somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার “মোস্ট ওয়েলকাম” দর্শন

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈদের ছুটির পর সবাই মোটামুটি ঢাকায় চলে এসেছে। আমারও আবার ছিল আজকে অফ ডে। ক্যাম্পাসে মিলিত হলাম সব বন্ধু-বান্ধব। আড্ডাবাজির এক পর্যায়ে আমার প্রস্তাব, “মোস্ট ওয়েলকাম দেখুম।” কয়েকজনের ‘না’; ইমোশনাল অত্যাচার; অত:পর আমাদের ছয়জনের বলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা।
আগেই বলে নেয়া দরকার, “সুপার একশন হিরো” অনন্তর আগের সিনেমা “স্পিড” দেখে আমরা সকলেই ব্যাপক “পুলোকিত” এবং “বিনোদিত” হয়েছিলাম। যাই হোক, বিকাল সাড়ে তিনটার শো। শুরু হল মোস্ট ওয়েলকাম।
“চমৎকার” ভারতীয় এ্যাকশন ও নাচ গানের সমাবেশ ঘটেছে মোস্ট ওয়েলকামে। বাংলা ছবিটিতে একাধারে আছে বলিউডের চলচ্চিত্র “ধুম”, “ক্রিশ”, “ওয়ান্টেড” এর অংশ বিশেষের বাংলা রূপায়ন। আছেন বলিউডের “খণ্ডকালীন” নায়িকা স্নেহা উল্লালের আইটেম সং। এতা বলিউডি সমারোহের মাঝে “শিলা কি জাওয়ানি” থাকবে না সেটা কি হয়?! না না, ক্যাটরিনা কাইফকে দেখার আগ্রহে সিনেমা হলে গেলে ধোঁকা খাবেন। গানের অংশ বিশেষ আছে; তবে “নাচনেওয়ালী” এ বাংলারই।
এবার আসেন দেখে নেয়া যাক চলচ্চিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক:
• মূল চরিত্রে অনন্ত জলিলের অভিনয়। মাশআল্লাহ! মুগ্ধ হয়ে গেলাম। তার সে কি এ্যাকশন! হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হয়ে গেল। বিশেষ করে তার উচ্চারণ এবং ইংরেজিতে কথপকথনে জাতির অনেক শিক্ষা নেয়ার আছে। ওহ, তার শরীর এবং পোশাকও কিন্তু দুর্দান্ত। নায়িকা বর্ষার চেয়ে তার প্রতিই আকর্ষন বেশি ছিল আমাদের। :পি
• নায়িকা বষার্র একই ধরনের নাচে পারদর্শিতা এবং পান থেকে চুন খসলে তার মুখের অমর বানী “শুইটহার্ট”।
• এই চলচ্চিত্র দেখলে জানা যাবে কিভাবে না ভিজে এবং নিশ্বাস না নিয়েই সাবলিল ভাবে সমুদ্রে শার্কের সাথে হেসে খেলে সাতার কাটা যায়।
• ওহ হ্যা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও শাহবাগ থানার নতুন ভবনের দেখাও পাওয়া যাবে এই চলচ্চিত্রে।
আহহা.... সিনেমার স্টোরির ব্যাপারেই তো বলা হলো না। কোন প্রবলেম নাই। কষ্ট করে ২০০৯ সালে তামিল ভাষার চলচ্চিত্র “কন্ঠস্বামী/Kanthaswamy” দেখে ফেলেন। ঘটনা ৮০ ভাগ বুঝে ফেলবেন।http://en.wikipedia.org/wiki/Kanthaswamy_(film)
http://www.imdb.com/title/tt1537032/



(এইবার আমি সিরিয়াস) ভালো চলচ্চিত্রের অভাব, হল বন্ধ, অশ্লিলতার জোয়ার, বানিজ্যিক ফর্মুল চলচ্চিত্র নির্মান, ভালো শিল্প সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মানে প্রযোজনার অভাব এই চক্রেই আবর্তিত হচ্ছে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প। এর মাঝে ভালো মানের বানিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মানের স্বপ্ন দেখিয়ে মাঠে নামেন কয়েকজন। “অনন্ত জলিল” তাদেরই একজন। তবে এখানে দর্শকের স্বপ্নের চেয়ে তার নিজের নায়ক হোয়ার স্বপ্নই বেশি দেখা গিয়েছে। “খোঁজ-দ্য সার্চ”, “হৃদয় ভাঙা ঢেউ”, “স্পিড” এর পর “মোস্ট ওয়েলকাম” প্রতিটিতেই তিনি নিজেকে হাইলাইট করেছেন বেশি। আর যে পরিমান অর্থ নিম্ন মানের কিছু স্পেশাল ইফেক্ট ও বলিউডের সংগীতশিল্পী কৈলাস খের ও স্নেহা উল্লাল এপ পিছনে ব্যয় হয়েছে সেটা দিয়ে ভালো কয়েকজন কলাকুশলী এবং পরিচালক দিয়ে ভালো চলচ্চিত্র বের করে আনা সম্ভব।
চলচ্চিত্রটির ব্যাপারে কয়েকটি কথা বলতে চাই:
• ভালো দিকটা দিয়েই শুরু করি। শক্তিমান কয়েকজন অভিনেতার দেখা মিলেছে সিনেমাটিতে। নায়ক রাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, বাপ্পা রাজ, আহমেদ শরীফ নিজেদের নামের মর্যাদা ধরে রেখেছেন।
• বিশেষ করে কাবিলার কথা না বললেই নয়। অভিনয়ের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছেন নামকরা অনেককেই। দর্শকদেরও যুগিয়েছেন আনন্দের খোরাক।
• এবার মন্দের দিকে আসা যাক। বাপ্পারাজ ও রাধিকার গানটা অহেতুক মনে হয়েছে। খলনায়ক মিশা সওদাগর ও নায়িকা বর্ষার অভিনয়টা একটু বেশিই ছিল।
• স্নেহা উল্লাল ও নায়ক অনন্তর কথপকথনের বিষয়টা পরিষ্কার করা হয়নি।
• মারামারির দৃশ্যে শুটিং দেখতে আসা লোকজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে ক্যামেরায়।
• সিনেম্যাটোগ্রাফি নিয়ে কিছু বলার নাই; সিনেমার স্টোরিতেই যেখানে খুঁত সেখানে সিসেম্যাটোগ্রাফি নিয়ে কথা নাই বা বলি। তবে কয়েকটি গানের লোকেশন বেশ ভালো ছিল।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×