মিতু সারাক্ষণ আনমনা হয়ে নিয়তির কথা ভাবে ।কোন কিছুতেই তাঁর মন বসে না।জীবনের মানে কি তা সে ধিরে-ধিরে ভুলে যেতে শুরু করলো।মিতু কখনো ভাবেনি তাঁর উজ্জ্বলমুখর দিন গুলু নিলজ্জ হয়ে বিরহের বুকে নীড় গড়বে।এক দিন শফিং করতে মিতু তাঁর ছোট ভগ্নি সেতু-কে নিয়ে নিমতলা মার্কেটে গেলো ।কিনা-কাটা শেষ করে বাসায় ফিরবে,ঠিক সে সময় মিতু শুতে পেলো তা-কে যেন কে ডাকছে।পিছনে ফিরে দেখল রাজুকে।কিন্তু রাজু তাকে কেন ডাকবে মিতু ভেবে পাচ্ছে না।রাজু মিতুর তিন বছরের সিনিয়র।রাজুর বাসা মিতুদের পাশে।মিতু কখনও রাজুর সাথে কথা বলেনি । রাজুও বলেনি।কেন রাজু তাকে ডাকলো মিতুর মনে একটা কৌতুহল সৃষ্টি হল।রাজু কাছে এসে বলল তুমি মিতু না । হাঁ আমি মিতু আপনে রাজু ভাই না।হাঁ...তুমি কি এখন বাসায় যাচ্ছ ।হ্যাঁ ভাইয়া ।শুনো তোমার কাছে কিছু টাকা হবে।আমার কিছু টাকা ভীষণ দরকার।মিতু তন্ময় হয়ে রাজুর দিগে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো ।যে ছেলে কখনও আমার সাথে কথা বলেনি সে আজ আমার কাছে টাকা ধার চাচ্ছে।মিতু কথা বলছ না যে । হ্যাঁ ভাইয়া কত লাগবে। বেশি না ৩৫০/টাকা।মিতু ৫০০/টাকা বাহির করে দিল।এতো লাগবে না।আমার কাছে ভাংতি নাই ভাইয়া। ঠিক আছে আমি যাচ্ছি পরে কথা হবে। এখন একটু তাড়া আছে বলে রাজু মিতুর চোখের আড়াল হয়ে গেলো।গদুলি পড়ন্ত বিকেলে মিতু সকালের ঘটনা ভাবতে লাগলো।রাজুর অস্তিরতা দুই চোখ গুলু ,তাঁর কথা বলার ভঙ্গি এবং টাকা ধার চাওয়া। কিছুই মিলাতে পারছে না মিতু । ও কেন এই ভাবে টাকা ধার চাইলো । স্কুল জীবন থেকে ও আমাকে চিনে্ ,জানে কখন কথা বলে নি । আজ হঠ্যাৎ করে....মিতু আর কিছু ভাবতে পারছে না।এই দিগে রাজু ভাবলো কিভাবে মিতুর টাকা গুলু পরিশোধ করব।রাজু তাঁর মমতাময়ী মাকে সব খুলে বলল।সঙ্গে - সঙ্গে তাঁর মা ৫০০/টাকার একটা নোট রাজুর হাতে দিয়ে বলল ।যা বাবা মিতুর টাকা গুলু দিয়ে আস।রাজু ভাবতে লাগলো এখন যাওয়া কি ঠিক হবে ।রক্তিম সন্ধ্যা আবছা- আবছা চাঁদের মায়াবী আলো চারদিগ আলোকিত করে রেখেছে ।অবশেষে রাজু মিতুর বাসায় গেলো ।দরজা নক করতেই সুমন দরজা খুলে দিল । সুমন বলল ভাই আপ্নে।।কি মনে করে ।।কেমন আছো মৃদু সুরে রাজু বলল।হ্যাঁ ভাইয়া ভালো ।মিতু বাসায় আছে । হ্যাঁ ভাইয়া আসুন ভিতরে আসুন আপু কে আমি ডেকে দিচ্ছি।রাজু সোফা বসে ভাবলে ।সকালের ঘটনা না জানি মিতু কিভাবে নিল ।মিতু এসে বলল ভাইয়া কেমন আছেন ।কতক্ষণ ।এই তো এখন এলাম ।