somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেই নদীটা হারিয়ে ফেলেছি!

৩১ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একটা সময় ছিলো, অনেক গল্প ছিলো বলার। নিজের ঘরের চাবি হারিয়ে ফেলে ঘরে ঢুকতে না পারার গল্প অথবা মন খারাপ করা কোন এক বিষন্ন সন্ধেতে শহরের কাছে পোষ-মানা ওই নদীটার কাছে গিয়ে বসে থাকবার গল্প কিংবা ছবি। সবই। এখন আর ইচ্ছে করে না সেইসব । মৃত্যু হয়েছে অনেক আগে সেই তরুণের।

কিন্তু, এখনো পড়ে আছে সে সেই নদীর তীরে, যেখানে নৌকো নেই, ভাসছে না কোন ভেলা। ওপারটা বড্ড দূরে। দেখা যায় না। যেনো বসে আছে, কেউ আসবে। অথবা, কারও অপেক্ষাতেও নেই। আসলে তাড়া নেই সম্ভবত। কোথাও যাবার নেই। সন্ধ্যেবেলা ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির মাঝে ভেজা শীতল ঘাসে পা দুটো মেলে দিয়ে বসে থাকে সে। দূরে, তৈরি হচ্ছে এরকম উঁচু ভবনগুলোর উপরে একগাদা ক্রেন। যেন জীবন্ত, একটা আরেকটার সাথে কাটাকুটি খেলছে।

আসলে কোন গল্প নেই। শরীর খারাপ কোন গল্প হতে পারে না। শুয়ে থেকে ছাদের দিকে চেয়ে থাকা কোন গল্প হতে পারে না। অলস বসে থেকে যান্ত্রিক ও লোকদেখানো ফেইসবুকে নাটকের সাজানো চরিত্রগুলোর স্ট্যাটাস মেসেজের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা নিয়ে কোন গল্প লেখা যায় না।

আমাকে নিয়ে আমি কোন গল্প লিখতে পারি না।

হ্যাঁ, হয়তো গল্পে আসতে পারে, আমি চার বছরের লম্বা ছাত্রত্ব শেষে এবার বিশ্ববিদ্যালয় নামক প্রতিষ্ঠানটি থেকে বিদায় নিচ্ছি। সহজ করে বললে, পড়াশোনায় ইস্তফা দিয়ে কর্পোরেট দাস হওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু, এসব দৈনন্দিন ঘটনা নিয়ে লেখা গল্পে আমি ছাড়া আর কোন চরিত্র আসবে না। প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনায় আপাতত ফুলস্টপ দেয়া ও বৈশ্বিক কর্পোরেট বাজারের দাস হওয়া নিয়ে আমার মানসিক অনুভূতির কোন বিবরণও আসবে না।

অনুভূতিহীন এইসব দিনেও আমি তীব্রভাবে বিষাদময়তায় আক্রান্ত হই, দম বন্ধ হয়ে ওঠে। কানে গান লাগিয়ে, অনেক পুরনো কোন ফিকশন বইয়ে নিজের চেহারা আড়াল করে, ফাঁকা ট্রেনের দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরে অন্ধকার দেখি। স্মৃতির আয়নায় উপহাস করে আমার গতকাল । একান্তই নিজের গল্প। যে গল্প আমি আর লিখতে পারি না।

আমাকে পোড়ায় না রাষ্ট্রের সমরবাহিনীর যুদ্ধ অথবা বিদ্রোহ কিংবা নাশকতা, দেশ অথবা সময়ের পতন আমার কানে এসে থেমে যায়, মস্তিষ্কে কোন অনুভূতির তৈরি করে না। কান আমি বন্ধ করে রাখি, চোখে পড়ে থাকি ঠুলি। আগুন লেগেছে, বড়োজোর নিজের স্বজন আগুনের চারপাশে থাকার সম্ভাবনা না থাকলে আগ্রহ হারাই সে খবরে। কী দরকার যেচে পড়ে হাইপারটেনশন তৈরি করার? প্রতি মুহূর্তে স্বার্থপর অমানুষ হয়ে উঠি। প্রতি ক্ষণে ভালো মানুষ না হতে পারার ব্যর্থতা আমাকে বিদ্ধ করে। আমি অন্ধকার হেঁটে গিয়ে অন্ধ হয়ে উঠি, কূপমন্ডুক হওয়ার পথে আরেকটু এগিয়ে যাই।

কিন্তু এতকিছুর মাঝে, কিছু না লিখতে পারার কষ্টটাই বড্ড তীব্র হয়ে ওঠে।

আসলে সেই নদীটা আমি হারিয়ে ফেলেছি। অসময়ে যাকে আশ্রয় করে, যাকে জড়িয়ে এতোটা পথ এলাম। সেই নদীর গল্প দু-এক লাইন এগোয়। কিন্তু তারপর থেমে থাকে। নদীটাকে আর খুঁজে পাই না!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

**অপূরণীয় যোগাযোগ*

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ২৮ শে মে, ২০২৪ ভোর ৫:১৯

তাদের সম্পর্কটা শুরু হয়েছিল ৬ বছর আগে, হঠাৎ করেই। প্রথমে ছিল শুধু বন্ধুত্ব, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা গভীর হয়ে উঠেছিল। সে ডিভোর্সি ছিল, এবং তার জীবনের অনেক কষ্ট ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাঙ দমনের নেপথ্যে এবং রাষ্ট্রীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বয়

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭


ব্যাঙ দমনের বাংলায় একটা ইতিহাস আছে,খুবই মর্মান্তিক। বাংলাদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কোন সার কেনা হতো না। প্রাচীন সনাতনী কৃষি পদ্ধতিতেই ভাটি বাংলা ফসল উৎপাদন করতো। পশ্চিমবঙ্গ কালক্রমে ব্রিটিশদের তথা এ অঞ্চলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×