somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অ আ আজকের লেখালেখি - ৭৭

২৯ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বছরের পর বছর দীর্ঘ জ্যামের কারনে প্রতিদিন ঘন্টা দু'য়েক বাড়তি সময় নিয়ে অফিসের যাওয়ার অভ্যাস বেশ ভালো রপ্ত হয়ে গেছে। এজন্য হঠাৎ হঠাৎ ঈদের ছুটি শেষে ঘন্টাখানেক আগে পৌছে যাই, তখন খুব মজা লাগে। অথচ আজ অফিস কারে চেপে অনেক দেরীতে অফিসে ঢুকলাম। অনেকে যারা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলাফেরা তারা অনেকে লাঞ্চের আগে ঢুকতে পারবেন বলে মনে হয় না। পায়ে হেঁটে কেউ সময় বাঁচিয়ে কিছুটা সময় রক্ষা করে ঢুকতে পারেন। আমাদের অফিস ব্যবস্থাপকের একটু মায়া দয়া থাকার কারনে দেরী হলেও অনুপস্থিত দেখিয়ে আমাদের একদিনের বেতন কাটা হয় না। কিন্তু অন্য অফিসে বেতন কাটার সাথে চাকরীটা চলে যেতে পারে। এজন্য ভুক্তোভূগি আমাদের মতন ছাপোষা চাকুরীজীবিরা। আমাদের একেকটা টাকার মূল্য অনেক বেশী। কারন আমরা নিজের সৎ টাকায় চলি। তাই দেশে টিকে থাকতে নাভিশ্বাস হয় আমাদের।

আজ দেরি হওয়ার কারনটা খুবই স্বাভাবিক। শাহবাগ মোড়ে ঢাকা ভার্সিটির একটা ছেলে বাসের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে আবেগে টইটুম্বর রক্তগরম সহপাঠিরা এসে বাসটির উপর রাগ ঝাড়লো, যারা অফিস যাত্রী ছিলেন, ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন, অন্যান্য যারা ছিলেন তাঁদের সবাইকে নামিয়ে দেওয়া হল। যারা যাত্রী ছিলেন তাদের গন্তব্যে পৌছানোর ব্যাপারে সেই ভাঙচুর করার কাজে ব্যস্ত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেধাবী শিক্ষিত ছাত্রদের মাথায় ছিল না। তাই তারা আগুন জ্বালানোর জন্যে ব্যস্ত ছিল। তারপর মুহূর্তের ভিতর সংবাদ পত্রের সাংবাদিকদের পুরানো অভ্যাস অনুযায়ী বাসের নাম দেওয়া হল ঘাতক বাস এবং একটা নিরীহ ছাত্র মরে গেল সঙ্গে সঙ্গে নিহত মেধাবী ছাত্র হয়ে গেল। একদল পুলিশ সুন্দর মতন বাস ভাঙ্গা দৃশ্য দেখা শেষে বাস ড্রাইভারকে কাছে পেয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে থানায় চলে গেল। শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠের পড়ুয়া ছাত্ররা খুবই আনন্দের সাথে ভাঙ্গাভাঙ্গি ও অগ্নি সংযোগ উৎসবে যোগ দেয়। পথচারীরা আতঙ্ক নিয়ে ভীড় করে দেখল। ওষুধের দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় মূল প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে প্রচন্ড ভিড় বেড়ে যায়, জ্যাম লেগে যায়। সেই রাস্তাতে গাড়ীতে আটকে থাকা মানুষগুলো আতন্কিত হয়ে পড়ে।

শাহবাগে মোড়টা কোনদিন আতঙ্কের ছিল না । আমাদের দেশের মানুষের যত্রতত্র রাস্তা পার হওয়ার অভ্যাসটার কারনে এই রাস্তাটাকে মরন ফাঁদ নামকরন করেছে পত্র-পত্রিকাগুলো। আমাদের দেশের সকল পুলিশ ভাইদেরকে রাখা হয়েছে বিআরটিএর অফিসার হিসেবে। তারা রোজ রোজ গাড়ী ধরছে, হোন্ডা ধরছে, কিন্তু ফিটনেসহীন পাবলিক বাস ধরছে না। ধরে রাখা যানবাহনগুলো যদি কাগজ না পায় তখন খুশী আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে কেননা আইনের বাইরে অন্যন্যা ফাইনের সুযোগ হয়ে যাচ্ছে। তখন সরাসারি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে সরকারকে ফাইন দিবেন নাকি আমাকে। ফাইন কিন্তু ১,০০০ টাকা সরকারকে দিতে হবে, আর শুধু আমাকে দিলে ৫০% মওকুফ মাত্র ৫০০ টাকা। আর যাদের কাগজপত্র ঠিক থাকে তাদের দেখে করুন হাসি দিয়ে ছেড়ে দেয়। আমাদের এশিয়া মহাদেশে শুধু বাংলাদেশের পুলিশ বিআরটিএ কর্মকর্তার কাজ করছে গনহারে, প্রতিটি গাড়ীতে ফিটনেস স্টীকার লাগানো থাকা সত্ত্বে গাড়ীর কাগজ পত্র চেক করছে। অথচ এই পুলিশগুলো কাজ হওয়া উচিত ছিল। রাস্তায় কেউ নিয়ম ভাঙছে কিনা। সব কিছু ঠিক মতন চলছে কিনা। সেগুলো প্রতি নজর রাখা। পথচারীকে রাস্তা পারাপারে সহায়তা করা। গাড়ীকে সঠিকভাবে চলা জন্যে ডারেক্টশন দেওয়া।

সবশেষে একটাই কথা, পরিবর্তনটা আমাদের নিজেদের হওয়া দরকার। একটু কষ্ট করে ওভারব্রিজে উঠার অভ্যাস করতে হবে। ফুটপাথ ব্যবহার করতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় ডানে-বায়ে দেখে নিতে হবে। জ্রেবা ক্রসিং দিয়ে পার হওয়ার অভ্যাস করতে হবে। মনে রাখা জরুরী যত্রতত্রভাবে হাঁটাচলা নিজের ভিতর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, যার ফলাফল আরেকটা দুঘর্টনা। আমাদের সবার জীবনের মূল্য অনেক বেশী।

২৯ই আগষ্ট,২০১২
----------------------------------------------------------------------------------
লেখালেখি ৩৬৫ প্রজক্টে ৭৭/৩৬৫

পুরাতন লেখালেখিগুলি
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×