somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেডিকেল ভর্তির জন্য লাগবে আলাদিনের চেরাগ । নতুন পস্তাবিত পদ্ধতি ব্যাপারে ব্যাক্তিগত মতামত । আবাল স্বাস্থ অধিদপ্তর পরিচালক

২৯ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষেতে মেডিকেল ভর্তি বিষয়ে আবারো মন্তব্য আসল স্বাস্থ অধিদপ্তর হতে। জানাছিল এই ধরণের বক্তব্য আসবে তবে এতোটা আবাল টাইপের বক্তব্য চিন্তা করি নাই। স্বাস্থ অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আবদুল লতিফ গতকাল প্রথম আলোকে যা বললেন,
“স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) শাহ আবদুল লতিফ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ১২টি মানদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটি এগুলো অনুমোদন করলে মেডিকেলে ভর্তি কমিটি তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে।
প্রস্তাবিত মানদণ্ড অনুযায়ী এসএসসি ও এইচএসসিতে সমান জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওই দুটি পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় ছাড়া যাঁরা এগিয়ে থাকবেন তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন। এরপর দেখা হবে শিক্ষার্থী কোন বছর এইচএসসি পাস করেছেন, সে ক্ষেত্রে ২০১১ সালের চেয়ে ২০১২ সালে উত্তীর্ণরাই অগ্রাধিকার পাবেন।
এরপর এইচএসসিতে চতুর্থ বিষয় বাদ দিয়ে জিপিএতে ভালো করা প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এসএসসি ও এইচএসসিতে চতুর্থ বিষয়সহ যাঁরা ভালো করেছেন তাঁরা অগ্রাধিকার ঠিক করার পরবর্তী ধাপে গুরুত্ব পাবেন। এরপর দেখা হবে এইচএসসিতে চতুর্থ বিষয়সহ কারা ভালো করেছেন।
এর পরও জিপিএ সমান হলে এইচএসসির পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের গ্রেড পয়েন্টের (জিপি) যোগফল গুরুত্ব পাবে। তাতেও না হলে এইচএসসিতে জীববিদ্যার জিপি দেখা হবে। তারপর এইচএসসিতে ইংরেজির জিপি। এতেও সমান হলে এসএসসির পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও জীববিদ্যার জিপির যোগফল গুরুত্ব দেওয়া হবে। তারপর এসএসসির জীববিদ্যা এবং তাতেও সমাধান না হলে এসএসসির ইংরেজির জিপি দেখা হবে। সবশেষ মানদণ্ড হিসেবে রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীর বয়স। এ ক্ষেত্রে যাঁর বয়স বেশি তিনিই অগ্রাধিকার পাবেন। শাহ আবদুল লতিফ বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে মেডিকেলে ভর্তি-প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।“

সব কথার শেষ কথা কী দাড়ালো? এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি তে যারা সব চেয়ে এগিয়ে থাকবে তারাই শুধুমাত্র মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা রাখে। স্বাস্থ প্রতিমন্ত্রী এতো পেছাল পারতে পারেন তো এই বিষটি একবার ভাবার সময় পান নি যে, প্রতি বছর এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি উভয় পরীক্ষায় কত হাজার পরীক্ষার্তী ডাবল গোল্ডেন পায়। যাক উনি ব্যাস্ত মানুষ এত কিছু ভাবার বা বুঝার সময় উনার হয় নি। কিন্তু অবশেষে যে মন্ত্যব্য করলেন তাতে উনাকে ব্যাস্থ না বলে আবাল বলাটাই অধিকতর গ্রহণ যোগ্য হবে বলে মনে করছি, “সবশেষ মানদণ্ড হিসেবে রাখা হয়েছে শিক্ষার্থীর বয়স। বয়স। এ ক্ষেত্রে যাঁর বয়স বেশি তিনিই অগ্রাধিকার পাবেন।“ তার মানে কী দাড়াল? যারা বছর বছর ফেইল করে অবশেষে এস.এস.সি এর আগে আলাদিনের চেরাগ পাবে কেবল তারাই মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা রাখে। আর দেশের তরুণ মেধাবীরা মেডিকেল সম্পর্কে ভাবারো যোগ্যতা রাখে না। এই উক্তিটিকে আবাল উক্তি অব দা ইয়ার বলতে ইচ্ছে হচ্ছে
যাই হোক স্বাস্থ প্রতিমন্ত্রী এত আবাল ধরণের উক্তি না করলেও পারতেন। তবে মেডিকেল ভর্তি সম্পর্কিত প্রস্তাবের ক্ষেত্রে গৃহীত সিদ্ধান্তের সাথে আমিও একমত। না পরীক্ষার্থী ভাই-বোনেরা আমাকে এখনই গালি দিয়েন নাহ। একমত থাকার যথেষ্ট যুক্তিও প্রদান করছি।
