somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরস্পর বিরোধী শিক্ষার অভিশাপে কেন নষ্ট করে দিচ্ছি প্রজন্মের পর প্রজন্ম সম্ভাবনাময় প্রানগুলোকে? বকধার্মিক ও ঢেঁকিবিজ্ঞানীদের চপেটাঘাত প্রদানের আকাংখা করি।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই ছোটবেলায় সাধারণ জ্ঞানে পড়ানো হয়, প্রথম জীবন হচ্ছে এককোষি এমিবা। আরেকটু বেড়ে উঠে শিশুরা জানতে পারে, বিজ্ঞানের মতে ক্যামিকেল রিএকশন এর ফলেই প্রাণের উৎপত্তি। প্রথম পর্যায়ে পৃথিবী ছিল উত্তপ্ত জ্বলন্ত একটা পিণ্ড। ধিরে ধিরে এটি ঠাণ্ডা হতে থাকে এবং এর ফলে জলের উৎপত্তি। জল থেকে প্রথম প্রাণ হিসাবে এমিবা নামক এক কোষী প্রানী, এর পর এলো শ্যাওলা, মাছ সহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী। আবার বিজ্ঞান বলল, সূর্যের প্রচণ্ড বিস্ফোরণের ফলে গ্রহ ও উপগ্রহগুলো সৃষ্টি হয়েছে।



জানালেন, হিমালয় হলো প্রথম মৃত্তিকা। বিভিন্ন প্রাণীর জীবাশ্ম থেকে হিমালয়ের উৎপত্তি। আবার আরেকটি ধারণা থেকে পাওয়া যায়; পৃথিবী সূর্য থেকে বিচ্যুত হয়ে ধিরে ধিরে ঠাণ্ডা হতে থাকে এবং এর ফলে বরফ এর সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে গ্রহাণু, ধূমকেতু, উল্কার আঘাতে পৃথিবীর বরফ গুলি গলতে থাকে এবং জলের সৃষ্টি হয় এবং এ জল থেকেই প্রানের উৎপত্তি।

বিজ্ঞান ক্লাসে জানানো হল, Human Evolution, কিভাবে Homo Sapiens এর শুরু, কিভাবে আজকে আমরা Ape থেকে মানুষ হয়েছি এবং বুদ্ধিমত্তায় মোক্ষ অর্জন করে মহাশূন্য চষে বেরোচ্ছি। বলা হল সেই সব ফসিল এর কথা যা এই সব কথাকে সমর্থন করে, প্রসেস ও প্রমান দিয়ে তার বাস্তব চিত্রপট এঁকে ফেললেন। তা মস্তিষ্কে ধারণা করা হল।


বিজ্ঞান এর ক্লাস শেষ, এলেন ধর্ম শিক্ষক,

অতঃপর উনি ইসলাম এর আলকে ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন কিভাবে আদম(আঃ) -হাওয়া পৃথিবীতে এলেন এবং মানবজাতির গোড়া-পত্তন হল। পৃথিবী সৃষ্টির একটি বৈজ্ঞানিক ধারণার সাথে মিললেও আরেকটির সাথে অমিল দেখতে শুরু করলো শিশুটি।

এভাবে প্রজন্মের পরে প্রজন্ম আমরা না হতে পারছি শিক্ষিত, না হতে পারছি ধার্মিক! কোমল মনগুলোকে কেন এই সংকটে ফেলে দেওয়া? তোমরা সিদ্ধান্ত নাও, প্রমান করো, একটির সাথে আরেকটির সম্পর্ক নির্ধারণ করো! এবং সেভাবেই সবাইকে জানাও। এই বাচ্চারা ধর্ম শিখছে, মুসলমান এর সন্তান বলে বিশ্বাসও করে নিচ্ছে ধর্মশিক্ষায় যা আছে(আমি মুসলিম বলে শুধু মুসলমানদের কথাই বলছি), কিন্তু বিজ্ঞান? সেটা সে না পারছে ছাড়তে, না পারছে মস্তিষ্কে ধারন করতে! অতঃপর সে সিদ্ধান্ত নেয়, দুটিই "পরীক্ষায় পাসের উদ্দেশ্যে" পঠন এবং সেখান থেকে "শূন্য" পরিমানকে লব্ধ জ্ঞান হিসেবে স্থায়িত্বদাণ।

