somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছেলেবেলার ধাঁধাঁ :: চলুন কিছুক্ষনের জন্য ছেলেবেলা থেকে ঘুরে আসি!!!

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই ছোটবেলায় আমাদের মনের অজান্তেই কতো কতো খেলা খেলেছি। আমি যে ধাঁধাঁ গুলো দিচ্ছি তা স্কুল জীবনে সবাই কমবেশী চর্চা করেছেন। নজরুলের একটা গানের লাইন-

“শুন্যে মাহা আকাশে। তুমি মগ্ন লিলা বিলাশে।।
হাসিছো খেলিছো প্রভু। আপন সনে।।
নিরজনে প্রভু, নিরজনে খেলিছো।।
খেলিছো এ বিশ্বলয়ে, বিরাটও শিশু। আনোমনে খেলিছো।।

প্রলয় সৃষ্টি তব, পুতুলো খেলা, নিরজনে খেলিছো।।”


আসলেই শিশু বেলায় “নো টেনশন ডু ফুর্তি + সবার ভালোবাসা আর আদর” পাওয়া যায়।


যাই হোক, এই লেখাটি স্কুল জীবনের কয়েকটি অংকের ধাঁধাঁ নিয়ে। আমি জানি বেশিরভাগ মানুষই স্কুল জীবনে এগুলো নিয়ে বেশ মাতামাতি করেছেন। হোক না একটু স্মৃতি মন্থন আর খানিকটা সময় জটিল পৃথিবী থেকে স্কুল জীবনে হারিয়ে যাই-

ধাঁধাঁগুলো আপনাদের সামনে ভালোভাবে পরিবেশনের জন্য লেখায় কিছুটা ডায়ালোগের মাধ্যমে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।

অংকের ধাঁধাঁ-১



আসিফ: মনে মনে একটি সংখ্যা ধরুন। আপনার মনের মতো করে , যা ইচ্ছে তাই, যে কোনো সংখ্যা।

মিঃ“ক”: ধরলাম

আসিফ: এবার যে সংখাটি আপনি মনে মনে ধরেছেন ঐ সংখ্যাটাই মি:“খ” এর কাছ থেকে এনে দু’টো যোগ করুন। মানে সংখ্যাটি ডাবোল করুন।

মিঃ“ক”: করেছি

আসিফ: আমি আপনাকে দিলাম ৭, যে সংখ্যাটি হয়েছে তার সাথে আমার দেয়া ৭ সংখ্যাটি যোগ করুন।

মিঃ“ক”: করেছি

আসিফ: সব যোগ করে যা হয়েছে তার অর্ধেক ফেলে দিন। অর্থাৎ ২ দিয়ে ভাগ করুন।

মিঃ“ক”: করেছি

আসিফ: এবার মি:“খ” এর কাছ থেকে যে সংখ্যাটি এনেছিলেন তা দিয়ে দিন।

মিঃ“ক”: দিয়ে দিলাম

আসিফ: আপনার এখন মনের সংখ্যাটি হল সারে তিন (৩.৫) হয়েছে?

মিঃ“ক”: হুঁ(!) হয়েছে।

[ব্যাখ্যাঃ এখানের চালাকিটা বেশিরভাগ লোক একটু হিসেব করলেই বেড় করতে পারবেন। তারপরও বলছি। প্রথম সংখ্যাটিকে ডাবোল করা হয়েছে। তারপর ইচ্ছেমত একটা সংখ্যা যোগ করার জন্য দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে অর্ধেক ফেলে দিতে বলা হয়েছে। এখন মনে মনে ধরা সংখাটি আর দেয়া সংখ্যাটির অর্ধেক আছে। এবার মনের সংখ্যাটি সরালেই থেকে যাবে দেয়া সংখ্যাটির অর্ধেক। তার মানে আপনি যে সংখ্যাটি দিবেন তার অর্ধেক বললেই মিলে যাবে। ১০০০দিলে বলবেন ৫০০, ৪ দিলে ২, আড়াই দিলে শোয়া এক ইত্যাদি ইত্যাদি। ]

অংকের ধাঁধাঁ-২



আসিফ: মিঃ“ক” আপনি কাগজে তিন সংখ্যার একটি অংক লিখুন। তিন সংখ্যা ওয়ালা যে কোনো অংক।

মিঃ“ক”: লিখেছি

আসিফ: মিঃ“ক” এবার কাগজটি মিঃ“খ” কে দিন।

মিঃ“ক”: দিয়ে দিয়েছি

আসিফ: মিঃ“খ” যে সংখ্যাটি লেখা আছে ঠিক ঐ সংখ্যাটিই সংখাটির ডান অথবা বাম পাশে পাশাপাশি বসান। পাশাপাশি বসালে সংখ্যাটি ৬ সংখ্যার হবে। এবার কাগজটি মিঃ“গ” কে দিন।

