somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিজ দায়িত্বে পড়বেন, ভালো না লাগলে গালাগালি কইরেন না.......

২৫ শে আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমার লেখা প্রথম ছোট গল্প
একটি অসমাপ্ত প্রেমের গল্প



মানব জীবনে যে কতো বিচিত্র ঘটনা ঘটে তার সত্যিই কোনো শেষ নেই। তারপর যদি সেটা প্রেম ঘটিতো কোনো ঘটনা হয় তাহলে তো সেটা আরও বিচিত্র পাশাপাশি জটিল ও । কার সাথে কখন কার গিট্টু লেগে যাচ্ছে বা যাবে তা অনুমান করা শুধু কঠিনই নয় অসম্ভব ও বটে। তবে যারা বাংলা সিনেমাকে ধ¦ংসের হাত থেকে রক্ষা করতে বদ্ধ পরিকর হয়ে নিয়মিতো বাংলা সিনেমা দেখেন তাদের কাছে প্রেম বিষয়টাকে ডালভাতই মনে হওয়ার কথা। কারণ বাংলা সিনেমাতে যেভাবে নায়ীকা নায়কের প্রেমে পড়ে তা যে কতোটা বাস্তবতা বিবর্জিতো তা হয়তো আবিরের চাইতে আর কেউ ভালো জানে না । আবির সম্পর্কে যা বলা যায় তাহলো ও একজন ছাত্র । স্কুল কলেজর সীমানা পেরিয়ে ও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । ডা: আসরাফ হোসেন ও স্কুল শিক্ষীকা মোছা: আছিয়া আসরাফের তিন ছেলে মেয়ের মাঝে আবিরই সবার ছোট । চেহারাতে একটা মায়াবী ভাব,হালকা পাতলা গড়ন, তবে সব চাইতে সুন্দর ওর চোখ দুটো ।যে কেউ ওর চোখে চোখ রাখলে ওর প্রেমে পড়তে বাধ্য । আবিরের চিন্তা চেতনার গন্ডি খেলার মাঠ, পড়ার টেবিল আর সময় পেলেই বাংলা সিনেমা দেখা , আর দুই বোনের সাথে বিরতিহীন আড্ডা এর বেশী না । তবে ছয় মাসের ব্যবধানে আবিরের বড় দুই বোনেরই গত বছর বিয়ে হয়ে যাওয়াই আবির এখন অনেকটাই একা । এখন বাসাই বাবা, মা আর আবির ছাড়া কেউ নেই । তবে কষ্টের মাঝে সুখের কথা একটাই আর তা হলো ও এবার নামকরা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে । এবার আসল কথাই আসা যাক আবিরের খুব ইচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই সে একটা প্রেম করবে । ওর ধারণা ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর ও যাকে পছন্দ করবে তার সাথেই ওর প্রেম হয়ে যাবে কারণ বাংলা সিনেমার নায়ক যদি কলেজে পড়েই ধনীর দুলালীর সাথে প্রেম করতে পারে তাহলে আবিরই বা কম কিসে? তবে আবিরের এই ভুল ভাঙ্গতে খুব বেশী সময় লাগেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির একমাসের মাথায় যখন ওর সাথেরই মাঝারী মানের এক সুন্দরী মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হলো তখন বাংলা সিনেমা আর বাস্তবের ব্যবধানটা বুঝতে পেরে মনে মনে বাংলা সিনেমার পরিচালক গুলোর গুষ্টী উদ্ধার করতে খুব বেশী দেরী হয়নি।।। প্রথম চেষ্টাতেই ব্যর্থ হয়ে শেষে তিন দিন তিন রাত ভেবে প্রেম করার ইচ্ছেটাকে মনের সিন্দুকে আপাতত বন্দী রাখার সিদ্ধান্ত নিলো ।। এরপর আবির তার সব বন্ধুর সাথেই কথা বলতো তবে সব সময়ই চেষ্টা করতো ঔ মেয়েটাকে এড়িয়ে যেতে, এভাবেই চলতো ।কিন্তু ঔ মেয়েটার প্রতি আবিরের ভালোলাগা দিনদিন বাড়তে থাকলেও আর কোনোদিনই বলা হয়ে ওঠেনি । হয়তো মেয়েটাও বুঝতো আবিরের ভালোবাসা, কিন্তু সেও কোনোদিন কিছু বলতো না । এভাবেই একদিন ¯œাতক শেষ হয়ে যায় । সবাই যে যার মতো ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দিকে, কেউ চাকুরী, কেউ স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশে, কেউ বা আবার এম.এস. এ ভর্তি হয় ।সেদিন কি বার ছিলো আবিরের ঠিক মনে নেই, ¯œাতক শেষ করে বাসায় আসার সময় ঘটনাক্রমে ঔ মেয়ের সাথে আবিরের দেখা হয়ে যায় রেলষ্টেশনে, আবির ট্রেনে উঠতে যাবে এমন সময় দেখে মেয়েটা বসে আছে প্লাটফরমে, আবির অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো তুমি এখানে? মেয়েটি বললো আমার ট্রেন আধাঘন্টা পর তাই একটু আগেই চলে এসেছি, তোমার ট্রেন কখন? আবির বললো এইতো এখনই ছাড়বে, যাই, দোয়া করো আমার জন্য, কথাটা শেষ করেই উত্তরের জন্য অপেক্ষা না করে ট্রেনের দিকে পা বাড়ালো । কিছুদূর যাওয়ার পর মেয়েটা উচ্চস্বরে বলা কথাগুলোর মাঝে