somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনালী ব্যাংকের অর্থ কেলেংকারী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা

৩০ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইদানীং সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত ঘটনা হচ্ছে হল মার্ক গ্রুপ কর্তৃক সোনালী ব্যাংক, রূপসী বাংলা শাখা ( প্রাক্তন হোটেল শেরাটন শাখা) থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা জালিয়াতীর মাধ্যমে উঠিয়ে নেয়া। ইতোমধ্যে টপ ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে ডেস্ক লেবেল পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের ৩২ জন কর্মকর্তাকে এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে সনাক্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক এদেরকে বরখাস্ত করার নির্দেশ প্রদান করেছে। সর্বশেষ খবর হচ্ছে সোনালী ব্যাংক বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশ পালন করতে আরও ১৫/২০ দিন সময় লাগবে।
আমি সে কথায় যাচ্ছি না। কারণ, চাকুরীতে নিয়োগ বা বরখাস্ত, সবকিছুতেই একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হয়। সেটা করতে গিয়ে এই সময়টুকু লাগতেই পারে। আমার বক্তব্য অন্য জায়গায়। আমরা জানি যে, ব্যাংকিং সেক্টরের নিয়ন্ত্রক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক তার একক ও জবাবদিহিতামুক্ত সিদ্ধান্তের বলে বাংলাদেশে কার্যরত যে কোন ব্যাংকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। সোনালী ব্যাংকের অর্থ কেলেংকারীর জন্য আরও একটি পদক্ষেপ বাংলাদেশ ব্যাংক নেয়ার চেষ্টা করেছিল। সেটা হলো সোনালী ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেয়া। কিন্তু সরকারী হস্তক্ষেপের কারণে সেটার বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এখানেই মূল প্রশ্নটা এসে দাঁড়ায়। সেটা হলো বাংলাদেশ ব্যাংক কেন তার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন নিতে গেল ? বাংলাদেশ ব্যাংক তো এটা করতে বাধ্য নয়। আর সরকার ই বা কেন এতে বাধ সাধল ? তাহলে কি আমরা ধরে নিব যে, ব্যাংকিং সেক্টরের নিয়ন্ত্রক হয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক কোনভাবেই দলীয়করণের প্রভাবমুক্ত নয় ?

আরও একটি কথা। আমরা যারা ব্যাংকে চাকুরী করি, বিশেষ করে প্রাইভেট ব্যাংকে যারা চাকুরী করি, তারা সকলেই জানি বাংলাদেশ ব্যাংকের খবরদারীর কারণে আমাদেরকে সব সময় কি পরিমাণ তটস্থ থাকতে হয়। আমি এটাকে কোন নেগেটিভ অর্থে দেখছি না। কারণ, ব্যাংকিং সেক্টরের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর ও অনমনীয় মনোভাবেরও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে এমন হয় যে, প্রাইভেট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপর বাংলাদেশ ব্যাংকের অতি সাধারণ একজন অফিসারের রূষ্টতার কারণে সেই কর্মকর্তার চাকুরী যায় যায় অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়। আর সোনালী ব্যাংকের মতো হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থ কেলেংকারীর ঘটনা যদি কোন প্রাইভেট ব্যাংকে ঘটত, তাহলে এতদিনে সেই ব্যাংকের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হতো। কিন্তু সোনালী ব্যাংকের বেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন আচরণ দীর্ঘ সূত্রিতার জালে জড়িয়ে শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আরও একটি কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কাজই হচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টরকে মনিটরিং করা। সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক বিভাগও রয়েছে। আমরা যদি অতি সাধারণ বুদ্ধি-বিবেচনা প্রয়োগ করে চিন্তা করি তাহলে ওএটা বুঝা কঠিন নয় যে, সোনালী ব্যাংকের এই ঘটনা একদিন/দুই দিন কিংবা এক/দুই মাসে ঘটেনি। যে প্রক্রিয়ায় রূপসী বাংলা শাখা থেকে এতগুলো টাকা লোপাট হয়েছে সেই প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হয়েছে অনেকদিন সময় নিয়ে। আমার প্রশ্ন হলো এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনস্পেকশান বিভাগ কি একবারও সোনালী ব্যাংকের ঐ শাখায় ইনষ্পেকশানে যায়নি ? যদি গিয়ে থাকে তাহলে তারা তাদের দায়িত্ব পালনে কতটুকু আন্তরিক ছিল ? আর যদি না গিয়ে থাকে তাহলে সেখানেও কি বাংলাদেশ ব্যাংক তার দায়বদ্ধতাকে এড়িয়ে যেতে পারে ? আমি মনে করি জনসাধারণের সামনে এই ব্যাপারগুলো পরিস্কার হওয়া দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:২৯
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×