somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

ফটোগ্রাফী - ৯

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘এই যে আসুন, তারপর কী খবর?
আছেন তো ভাল? ছেলেমেয়ে?’ কিছু আলাপের পর
দেখিয়ে সফেদ দেয়ালের শান্ত ফটোগ্রাফটিকে
বললাম জিজ্ঞাসু অতিথিকে–
‘এই যে আমার ছোট ছেলে, যে নেই এখন,
পাথরের টুকরোর মতন
ডুবে গেছে আমাদের গ্রামের পুকুরে
বছর-তিনেক আগে কাক-ডাকা গ্রীষ্মের দুপুরে।’

ছবি এক ধরণের চিত্রকর্ম যা সাধারণত দুই মাত্রার চিত্র হয়ে থাকে। ছবি মূলত কোন বস্তুর ছোট আকারের প্রতিকৃতি। ছবি কোনো বস্তু বা ব্যক্তির হতে পারে। ফটোগ্রাফির আজকে অবস্থানের পেছনে বহু আলোকচিত্রীর পরিশ্রম ও মেধা জড়িয়ে আছে।

সত্তরের দশকের শুরুর দিকের একটি ছবিতে এমনই দেখা গেছে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও তাঁর স্ত্রী সোনিয়া গান্ধীকে। ফাঁকা রাস্তার মোড়ে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে আইসক্রিমওয়ালার কাছ থেকে আইসক্রিম নিয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন। সঙ্গে তাঁর সদ্য বিবাহিত স্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাচ্ছেন, অথচ তাঁদের সঙ্গে কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই! দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের সামনে বেশ হাস্যোজ্জ্বলভাবেই তাঁরা ছবি তোলার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। আর ইতিহাস হয়ে যাওয়া এ ছবিটি সে সময় ক্যামেরাবন্দী করার সুবর্ণ সুযোগটি পেয়েছিলেন আলোকচিত্রী বলদেব কাপুর। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে দালাইলামা এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের মুহূর্তগুলোও ক্যামেরাবন্দী হয়ে আছে বলদেব কাপুরের ক্যামেরায়।

একটা শকুনটা অপেক্ষা করছে ছোট্ট শিশুটার মৃত্যুর জন্য। কারন মৃত্যুর পর শকুনটা এই শিশুটার শরীরের মাংস খাবে। এই ছবিটা তখন সারা দুনিয়াতে আলোড়ন তুলেছিল। এই ছবিটা Pulitzer Prize পেয়েছিল। ফটোগ্রাফার Kevin Carter এই ছবিটা তোলার ৩ মাস পর সুইসাইড করে মারা গিয়েছিলেন। পরে জানা গেছে ছবিটা তোলার পর থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন এবং এই কারনেই তিনি সুইসাইড করেন । আত্মহত্যার আগে Kevin Carter নিন্মলিখিত বাক্যগুলো তার ডায়রিতে লিখে যান-

"Dear God, I promise Iwill never waste my food no matter how bad it can taste and how full i may be. I pray that He will protect this little boy, guide and deliver him away from his misery. I pray that we will be more sensitive towards the world around us and not be blinded by our own selfish nature and interests. I hope this picture will always serve as a reminder to us that how fortunate we are and that we must never ever take things for granted."

ঠোঁটের ওপর হালকা গোঁফ, মুখে দাড়ি, চোখে বিষণ্নতা, অবিন্যস্ত লম্বা চুলের ওপর চ্যাপ্টা গোল টুপি। একনজরেই বলে দেওয়া যায়, এ ছবি আর দশটা ছবির চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। অন্যায়, নিপীড়ন আর শোষণবিরোধী সংগ্রামের প্রতীক হয়ে ওঠে এই ছবি; ভেঙে দেয় দেশকালের সীমা। ৪১ বছর আগে আততায়ীর গুলিতে খুন হয়েছেন ছবির মানুষটি, কিন্তু তাঁর সেই ছবি আজও বিশ্বমানবের হূদয়পটে অম্লান। বুঝতেই পারছেন, চে'র বিখ্যাত সেই ছবির কথা বলছি। এই মহান আলোকচিত্রী আলবার্তো কোর্দা ২০০১ সালে প্যারিসে তাঁর আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সময় মারাত্মক হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন।তাকে হাভানার কোলন সিমেন্ট্রিতে সমাহিত করা হয়। আলবার্তো কোর্দার প্রকৃত নাম আলবার্তো ডিয়াজ গুতিয়েরেজ। এই ছবিটি তাঁকে করেছে খ্রিস্টের সমান,তাঁকে করেছে পৃথিবী জুড়ে সকল বিপ্লবের অনুপ্রেরণার উৎস।

খেলার মাঠে স্ট্রিকার নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য মুর্তিমান আতঙ্ক। কোনো তুমুল উত্তেজনাপূর্ণ খেলা চলছে। মাঠ ভর্তি দর্শক। হঠাৎ দেখা গেল কোন এক ফাঁক দিয়ে দৌড়ে মাঠে ঢুকে পড়েছে এক পাগল কিসিমের লোক, গায়ে মাশাল্লা জন্মদিনের পোষাক। মাঠে নেমেই এ মাথা থেকে ও মাথা দৌড়। দর্শকদের হৈ হৈ... টিভি কমেন্টেটরের জন্য বিব্রতকর অবস্থা। লোকটির কোনো ভ্রক্ষেপ নেই। তার সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষীদের চলছে চোর পুলিশ খেলা।এ ছবিটির নামও দি টুইকেনহ্যাম স্ট্রিকার।এ ছবিটি ১৯৭৪ সালে লাইফ ম্যগাজিনের পিকচার অফ দি ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পায়। পাশাপাশি পেয়েছিল স্পের্টস শাখায় ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো। ছবিটি তুলেছিলেন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার ইয়ান ব্র্যাডশ'।


( "ক্যামেরার কথা ভুলে যাও,লেন্সের কথা ভুলে যাও,এই সবকিছুর কথা ভুলে যাও।যেকোনো চার ডলারের ক্যামেরা দিয়ে তুমি সেরা ছবি তুলতে পারবে।"
---আলোকচিত্রীদের অনুপ্রেরণা যোগাতে আলবার্তো কোর্দার উপদেশ ।)

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×