প্রথমত মেডিকেল এমন এক খাত যার উপর নির্ভর করে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ভবিষ্যত। এখানে কেবল তাদেরই প্রবেশ করা দরকার যারা বিশাল জনগোষ্ঠিকে সেবা করার যোগ্যতা রাখে। এত বছর যাবত প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতেই চলে আসছে এই গুরু দায়িত্ব প্রদানের কাজ। কিন্তু এই পরীক্ষা পদ্ধতী কতটা স্বচ্ছ? কালবাজারে বিক্রি হচ্ছে পরীক্ষার প্রশ্ন। কথাটি বিশ্বাস যোগ্য অনেকের কাছে না হলেও কথা ১০০০% সত্য। কেননা গত বছর তেমনি একটি চক্রের সাথে আমার পরিচয়, তারা নিজে থেকেই অফার করেছিল ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন গ্রহণে ইচ্ছুক কোন ব্যাক্তি পরিচিত থাকলে তাদের সাথে কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য। খুব বেশী সংখ্যক ব্যাক্তিবর্গ এই চক্রেগুলোর নিকট হতে প্রশ্ন সরবরাহ করতে না পারলেও যারা করতে পারবেন তারা হবেন আগামী দিনের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত খুনি। কেননা, তারা সম্পূর্ণ যোগ্যতা ছাড়া প্রশ্নপত্র পেয়ে মেডিকেলের মত স্থানে প্রবেশ করেছেন। সেই সাথে পরবর্তীতে ডাক্তার হবার পর অন্য সবাই ভুলে গেলেও তারা কখনো সেই ১০ লাখ টাকার কথা ভুলবেন না, যা তাদেরকে নানা দুর্নিতীমূলক কাজ পরিচালনায় সাহায্য করবে। তাদের হাতেই দেশের হাজারো নিরিহ জনগণের মৃত্যু হবে। এখন বলুন কোন পদ্ধতি ভাল? পরিক্ষা নাকি জি.পি.এ?
বর্তমান প্রচলিত পদ্ধতিতে সকল মেডিকেলে ভর্তি ইচ্ছুক অনেক মেধাবী শিক্ষার্তিরা মেডিকেল পরীক্ষায় অংশগ্রণন করেন কিন্তু কৃতকার্য হন শুধুমাত্র আসন সংখ্যক শিক্ষার্থী। অকৃতকার্যরা মেধাবী নয় এমন প্রস্তাব দেবার সাহস কারো আছে বলে মনে হয় না। শুধুমাত্র মেডিকেল ভর্তি ইচ্ছার কারণে তারা ভার্সিটি ভর্তিতে প্রয়োজনীয় অধ্যাবশায় করতে সক্ষম হয় না। যার ফেলে সেই সব মেধাবী শিক্ষার্তীর মেডিকেল অথবা ভার্সিটি কোথায়ও স্থান হয় না। অথচ নতুন গ্রহীত সিদ্ধান্তে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করি। এতে করে মেডিকেলে যেমন মেধাবীদের স্থান হবে তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়েও মেধাবীদেরই স্থান হবে।
জি.পি.এ এর ব্যাপারে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন। কেননা নকল করে ভাল ফলাফল করা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু একটি বার কী ভেবে দেখেছেন, উভয় পরীক্ষায় গোল্ডেন পেতে হবে। নকল করে কী উভয় পরীক্ষায় গোল্ডেন পাওয়া সম্ভব? আমার মানি হয় না, নকল করে পরীক্ষায় পাশ করা এবং ভাল ফলাফল করা সম্ভব কিন্তু শীর্ষ স্থানে প্রবেশ করা সম্ভব বলে আমি মনে করি নাহ
জি.পি.এ এর ভিত্তিতে মেডিকেলে ভর্তিতে কিছু আধার রয়েছে, কথা সম্পূর্ণ সত্য। এতে করে অনেকে মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী উপকৃত হবেন। তাই সরকারের এই দিকে স্পষ্ট কোন বক্তব্য প্রেরণ করা প্রয়োজন।
এবার আশা যাক, মানবিক দিক বিবেচনার কথা। ২০১১ সালে এইচ.এস.সি তে ভাল ফলাফল নিয়ে কৃতকার্য হয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় মনোনীত হয়েও শুধুমাত্র মেডিকেল নামক স্বপ্ন পূরণের লক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে অধ্যায়নে মনোনিবেশ করেছেন এমন শিক্ষার্তীর সংখ্যাও কম নয়। তাদের কী হবে?
সব দিক বিবেচনা করে সরকারের শীর্ষস্থানে অধ্যায়নরত কর্মকর্তাদের নিকট অনুরুধ রইল, জি.পি.এ এর ভিত্তিতে পরীক্ষা পদ্ধতী চালু থাক কিন্তু এতে করে যেন সেই বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকা পরীক্ষার্তীদের স্বপ্ন ভিঙ্গে না যায়। অর্থাৎ নতুন ভর্তি পদ্ধতিটি যেন আগামী বছর হতে চালু করা হয়। আর যেহেতু এই পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে তাই আসা করি ত্রুটিটি স্পষ্টভাবে মুক্ত করা হয়। এই ক্ষেত্রে ব্যাক্তিগত একটি মন্তব্য হল, যারা উভয় পরীক্ষায় গোল্ডেন পেয়ে মনোনিত হয়েছে শুধুমাত্র তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল গুণ ও মান বিবেচনার জন্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।
উল্লেখ্য যে, আমি নিজেও সদ্য এইচ.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এক শিক্ষার্তী।
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×