মিঃ“খ”: পাশাপাশি ঐ সংখ্যাটিই লিখে মিঃ“গ” কে কাগজটি দিয়ে দিলাম।

আসিফ: মিঃ“গ” সংখ্যাটিকে ৭ দিয়ে ভাগ করে মিঃ“ঘ” কে কাগজটি দিন।

মিঃ“গ”: দারুন তো! একদম মিলে গেছে কোনো ভাগশেষ নেই। কাগজটি মিঃ“ঘ” কে দিয়ে দিলাম।

আসিফ: মিঃ“ঘ” যে ভাগ ফলটি এসেছে তাকে আপনি ১১দিয়ে ভাগ করুন। এরপর কাগজটি মিঃ“ঙ” কে দিয়ে দিন।

মিঃ“ঘ”: ভাগ করা হয়েছে। এটাও একদম মিলে গেছে কোনো ভাগশেষ নেই। কাগজটি মিঃ“ঙ” কে দিয়ে দিলাম।

আসিফ: মিঃ“ঙ” আপনি ভাগ ফলটিকে ১৩ দিয়ে ভাগ করুন। তারপর মিঃ“ক” কাগজটি ফেরৎ দিয়ে দিন।

মিঃ“ঙ”: ভাগ করেছি। অদ্ভুত ব্যাপার তো খুব কম সংখ্যাই আছে যাকে ১৩ দিয়ে ভাগ করা যায়। আমি ভেবেছিলাম মিলবে না কিন্তু এখানেও কোনো অবশিষ্ট নেই। মিঃ“ক” কে কাগজটি দিয়ে দিলাম।

আসিফ: দেখুন তো মিঃ“ক”!!! আপনার সংখ্যাটি ঠিক আছে কিনা। আপনি তো এই সংখ্যাটিই প্রথম লিখেছিলেন তাই না?

মিঃ“ক”: বাহ্(!) দারুন(!)

[ব্যাখ্যাঃ এখানের চালাকিটা খুব সহজ তিন সংখ্যওয়ালা অংকটি পাশাপাশি বসিয়ে ৬ অংক করা মানে তিন সংখ্যাওয়ালা সংখ্যাটিকে ১০০১ দিয়ে গুন করা। পরবর্তিতে ৭ x ১১ x ১৩ = ১০০১ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। মানে যে লাউ সেই কদু।]

অংকের ধাঁধাঁ-৩



১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯ সংখ্যা গুলোকে ছকের একটি ঘরে শুধু মাত্র একবার বসাতে পারবেন এবং ছকের চারিদিকে সবগুলোর যোগফল ১৫ হবে।

১৫ ১৫ ১৫ ১৫ ১৫
১৫ A B C ১৫
১৫ D E F ১৫
১৫ G H I ১৫
১৫ ১৫ ১৫ ১৫ ১৫

[ ব্যাখ্যা:A, B, C, D, E, F, G, H ও I দ্বারা ঘর গুলোকে পূর্ণ করে দিলাম। আপনারা চেষ্টা করুন। অবশ্যই পারবেন। এর উত্তরটি কমেন্টের মধ্যে দিয়ে দিবেন। আর না দিলে আমিই দিয়ে দিবো।]


স্কুল জীবনের আর একটি কথা মনে পড়ে গেলো। ক্যালকুলেটর হাতে নিয়ে টিপতে টিপতে বলতাম-

11110000 (৪টা ছেলে আর ৪টা মেয়ে গেছে সিনেমা দেখতে) তারপর বিয়োগে (-) চাপ দিয়ে বলতাম-

মোট সিনেমা দেখাবে একশ মিনিট ঊননব্বই মিনিটের সময় কারেন্ট চলে গেল আসলো নব্বই মিনিটে মানে 1008990

তারপর = দিয়ে বলতাম-

10101010 দেখলেন ছেলে মেয়ে গুলো কেমন পাশাপাশি হয়ে গেছে।



সেই দিনগুলো খুব মনে পড়ে। দুঃখ লাগে আর কখনও ফিরবে না ছাত্র জীবন। একটা প্রশ্ন- “ আমরা ছেলেবেলায় সবুজের মাঝে যে নির্ভেজাল আনন্দটুকু পেয়েছি, টেকনোলজির চরম উন্নতির এই সময়ের গৃহবন্দি বাচ্চাগুলোর ছেলেবেলা কি আমাদের মতো হবে?

(লেখাটি আগে টেকটিউনসে প্রকাশিত হয়েছে)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১:৩৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×