somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু,এবং আমার ভাবনা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আসলে কিছুই বলার নাই । গত কয়েকদিনে ব্লগ আর ফেসবুকে যা আলোচনা হল তাতে মনে হল আমাদের ছোট ভাই তৌহিদ বাসচাপায় মারা যেয়ে এক মহা অপরাধ করে ফেলেছে । কিছু বিশেষ টাইপ লোকজন তাকেই দোষ দিচ্ছে সাথে আমাদেরকেও । কেন আমরা এর প্রতিবাদ করলাম এজন্য ।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পর তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রী তারেক মাসুদের আহত স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদকে বলেছিলো “আপনাদের ড্রাইভার এর দোষ” । তখনো এই ব্লগ ও ফেসবুকেও তুমুল সমালচনার ঝড় উঠেছিলো এই রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রদানের জন্য । আজ যারা বলছেন তৌহিদের দোষ, তারাও হয়তো আবুলের সেই মন্তব্যের তুমুল প্রতিবাদে মেতেছিলেন ব্লগ ফেসবুকে । কিন্তু আমরা সাধারণ ছাত্ররা আজ জোটবদ্ধ হয়ে কেন তৌহিদের জন্য শোকপ্রকাশ করলে মৃত তৌহিদকে গালাগালি শুনতে হয় । হ্যাঁ । শুনতে তো হবেই । তৌহিদ তো আর বিখ্যাত বা প্রখ্যাত কেউ না ।

আমাদের ক্যাম্পাসের মত প্রশস্ত রাস্তা ঢাকা শহরে তেমন নাই । আমাদের ভার্সিটিতে কোটিপতিদের সন্তান পড়ে না । গাড়ি নিয়ে আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাতে গোনা । শিক্ষকরা যারা গাড়ি নিয়ে আসে তাদের গাড়িতে স্টিকার লাগানো থাকে । কিন্তু ক্যাম্পাসে প্রতিদিন প্রবেশ করা গাড়ির সংখ্যা শত শত । বিকল্প রাস্তা থাকা সত্ত্বেও জ্যাম কাটানোর জন্য তারা ঢুকে পড়ে এই এলাকায় । আমরা ক্লাস করে টিএসসি তে যাওয়ার সময় রাস্তা পার হই ভয়ে ভয়ে । কেন আমাদেরকে ভয় পেতে হবে? আমরা কি শান্তিতে রাস্তা পার হওয়ার অধিকার রাখি না?

নিরপরাধ মালিকের গাড়ি ভাঙ্গা সমর্থনযোগ্য নয় । তবে গাড়ি ভাঙ্গায় একটা লাভ হইসে । কিছুদিন বহিরাগত গাড়িগুলো ক্যাম্পাসে ঢুকতে ভয় পাবে । অন্তত কিছুটা দিন আমরা শান্তিতে রাস্তা পার হতে পারব ।

মির্জা খালেদ নামক এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রের মৃত তৌহিদ কে গালি দিয়ে করা পোস্ট এর পরে আমরা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা অনলাইনে উত্তপ্ত হয়ে উঠি । তার গালাগালিটা শোভন ছিলো না । তারপর থেকে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বেশ উত্তপ্ত হয়ে আছে অনলাইনে । কয়েকবছর আগে এক শিক্ষকের স্ত্রী সকালে হাঁটতে বের হয়েছিলেন । তার গায়ে গাড়ি তুলে দেয় জনৈক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী যে কিনা গাড়ি চালানো শিখছিলো । হায় রে বাংলাদেশ । সত্যি এ এক হীরক রাজার দেশ ।

যাই হোক, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ম্যানার নিয়ে প্রশন তুলেছেন তাদের বলছি । ভাইরে, কিছু হইলেই তো এই ক্যাম্পাসে ছুটে আসেন । উৎসব গুলোতে ফোন দেন ক্যাম্পাসের বন্ধুদের কনসার্ট আছে নাকি... পহেলা বৈশাখ তো সারা দেশেই পালিত হয় । আমরা আমাদের মত করে পালন করি । আপনারা এসে ভীর করেন । ৩৫০০০ হাজার শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাস পরিণত করেন ১ লাখ লোকের ক্যাম্পাসে । কথায় কথায় বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পড়াশোনা হয় না । খালি প্রেম হয় । অথচ গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে ডেটিং করতে ভেন্যু হিসেবে টিএসসি কেই বেছে নেন । বলেন পড়াশোনার পরিবেশ আর নাই । অথচ বাহির থেকে অনার্স করে এই ক্যাম্পাসের একটা মাস্টার্স ডিগ্রী নিতে পারলে ফেসবুকে সবার আগে এডুকেশন ইনফরমেশন পাল্টায়ে দেন । সত্যি বললাম কি না?

একটু ভদ্রতা শিখেন । আমি কিন্তু হাতে গোনা দুই একটা সরকারি আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে কাউকে গোনায় ধরি না । হ্যাঁ । আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরেছি বলেই এটা বলতে পারছি । কপাল গুনে হয়তো আমাকেও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হতে পারতো তা হোক সরকারি বা বেসরকারি । তবে এই ক্যাম্পাসের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের জায়গাতে কোন কমতি ছিলো না । অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় কেমন বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর বা জগন্নাথের আন্দোলনে বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন বৃদ্ধিতেও কিন্তু আমরা নৈতিক জায়গা থেকে আপোস করি না । আপনাদের পাশে থাকি । আপনারা না থাকতে চাইলে প্রবলেম নাই । আমরাই যথেষ্ট ।

কেউ রাগ করলে কিছু করার নাই । জগতে সকল প্রাণী সুখী হোক । এটাই হোক আমার প্রার্থনা।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×