somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনা ঝরা শৈশব

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই আদিম বুনো গন্ধটা আজো ঝেরে ফেলতে পারিনি জীবন থেকে
বড় কষ্ট হয় বড় মায়া হয় তার জন্য।
এত কোলাহল ব্যস্ততার মাঝেও বারেবারে মনে পড়ে যায়
যতই থাকিনা কেন আকণ্ঠ নিমজ্জিত রঙিন জলের তলায়।
যে রকম করে নদীর জলে,পুকুরের জলে হাঁস ভেসে বেড়ায়,
ওমনি ভুস করে ভেসে উঠে
বুকের মধ্যে
একটি চিনচিনে কাঁচফাটা ব্যথা ধরিয়ে দিয়ে
আমার আহ্লাদি সোনা ঝরা শৈশব।
তোমাদেরও কি মনে পড়ে যায় আমার মত
বাবার ছেঁড়া লুঙিটাকে কাশ্মিরি শালের মত সারা গায়ে জড়িয়ে
কোন এক শীতের সকালে বাঁদুরে,বুলবুলিতে অর্ধ খাওয়া বরই
মোরগ গুলো সকালে ডেকে উঠার আগেই
ঘুম থেকে উঠে মানুষের গাছ তলায়
ঝোপ ঝাড়ে কুঁড়ানো।
আর কোন রকমে যদি একটি আস্ত বরই পাওয়া যেত
চোখের তারায় স্বচ্ছ কাঁচের মত চকচক করত বিশ্ব জয়ের আনন্দ।
কতনা সুখের ছিল সেই সোনা ঝরা দিন গুলো
বনের হরিণের মত শুধু ছুটে চলা আর ছুটে চলা
মাঠে ঘাটে বনে বাদারে
বাতাসের ডানায় ভর করে।
যেই টুনটুনিটা সারাদিনময় টুনটুন করে বেড়াত আমাদের ঘরের চারপাশে
আমি খুঁজতাম তার বাসা কোথায় কোন ডুমুরের গাছে
কি সুন্দর দুটো পাতা জড়ো করে বুনা তার শৈল্পিক বাসা।
আমি প্রতিদিন নিঃশব্দে বাসাটির কাছে হেটে যেতাম
দেখতাম কয়টি ডিম পেড়েছে
কবে ডিম ফুটে ছানা বেরুবে।
লেবু বাগানের দোয়েল পাখিটা কোন গাছের কোটরে বাসা করেছে
যেন তাদের দেহভাল করার দায়িত্ব আমার।
যখন হেমন্তের শেষে ছেলে মেয়েরা কাদা জলে মাছ ধরত
আমারও প্রচন্ড ইচ্ছে হত,তাদের মত মাছ ধরি
তাই টুপ করে নেমে পড়তাম ন্যাংটো হয়ে।
আমার কচি দুটো হাত মাছের সন্ধান পেয়েছিল কিনা মনে নেই
পেলেও বা হাতের ফাঁক গলে খুব সহজেই পালিয়ে যেত
যাওয়ার আগে শিং কিংবা টেংরা হাতে বসিয়ে দিয়ে যেত ঘাই
আর কি ব্যথা,দু চোখ দিয়ে টপটপ করে গড়িয়ে পড়ত জল
যারা সমবয়সি ছিল আমারি মত ছোট
আমার ব্যথায় ব্যথিত হয়ে বলত আয়
হাতে হিসু করে দিই
দেখবি নিমেষেই সেরে যাবে ব্যথা।
এইরকম সোনা ঝরা দিন গুলোর কথা কি ভুলে থাকা যায়
যেই দিন গুলো কেটে যেত ঈদের দিন আর বৈশাখি মেলার প্রতিক্ষায়।
মাটির ব্যাংকে বহু কষ্টে জমানো দুয়েকটা আধুলি
তাতে কি আর কেনা যেত হাতি ঘোড়া ছাই পাশ কোনাঘাটের মেলায়।
তবুও মাথায় ঠা ঠা রোদ্দুর নিয়ে তিন মাইল হেটে যাইয়া
বড় ভাইয়ের হাত ধরে।
একটি মাটির বাঁশি একটি বাঁশের বাঁশি একটি মাটির ব্যাংক
আর একটি ছোট আম কাটা চাকু কিনে মনের আনন্দে ফিরে আসা।
কোন বছর হয়ত পয়সার অভাবে চাকুটাও কেনা হতনা।
তাতে কি এই দূর্বার মনের আনন্দতো থামবার নয়
পুকুরের তলা থেকে ডুব দিয়ে ঝিনুক তুলে
স্কুলের পাকা দেয়ালে ঘষলেই চমৎকার চাকু হয়ে যেত।
তারপর আম গাছের ডালে পা দুলিয়ে দুলিয়ে
লবণ মরিচ দিয়ে কাঁচা আম খাওয়া।
দুচোখ আমার আজো বষ্পায়িত হয়
যখন পশ্চিমাকাশে কুমড়োর ফালির মত
জেগে উঠে রমজানের কিংবা কুরবানির ঈদের এক টুকরো চাঁদ
আমাকে মনে করিয়ে দেয় আনন্দ বেদনায় মেশানো শৈশবের ঈদ।
কোন বছর হয়ত নতুন কাপড় জুটত কোন বছর হয়ত না
তারপরও এই দিনটির জন্য কত প্রতিক্ষার প্রহর গোনা।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নিছক স্বপ্ন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৮



©কাজী ফাতেমা ছবি
তারপর তুমি আমি ঘুম থেকে জেগে উঠব
চোখ খুলে স্মিত হাসি তোমার ঠোঁটে
তুমি ভুলেই যাবে পিছনে ফেলে আসা সব গল্প,
সাদা পথে হেঁটে যাব আমরা কত সভ্যতা পিছনে ফেলে
কত সহজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একদম চুপ. দেশে আওয়ামী উন্নয়ন হচ্ছে তো?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৯



টাকার দাম কমবে যতো ততোই এটিএম বুথে গ্রাহকরা বেশি টাকা তোলার লিমিট পাবে।
এরপর দেখা যাবে দু তিন জন গ্রাহক‍কেই চাহিদা মতো টাকা দিতে গেলে এটিএম খালি। সকলেই লাখ টাকা তুলবে।
তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×