somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহাবাগ আন্দোলনের পূর্বাপর

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাহবাগ আন্দোলনের তালটা কেটে গিয়েছিলো রাজীবের মৃত্যুতে।রাজীবের মত মৃত্যু কারো কাম্য নয়। তবে শাহবাগীরা এসময়ই কিছু মতলবী মানুষের খপ্পরে পড়ে গেল। এতে শাবাগীদের কোন দায় নেই বলা যাবে না। তারা যখন হঠাত করেই শাহবাগে দাঁড়িয়ে গেলেন, তখনও ভাবেন নি, যে তাদের পেছনে এত মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে। তবু মানূষ দাঁড়ালো কারণ মানুষ সত্যি সত্যিই যুদ্ধাপরাধের বিচার চায়। এর পর যখন সরকারি প্রশ্রয়ে আন্দোলন বড় হতে থাকলো, শাহবাগ দু’একটি শ্লোগান, আর বক্তৃতা বিবৃতি ছাড়া নিজেদের স্বাতন্ত্র্য প্রমানে ব্যর্থ হলো। তারা অবশ্য প্রমানের খুব একটা চেষ্টাও করেনি মূলতঃ দু’টি কারণে। প্রথমত এত বড় মহড়া চালু রাখতে যে অর্থের দরকার হয় সেটি তাদের ছিলোনা। দ্বিতীয়ত তারা ভেবেছিলো সরকার কে যদি সাথে পাওয়া যায় তাতে লাভ বই ক্ষতি নেই।

যেদিন সরকারি মন্ত্রীরা শাহাবাগ আন্দোলনের সাথে গলা মেলালো, বিটিভিতে শাহাবাগ আন্দোলন লাইভ টেলিকাস্ট হতে থাকলো, ইমরানের বক্তৃতার সময় তার পাশে থেকে যারা প্রম্পট করেন তাদের গলাও মাঝে মাঝে টেলিভিসনে শোনা যাওয়ায় তখন থেকেই জন মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকলো। অনেকের মনে হীরক রাজার দেশে সিনেমার শেষ দৃশ্যের কথা ঘুরে ফিরে ভাসতে থাকলো। যেখানে রাজা নিজেই নিজের মূর্তিতে দড়ি বেধে টানছেন আর বলছেন দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান। সরকারি দলের মনেও কথাটা ভেসে উঠে থাকতে পারে। তারা তখন শাহাবাগ থেকে একটু দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকলেন। কিন্তু ততদিনে যা হবার হয়ে গেছে।

যে এমপিরা কোনদিন ব্লগ পড়ার সময় পান না তারাও সংসদে রাজীবের জন্যে কেঁদে ভাসিয়েছেন। তাদের কান্না শুনে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শোকে দিশেহারা হলেন। রাজীবকে শহীদ বলে ঘোষণা করা হল। শ্লোগান ঊঠলো আমরা সবাই রাজীব হব রাজীব হত্যার বদলা নেবো।

প্রথম দুদিন আজানের সময় ব্লগারদের আওয়াজ নিচু থাকলেও, রাজীবের মৃত্যুতে আজানের বিরতির কথাও তারা ভুলে গেলো। ইতমধ্যে রাজীবের অশ্লীল ব্লগিং সাধারণ মানুষের নজরে আসতে শুরু করলো। যদিও শাহাবাগের নেতারা চাঊর করতে শুরু করলো, সে সব অপাঠ্য, অশ্রাব্য রাজীবের কীর্তি নয়। তিনি শুধুই একজন প্রগতি মনস্ক ব্লগারছিলেন।

কিন্তু তাকে হত্যার দায়ে নর্থ সাউথের ছাত্ররা ধরা পড়ার পর শাহাবাগীদের উপর মানুষ আস্থা হারাতে শুরু করলো। শাহাবাগী নেট পোকাদের অনেকের কাছেই নেটের বাইরের জগতটা ঝাপসা। আর যাদের মাথা পরিষ্কার তাদের প্রভাবে অন্যরাও উপেক্ষা করতে শুরু করলো সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার কথা।
তারা ভুলে গিয়েছিলো বাঙালি ধর্মান্ধ নয় ধর্ম ভীরু। ধর্ম তাদের ব্যাবসা নয় আশ্রয়। শাহাবাগীরা যখন মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে নির্বিচারে ব্লগারদের সমর্থন দিতে থাকলো, তখন তাদের মনে হলো, গরীবের শেষ আশ্রয় টুকুও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একের পর এক বগুড়া, সাতক্ষীরার ঘটানা ঘত্তে থাকলো। হেফাজতে ইসলামের উত্থান ঘটার পর এমন অবস্থা হলো, যে ইমরান সরকার কর্মসূচীর চাইতে নিজেকে মুসলমান প্রমানে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। শাহারিয়ার কবির, মুনতাসির মামুনের কাপাকাপি, শাহাবাগের লাঠি মিছিল সব মিলিয়ে অহিংস আন্দোলনের ধারণা পালটে যেতে থাকলো। যারা ধর্ম অবমাননার প্রচেষ্টাকে প্রগতিশীলতা, বাক স্বাধীনতা হিসাবে দেখলেন তারাই হাসনাত আব্দুল হাইয়ের একটি গল্পের কারনে যে
প্রতিক্রিয়া দেখালেন তাতে বাক স্বাধীনতার সংজ্ঞা পালটে যেতে বসেছে।

এখন সময় এসেছে দানা বাঁধা একটি আন্দোলনকে রাজীব ইস্যুকে পুঁজি করে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে যারা পরামর্শ দিয়েছিলো তাদের প্রকৃত মতলব খুঁজে বের করার

শাহাবগের কাছে এখন আর তেমন কোন প্রত্যাশা আছে কী?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:১০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭



অনেক দিন পর আমি আজ এই হোটেলে নাস্তা করেছি। খুব তৃপ্তি করে নাস্তা করেছি। এই হোটেল এর নাম বাংলা রেস্তেরা। ঠিকনা: ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডম ভবেরচর, গজারিয়া, মন্সীগঞ্জ। দুইটি তুন্দুল রুটি আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×