একটা কথাই ঠিক মতো শুনতে পেলো, আর তা হলো- ভালো থেকো আবির ।। মেয়েটার মুখে নিজের নামটা শুনে বুকের কোনো এক কিনারাই যেনো একটা সুখের শিহরণ বয়ে গেলো, সাথে সাথে যেনো হার্টও একটু দ্রুতো কয়েকটা স্পন্দন দিয়ে গেলো, ততক্ষণে ট্রেন চলতে শুরু করেছে । জানালা দিয়ে মেয়েটাকে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু কোথাও দেখতে পেলো না । কেনো জানি আবিরের মনটা হঠাৎ অনেক খারাপ হয়ে গেলো । আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে পাঁচ বছর চার মাস দশ দিন আগের সেই ঘটনাটা হটাৎ করে মনে পড়ে গেলো, অবশ্য কারণ ছাড়া না, একটা অপরিচিতো নম্বর থেকে আবিরের নম্বরে একটা ছোট্ট মেসেজ এসেছে মেসেজটটতে আহামরি কিছু লেখা নেই । শুধু লেখা আছে- ভালো থেকো সিনথিয়া । যদিও মেসেজ আসার কিছুক্ষণ পরেই মেসেজকারী আবির কে ফোন করে দু:খ প্রকাশ করা হয়েছে, কারণ মেসেজকারী নাকি তার কোনো কাছের কোনো মানুষের নম্বর ভুল করার কারণে মেসেজটা আবিরের কাছে চলে এসেছে ।।।আবিরের সেই বন্ধুটার নামও যে ছিলো সিনথিয়া, বারবার তাই সেই মায়াময় মুখখানি ভেসে উঠছে স্মৃতিপটে । অনেকক্ষণ এসব চিন্তা করতে করতে যেনো আবির পাঁচ বছর আগের সেই সব দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলো, বাস্তবে ফিরলো মায়ের ডাকে, মা এসে আবিরের মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে বাবা আবির অফিসে যাবি না? আজ নাকি তোর কি জরুরী মিটিং আছে? আবিরের মনে পড়লো সত্যি তো আজ তার খুব জরুরী একটা মিটিং আছে, তাড়াতাড়ি করে রেডী হয়ে মায়ের বানানো নাস্তা শেষ করেই বেরিয়ে পড়লো অফিসের উদ্দেশে ।ও বলাই তো হয়নি আবির এখন একটা মাল্টিন্যাশনাল কম্পানীতে চাকুরী করে এ.জি. এম পদে । আজ সেই অফিসেরই একটা দেশের সব এরিয়া ম্যানেজারদের নিয়ে মিটিং । আবির মিটিং শুরুর ঠিক দশ মিনিট আগে অফিসে পৌছালো । জি. এম অসুস্থ থাকায়, ঠিক সময়ে জি. এম এর অনুমতি নিয়ে আবিরই মিটিং শুরু করলো । টানা চার ঘন্টা আবিরের পরিচালনাই চললো মিঠিং । শেষে জি. এম. সবার কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে আবিরকে সুন্দর ভাবে মিটিং পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মিটিং শেষ করলো ।মিটিং শেষ করে তার রুমে গিয়ে বসেছে মাত্র, তখনই একটা অতি পরিচিতো কণ্ঠস্বর শুনে চমকে উঠলো আবির, মাথা উচু করে যা দেখলো তার জন্য সে মোটেও প্র¯তুত ছিলো না । অবাক নয়নে কতোক্ষণ যে ঔভাবে চেয়ে ছিলো তার ঠিক নেই, তার চেয়ে থাকা দেখে মনে হচ্ছে, কোনো হারিয়ে যাওয়া রাজকুমারী যেনো তার রাজকুমারকে বলছে প্রিয়তম আমি তোমার হারিয়ে যাওয়া রাজকুমারী ফিরে এসেছি তোমার কাছে, আর রাজকুমার অতি আনন্দে ভাষা হারিয়ে ফ্যালফ্যালিয়ে শুধু চেয়ে আছে তার রাজ কুমারীর দিকে ।। শেষে সিনথিয়ার মুখে নিজের নাম শুনে যেনো বাস্তবে ফিরলো । সিনথিয়া তখনও দাঁড়িয়ে, বলছে স্যার আমি কি বসতে পারি?আবির যেনো একটু লজ্জাই পেলো, বললো অবশ্যই বসো । রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে আবির প্রশ্ন করলো সিনথিয়া তুমি?? ........................................ (.........চলবে.............)



৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শৈল্পিক চুরি

লিখেছেন শেরজা তপন, ০১ লা জুন, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭


হুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:০৫




গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া

লিখেছেন নীল আকাশ, ০১ লা জুন, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭



বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৬

আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০১ লা জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪



ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!

সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×