তোমার হিসেবী ভালোবাসা
কোন এক বালুকাবেলায় সূর্য ডোবার কালে
যখন পাখিগুলো ফিরছিল নীড়ে
বালির ঢিবি বানাতে বানাতে বলেছিলে গুনগুনিয়ে
ভালোবাসার কথাগুলো বসে সাগর তীরে।
একটি সাগর চেয়েছিলে আমার কাছে, ভালোবাসার সাগর
যেথায় সাঁতার কাটব দুজনে মিলে;
একটি দ্বীপ চেয়েছিলে আমার কাছে, ভালোবাসার বালুচর
যেথায় থাকব শুধুই আমরা দুজনে মিলে;
একটি পুরো বর্ষা ঋতু চেয়ে নিয়েছিলে আমার কাছে, ভরা ঝড়ো বাতাসে
দুজনে মিলে বৃষ্টিতে ভিজব বলে;
একটি আস্ত চাঁদ চেয়েছিলে আমার কাছে, মেঘহীন আকাশে
দুজনে মিলে জ্যোৎস্না স্নান করব বলে;
একটি পুরো পাহাড় চেয়েছিলে আমার কাছে, হিমালয়ের মত অনেক উঁচুতে
যার চুড়া থেকে ডানা মেলে দেব পাখি হয়ে দুজনে মিলে;
একটি স্বপ্ন গুহা চেয়েছিলে আমার কাছে, অগ্ন্যূৎপাতের উৎসের অনেক নিচুতে
যার ভেতরে ঘর বাধব আমরা দুজনে একসাথে মিলে।
আমি তোমাকে কিছুই দিতে পারি নি সেদিন সাধ্যে ছিল না বলে
তোমার চাওয়াগুলো আমার মনে হয়েছিল, চেয়েছিলে শুধু কথার ছলে
তবু আমার অপারগতা জানিয়ে বলেছিলেম তুমি আমার হৃদয়টারে রাখ
এটা পুরোটাই তোমার, তুমি আমার এ হৃদয়ের প্রতিটা ভাজ খুলে দেখ।
এখানে পাবে বিশাল ভালোবাসার সমুদ্র যেথায় স্নান করবে
এভারেস্ট থেকে উঁচুতে তোমার স্থান যেখান থেকে উড়ে বেড়াবে
আমার হৃদয়ে ডুব দিলে খুঁজে পাবে না কোন তল, এ তোমার ভালোবাসার কুয়া
জ্যোৎস্না ধরে রেখেছি হৃদয়ে তোমায় আলো দিতে, কোথাও পাবে না কোন ধোঁয়া
বর্ষাঋতু ছাড়াই বর্ষা-স্নানে তুমি সিক্ত হবে প্রতিদিন ভালোবাসার বর্ষণে
পুরো হৃদয়টাই বালুকাবেলার দ্বীপ যখন ইচ্ছে খেলাঘর বানাতে পার এখানে
বুঝলে না তুমি আমার ভালোবাসা, রাগে দুঃখে অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিলে
ভালোবাসার অবমাননা করে আমায় ফেলে রেখে এখন তুমি কার কাছে গেলে?
সাহিত্যের ছাত্রী তুমি তবুও হিসেবে পাকা ছিলে চিরদিনই
দুজনের ভালোবাসা হিসেব করে নিও আজ না হয় জীবনে একবারই
কি দিয়েছিলে আর কি পেয়েছিলে হিসেবের খাতায় হিসেব কি মিলে
লজ্জা কি পাবে একবার আমার ভালোবাসায় কোন খুঁত না পেলে।
তোমার বড়লোক স্বামীর দামী জার্মান কাঁচের
বিশাল বড় আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়ে
শুধু ভালোবাসার পাল্লায় হিসেব করে
নিজেকে একবার প্রশ্ন কর তো নিজে আজ।
ভালোবাসার প্রত্যাখ্যানে আমার হৃদয়টাকে রক্তাক্ত করে দিয়ে;
কতটুকু হয়েছে তোমার লাভ?
করতে করতে না হয় একটু সাজ
হিসেবে লস দেখলে মনে মনে তুমি
পাবে কি একটুকু লাজ?