এ আমরা কি করছি? দুটি পাশাপাশি Co-exist করাতে হলে অবশ্যই সামঞ্জস্য সহই করাতে হবে!! পরস্পরবিরোধী শিক্ষা দিয়ে আমরা না পারছি ধার্মিক তৈরি করতে না পারছি সঠিক মুসলমান তৈরি করতে। এই প্রশ্নগুলো মনের কোনে ভয়ে ভয়ে নিয়ে বড় হয় বাচ্চারা, বিজ্ঞান এর কথাটা বেশী আগ্রহ করে ভাবে না, তার মুসলমানিত্বে আঘাত করে বিজ্ঞান এর কিছু কথা, এই আঘাতের ব্যাথা কিন্তু আজীবন রয়ে যায়, প্রশ্ন খুঁতখুঁত করতেই থাকে, উত্তর কে দিবে? এর উত্তর কেউ দেয় না।

ধর্মব্যাবসায়িরা ওয়াজ-মাহফিল করে নামাজ আদায়ের সওয়াব বলেন, কিছু মুসলিম নামধারি শয়তান নিজেদের পীর দাবী করে মানুষকে জান্নাতে যাবার রাস্তা দেখান!! আমাদের তো তা দরকার নেই! এই সব প্রশ্নের সঠিক ও কংক্রিট রাস্তা-উত্তর খুঁজে বের করুন। জান্নাতের পথ নিজেরা খুঁজে নেবো!

সমাধান টানছেন কি? স্টিভেন হকিং, আইন্সটাইন, ডারউইন বিশ্বাস করলে স্কুলে যা, আল্লাহকে বিশ্বাস করলে মাদ্রাসায় যা? আপনি নির্বোধ!!! মহা নির্বোধ!!!! এর মানে হচ্ছে আপনি আমাকে আমার এক চোখ বন্ধ করে রাখতে বলছেন, ব্রেইনের ডানপাশ অব্যাবহ্রত রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থায় ব্যাবহৃত বিজ্ঞান বই এ কি কি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে উত্তরটা দিতেও লজ্জাবোধ করি, কেন এড়িয়ে না গিয়ে তা প্রমানের সাহায্যে ব্যাখ্যা করা হল না?

কেন ১২-১৫ বছর বয়সী একজন বিজ্ঞান এর প্রমান এর সাথে ধর্মের বানীর সম্পর্কে খুঁজতে গিয়ে হাঁসফাঁশ করবে? এর দায় কার? আজকালকার ধর্মের ধারক-বাহকদের(পড়ুন ব্যাবসায়ী) এবং বিজ্ঞানীদের যদি বলি, এই কোটি কোটি কোমল মনে এমন দ্বিমুখী পেনিট্রেশন এর জন্যে আপনাদের চপেটাঘাত করতে আগ্রহী, খুব কি ভুল হবে?

বিজ্ঞানী ও ধার্মিক, আগে সিদ্ধান্তে আসুন, অতঃপর শিক্ষা দিন। শ্রদ্ধা করুন সেই সব কোমল প্রানকে, যারা ধার্মিক বিজ্ঞানী হতে পারতো।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। VF 3 Mini: মাত্র 60 মিনিটে 27 হাজার বুকিং!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০৪



আমার ব্যাক্তিগত গাড়ি নেই কিন্তু কর্মসূত্রে বেঞ্জ , ক্যাডিলাক ইত্যাদি ব্যাবহার করার সুযোগ পেয়েছি । তাতেই আমার সুখ । আজ এই গাড়িটির ছবি দেখেই ভাল লাগলো তাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট: বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন

লিখেছেন করুণাধারা, ২১ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


বন্ধ হয়ে গেল সচলায়তন! view this link

সামহোয়্যারইনব্লগ থেকে কয়েকজন ব্লগার আলাদা হয়ে শুরু করেছিলেন সচলায়তন বা সংক্ষেপে সচল ব্লগ। এটি বন্ধ হবার মূল কারণ উল্লেখ করা হয়েছে দুটি:

১)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×