তুমি কেমন আছো মিতু । জী ভাইয়া ভালো।এই নাও তোমার টাকা ।আর শুনো সকালের ঘটনা কিছু মনে করেনি তো।না ভাইয়া । এইদিগে সেতু নাস্তা নিয়ে এল ।ভাইয়া কেমন আছেন ।হ্যাঁ ভালো, তুমি ।আমিও ভালো ।সকালের ঘটনা সেতু জানতে চাইলো।রাজু বলল শুনো তাহলে _এক বৃদ্ধা টেক্সি তে উঠতে গিয়ে মাটিতে লুটে পড়লো।কিন্তু কি আচার্য কেউ তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি।সবাই সবার কাজে ব্যস্ত।আমি উনাকে ডাঃ কাছে নিয়ে গেলাম।ঐ বৃদ্ধার কাছে কোন টাকা ছিল না ।এইদিগে আমার পকেটে যা ছিল তা খরচ করে পেলছি।তুমি যে মার্কেটে গেলে সেই মার্কেটে আমার এক বন্ধুর দোকান আছে।আমি ওর কাছে ছুটে গেলাম ।কিন্তু তাঁর দোকান বন্ধ দেখে ভীষণ চিন্তিত হই ।নিয়তি আজ আমার সঙ্গে ছিল বিধায় তোমার সাথে দেখা হল।সেতু এই সেতু বলে মিতুর মা ডাকতে লাগলো।মিতুর মাকে দেখে রাজু সালাম দিলো।কেমন আছো বাবা, জী ভালো।সেতু কে উদ্দিশ্য করে তাঁর মা বলল ।দেখো তো বাবা দুই দিন পরে ওর পরীক্ষা ।লেখাপড়া ছেড়ে ও এখানে আড্ডা দিচ্ছে । লেখাপড়া প্রতি ওর কোন খেয়াল নেই ।ভালো একটা টিচারও পাচ্ছি না সেতু কে পড়ানোর জন্য।রাজু বলল যদি কিছু মনে না করেন আমি সেতুকে পড়াবো।সত্যি বলছ বাবা ।হ্যাঁ চাচি।ঠিক আছে তুমি তাহলে কাল থেকে শুরু কর।ঠিক আছে আমি এখন আসি।সবার থেকে রাজু বিদায় নিয়ে মিতুদের বাসা ত্যাগ করলো ।মিতু বার-বার রাজুর কথা চিন্তা করতে লাগলো ।এখনও কি এমন মানব দুনিয়াতে আছে । যারা অন্যের উপকারে নিজেকে বিলিয়ে দেয় ।রাজু কথা ভাবতে ভাবতে মিতু কখন যে তন্দ্রার ঘরে নিজে কে সফি দিলো ঢের পায়নি।এই দিগে রাজু প্রতি দিন সেতু কে পড়াতে আসে । মাঝে-মাঝে মিতুর সাথে কথা বলে।বলে রাখা ভালো মিতুর দানব একটা অতীত আছে।( তাহলো তুমি মা-বাবা টাকার লোভে এক বছর আগে একটা বয়স্ক ছেলের সাথে মিতু বিয়ে দেয় ।মিতু সহজে তা মেনে নিতে পারেনি।অবশেষে এক বছর সংসার জীবন ইতি টেনে মিতু তাঁর বাবার কাছে চলে আসে।বিচ্ছেদ হয় তাঁর অনিচ্ছাকৃ্ত এক বছরের দম্পতি জীবনে।) রাজু অবশ্যই জানে মিতুর নষ্ট অতীত কে।মিতু মনের অজান্তে রাজু কে ভালবেসে পেলে ।কিন্তু বলতে পারে না , তাঁর জর্জরিত অতীত এর জন্য।তাই নিজের ভালোবাসা কে প্রকাশ করতে আজো পারেনি।রাজু ও মিতুকে ভালবাসতে শুরু করে। কিন্তু কিভাবে বলবে ভেবে পাচ্ছে না।আর বললে কি মিতু সহজে মেনে নিবে।অনেক ভাবনার পরে রাজু মনে মনে ঠিক করলো তাঁর ভালবাসার কথা সে মিতু কে জানাবে।