somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকায় ‘ক্ষমতা বদলের শঙ্কায়’ নয়া দিল্লি

২৯ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঢাকা, অগাস্ট ২৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসতে পারে- এমন পূর্বাভাস পেয়ে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো শঙ্কিত বলে জানিয়েছে সর্বাধিক প্রচারিত ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বুধবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতবিরোধী শক্তিগুলো বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে সেদেশে সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পাবে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের মেয়াদ শেষ হবে।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, বাংলাদেশ ভিত্তিক বিভিন্ন মৌলবাদী গোষ্ঠী ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর মতো নাশকতাকারী গোষ্ঠীগুলো ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা ও আশ্রয় দেওয়ার নীতি গ্রহণ করতে পারে। এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় পাকিস্তানের বিভিন্ন পক্ষের সহায়তা নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করছেন, ভারতের আসাম রাজ্যে বোড়ো ও মুসলিম অভিবাসীদের মধ্যকার সাম্প্রতিক দাঙ্গাকে বাংলাদেশি মৌলবাদীরা কাজে লাগিয়ে মুসলমান তরুণদের বিভ্রান্ত করতে পারে এবং তাতে ভারতের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোর শক্তি বৃদ্ধিও হতে পারে।

পত্রিকাটি বলছে, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও সেদেশের সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িতদের বাংলাদেশের মাটি থেকে নির্মূলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সহযোগিতা পেয়েছে নয়া দিল্লি।

তবে শেখ হাসিনা সরকারের জনসমর্থন কমতে থাকায় বিএনপির পুনরায় ক্ষমতা আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। আর খালেদা জিয়া ফের ক্ষমতায় গেলে সন্ত্রাসবাদ দমনে গত কয়েক বছরের সাফল্য নস্যাৎ হতে পারে।

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যে বাংলাদেশকে ব্যবহার করে তা আর কোনো গোপন বিষয় নয়। বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠন হুজি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন তানজিমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলে। আইএসআইয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতে যেসব হামলা হয়েছে সেসবের অনেকগুলোর ক্ষেত্রে হয় বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে হামলাকারীরা ভারতে ঢুকেছে অথবা হামলার পর প্রতিবেশি এ দেশে পালিয়ে গেছে।

এছাড়া বাংলাদেশে আরো অনেক ক্ষেত্রে আইএসআইয়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়াকে সহায়তা করেছিলো আইএসআই যা সংস্থাটির সাবেক প্রধান আসাদ দূরানি প্রকাশ করেছেন। গেরিলাযুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ন্যাশনাল সোস্যালিস্ট কাউন্সিল অফ নাগাল্যান্ডের (এনএসসিএন) সদস্যরা ১৯৯৬ সালের মার্চে ঢাকা থেকে পাকিস্তানে যায়। নাগাল্যান্ডের একটি ঘাঁটিতে আধুনিক যোগাযোগের সরঞ্জাম স্থাপন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় উলফাকে প্রশিক্ষণ দেয় আইএসআই। ২০০০ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংককে এনএসসিএনের প্রধান টি মুইভাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন তিনি করাচি থেকে ফিরছিলেন। সেখানে অস্ত্রের চালান পরিদর্শন করে ফেরেন বলে ধারণা করা হয়।

এছাড়া গ্রেপ্তার অল ত্রিপুরা টাইগার ফোর্সের (এটিটিএফ) সদস্যরা স্বীকার করেছে যে, আইএসআই তাদের প্রতি সহায়তার অর্থ ২০ হাজার ডলার বাড়িয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএসআইয়ের সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী আসামের মৌলবাদী গ্রুপ মুলটা, মুলফা, সিমি ও ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে অর্থ সরবরাহ করে। সম্প্রতি আসামে বোড়ো সম্প্রদায় ও মুসলিম অভিবাসীদের জাতিগত দাঙ্গার পিছনে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বাড়াতে আগ্রহী জানিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়া বলেছে, বাংলাদেশ সরকার যে সব সমস্যায় রয়েছে সেগুলোর সুষ্ঠু সমাধানে যদিও তাদের তেমন কিছু করার নেই। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়নে সহায়তা এবং দুই দেশের মধ্যকার ছিটমহল বিনিময় বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারে। অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমঝোতা হলেই কেবল তিস্তা ও ছিটমহল বিনিময়ের সুরাহা হতে পারে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×