগলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম অদূরে দাঁড়ানো দুটি মেয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের একজন আমাদের দিকে চোখ মারলো। আমাদের এই অভিজ্ঞতা প্রথম। আমি শরীফকে বললাম, তোকে দেখে আজকাল মেয়েরাও চোখ মারে। শরীফ বলে, তোকে দেখে মেরেছে। জয়তু ডিজিটাল বাংলাদেশ।

সন্ধ্যার আগেই আমরা হোটেলে ফিরে এলাম। রাত আটটায় আমরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউটে গেলাম আমাদের এক কলিগের বিয়েতে। টুটুল বর সেজে বসে আছে। বরপক্ষ কনেপক্ষের বাকী কাউকে চিনি না।হিন্দু বিয়ে, লগ্ন ছাড়া হয় না। লগ্ন লাগবে সেই রাত দুটোয়। অত রাত পর্যন্ত থাকার জো নেই। হোটেল থেকে বলে দেয়া হয়েছে তার বারোটায় গেটে তালা লেগে যাবে। তাই খেয়ে নিলাম আমরা। হোটেলে খেয়ে আমার ধারণা জন্মেছিলো চিটাগাঙ শহরের রান্না বোধহয় ভালো না। তবে এই রান্নাটা চমৎকার হয়েছে। হোটেলে ফিরে ঘুমাতে গেলাম। আগামীকাল ভোরে রাঙামাটির বাস ধরতে হবে।






সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×