গ্রহন করা না করা সেইটা একান্তু মিতুর...। গেলো উঠে প্রস্তুতি নিতে লাগলো কিভাবে মিতু কে বলবে ।মনে মনে ভয় হচ্ছে।যদি মিতু তাকে অপমান করে।সব কল্পনা জল্পনা বিসর্জন দিয়ে রাজু মিতুদের বাসায় গেলো ।মিতু কে দেখে রাজুর মনের গভীরে অজানা একটা কম্পন শুরু হল।মিতুর কথা বার্তা শুনে রাজুর একটু সাহস হল। কিন্তু কিভাবে বলবে ।এর আগে রাজু কখনো কোন মেয়েকে প্রেমের অফার দেয় নি।অধিক সাহস সঞ্চয় করে রাজু তাঁর মনের সব কথা মিতু কে খুলে বলল।মিতু তাকে কাল জানাবে বলল।রাজু বেচারার তো রাতের ঘুম হারাম।কাল কি যাবে মিতুদের বাসায় না যাবে না ।ভেবে ভেবে তে কখন যে সোনালি প্রভাত হল রাজু ঢের পায়নি।রাজুর দেরি দেখে প্রেয়সী মিতু একটু ভাবনাতে পড়ে গেলে।অবশেষে রাজু ভয়ে ভয়ে মিতুদের বাসায় এলো।আগে মতে রাজু সেতুকে পড়াতে লাগলো। কিন্তু মনে ঘরে দহন । না জানি মিতু কি বলে ।অস্তিরতার মাঝে রাজুর সময় গুলু পার হচ্ছে।প্রতি দিন রাজু বাসায় আসলে ১০ মিনিটের মধ্যে মিতু এসে গল্প করে। আজ মিতু আসেনি দেখে রাজু একটু গাভরিয়ে গেলো।মিতু আড়ালে রাজুর মনের অবস্তা অনুভব করে বুঝতে পারলো।বেচারা ভীষণ চিন্তিত । না আর বেশি টেনশনে তাকে রাখা যাবে না ।মিতু আড়াল থেকে নিজেকে রাজুর সামনে হাজির করলো।রাজু বেচারা মাথা নিচু থেকে উপর করছে না ।রাজু বুঝতে পারলো মিতু রুমে প্রবেশ করলো।মিতুর কোমল সুরের ভালবাসার শব্দ শুনে রাজু নিজেকে ফিরে পেলো।এইভাবে তাঁদের প্রেম চলতে থাকে।মিতুর ছোট ভাই সুমনের সাথে রাজুর বন্ধুত্ব শুরু হয়।মিতু যেমন রাজুকে জিবনের ছেয়ে বেশি ভালোবাসে তেমনি রাজুও ।দুইজন দুজনকে কে বিয়ে করবে বলে ঠিক করলো।এই প্রেম চলে প্রায় দুই বছর । কিন্তু নিয়তির খেলা মিতু কে রাজু নিজের করে পেলো না।মিতুর আবার বিয়ে হয় ।রাজু এখনও একাকী বিরহের দিন গুনছে ...
আলোচিত ব্লগ
ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট
আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন
ল অব অ্যাট্রাকশন
জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
চরফ্যাশন
নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।
প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
কর কাজ নাহি লাজ
রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।
হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?
নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন
নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন