একটা ছেলে একটা মেয়েকে খুব
ভালোবাসতো। মেয়েটাও
ছেলেটাকে প্রচণ্ড ভালোবাসতো।
কারো বাসার থেকে কোন বাধা ছিলনা।
তারা মোবাইলে অনেক কথা বলতো।
বলতে গেলে তারা মোবাইলের কল্যাণে সবসময় একসাথেই
থাকতো।
কে কখন কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, কি খাচ্ছে সব
মোবাইলে একজন আরেকজনকে সাথে সাথে জানাতো। কেউ
কখনো কারো উপর রাগ কিংবা অভিমান
করতো না। আইচ ক্রিম ছিল মেয়েটার সবচাইতে প্রিয়।
তারা যখন একসাথে কোথাও ঘুরতে যেতো তখন তাদের খাওয়ার
মেনুতে থাকতো প্রতিদিনই মেয়েটার পছন্দের আইটেম আইচ
ক্রিম, কিন্তু ছেলেটার কোন জিনিসটা প্রিয় ছিল,
মেয়েটা কখনো সেটা জানতে চাইনি। এতে ছেলেটার কোন
অভিযোগ ছিলনা।
তারা দুজনে মিলে তাদের বাচ্চার নাম ও ঠিক করে রেখেছিল।
ছেলে হলে স্বপ্ন আর মেয়ে হলে আইচ ক্রিম। নাম দুটিই ছিল
মেয়েটার পছন্দের, ছেলেটা এতে কোন দ্বিমত করেনি। শুধু
বলেছিল, যাও, আইচ ক্রিম আবার
কারো নাম হয় নাকি? মেয়েটা বলল হয়না কিন্তু আমার মেয়ের
নাম এটাই হবে।
মেয়েটা সবকিছুই তার বড় আপুর
সাথে শেয়ার করতো। একদিন
ছেলেটা একা একা বাইক নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল। তখন
মেয়েটা ফোন দিলে ছেলেটা রিসিভ করে। জান,
কি করছো? এইতো বাইক
নিয়ে একা একা ঘুরতে বের হয়েছি।
মেয়েটা বলল একা কোথায়,
মনে করো আমি তোমার সাথেই আছি।আমাকে প্রমিস
করো এখন
থেকে যেখানেই যাবে আমাকে সাথে নিবে। আচ্ছা বাবা নিবো।
হচ্ছিল এই ধরনের আরও আবেগি কণ্ঠ। হঠাৎ একটা ট্রাক
কন্ট্রোল হারিয়ে বাইক সহ
ছেলেটাকে চাপা দিয়ে চলে যায়।
ভয়ংকর একটা শব্দে ফোনের লাইনটা কেটে যায়।
মেয়েটা অস্থির হয়ে ফোন
দিতে থাকে কিন্তু সংযোগ পাই না।
ততক্ষনে এক্সিডেন্টের জাইগাই অনেক লোক জড়ো হয়ে যায়।
হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা যায় ছেলেটা।
মেয়েটা ওদিকে অস্তির হয়ে যায়,
আপুকে সক্তকরে জড়িয়ে ধরে থাকে। ছেলেটার বাসায় ফোন দেই
তার আপু, কিন্তু কেউ রিসিভ করেনা।
অনেকক্ষণ ধরে ফোন দেওয়ার পরে ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ
করে একজন জানায় ছেলেটা রোড-এক্সিডেন্টে মারা গেছে।
মেয়েটা সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়। কেউ তাকে সেদিন আর
কথা বলাতে পারলো না। পরদিন ছেলেটার আম্মুকে খবর
দিয়ে আনা হয় মেয়েটার
বাসায়। তাকে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ কাঁদলো মেয়েটা।
তবে মেয়েটাকে কিছু খাওয়ানো গেলো না। সেদিন
রাত্রে মেয়েটা শেষ একটা কথা তার
আপুকে বলল, আপু আমার
একটা কথা রাখবি? তোর
মেয়ে হলে মেয়েটার নাম আইচ ক্রিম রাখিস। তারপর? তারপর
মেয়েটা তার কথা রাখতে ছেলেটার পাড়ি জমানো পথ
ধরে পাড়ি জমায়। হয়তো তারা এখন একজোড়া সাদা বক,
অথবা গাঙচিল হয়ে আজও উড়ে বেড়াই তাদের অপূর্ণ
ভালোবাসাটাকে পূর্ণতা দিতে। (সমাপ্ত)