এটাই তোমার আমার মধ্যবিত্ত জীবন---
সস্তা ফিলোসফির সাথে বিবেক নামক অভিশাপ
প্লেটোনিক সুখের সাথে কিয়ের্কেগার্ডকে গুলে খাওয়া আত্মতৃপ্তি...
এই মধ্যবিত্তের কাছে বেঁচে থাকা মানে
মায়ের দিকে তাকিয়ে জগৎসংসারের ঘানি টানার জন্য
হাড়মাংস মজবুত করা
নয়ত প্রেয়সীকে দেওয়া হাজারটা মিথ্যা আশ্বাস...
মাদক একই,বোতল ভিন্ন
বিশ্বাসীদের কাছে যা পবিত্রগ্রন্থের কথিত
সর্বসুখের স্বপ্ন,
অবিশ্বাসীদের কাছে সেটাই সাঁর্ত্রের দার্শনিক মুলো
আত্মসম্মানবোধের মূর্খ আস্ফালন...
অসংখ্য অর্থহীন প্রশ্ন;সাথে অর্থবহ গ্লানি নিয়ে
ব্যস্ত মধ্যদুপুরে চোখ ভেঙ্গে আসা ক্লান্তি...
সুখ নামের কাঠবিড়ালীর খোজে সবার
অনন্ত অস্থিরতা
কড়কড়ে কাগুজে সুখের পিছে ছোটা...
বাজির কালোঘোড়া হতে চায় সবাই
কেউ কেউ যেন তাড়া খাওয়া ক্ষেপা পংক্ষীরাজ...
তারপরও হাপ ছেড়ে বাঁচার ক্ষীণ চেষ্টা...
সেটা হয়ত শরৎবাবুকে নিয়ে একান্ত অবসর
কিংবা সদ্য কেনা স্প্যানিশ গিটারে
ব্যর্থ সৃজনশীল চেষ্টা,
নয়ত বোকাবাক্সের সস্তা হিন্দি চ্যনেলে
সস্তাতর কিছু বেলেল্লেপনা...
আর ওদিকে কথিত ট্রান্স,আরএনবি
অথবা হালের মেটালকোরে
সংস্কৃতির চৌদ্দপুরুষের ব্যবচ্ছেদ...
মধ্যবিত্তর নেশা মানে আড্ডায় ধূমায়িত নিকোটিন
অধিকারের প্রশ্নে হতাশাবাদের বারুদ
নৈ্রাশ্যবাদির উচ্চকন্ঠের মাঝে
কতিপয় অস্তত্ববাদীদের খড়কুটো আগলে ধরা
সেটা পাবলিক বাসে,
কিংবা ব্যস্ত ক্যাম্পাসের মধ্যাহ্ন বিরতিতে
অথবা চায়ের দোকানে নিয়মিত আড্ডায়...
মধ্যবিত্তরা সুখ খুজে
প্রেমিকার চকিত হাতের স্পর্শে,ঘ্রাণে
হয়তোবা নিষিদ্ধ অভিসারে...
কখনও আবার আলোয়াধারির মাঝে হাতে হাতে ঘুরতে থাকা
সস্তা তরল কিংবা বায়বীয় কোনো অচ্ছ্যুত আনন্দে...
নিষিদ্ধের প্রতি যে অদমনীয় আকর্ষন...
সব শেষে স্বপ্নগুলো কিন্তু আটকে থাকে কড়কড়ে কাগুজে নোটেই
ফিরিঙ্গি আলুভাজা কিংবা পাউরুটি চাপা মাংসের কিমায়
আরোপিত আভিজাত্যে...
পাশ দিয়ে ধুলো উড়িয়ে যাওয়া ল্যান্সারটি
কাঁচকলা দেখিয়ে যায় পায়ের আধাছেড়া স্যান্ডেল জোড়াকে...
তবু মাথা উঁচুই থাকে,
মানিব্যাগে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
জীর্ণ পরিচয়পত্রটি ছুয়ে...
অনাগত ভবিষ্যতের কাছে বোকা জিঘাংষাটুকু জিয়িয়ে রাখা্...
নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাস বুকের মাঝে থেকে যায়
সাধ আর সাধ্য না মেলার ব্যর্থতায়..................................................